somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

একটা ভৌতিক গল্প

১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। আমি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলাম।
আমার গ্রামের বাড়ি না, বন্ধুর গ্রামের বাড়ি। রাত তখন একটা একুশ মিনিট। রাস্তায় বাস নষ্ট গিয়েছিলো। তাই দেরী হয়ে গেছে। নয়তো সন্ধ্যার মধ্যে বন্ধুর বাড়ি পৌঁছানোর কথা ছিলো। অনেক রাত বলেই কোনো রিকশা বা ভ্যান নেই। আমি ভোর হওয়ার জন্য অপেক্ষা না করে হেঁটে চলেছি। আমি জানি, কুড়ি মিনিট হাটলেই এক বাঁক আছে। বাকে একটা বিরাট তেঁতুল গাছ আছে। বাঁক থেকে ডান দিকে দশ মিনিট গেলেই বন্ধুর বাড়ি। একদম সহজ। যে কেউ যেতে পারবে। আমি গুনগুন করে গান গাইছি- ''তারে বলে দিও..., সে যেন আসে না আমার দ্বারে...., নিজেকেই নিজে বলছি বেশ চমৎকার গলা তো তোমার!

আমি গান গাইতে গাইতে এগিয়ে যাচ্ছি।
আমি শহরের মানুষ বলে আমার ভয়ডর কম। আমার সামনে বিশাল এক তেঁতুল গাছ। আমি এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে গাছটার গায়ে হাত রাখলাম। যেন গাছটা আমার স্পর্শ টের পেল। এমন সময় অন্ধকারের মধ্যে কে যেন বলে উঠলো- কে যায় রে? আমি চারপাশ ভালো করে তাকিয়ে দেখি কাউকে দেখা যাচ্ছে না। অথচ আমি স্পষ্ট শুনেছি নারী গলা 'কে যায় রে'? মনের ভুল নাকি! আমি আবার হাঁটা দিলাম। তখন আবার শুনলাম, আমার কথা কানে যায় নি? আমি বললাম, কে কথা বলছেন? আপনাকে তো দেখা যাচ্ছে না। তখন গাছ থেকে কেউ একজন লাফ দিলো নামলো আমার সামনে। দেখি একটা মেয়ে। খুব সুন্দর মেয়ে। আমি বললাম, এই মেয়ে এত রাতে গাছে কি করছিলে? মেয়েটা আমাকে দেখে হাসলো। আমি বললাম, তুমি কি শাকচুন্নী?

মেয়েটা বলল, তুমি আমায় কি করে চিনলে?
আমি আসলেই শাকচুন্নী। আমি অনেক রকম রুপ ধরতে পারি। আমি বললাম, শুনেছি শাকচুন্নীরা দেখতে ভয়ঙ্কর। তুমি তো দেখতে মোটেও ভয়ঙ্কর না। খুব মায়াবতী। আমার ইচ্ছা করছে তোমার সাথে সারারাত থাকি। মেয়েটা বলল, থাকতে ইচ্ছা করলে থাকো। কোনো সমস্যা নাই। মেয়েটা বলল, আসো গাছে উঠে আসো। আমাই এই গাছেই থাকি। আমি গাছে উঠলাম। মেয়েটা বলল, বলো কি খাবে? তুমি নিশ্চয়ই অনেক ক্ষুধার্থ। আমি বললাম, আমি আসলেই ক্ষুধার্থ। মেয়েটা বলল, আমাকে পাঁচ মিনিট সময় দাও। বলেই মেয়েটা মুহুর্তের মধ্যে কোথায় যেন চলে গেল। খুবই অবাস্তব ঘটনা। অথচ আমার কাছে অবাস্তব লাগছে না। মনে হচ্ছে এটাই স্বাভাবিক। এরকম ঘটতেই পারে। যা ঘটে ঘটুক। শুধু আমি জানি, আমার সাথে খারাপ কিছু ঘটবে না।

ফকফকা জ্যোছনা রাত।
আমি তেঁতুল গাছের সব থেকে উচা ডালটায় বসে আছি। খাবারের অপেক্ষা করছি। মেয়েটা কি খাবার আনে কে জানে! মেয়েটা চলে এসেছে। তার হাতে খাবারের প্যাকেট। মেয়েটা বলল, তোমার জন্য বিরানী আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সব দোকান বন্ধ। অতি কষ্টে কাবাব আর নান রুটি ব্যবস্থা করেছি। আমি বললাম, কোক ফানটা কিছু এনেছো? মেয়েটা হেসে বলল, কোক পাইনি স্প্রাইট এনেছি। আমি বললাম, গুড গার্ল। আমি বেশ আরাম করে খেলাম। এত রাতে মেয়েটা খাবার কোথা থেকে ব্যবস্থা করলো কে জানে! সবচেয়ে বড় কথা কাবাব, রুটি গরম। মনে হয় যেন মাত্র চুলা থেকে নামানো হয়েছে। অথবা ওভেন থেকে গরম করে এনেছে। মেয়ে গুলো এত ভালো হয় কেন! এত মায়াবতী হয় কেন? আজিব!

আমার খাওয়া শেষ। একটা সিগারেট ধরালাম।
সিগারেটে একটা লম্বা টান দিতেই মনে হচ্ছে জীবনটা আসলেই আনন্দময়। মেয়েটা বলল, আমাকে বিয়ে করবে? আমি বললাম, দেখি চিন্তা করে। আমাকে সময় দাও। মেয়েটা পা ঝুলিয়ে বসে আছে। আমি মেয়েটার কোলে মাথা রেখে শুয়েছি। খুব বেশী খেয়ে ফেলেছি। এখন হাঁসফাঁস লাগছে। মেয়েটা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। বেশ আরাম লাগছে। আসলে কারো কারো হাতে অনেক মায়া থাকে। আমার ঘুম পেয়ে যাচ্ছে। মেয়েটা বলল, তুমি আমার সাথেই থেকেই যাও। তোমাকে অনেক ভালোবাসবো। পৃথিবীর কোনো দুঃখকষ্ট তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। মেয়েটা এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে আমার ঠোটে ঠোট রাখলো। মেয়েটার মুখে কেমন সুন্দর একটা গন্ধ! লেবু পাতা কচলালে এরকম গন্ধ হয়। আমি এবার উঠে বসলাম, মেয়েটার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম। মেয়েটা তো খুব সুন্দর! গ্রামের মেয়েদের মতোন আচল বড় রেখে শাড়ি পড়েছে। মাথা ভরতি চুল একদম কোমরের নিচে নেমে এসেছে। পায়ে আলতাও দিয়েছে। এক পায়ে নূপুরও দেখা যাচ্ছে। আমি মেয়েটার কাঁধে মাথা রাখলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১১
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×