somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

সুমি, চন্দনা এবং ঝুমকি'র গল্প

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সুমি
সুমি আর আমি একই স্কুলে পড়তাম।
সুমি খুব সুন্দর ছিলো। সুমির সবচেয়ে সুন্দর ছিলো চোখ আর মাথা ভরতি চুল। এত লম্বা চুল যে কোমর ছাড়িয়ে গেছে। মেয়েটার বাবা পুলিশ ছিলো। চিটাগাং থেকে বদলি হয়ে ঢাকা এসেছে। আমাদের এলাকাতেই ভাড়া থাকতো। সুমি প্রচুর বই পড়তো। সুমিদের বাসায় আমার অবাধ যাতায়াত ছিলো। আমি কোনো ভালো বই পড়লে সুমিকে দিতাম। সুমিও কোনো ভালো বই পড়লে আমাকে পড়তে দিত। একদিন সুমিদের বাসায় গিয়েছি। বাসায় সুমি একা। আমরা সবে মাত্র স্কুলে পড়ি। প্রেম, ভালোবাসা আর যৌনতা সম্পর্কে খুব একটা ধারনা ছিলো না। যাই হোক, সেদিন সুমি সাদা একটা জামা পড়েছিলো- আমার আজও মনে আছে। সুমিকে দেবী প্রতিমার মতো লাগছিলো। সুমির সাথে অনেক গল্প করলাম।

একসময় সুমি বলল, নুডূলস খাবে?
আমি বললাম, হুম খাবো। সুমি নুডুলস রান্না করছে। আমি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাত সুমি বলল, তুমি কখনও কাউকে চুমু খেয়েছো? আমি বললাম, না। সুমি বলল, আমিও খাই নি। চুমুর স্বাদ কেমন জানি না। আমি বললাম, আমিও জানি না। সুমি বলল, আসো আমরা দুজন দুজনকে চুমু খাই। কেউ দেখবে, কেউ জানবে না। সুমি আরো বলল, যেহেতু আমরা কেউ কাউকে জোর করবো না, তাই এটা পাপ বলেও গন্য হবে না। সুমির কথা শুনে আমার ভীষন লজ্জা লাগলো। লজ্জায় আমি লাল হয়ে গেলাম। আমি জানি না সুমি আজ কোথায় আছে! কেমন আছে? সুমিকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে। সুমির কথা মাঝে মাঝে খুব বেশি মনে পড়ে। ফেসবুকে তো কত পুরোনো বন্ধুদের পাওয়া যায় বলে শুনেছি। আমি তো সুমিকে পেলাম না। সুমি যেখানেই থাক ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক। একদিন হয়তো হুট করে কোথাও দেখা হয়ে যাবে আমাদের। তখন সুমি কি আমাকে চিনতে পারবে?

চন্দনা
চন্দনা ছিলো হিন্দু।
চন্দনার বাবা আমাদের কলেজের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। চন্দনার বাবার নাম ছিলো নরোত্তম গাঙ্গুলী। গাঙ্গুলী স্যার ছিলেন খুব সহজ এবং শান্ত মানুষ। ছাত্রছাত্রীদের ভীষন ভালোবাসতেন। চন্দনাদের বাসায় আমি প্রায়ই যেতাম। আমাদের এলাকার পরের এলাকায় চন্দনা'রা থাকতো। রামায়ন পড়ে আমাদের মাঝে মাঝে শুনাতেন গাঙ্গুলী স্যার। স্যার বলেছিলেন- তোমার মধ্যে সাহসীকতা, কাপুরুষতা কিংবা দুশ্চরিত্র মনোভাব যদি থেকে থাকে, তাহলে সেটা তোমার চরিত্রের মাধ্যমেই স্পষ্ট বোঝা যাবে। যতবার চন্দনাদের বাসায় গিয়েছি স্যারের হাতে বই দেখেছি। উনি প্রচুর পড়তেন। উনি বলতেন মরার পর তো আর পড়ার সুযোগ নেই। আমাকে আগুনে পুড়িয়ে দিবে। তাই ইচ্ছে মতো পড়ে নিচ্ছি। আফসোস একটাই ভালো ভালো বই গুলো জীবনে কিছুই পড়তে পারলাম না।

একদিন চন্দনাদের বাসায় গিয়ে দেখি-
বাসায় শুধু চন্দনা একা। সে বিছানায় আধশোয়া হয়ে বই পড়ছে। বইটার নাম আমার মনে আছে, রবীন্দ্রনাথের 'শেষের কবিতা'। তখন আমি বইটই পড়টাম। কিন্তু শেষের কবিতাটা পড়া হয়নি। কারন সাধু ভাষার বই আমার ভালো লাগতো না। আমি চন্দনার পায়ের কাছে বসলাম। কি সুন্দর পা! মনে মনে ভাবছি মানুষের পা এত সুন্দর হয় কি করে! এক পায়ে আবার রুপার নূপুর পড়েছে চন্দনা। মিথ্যা বলব না, তখন আমার মনে একটা গোপন ইচ্ছা জন্মেছিলো। চন্দনার পায়ে চুমু দিতে। চন্দনা বলল, এই বইটা পড়েছিস? আমি বললাম না। আমি চন্দনার দিকে তাকিয়ে আছি মুগ্ধ হয়ে! কারন এই প্রথম চন্দনাকে ওড়না ছাড়া দেখছি। বারবার আমার চোখ চন্দনার বুকের দিকে চলে যাচ্ছে। কি সুন্দর লাগছে দেখতে! হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছা করছে। বুঝতে পারছি এটা ভীষন অন্যায়। একবার ইচ্ছা হলো চন্দনাকে বলি, চন্দনা তোমার বুকে হাত রাখি? একটা চুমু দেই?

ঝুমকি
ঝুমকি মেয়েটা অদ্ভুত। ঝুমকি খুব সিগারেট খেত। মুখ ভরতি করে ধোঁয়া ছাড়তো। এমন কি ধোয়া দিয়ে গোল গোল বলও বানাতে পারতো। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখতাম। ঝুমকির মধ্যে কোনো রাখঢাক ছিলো না। মুখে যা আসতো গড়গড় করে বলে দিত। মেয়েদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব কি ঝুমকি'ই আমাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছে। পড়াশোনায় তূখোড় ছিলো ঝুমকি। ঝুমকি আমাকে শিখিয়েছে, Liabilities, Capital, Revenue, Expense, Asset আর Drawings। পানির মতো সহজ করে সব বুঝিয়ে দিত। জোর করে আমাকে পড়তে বসাতো। কথার মাঝখানে একটু পরপর ফস করে সিগারেট ধরাতো। আমি সিগারেট খেতাম না বলে আমাকে উপহাস করতো। আমাকে 'মেন্দা' বলে গাল দিত। 'মেন্দা' মানে কি কে জানে!

একদিন আমি আর ঝুমকি রিকশা করে যাচ্ছি।
ঝুমকি হেসে হেসে বলল, আমার কোমরে কি তোমার হাত রাখতে ইচ্ছা করছে? আমি বললাম, মানে? ঝুমকি বলল, ছেলেরা রিকশায় উঠেই মেয়েদের কোমরে হাত রাখতে পছন্দ করে। তুমি চাইলে হাত রাখতে পারো আমার কোনো সমস্যা নাই। আমি বললাম, অনেক ছেলে তো রিকশাতে চুমুও খায়। ঝুমকি বলল, তোমার ইচ্ছা হলে চুমু খাও। আমার কোনো সমস্যা নাই। তুমি চুমু খেলে আমার শরীর পচে যাবে না। নষ্ট হয়ে যাবে না। মানুষের শরীর কখনও নোংরা হয় না। নোংরা হয় মানুষের মন। মিথ্যা বলব না, আমার ঝুমকির কোমরে হাত রাখতে ইচ্ছা করছিলো। এমনকি তাকে চুমু দিতেও খুব ইচ্ছা করছিলো। অবাধ সুযোগ। এই সুযোগ কি সব সময় পাওয়া যাবে। ঝুমকির ঠোঁটে বা গলায় একটা চুমু দিলে তো আর বাজারে চালের দাম বেড়ে যাবে না। হরতাল কার্ফু কিছুই হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:২০
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×