somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই সমাজ- ১৫

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কয়েকদিন আগের কথা।
আমার বাসার সামনে দু'টা হাসপাতাল। বারাকা হাসপাতাল আর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল। প্রচুর ভিড় হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এত রোগী হয় যে ভেতরে পা রাখার জায়গা থাকে না। প্রতিদিন একই চিত্র। ঘটনা শুরু- সন্ধ্যায় আমার বন্ধু বলল, দোস্ত বুকের ডান পাশে ব্যথা করছে। বেশ ব্যথা। আমি ভাবলাম গ্যাস্টিকের ব্যথা। একটা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাইয়ে দিলাম। কিন্তু তারপরও ব্যথা কমে না। মনে মনে ভাবলাম বুকে যেহেতু ব্যথা স্ট্রোক করলো কিনা! আমি অবশ্য ডাক্তার হাসপাতাল খুবই কম বুঝি। পারতপক্ষে হাসপাতালে যাই না। পরিচিত কেউ অসুস্থ হলেও হাসপাতালে দেখতে যেতে ইচ্ছা করে না। বেশ কিছুদিন ধরে আমার নিজের শরীরও ভালো না। তবু ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি না।

যাই হোক, যে কথা বলছিলাম-
বন্ধুকে নিয়ে বারাকা হাসপাতালে গেলাম। জরুরী বিভাগে। এদিকে বন্ধুর বৌ কাঁদতে কাঁদতে হাসপাতালে চলে এসেছে। আমি বললাম, ভাবী কান্নার কিছু হয় নাই। আপনি চুপ করে বসুন। কোনো ভয় নেই। আমি আছি। জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখি ডাক্তার মোবাইলে ইউটিউবে নাচ গান কিছু একটা দেখছেন। আমার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো। একজন ডাক্তার ডিউটিরত অবস্থায় মোবাইল দেখবে কেন? আমি রোগীকে ডাক্তারের চেম্বারে বসালাম। চেম্বারে আরেক মহিলা আছেন। উনি সম্ভবত ডাক্তারের সহযোগী। আমি বললাম, ডাক্তার আমার বন্ধু। বুকে ব্যথা। ডাক্তারের সহযোগী বললেন, ই সি জি করতে হবে। আমি বললাম, ওকে।

আমি গিয়ে ই সি জি'র বিল দিয়ে আসলাম।
ডাক্তার মনে হয় ইন্টার্নি করছে। ই সি জি রিপোর্রটের দিকে চেয়ে আছে। কিছু বলছে না। অনেকক্ষন পর ডাক্তার বললেন, আমার মনে হয় কোনো সমস্যা নাই। সব ঠিকই আছে। বুকে ব্যাথা হচ্ছে ঠান্ডা থেকে। এমন সময় ডাক্তারের সহকারী মহিলা হয়তো ডাক্তারকে কোনো ইশারা দিলো আর বলল, বড় প্রফেসর আছেন। ই সি জি তাকে দেখাতে হবে। উনি নিজেই সেই ডাক্তারের সাথে দেখা করে এলেন। এবং বললেন, যান স্যারের কাছে যান। স্যার ফ্রি আছেন। (ই সি জি রিপোর্ট বড় প্রফেসরকে না দেখালেও হতো। এটা ইন্টার্নি ডাক্তার এবং তার সহকারী ভালো করেই জানেন। এখানে হয়তো তাদের কোনো ধান্দা আছে)। হাসপাতাল সেবা করার জায়গা, ধান্দা করার জায়গা না।

বড় প্রফেসরের রুমে গেলাম।
ছোট্র একটুখানি খূপরি রুম। প্রফেসর মোবাইলে কারো সাথে কথা বলছেন। বলেই যাচ্ছেন। টানা দশ মিনিট কথা বললেন। এতক্ষন আমি আমার রোগী নিয়ে চুপ করে বসে থাকলাম। ই সি জি দেখে ডাক্তার বললেন, ঠিক আছে। কোনো সমস্যা নেই। একটা প্রেসক্রিপশনে কয়েকটা ওষুধ লিখে দিলেন। পনের দিন খেতে বললেন। এবং বললেন আমার বিল ৬০০ টাকা। জরুরী বিভাগে টাকা দিলাম। তারা পাঠালেন প্রফেসরের কাছে। এখন প্রফেসরকে টাকা দিলাম। প্রফেসরের রুম থেকে বের হতেই একলোক (হাসপাতালের লোক) হাতে একটা কার্ড দিলো। আর বলল, আমাদের একটা শাখা আছে। সেখানে কম খরচে সব রকম টেস্ট এবং এক্স-রে করা যাবে। ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার বন্ধুর বুকে ব্যথা- আর ঐ লোক বন্ধুর সাথে ঘ্যান ঘ্যান শুরু করছে। তাদের কাছ থেকে টেস্টমেস্ট করাতে।

হাসপাতাল মানেই টাকার খেলা।
এই দেশে দরিদ্র লোকের সংখ্যা বেশী। চিকিৎসা ব্যয় আমাদের দেশে অনেক। দরিদ্র মানুষ বড় অসহায়। তাদের বড় কষ্ট। আজকালকার ডাক্তাররা মানূষকে সেবা করার জন্য ডাক্তার হয় না। টাকা ইনকাম করার জন্য ডাক্তার হয়। বাঙ্গালীরা ব্যবসা করতে ভীষন পছন্দ করে। তারা শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করে, চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসা করে, রাজনীতি নিয়ে ব্যবসা করে, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, খাদ্য নিয়ে ব্যবসা করে। সরকারের উচিত শিক্ষা, খাদ্য আর হাসপাতালে বেশি নজর দেওয়া। শক্তিশালী প্রজন্ম তৈরি করতে হলে তাদের ভালো শিক্ষা দিতে হবে, ভালো খাদ্য দিতে হবে এবং উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। তবেই না দেশ এগিয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৮
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×