somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ১১৯

১০ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

ইদানিং আমার খাই খাই স্বভাব হয়েছে।
শুধু নানান পদের খাবার খেতে ইচ্ছা করে। কয়েকদিন ধরে নেহারী খেতে ইচ্ছা করছে। গরুর পা কিনতে গিয়েছিলাম। চারটা পা দুই হাজার টাকা চাইলো। আমি বললাম, আমাকে একটা পা দিন। কসাই বলল, নিলে চারটা নিতে হবে। একটা পা বিক্রি করি না। বাসায় সুরভি নেই। সে তার বাবার বাড়ি গেছে। সুরভি ভালো নেহারি রান্না করতে পারে। গরুর পা কেনার চিন্তা বাদ দিলাম। কিন্তু নেহারি তো খেতে হবে। আমাদের এলাকায় রেস্টুরেন্টে সকালে নেহারী পাওয়া যায়। ১৫০ টাকা করে। কিন্তু স্বাদ ভালো না। কৃত্রিম একটা স্বাদ। আসল নেহারীর স্বাদ পাওয়া না গেলে আমার আছে? আমার সমস্যা হলো একটা জিনিস খেতে ইচ্ছা হলে, না খাওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি লাগে না। কেমন অস্থির অস্থির লাগে। অর্থ্যাত আমাকে নেহারী খাওয়ার জন্য পুরান ঢাকা যেতেই হবে।

আমার ধারনা- পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ভালো নেহারী বানায় পাকিস্তানিরা।
ওদের দেশে যাওয়া তো সম্ভব না। শুনেছি পাকিস্তানের লাহোরে আনারকলি মার্কেটের সামনে একলোক নেহারী বিক্রি করে। দারুন স্বাদ। লোকটা ভোর চারটায় আনারকলি মার্কেটের সামনে রাস্তায় আসে। দুই ঘন্টার মধ্যে তার নেহারী শেষ। এই নেহারী খাওয়ার জন্য লোকজন রাত তিনটা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে। আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে পুরান ঢাকায় গেলাম। কলকাতা বাজার এলাকায়। একদিকে রায়সাহেব বাজার। অন্যদিকে ধোলাইখাল। ব্যস্ত রাস্তা। নেহারী খেলাম স্বাদ পেলাম না। বাসা থেকে দেড়শ' টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে এখানে এসেছি। নিজের উপর নিজের বিরক্ত লাগলো। পরের দিন গেলাম মোহাম্মদপুর। জেনিভা ক্যাম্পের কাছে। শুনেছি চান্দু নামের একলোক এখানে দারুন নেহারী বানায়। খেলাম। কিন্তু ভালো লাগলো না। নাকি আমার স্বাদ নষ্ট হয়ে গেছে? অনেককেই দেখলাম পাগলের মতো খাচ্ছে।

আমি শুনেছি, মানুষের মৃত্যুর আগে অনেক কিছু খেতে ইচ্ছা করে।
আমি কি মরে যাবো? সময় ঘনিয়ে এসেছে? নইলে আমার হঠাত হঠাত এটা ওটা খেতে ইচ্ছা করে কেন? সেদিন ঘুম থেকে ওঠার পর লইট্রা শূটকি ভূনা খেতে ইচ্ছা করলো গরম ভাতের সাথে। মাকে বললাম। মা নিজের হাতে রান্না করে দিলো। যদিও মা এখন রান্নাবান্না করে না। মা নিজেই বাজার থেকে লইট্রা নিয়ে এলো। আমি বলেছিলাম, আমি এনে দেই। মা বলল, তুই চিনে ভালোটা আনতে পারবি না। দুপুরে গরম ভাতের সাথে লইট্রা দারুন লাগলো। তৃপ্তি করে খেলাম। এবং ভাতঘুম দিতে গিয়ে একটা স্বপ্ন দেখে ফেললাম। দেখি, আমি সমুদ্রে লইট্রা মাছ ধরছি। জাল ফেলছি, শুধু লইট্রা মাছ উঠে আসছে। তখন দেখা পেলাম 'দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি' উপন্যাসের বুড়ো নাবিক সান্টিয়াগো'র। বললাম, কি খবর আপনার? বুড়ো নাবিক উত্তর দেবার আগেই আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।

মতিঝিলে একটা রেস্টুরেন্ট আছে- হীরা ঝিল নামে।
অনেকদিন আগে এই রেস্টুরেন্টে একদিন বৃষ্টির দিনে গরম গরম খিচুড়ি খেয়েছিলাম। দারুন লেগেছিলো। এরপর আমি বহুবার এই রেস্টুরেন্টে খিচুড়ি খেয়েছি। কিন্তু সেদিনের মতো স্বাদ পাইনি। ঘটনা কি? ঘটনা হচ্ছে, সেই খিচুড়ি যে বাবুর্চি রেধেছিলেন, তিনি এখন নেই। সে বাবুর্চি এখন কোথায় আছে, সেটা জানার জন্য লোক লাগিয়েছি। যাইহোক, ফরিদপুরের বোয়ালমারী জজ কোটের সামনে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। সেই রেস্টুরেন্টে খাসির মাংস রান্না করে। খেতে দারুন। বড় বাটিতে বড় বড় অনেক গুলো খাসির মাংসের টুকরো দেয়। একদিন আমি খেতে বসেছি। আমার সামনে বাটিতে খাসির মাংস দিলো। বড় বড় টুকরা। মোট সাতটা টুকরা। আমি বোকা নই। জিজ্ঞেস করলাম কত করে? বলল, ১২০ টাকা। আমি ভীষন অবাক! এত গুলো মাংস মাত্র ১২০ টাকা! মনে মনে ভাবালাম গ্রাম দেশ বলেই হয়তো দাম কম। আমি সাতটা টুকরাই খেয়ে নিলাম। খাওয়ার পর জানতে পারি, একটা টুকরো ১২০ টাকা করে, সব গুলো নয়। তাহলে ওরা আমাকে এক টুকরাই দিতো। এত গুলো টুকরো দেওয়ার কারন কি?

গুলিস্তানে একটা রেস্টুরেন্টা আছে- নাম নিউ রাজ।
আর রাস্তার ঐ পাড়ে একটা রেস্টুরেন্ট আছে- নাম রাজধানী। এখন রাজধানী হোটের মান একেবারে কমে গেছে। একসময় দারুন ছিলো। সে যাকগে, নিউ রাজ রেস্টূররেন্টে একদিন দুপুরে খেলাম। আস্তো খাশির পা। কচি খাশি। লেক পিছের সাইজটা এত্ত বড়! বলা যেতে পারে ৫/৬ টা চিকেন রোস্টের সমান। দারুন স্বাদ। বাবুর্চির রান্না ভালো। কয়েকদিন ধরে এই খাসির লেক পিছটা খেতে ইচ্ছা করছে। ঢাকার আর কোনো হোটেলে এত বড় লেক পিছ বিক্রি করে না। বেশির ভাগ রেস্টুরেন্টে খাসির মাংস রান্না করে মুগডাল দিয়ে। কেন মুগুডাল ছাড়া কি খাশির মাংস রান্না করা যায় না? আগে আমাদের এলাকায় একটা হোটেল ছিলো। দারুন গরুর কালা ভূনা করতো। সেই রকম স্বাদ। গরম ভাতে সাথে খাও, নান দিয়ে খাও, দারুন স্বাদ। এরকম স্বাদ আমি আর অন্য কোথাও পাই নাই। অথচ খুব নামীদামী হোটেল ছিলো না। হোটেলটা উঠে গেছে। আফসোস।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩০
১৫টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×