somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

যদি তুমি অপদার্থ হও, তুমি পিছু ফিরবে, আর তা না হলে- যেভাবে যাচ্ছ, যাবে

০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

একজন ছেলের দুর্নামের চেয়ে মেয়ের দুর্নামের প্রকৃতি ও পরিনিতি খুব ভয়ংকর হয়। একটি ছেলে যদি ঘরে মন না বসে, তাতে অন্যায় নেই, কিন্তু একটি মেয়ের যদি তা হয়- তবে আর মুখ রক্ষা হয় না। ছেলেদের বিকেল-সন্ধ্যা আড্ডা দেওয়া খুব গ্রহনযোগ্য ঘটনা। একটি মেয়ের যদি সারা বিকেল আড্ডা দেবার অভ্যেস হয় তবে ঘরে-বাইরে তার আর সম্মান থাকে না। এই বিশ্ব সংসারে পুরুষদের চেয়ে নারীর বৈচিত্র ও বৈশিষ্ট্য অনেক বেশি। পুরুষ যতই সুপুরুষ বা শক্তিশালী হোক নারীর দেহ- লাবন্যের কাছে সে তুচ্ছ।

পৃথিবীর মতো নারী পরম সহনশীলা।
তাই তো সে সন্তানের জন্ম দেয়। সব কিছুতেই পুরুষ নারীর কাছে পরাজিত। আরব ললনাদের সম্পর্কে এতদিন পশ্চিমাদের ধারনা ছিল, মুসলিম নারীদের জীবন চার দেওয়ালে আবদ্ধ। বোরকার অন্তরালেই তাদের সব চিন্তা-চেত্না। কিন্তু সময় এখন বদলেছে। অন্তঃপুর থেকে বেরিয়ে এসে মধ্যপ্রাচ্যের অবহেলিত নারীরা জেগে উঠেছে। বিশেষ করে তিউনিসিয়া ও মিসরের সফল সরকারবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রে ছিল নারী। মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ শহরই আজ টি-শার্ট, জিন্স, হিজাব ও বোরকা পরা নারীর সোচ্চার কন্ঠে মুখরিত। বাহরাইনের হাজার হাজার শিয়া বিক্ষোভকারীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। মধ্যপ্রাচ্যে একসময় কেবল গুটিকয়েক সম্ভান্ত পরিবারের নারীই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেত। কিন্তু এখন সে দৃশ্য পালটে গেছে। মিসরের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এখন সিংহভাগ নারী শিক্ষার্থী রয়েছে।

একটা মেয়ে যদি বিয়ের রাতেই জানতে পারে যে, তার স্বামী মাদকাসক্ত।
কলেজ লাইফ থেকেই গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল ইত্যাদি খাওয়ার সিদ্ধহস্ত। তখন সেই মেয়েটির মানসিক অবস্থা কেমন হয়? প্রতিটা মেয়ের উচিত যে কোনও একটা পেশায় নিজেকে ব্যস্ত রাখা। বাবা-মা'র উচিত ছেলেমেয়ে টিনএজে পৌছলে তাদের পার্ট টাইম জবে উৎসাহিত করা। ইদানিং আধুনিক বাবা-মা'রা তাদের মেয়েদের বলেন, পড়াশোনা করেছ, চাকরি করো। নিজের ক্যারিয়ারটা গড়ে নাও।পড়াশোনাটাকে কাজে লাগাও। এই সমর্থনটা আগে পাওয়া যেত না। পরিবার থেকে সমর্থন না পেলে একটি মেয়ের ক্যারিয়ার গড়া খুব কঠিন। কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেক মেয়েই আছেন, তারা পড়াশোনা করেছেন ভালো ও যোগ্য একটা পাত্রের জন্য। বর্তমান সময়ে মেয়েদের এ ধরনের মানিসিকতা পরিহার করা উচিত।

আমাদের দেশে কোরআন-সুন্নাহর ওপর ভিত্তি করেই নারীনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রধর্মের কারনে মেয়েরা পর্দার মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। মানুষ শিক্ষিত হলে সাধারনত সচেতন হয়। সচেতন মানুষ যে-কোনও অন্যায় ও অসুন্দরের বিপক্ষে বলবার যোগ্যতা অর্জন করে। মানুষের প্রধান প্রয়োজন স্বাধীনতা। নারীর এই স্বাধীনতাকে রাষ্ট্র অবরোধ করছে।পরাধীনতা মানুষকে অসুস্থ করে, বিকৃত করে, মন এবং শরীরকে পঙ্গু করে। ধর্ম মানুষকে হাসতে দেয় না, যেমন ইচ্ছে চলতে দেয় না। ধর্ম মানূষকে 'অমানুষ'-এ পরিনত করে, ধর্ম নারীকে করে পুরুষের ক্রীতদাসী। একটা হাদীস মনে পড়ছে- "যে সমস্ত স্ত্রীলোক স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহে হিংসা না করিয়া ছবর করিয়া থাকে, তাহাদিগকে আল্লাহ শহিদের তুল্য সওয়াব দান করিবেন।" ধর্মের দালানকোঠা যদি মানুষে-মানুষে ভালোবাসা নষ্ট করে তবে এই পৃথিবী থেকে ধ্বংশ হয়ে যাক মন্দির, মসজিদ, গির্জা ও প্যাগোডার সকল অস্তিত্ব। ইট সুরকির চেয়ে ভালোবাসা বড়।

বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা- যে প্রতিযোগিতা নারীকে পন্য হিসেবে ব্যবহার করবার একটি উৎকৃষ্ট মাধ্যম- সেই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনকে তারা নারীর মুক্তি বলে রায় দিচ্ছে। মোহ মানুষকে কতটা অন্ধ করে, উন্মাদ এবং অবিবেচক করে! তসলিমা নাসরিন বারবার নারীকে বলেছেন- স্বাবলম্বী হতে, বলিষ্ঠ হতে, ব্যক্তিত্ব কে প্রধান করতে। নারীর মনোমুগ্ধকর শরীর ব্যবহার করে বাহবা পাওয়ার পক্ষপাতী তসলিমা নন; তসলিমা নাসরিন চান, নারী তার রুপ নয়, গুন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হোক।

যে কোনও পন্যের বিজ্ঞাপনের নারীও এক ধরনের পন্য।
তার চোখ, ভুরু, চুল, নাক, ঠোঁট, ঠোঁটের হাসি, বুক, বুকের গঠন- বাজারের পন্যের চেয়েও বড় পন্য হিসেবে বিচার করা হয়। পুরুষের শেভিং-এর ব্লেড, আফটার শেভ, শার্টিং-স্যুটিং, জুতোমোজা, শ্যাম্পু-সাবান সব কিছুতেই অনাবশ্যক নারী এনে হাজির করা হয়। যেদিন এই সমাজ নারীর শরীর নয়- শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নয়-নারীর মেধা ও শ্রমের মূল্য দিতে শিখবে, কেবল সেদিনই নারী 'মানুষ' বলে স্বীকৃত হবে। নারীর জয় হোক।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৪৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×