সুরভি আর পরী গিয়েছে শরীয়তপুর- আমার বড় ভাই আর ভাবীর সাথে। চারদিন থাকবে। আমি যাইনি। যেতে ইচ্ছা করেনি। অবশ্য ঢাকা'তে আমার আহামরি কোনো কাজ ছিল না। গেলেই পারতাম। এখন খালি বাসায় একাএকা আমার ভালো লাগে না। সারাদিন এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াই। বাসায় ফিরে মেয়েটাকে দেখতে পাই না- এটা আমার জন্য অনেক বড় যন্ত্রনার। অবশ্য সুরভি একটু পর-পর ছবি পাঠাচ্ছে। ফোন করছে।
রাতে ঘুমানোর আগে মেয়ে ফোন করে বিষন্ন স্বরে বলল- বাবা তোমাকে ছাড়া একটুও ভালো লাগে না। তুমি চলে আসো না প্লীজ। প্লীজ বাবা। মেয়ের কথা শুনে বুকের মধ্যে মোচর দিয়ে উঠলো। মেয়ের মা'ও মন খারাপ করা গলায় বলল- তোমাকে ছাড়া কোনো আনন্দ'ই পরিপূর্ন হয় না। ভালো লাগে না। এরকম কেন হয় বলতো?
স্ত্রী আর কন্যার কথা শুনে মনটা খুব অস্থির হয়ে গেল। সত্যি কথা বলতে, এরাই তো আমার সব হাসি আর আনন্দ। ফোন কেটে দিলাম। সারারাত এক ফোটা ঘুম এলো না। খুব ভোরে ছুটলাম শরীয়তপুরের উদ্দেশ্যে। মেয়ে আর সুরভিকে কিছুই জানালাম না। তবে আমি নিশ্চিত আমাকে দেখেই তারা দু'জন সীমাহীন খুশিতে কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরবে।
১। ব্রীজের নিচে খাল। খালের পানি শুকিয়ে গেছে। বর্ষাকালে অনেক পানি হবে।
২। মাওয়া ঘাট থেকে ঐ পারে যাচ্ছে লঞ্চ। পদ্মা সেতু হয়ে গেলে মানুষের অনেক আরাম হবে।
৩। পেঁপে গাছ। পেঁপে ধরা শুরু করেছে।
৪। ফেরি ঘাট মানেই কি অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা। খুব বেশি বিশৃঙ্খলা- যুগের পর যুগ ধরে। সরকার বদলায় কিন্তু ফেরিঘাটের কোনো পরিবর্তন হয় না।
৫। পরী নামের এক বাচ্চা মেয়ে এই ছবি তুলে দিয়েছে।
৬। শরীয়তপুর যাওয়ার পথে। রাস্তায় জ্যামের কারনে নয় ঘন্টা লেগেছে।
৭। এক ফেরী থেকে আরেক ফেরীর ছবি তুলেছি। ফেরী তার পেটের মধ্যে অনেক গাড়ি, বাস ধারন করে।
৮। ফেরীতে লোকজন নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করছে। ফেরীতে মজা আছে। নানান রকম খাবার পাওয়া যায়।
৯। পরী নামের একটি মেয়ে। অনেক দৌড়ঝাঁপ করে সে ভীষন ক্লান্ত।
১০। গ্রামের রাস্তা। এই জায়গাটাকে বলে তিন রাস্তার মোড়। সময় সকাল সাতটা।
১১। রাতে বিরাট খাওয়া দাওয়ার আয়োজন। আমরা সবাই মিলে বাজার করেছি আবার আমরাই সবাই মিলে রান্না করেছি।
১২। একটি বাচ্চা মেয়ে নদী দেখতে চায়। তার বাবা তাকে নদী দেখাচ্ছে। বাচ্চাও মুগ্ধ, বাচ্চার বাবাও মুগ্ধ!
১৩। ফেরীতে এক লোক গেন্ডারি বিক্রি করছে। প্রচুর গেন্ডারি বিক্রি হচ্ছে। আমি নিজেও কিনেছি।
১৪। ভোরবেলা এক লোক ভ্যান নিয়ে বের হয়েছে। এই ভ্যান'ই তার রুটিরুজি। খুব ভোরে চুপিচুপি আমি আর সুরভি এই ভ্যানে করে বাজারে গিয়ে নাস্তা করে এসেছি।
১৫। বিশাল এক পুকুর। চারিদিকে পানি থৈ থৈ।
১৬। সকালবেলা হাঁটতে বের হয়ে এই ছবিটি তুলেছি। তখন বুকের মধ্যে একবোধ জন্ম নিয়েছে- জীবনটা মন্দ নয়।
১৭। ফেরী ঘাট। ঢাকা ফিরছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৮