(আজ সকালে শ্রদ্ধ্যেয় চাঁদগাজী কোরবাণী "ছোট আকারে" করে, একটা করোনা ফান্ড করা সম্ভব। নামে একটি পোষ্ট দিয়েছেন। তার অনুকরনে আমার এই পোষ্ট)
সময়ের সাথে মানুষকে বদলাতে হয়, সেটাই প্রাকৃতিক। সব কিছু বদলায়, আধুনিক হয় কিন্তু ধর্ম বদলায় না। দেশের মানুষ ভালো নেই। এই অবস্থায় আমাদের একটা করোনা ফান্ড গঠন করা খুব জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে। দেশের মানুষ এবছর হজ্ব করতে পারবে না। সব খারাপের মধ্যে কিছু ভালো দিক থাকে। হজ্বকারীদের এবং সরকারের অনেক টাকা বেঁচে যাবে। এ বছর সরকার থেকে ঘোষনা দিয়ে কোরবানী বন্ধ করে দিতে হবে। সমস্ত কোরবানীর টাকা এবং হজ্বের টাকা দিয়ে বেশ ভালো একটা ফান্ড গঠন করা সম্ভব। এই ফান্ডের টাকা দিয়ে শুধু মাত্র অসহায়, চাকরি চলে যাওয়া এবং শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়া অসহায় লোকদের সহযোগিতা করা হবে।
করোনায় বহু মানুষের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তায় বের হলেই হাজার হাজার ভিক্ষুক। সামনে কোরবানীর ঈদ। আমরা যদি এবার কোরবানী না দেই তাহলে দেশের উপকার হয়। সেই টাকা দিয়ে অভাবগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করা যাবে। দুস্থ অসহায় পরিবার গুলোকে বেঁচে থাকার জন্য বিনা সত্ত্বে ঋণ দিয়ে আয়ের পথ করে দেওয়া উচিত। করোনা ফান্ড থাকবে যোগ্য ও সৎ লোকদের হাতে। সরকারের লোক দিয়ে এ ধরনের ফান্ড পরিচালনা করা যাবে না। ভুলেও রাজনীতিবিদ বা তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন এ কাজে নেওয়া যাবে না। স্বচ্ছ এবং লোভহীনদের এ কাজে নিতে হবে।
সমাজে বড় বড় কথা বলা লোকের অভাব নেই। নিজের পক্ষে বলার জন্য টাকা দিয়ে লোক পর্যন্ত রাখা হয়। করোনাকালীন অসহায় লোকদের সাহয্য করার কেউ নেই। লোকজন বাধ্য হয়ে গ্রামে ছুটছে। গ্রামেও চাকরি নেই। নেই আয়ের পথ। তাদের আয়ের পথ করে দিতে হবে। যে যা পারে তাকে সেই মোতাবেক কাজ দেওয়া হবে। এই কাজ পরিচালনা করবেন দেশের মেধাবীরা। তরুনেরা। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকেরা।
সরকার ছিন্নমূল এবং চাকরি চলে যাওয়া অসহায় মানুষদের সাহায্য করবে না, তাই হজ্ব ও কোরবানীর এই টাকাই রক্ষা করতে পারে তাদের। সরকার টাকা দেবে কারখানার ও বড় ব্যবসার মালিকদের, যা আসলে ডাকাতির সমান। মানুষের টাকা নিয়ে মানুষকে দেয়া যেতো।
অবশ্য এবার অনেকেই কোরবাণী করতে পারবে না। গরু, ছাগল কিনতে গিয়ে ফ্রি'তে করোনা লাভ করার সম্ভবনা আছে। একটা বছর পশু কোরবানি না করলে কোনো সমস্যা নাই। এই সংক্রামক ব্যাধির সময়ে দল বেঁধে গরুর হাটে যাওয়া কুরবানী করা খুব বিপজ্জনক। যারা এটা বুঝবে না তারা ইডিয়ট। তারচেয়ে ভালো কোরবানীর টাকা দান করে দেওয়া। অতি উত্তম কাজ এটাই হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সবাই ভয় পায় তাই উনি যদি একবার বলে দেন, এবছর কোরবানী না দিয়ে সেই টাকা অসহায় লোকোদের বেঁচে থাকার জন্য দিয়ে দেওয়া হোক। সবাই তা হাসি মুখে মেনে নিবেন। এমন কি শফি হুজুর সহ মোল্লারাও মেনে নিবেন।
গত এক যুগ ধরে আমাদের দেশে কোরবানির নামে সম্পদের প্রতিযোগিতা হয়। যারা এভাবে প্রতিযোগিতা করে কোরবানি করে তাদের কোরবানি কবুল হওয়ার কথা না। তাই ১০ লক্ষ টাকার গরু কোরবানি না দিয়ে এবার ১০ হাজার টাকার একটা ছাগল কোরবানি দেন। আর বাকি ৯ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করোনা ফান্ডে দিয়ে দেন। আমাদের দেশে মানুষ শুনে শুনে কোরবাণী করছেন হাজার বছর ধরে। কি করছেন? কেন করছেন? সেটা নিশ্চয় ভেবে দেখেনি কোনদিন। যাক, নবী ইব্রাহিম আ: একবারই কোরবাণী করেছিলেন। আর আমরা সারা জীবন ধরে কোরবানী করেই যাচ্ছি।
এবারের জন্য এটা বড় সুযোগ, শেখ হাসিনা নিজের টাকা দিলে, আওয়ামী লীগের ডিমেরাও টাকা দিয়ে দেবে।
চারপাশে মানুষের এত কষ্টের কাহিনী শুনেছি যে মনে হয় কোরবানি না দিয়ে এদের সাহায্য করা উচিত। টাকা ড. ইউনূস দিবেন না, শেখ হাসিনা দিবেন না, প্রেসিডেন্ট দিবেন না, বেগম জিয়া দিবেন না, ড: কামাল হোসেন বা ফখরুল দিবেন না। আমি দেবো। প্রতি বছর যারা চার লক্ষ টাকার কোরবানী দেন, তারা যদি এবার চল্লিশ হাজার টাকার কোরবানী দিয়ে বাকি টাকা এই দূর্যোগে মানুষের উপকারে খরচ করলে খারাপ হওয়ার কথা নয়। যাহা কিছু সঠিক, যাহা কিছু ভাল, যাহা কিছু মানবজাতির মঙ্গল উহায় ইসলাম।
করোনা নতুন সমস্যার সৃষ্টি করেছে, ইহার সমাধান করাই ধর্মের বড় কাজ হওয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৪৭