somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ৩৪

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মেয়েকে নিয়ে Aloha ক্লাশে যাচ্ছি।
সপ্তাহে দুই দিন ক্লাশ। একদিন সুরভি নিয়ে যায়। একদিন আমি নিয়ে যাই। রিকশা করে বাপ বেটি যাচ্ছি। পরী পাশে থাকলে দুনিয়ার কোনো চিন্তা আমার মাথায় থাকে না। কুটিল জটিল দুনিয়াটাকে বেশ ভালো লাগে। পরী দুই হাত নেড়ে নানান রকম গল্প করছে। আমি মেয়ের গল্প মুগ্ধ হয়ে খুব মন দিয়ে শুনছি। বারবার মনে হয় জীবনটা অনেক আনন্দময়।
হঠাত পরী বলল, আমি একটা ধাঁধা জিজ্ঞেস করি?
আমি বললাম, কর।
পরী বলল- ধরো, তুমি দোকানে গিয়ে এক প্যাকেট বিস্কুট কিনলে। প্যাকেটের উপর যে জিনিসটা ফ্রি লেখা ছিল সেটা দোকানে থাকা স্বত্তেও দোকানদার তোমাকে দিলো না। তুমিও কিছু বললে না। জিনিসটা কি?
মেয়ের ধাঁধা শুনে আমি অবাক! এই ধাঁধা পরী কোথা থেকে শিখলো?! অদ্ভুত সব ধাঁধা পরী প্রায়ই জিজ্ঞেস করে। আমি ধাঁধার উত্তর দিতে পারি না।

আসলেই সারাদিন পরী ভীষন ব্যস্ত।
মেয়ের সাথে আমার গল্প'ই করা হয় না। সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে চলে যায়। স্কুলে দূরে। সেই গুলশান- ১। স্কুল থেকে রাস্তার জ্যাম পার হয়ে বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর হয়ে যায়। দুপুরে ভাত খেয়ে যায় Aloha ক্লাশে। এমন কি ছুটির দিনেও মেয়েকে পাই না। শুক্রবার, শনিবার থাকে তার শিশু একাডেমি। সন্ধ্যায় যায় আরবী ক্লাশে। আর বাসায় যেটুকু সময় থাকে স্কুল, শিশু একাডেমি আর Aloha ক্লাশের হোমওয়ার্ক করতে করতেই সময় শেষ। গল্প'ই করা হয় না। তাই রিকশায় করে Aloha ক্লাশ পর্যন্ত যাওয়াটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। কিন্তু অল্প একটু রাস্তা। কিছুক্ষনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।

আজ পরীকে নিয়ে বের হয়েছি।
রিকশায় করে যাচ্ছি। মেয়ে নানান গল্প করছে। হঠাত মেয়ে বলল- দেখো, লোকটার শার্ট কত জায়গা দিয়ে ছেঁড়া। আমি ভালো করে রিকশাওয়ার শার্টটা লক্ষ করলাম। আসলেই অনেক জায়গা দিয়ে লম্বা করে ছেঁড়া। রিকশাওয়ালাদের শার্ট ময়লা থাকে, বা শার্ট ছোট থাকে অথবা ছেঁড়া থাকলেও এত জায়গা দিয়ে ছেঁড়া থাকে না। আমার এবং মেয়ের বেশ মন খারাপ হলো। আমি মেয়েকে Aloha ক্লাশে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বললাম- আমার মোবাইল নম্বরটা রাখো। সন্ধ্যায় বাসায় এসো। আমি তোমাকে কয়েকটা শার্ট দিবো।

রিকশাওয়ালা খুব খুশি হলো।
সন্ধ্যা হবার আগেই রিকশাওয়ালা আমাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলো।
আমি বললাম, এত বার ফোন দিচ্ছো কেন?
আমি তোমাকে বলেছি সন্ধ্যায় বাসায় আসতে। তাছাড়া আমার বাসা তুমি চিনো। আমার বাসার সামনে থেকেই তো তোমার রিকশায় উঠলাম।
যাই হোক, সন্ধ্যায় রিকশাওয়ালা আবার ফোন দিলো।
আমি বললাম, বাসার সামনে এসেছো?
জ্বী, এসেছি।
আমি বাসা থেকে বের হয়ে দেখি কোনো রিকশা নেই।
আমি ফোন দিলাম। বললাম, তুমি তো বাসার সামনে নেই।
রিকশাওয়ালা বলল, স্যার আপনার বাসা হারায়ে ফেলছি। মনে করতে পারছি না।
আমি বললাম, তুমি কোথায় আছো বলো? আমিই আসছি।
গিয়ে দেখি রিকশাওয়ালা দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাকে তিনটা শার্ট দিলাম। শার্ট পেয়ে খুব খুশি হলো।

শার্ট তিনটাই নতুন।
কালার পছন্দ না হওয়াতে আমার পড়া হয়নি। প্রায় এক বছর ধরে ঘরে পড়েছিল। তাই রিকশাওয়ালাকে দিয়ে দিলাম। শার্ট হাতে নিয়ে রিকশাওয়ালার চোখ মুখ আনন্দে ঝলমল করে উঠল। রিকশাওয়ালার আনন্দ দেখে আমার নিজেরই খুব ভালো লেগেছে। রাত এগারোটায় রিকশাওয়ালা আমাকে আবার ফোন দিলো। বলল, শার্ট তিনটা তার খুব পছন্দ হয়েছে। এত দামী শার্ট সে কখনও পড়েনি। আমার প্রতি সে খুব খুশি। এবং তার গায়ে শার্ট গুলো খুব মানিয়েছে। সে আমকে এক কাপ চা খাওয়াবে। চা আমাকে খেতেই হবে। অন্য কোনো উপায় নাই। যদি চা না খাই তাহলে এই শার্ট সে কোনো দিন পড়বে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১২
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×