somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাভারতের গপ্পো - ০২৮ : বক রাক্ষস বধ

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাণ্ডবরা একচক্রা নগরে সেই ব্রাহ্মণের ঘরে বাস করতে লাগলেন। তাঁরা ভিক্ষা করে যা আনতেন, কুন্তী সেই সমস্ত খাদ্য দুই ভাগ করতেন, এক ভাগ ভীম একাই খেতেন, অন্য ভাগ অপর চার ভাই ও কুন্তী খেতেন। এভাবে অনেকদিন পার হল। একদিন যুধিষ্ঠিররা ভিক্ষা করতে গেছেন। শুধু ভীম আর কুন্তী ঘরে আছেন, এমন সময় তাঁদের আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণের ঘর থেকে আর্তনাদ শুনতে পেলেন। কুন্তী ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখলেন, ব্রাহ্মণ তাঁর স্ত্রী পুত্র ও কন্যার সঙ্গে নিজেদের মৃত্যু নিয়ে আলাপ করেছেন।

কুন্তী ব্রাহ্মণের কাছে তাদের বিলাপ করার কারণ জানতে চাইলেন। তখন ব্রহ্মণ জানালেন তাদের নগরের কাছে বক নামে এক মহাশক্তিশালী রাক্ষস বাস করে, সেই এদেশের রাজা। কারণ দেশের প্রকৃতরাজা নির্বোধ ও দুর্বল। বক রাক্ষস এই দেশ রক্ষা করে। তার মূল্য হিসেবে প্রতিদিন একজন লােক প্রচুর খাদ্য ও দুইটি মহিষ সঙ্গে নিয়ে যায়। বক সেই মানুষ মহিষ আর খাদ্য খায়। আজ ব্রাহ্মণের যাবার পালা, দরিদ্র ব্রাহ্মণ স্ত্রী পুত্র কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে রাক্ষসের কাছে যাবে ঠিক করেছে।

কুন্তী ব্রাহ্মণকে আশ্বস্ত করে বলে যে তাদের পরিবর্তে ভীম যাবে সেই রাক্ষসের কাছে।


পরদিন মার আদেশে ভীম রাক্ষসের খাবার-দাবার নিয়ে রাক্ষসের বনে গেলেন এবং রাক্ষসকে নাম ধরে ডাকতে লাগলেন। বক রাক্ষস দৈড়ে এসে দেখে ভীম বসে বসে রাক্ষসের খাবার গুলি নিজে খেয়ে ফলছে। তাই দেখে রাক্ষস রেগে গিয়ে ভীমের পিঠে আঘাত করলো, কিন্তু ভীম গ্রাহ্য করলেন না। রাক্ষস একটা গাছ তুলে নিয়ে এসে আক্রমণ করতে এল। ভীম খাওয়া শেষ বাম হাতে রাক্ষসের গাছটি ধরে ফেললেন। তারপর দুজনের মধ্যে লড়াই শুরু হলো। ভীম বক রাক্ষসকে মাটিতে আছড়ে ফেলে গলা চিপে ধরে হত্যা করলেন।



রাক্ষসের চিৎকার শুনে তার আত্মীয় পরিজন ভয় পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। ভীম তাদের বললেন, তােমরা আর কখনও মানুষদের অত্যাচার করবে না। যদি করো তবে তােমাদেরও প্রাণ যাবে। রাক্ষসরা ভীমের আদেশ মেনে নিলে। তারপর ভীম রাক্ষসের মৃতদেহ নগরের প্রবেশ পথে ফেলে দিয়ে ব্রাহ্মণের ঘরে ফিরে গেলো।

নগরবাসীরা আশ্চর্য হয়ে ব্রাহ্মণের কাছে জানতে চাইলো সে কি করে রাক্ষসটিকে হত্যা করেছে। তখন ব্রহ্মণ তাদের জানালো যে একজন মন্ত্রসিদ্ধ মহাত্মা দয়া করে আমার পরিবর্তে রাক্ষসের কাছে অন্ন নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনিই তাকে বধ করে সকলের উপকার করেছেন।



====================================================================

বিশেষ ঘোষণা : হিন্দুদের ধর্মীয় সাহিত্যের মহাকাব্য মহাভারতের কথা আমরা সকলেই জানি। আমি এটিকে পড়ছি একটি কল্পকাহিনীর সাহিত্য হিসেবে, ধর্মগ্রন্থ হিসেবে নয়। আমি মনে করি "যার যার বিশ্বাস তার তার কাছে। অন্যের বিশ্বাস বা ধর্মানুভূতিতে খোঁচা দেয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।" এই গ্রন্থে প্রচুর কল্পকাহিনী রয়েছে। সেগুলিই আমি এই সিরিজে পেশ করবো। যারা মহাভারত পড়েননি তারা এখান থেকে ধারাবাহিক ভাবে সেগুলি জেনে যাবেন। মনে রাখতে হবে আমার এই পোস্ট কোনো ভাবেই ধর্মীয় পোস্ট নয়।

লেখার সূত্র : কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত মহাভারত : অনুবাদক - রাজশেখর বসু।
ছবির সূত্র : এই সিরিজে ব্যবহৃত সকল ছবি বিভিন্ন সাইট থেকে সংগৃহীত।



=================================================================
মহাভারতের গপ্পো : এক নজরে সকল পর্ব
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:১৪
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×