একদিন বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্র কৃষকদের উপর অনেক ক্ষেপে গেলেন।
তখন তিনি কৃষকদের বললেন, আমি একটানা ১২ বছর কোন প্রকার বৃষ্টি দান করব না, তোমরাও কোন প্রকার ফসল ফলাতে পারবে না। এটা হলো আমার অভিশাপ।
কৃষকদের তো তখন ভয়ে অবস্থা খারাপ, তারা তখন অনেক কাকুতি মিনতি করতে শুরু করলো তার অভিশাপ ফিরিয়ে নেয়ার জন্য। কিন্তু দেবতা ইন্দ্র কৃষকদের কাকুতি মিনতি দেখে একটা বুদ্ধি বের করলো। সে কৃষকদের বললো- আচ্ছা ঠিক আছে বৃষ্টি তখনি হবে যখন ভগবান শিব তার হাতে থাকা ডমরু বাজাবেন।
একদিকে দেবতা ইন্দ্র কৃষকদের এটা বলে শান্তনা দিলেন যে ভগবান শিব ডুমরু বাজালে বৃষ্টি হবে অন্য দিকে তিনি শিবকে ডমরু না বাজানোর জন্য রাজি করিয়ে নিলেন।
কৃষকেরা যখন শিবের কাছে ডমরু বাজাতে প্রার্থনা করলো- তখন তিনি স্পষ্ট বলে দিলেন, আমি ১২ বছর আমার ডমরু বাজাবো না। আমাকে অনুরোধ করে কোনো লাভ নাই। আমাকে বিরক্ত করো না। এখন আমি ঘুমাবো।
কৃষকরা কোন পথ না পেয়ে ১২ বছর অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো। কিন্তু একজন কৃষক ঠিক'ই জমি খনন করে চাষ করে বীজ বুনন করতে থাকলো। বারবার তার বীজ নষ্ট হতে লাগলো কোন ফসলই হলো না।
তাকে দেখে অন্য চাষীরা খুব হাসাহাসি করতে লাগলো। তিন বছর পর একদিন সব কৃষক মিলে তাকে জিজ্ঞেস করলো, কেনো তুমি শুধু শুধু এত কষ্ট করছো। বৃষ্টিতো হবে না ১২ বছর। বৃষ্টি ছাড়া কি ভাবে ফসল হবে?
উত্তরে সে বললো- আমি জানি ১২ বছর কোন বৃষ্টি হবে না, তবুও আমি আমার কাজটার অনুশীলন করে যাচ্ছি। যেনো ১২ বছর পর যখন বৃষ্টি হবে তখন আমি আমার চাষবাস এর কাজ ভুলে না যাই।
কৃষকদের মধ্যকার এই কথা শুনে দেবী পার্বতী শিবকে বললেন- একটানা ১২ বছর ডমরু না বাজালে আপনিও হয়তো ১২ বছর পর ডমরু বাজানো ভুলে যাবেন।
তখন শিব অন্যমনস্ক হয়ে তার হাতে থাকা ডমরুটা বাজানোর জন্য চেষ্টা করলেন। ডমরু বাজতেই বৃষ্টি পড়া শুরু হয়ে গেলো।
আর যে কৃষক আগে থেকে জমি তৈরি করে বীজ বপন করে রেখেছিলো সে শস্য পেতে লাগলো। সেখানে যারা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করছিলো তারা কিছুই পেলো না।
(এবার বলুন, এই গল্প থেকে কি শিক্ষা পেলেন?)
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৮