somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজিন সংক্ষেপণ: Star Wars Movie Series

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কয়েকদিন পরেই মুক্তি পাচ্ছে Star Wars মুভি সিরিজের সপ্তম সংস্করণ The Force Awakens। সারা বিশ্বের মানুষ বলতে গেলেই পুরাই পাগল। কিছুদিন আগেও স্টার ওয়ারস সংক্রান্ত আমার জ্ঞান ছিল প্রায়ই শুন্যের কাছাকাছি। কিন্তু The Force Awakens যদি না দেখি তাহলে তো পুরাই মান –ইজ্জত নিয়া টানাটানি অবস্থা । যাই হোক ভাবলাম দেখিই না কি জিনিস এই স্টার ওয়ারস?

স্টার ওয়ারস নিয়ে আমার জ্ঞান সীমিত না হবার কোন কারণ নেই। স্টার ওয়ারসের মূল মুভিগুলি ৭০-৮০ দশকের। এত পুরান মুভি ক্যামনে দেখুম? ছোট বেলায় গুনে গুনে কয়েকটা মাত্র ইংলিশ মুভি দেখেছি: টার্মিনেটর-২ , জুরাসিক পার্ক, টাইটানিক এবং কিছু তুকতাক। সুতরাং স্টার ওয়ারস নিয়ে আমার জ্ঞান খুবই নবীন এবং আমি বিরাট ভক্ত লেভেলেরও কেউ নই। এই লেখাতে শুধুমাত্র আমার জ্ঞানগুলি শেয়ার করছি মাত্র। লেখাটিতে আগের মুভিগুলি সংক্রান্ত স্পয়লার থাকবে। এবং অবশ্যই কিছু ভুল ত্রুটি থাকবে। আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

১৯৭৭ সালে জর্জ লুকাস নির্মাণ করলেন একটি মুভি যার নাম Star Wars। মুভিটি সবার এতই পছন্দ হয়েছিল যে চিন্তার বাইরে। এরপর নির্মিত হয় এর পরবর্তী পর্ব ১৯৮০ সালের The Empire Strikes Back এবং ১৯৮৩ সালের Return of The Jedi। দ্য এম্পায়ার স্ট্রাইকস ব্যাক কে এখনও অন্যতম সেরা মুভির দরজা দেয়া হয়। মুভিগুলির ভয়ানক সাফল্যের ১৬ বছর পর পুনরায় জর্জ লুকাস স্টার ওয়ারসের মুভি নিয়ে আসেন যেটার পটভূমি ১৯৭৭ সালের মুভির আগের কাহিনী অর্থাৎ প্রিকুয়েল। মুক্তি পায় পরপর তিনটি মুভি: The Phantom Menace(1999), Attack of the Clones(2002) এবং Revenge of The Sith (2005)। কিন্তু এবার হলো উলটা কাহিনী। ব্যবসা সফল হলেও এ মুভিগুলি আগের মুভিগুলির তুলনায় পুরাই যাচ্ছে তাই। যাই হোক, কাহিনীর সময়ের প্রবাহ বোঝানোর জন্য প্রত্যেক মুভির সামনে এপিসোড নাম্বার দেয়া হলো। প্রথম তিনটি মুভি ৪,৫ ও ৬ এবং শেষের তিনটি ১,২ ও ৩। ব্যাপারটি সহজ করার চেয়ে আরও ভেজাইল্লা হয়ে গেছে। এদিকে প্রথম মুভির নতুন নাম Episode IV: A New Hope। এপিসোড ১,২,৩ ফালতু হবার কারণে প্রথম দিকের মুভিগুলিকেই বলা হয় Star Wars Original Trilogy শুধুমাত্র যেগুলিই আমি দেখেছি। সামনের ‘দ্য ফোর্স এ্যাওয়েকেনস’ হলো পর্ব ৭ সুতরাং এটি মূল ট্রিলজির সিকুয়েল।

ছোটবেলায় নানা-নানীর কাছে গল্প শুনতাম। একদেশে ছিল এক অত্যাচারী রাজা। তার রাজ্যে অন্যায় অত্যাচারে প্রজারা অতিষ্ট। অবশেষে কিছু বিদ্রোহী উঠে দাড়ালো সেই রাজার বিরুদ্ধে। বিদ্রোহীদের অন্যতম আরেক রাজ্যের রাজকুমারী। বিদ্রোহীরা চেষ্টা করছে কিন্তু রাজার বাহিনী অনেক শক্তিশালী। অত্যাচারিত প্রজাদের প্রতীক্ষা, কবে আসবে তাদের বিপদের ত্রাতা? যে রক্ষা করবে এই অত্যাচারী রাজা থেকে?

বিশ্বাস না হলেও এটাই স্টার ওয়ারসের কাহিনী। পার্থক্য শুধুমাত্র এটির রাজ্য কোন পৃথিবীর ভূমিতে নয় বরং কোন দূর গ্যালাক্সি। ভাবতেই চরম লাগে। একইভাবে বিভিন্ন তারকা সিস্টেমের বিভিন্ন গ্রহে চলছে একটি শয়তান সাম্রাজ্য। সম্রাটের নাম প্যালপাটিন। বিভিন্ন গ্রহের এলিয়েন মিলে তৈরি বিদ্রোহী সংগঠন বিভিন্ন গ্রহতে লুকিয়ে থাকে। শয়তান সম্রাটের কোন স্পেস শিপ গেলেই গুলি মেরে উড়ায় দেয়। বিদ্রোহীদের অন্যতম সদস্য প্রিন্সেস লেয়া।

এক সময় মহাকাশে শান্তি রক্ষা করতো এক যোদ্ধা শ্রেণী যাদেরকে বলা হয় JEDI ( জেডাই)। সকল জেডাইদের প্যালপাটিনের বাহিনী হয় মেরে ফেলেছে অথবা পলাতক। হয়তো নতুন এক তরূণ জেডাই তাদের মাঝে আসবে এবং শয়তান সাম্রাজ্যের ধ্বংস করবে।

মূল চরিত্রগুলি সম্পর্কে জানা যাক।
Luke Skywalker: বিখ্যাত সাবেক জেডাই অ্যানাকিন স্কাইওয়াকারের পুত্র। তার ইচ্ছা বিদ্রোহীদের দলে যোগদান। কিন্তু সে তার চাচা-চাচীদের সাথে এক শুষ্ক গ্রহে চাষাবাদ নিয়েই পরে আছে। আর কতদিন চাষাবাদ নিয়ে পরে থাকবে সে? লুক চরিত্রে অভিনয় করেছেন মার্ক হ্যামিল।


ছবি: বাম থেকে ডানে: লুক স্কাইওয়াকার, প্রিন্সেস লেয়া এবং হান সোলো।

Princess Leia: বিদ্রোহীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রিন্সেস লেয়া। মুভির প্রধান নায়িকা হলেও এটি কোন পুতুল চরিত্র নয়। লেয়ার চরিত্রটি অত্যন্ত শক্তিশালী। সে অত্যন্ত তুখোড় যোদ্ধা এবং বিচক্ষণ ব্যক্তিত্যের অধিকারীণি। লেয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন ক্যারি ফিশার।
Han Solo: ফটকা মার্কা একটি চরিত্র। পেশায় একজন স্মাগলার। কিন্তু ট্যাকা পয়সা নিয়ে কিছু ঝামেলায় আছে। গুন্ডা বদমাইশদের কাছে ট্যাকা ধার কইরা এখন আর শোধ করতে পারছেনা। খুবই দারুন এক চরিত্র। যেমন রসিক তেমন অহংকারী। এই চরিত্র করেই সবার নজর কেড়েছেন হ্যারিসন ফোর্ড। সোলো, তার সহযোগী চিউবাকা এবং তার স্পেসশিপ মিলেনিয়াম ফ্যালকন তৈরি আগামী কাজের জন্য।


ছবি: মূল ভিলেন ডার্থ ভেডার

Darth Vader: স্টার ওয়ারসের মূল ভিলেন কিন্তু সম্রাট প্যালপাটিন নয়। বরং তার অনুগত এক সাবেক জেডাই ডার্থ ভেডার। ডার্থ ভেডারের ব্যাপারটা বোঝার জন্য জেডাইদের ধর্ম Force সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। স্টার ওয়ারসের দুনিয়াতে প্রত্যেকটি বস্তু একে অপরের সাথে বল বা Force এর মাধ্যমে যুক্ত। সেটা অবশ্য পদার্থবিজ্ঞান অনুযায়ীও সত্য। কিন্তু জেডাইদের একটি শক্তি হচ্ছে যে এরা সেই বলকে পরিবর্তন করতে পারে। নিউটন জেডাই হলে আপেলটাকে মাটিতে পরার আগেই ভাসিয়ে নিয়ে নিজের বাসায় পৌছায় দিতে পারতেন। সেই ফোর্সের দুরূপ: আলো এবং অন্ধকার। আলোর দুনিয়ায় সত্য এবং ন্যায়। অন্ধকার দুনিয়ার ফোর্স অনেক শক্তিশালী। কিন্তু সেখানে শুধুমাত্র অসত্য, হিংস্রতা এবং নিষ্ঠুরতা। ভেডার ছিল আলোর পথের নামকরা জেডাই। কিন্তু অন্ধকার দুনিয়ার আকর্ষণে সে এখন সম্রাটের গোলাম। একটি দুর্ঘটনায় ভেডারের দেহ পুরে যায় এবং একটি হাত ও একটি পা খসে পড়ে। সেজন্য সে সর্বদা একটি বিশেষ কাপড় পরিধান করে যেটি খুললেই সে মারা যাবে। ভেডার চরিত্রটি অসাধারণ মানের। ভেডার চরিত্রে কন্ঠ দিয়েছেন জেমস আর্ল জোনস।

মূল ট্রিলজির কাহিনী সংক্ষেপে বলি।
আগে বলেছি লুক স্কাইওয়াকার একজন চাষা। চাচা হঠাৎ নির্দেশ দিলেন হাট থেকে দুইটা লাঙল আর একটা রোবট নিয়ে আসতে। চোরাবাজারে রোবট সস্তা। তার উপর নতুন অফার। একটার সাথে আরেকটা ফ্রি। এভাবে লুকের সাথে পরিচয় দুই রোবট R2D2 এবং C3PO এর সঙ্গে। এদিকে R2D2 এর দু-তিনটা স্ক্রু ঢিলা করতে গিয়ে একটি ভিডিও চালু হয়ে গেল। ভয়ংকর সুন্দর এক রাজকন্যা বলে উঠলো:”Obi Wan Kenobi, আমাদের বাঁচান!”। কে এই ওবি ওয়ান? আমার বেন মামা নয়তো? বেন মামার জন্যই সেই ভিডিও। বিদ্রোহী রাজকুমারী লেয়ার পাঠানো সন্দেশ।

বেন মামা লুকের মৃত বাপ এনাকিন স্কাইওয়াকারের ওস্তাদ। সেও একজন জেডাই। লুকেরও জেডাই হবার বিরাট শখ। সেও বিদ্রোহী সংঘে যোগ দিতে চায়। বেন তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও সে তারা চাচা-চাচীদের ছেড়ে কীভাবে যাবে? মন খারাপ করে বাসায় এসে দেখে তার বাসা আর নেই। শয়তান সাম্রাজ্যের সেনারা এসে তার চাচা-চাচীকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মেরেছে। লুকের আর যাবার কোথাও নেই। তাই সে ওবি ওয়ানের সাথেই রওনা দেয় বিদ্রোহীদের ঘাঁটি এলডেরন গ্রহে।

কিন্তু যাবার জন্য চাই রকেট। দেখা হয় হান সলো এবং তার সংগী চিউবাকা ওরফে চিউয়ির সাথে। তার জাহাজ মিলেনিয়াম ফ্যালকন আবার আলোর বেগের চেয়েও গতিশীল। রওনা হয় এলডেরনের পথে। কিন্তু এলডেরনে গিয়ে দেখা গেল গ্রহটি সেখানে নেই। গ্রহের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে আছে। শয়তান সাম্রাজ্য এক উপগ্রহের সমান আকারের একটি যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করেছে যার নাম ডেথ স্টার। এই ডেথ স্টার একটি গ্রহকেও ধ্বংস করতে পারে। আবার পাশ দিয়ে যে কোন জাহাজ গেলেই সেটাকে জাল দিয়ে আটকে ফেলতে পারে। ঘটনাক্রমে ডেথ স্টারের জালে আটকে পড়ে হান সোলোর জাহাজ। কোন মতে ডেথ স্টার থেকে পালানোর উপায় খোঁজে তারা। এরই মধ্যে লুক জানতে পারে সেই ভিডিওর সুন্দরী রাজকন্যা এখানেই বন্দী। বিরাট ভেজালের পর লুক এবং সংগী সাথীরার মিলে লেয়াকে ছাড়িয়ে পালায়। কিন্তু ডার্থ ভেডারের কাছে মৃত্যুবরণ করে ওবি ওয়ান।

R2D2 এর কাছে লেয়া শুধু ভিডিও পাঠায়নি। পাঠিয়েছে এই ডেথ স্টারের মূল নকশা। মূল নকশায় ধরা পড়ে ডেথ স্টারের দুর্বল জায়গা। সেই দুর্বল জায়গায় আঘাত হানতে প্রস্তুত বিদ্রোহী দল। এবার সেই বিদ্রোহীদের সেনাবাহিনীতে আছে লুক স্কাইওয়াকার। কেন জানি তার মধ্যে এক অন্যরকম চমক। বলা হয় ফোর্সকে নাড়াচাড়া করার মেধা তার বাবার মত তারও আছে। অবশেষে প্রচুর স্পেসশিপ যুদ্ধ শেষে লুকের বীরত্বে সফল হয় বিদ্রোহীরা। ডেথ স্টার ধ্বংস হয়। ডার্থ ভেডার কোনক্রমে বেঁচে যায়। ডার্থ ভেডারের চোখে পড়ে লুকের মেধা। লুক হতে পারে তার চেয়েও বড় জেডাই। কিন্তু আলোর দলে জেডাই থাকলে অন্ধকার দল তো বিপদে পড়ে যাবে। একটাই উপায়, লুককে আনতে হবে অন্ধকারের জগতে।

কিন্তু কীভাবে লুক হবে জেডাই? ওবিওয়ান তো মারা গেছে। একজন আছেন। ওবিওয়ানের গুরু Yoda।
এদিকে সম্রাটের নির্দেশ। যেভাবেই হোক লুক স্কাইওয়াকারকে দলে ভিড়াও। সাম্রাজ্য তৈরী তাদের প্রতিশোধ নিতে। হামলা চালায় বিদ্রোহীদের আরেক ঘাঁটিতে। কোনমতে বিদ্রোহীরা সেখান থেকে পালাতে বাধ্য হয়। এদিকে লুক বিদ্রোহীদের থেকে আলাদা হয়ে চলে যায় ইয়োডার খোঁজে। অন্যদিকে হান সোলো, লেয়া পালিয়ে বেড়াচ্ছে তার মিলেনিয়াম ফ্যালকনে। ফ্যালকনের ইন্জিনে কিছু গোলমাল থাকায় আলোর বেগে নড়াচড়া করা একটু কঠিন হয়েগেছে। হান সোলোর মতে এই ধীরগতির জাহাজে বেশিক্ষণ না থেকে পাশের গ্রহের বন্ধু ল্যান্ডোর কাছে যাওয়া যাক। সেই জাহাজের মেরামতের ব্যবস্থা করবে। ল্যান্ডো তো হান সোলোকে দেখে বিরাট খুশি। তার ঘরে ঢুকেই দেখা গেল ডার্থ ভেডার ল্যান্ডোর বাসায় আগেই পা তুইলা বইসা আছে। সবাইকে আটক করা হয়।
ডার্থ ভেডার এর কাছে তৈরী এক খাঁচা। মানুষকে জমায় দিয়ে পাথর বানায় ফেলে। এইটা করেই লুকরে বাসায় নিমু। কিন্তু আগে টেস্ট করতে হবে হান সোলোর উপর। হান সোলোকে পাথর বানায় পাঠায় দেয় তার পাওনাদারের কাছে।

এদিকে লুকের জেডাই হবার প্রশিক্ষণ চলছে। কিন্তু ফোর্সের মাধ্যমে সে অনুভব করে তার বন্ধুরা বিপদে আছে। ইয়োডাকে বুড়া আংগুল দেখিয়ে লুক আসে তার বন্ধুদের বাঁচাতে। এদিকে ডার্থ ভেডার তৈরী তার খাঁচা নিয়ে।

কিন্তু লুকও যে সে লোক নয়। সে কিছু প্রশিক্ষণ তো পেয়েছেই। চরম এক মারামারি হয় ডার্থ ভেডারের সাথে। লড়াইয়ের এক সময় লুক ডার্থ ভেডারকে বলে :”তুমিই কী আবার বাবাকে হত্যা করেছো?”। ডার্থ ভেডারের বিধ্বংসী জবাব: “ না লুক। আমিই তোমার বাবা। ”



ছবি: “ না লুক। আমিই তোমার বাবা। ”

লুকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। এই ডার্থ ভেডারই অ্যানাকিন স্কাইওয়াকার? তার বাবা! হে ধরনী দ্বীধা হও। লুক একটি খাদে লাফ দেয়। কোনক্রমে একটি গাছের ডালে আটকা পড়ে সে। মনে মনে ডাকে: “ লেয়া। আমাকে বাঁচাও।“ লেয়ার মন হঠাৎ যেন স্পষ্ট সে ডাক শুনতে পায় লুকের। লেয়া, লুককে বাঁচিয়ে নিয়ে ওখান থেকে পালায়। ডার্থ ভেডারের মনে এখনো আশা হয়তো ছেলেকে পাশেই পাবো। না হলে হয়তো মেয়েকে পাবো।

লেয়া কিছুটা হান সোলোর প্রেমে বিভোর। বহু ঝড়-ঝঞ্ঝা পাড় করে লুক এবং লেয়া হান সোলোকে পাথর থেকে গলিয়ে উদ্ধার করে। এদিকে সাম্রাজ্য তৈরী করছে নতুন ডেথ স্টার। সরাসরি সম্রাটের তদারকিতে। ডার্থ ভেডারকে নির্দেশ যেভাবেই হোক সম্রাটের সাথে লুক স্কাইওয়াকারের দেখা করাতে হবে। এদিকে বিদ্রোহী বাহিনী নতুন ডেথ স্টারে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত। শুধু প্রয়োজন ডেথ স্টারের রক্ষণজাল বন্ধ করে দেয়া। সেই দায়িত্ব নেয় লেয়া এবং হান সোলো। এদিকে লুকের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েগেছে। ইয়োডার কাছে লুক জানতে পারে যে তার একটি বোন আছে। সে আর কেউ নয়। রাজকুমারী লেয়া। লেয়াকে জানায় লুক। লুকের এখন নতুন উদ্দেশ্য। কোনভাবে কি তার পিতাকে আলোর পথে আনা সম্ভব? হয়তো! সেজন্য তার পিতার আবার মুখোমুখি হতে হবে।

সম্রাটের নতুন ডেথ স্টারে নিজেই ধরা দেয় লুক। সম্রাট তো যারপরনাই খুশি। অন্ধকার জগতে এই সুবিধা সেই সুবিধা। কিন্তু লুক মানে না। শুরু হয় আরেক লড়াই ডার্থ ভেডারের সাথে। ডার্থ ভেডার এর লড়াই এবার এক পরিপূর্ণ জেডাইয়ের সাথে। শক্তির চেয়ে বুদ্ধি দিয়ে জিততে হবে। ডার্থ ভেডার লুককে বলে :”তুমি অন্ধকারে না আসলে সমস্যা নাই। লেয়া ঠিকই আসবে।” সহ্য হয় না লুকের। এক পোঁচে হাত কেটে দেয় নিজের বাপের। সম্রাট বুঝতে পারেন আমাকেই কাজ সামলাতে হবে। নিজের হাত থেকে কারেন্ট শক মেরে লুকরে পুড়াই ফেলতে থাকে। ডার্থ ভেডার তার চোখের সামনে নিজের পুত্রের মৃত্যু দেখতে পারে না। সম্রাটকে ডার্থ ভেডার নিজেই হত্যা করে।


ছবি: শেষ দেখা পুত্রের সাথে।

সম্রাট মৃত। ডার্থ ভেডারও মৃতপ্রায়। নিজের হেলমেট খুলে শেষবারের মত নিজের পুত্রকে দেখে মৃত্যুবরণ করে এই সাবেক জেডাই। লুক তার বাবার শেষ মূহূর্তটি অত্যন্ত আলোর জগতে আনতে পেরেছিল। সাম্রাজ্যের পতন হয়। সব সময়ের মত ন্যায়রই জয় হয়েছে।

এতটুকু ছিল মূল ট্রিলজি অর্থাৎ এপিসোড ৪,৫,৬ এর কাহিনী। এপিসোড ৭ এর কাহিনী বোঝা যাচ্ছে অনেক বছর পরের। লুক, লেয়া এবং হান সোলো সবাই এখন বয়ষ্ক। আগের সব কাহিনী মানুষের মুখে মুখে রূপকথা হয়ে ঘোরে। কিন্তু সবাই নাস্তিক। বিশ্বাস করেনা যে ফোর্স,জেডাই, শয়তান সাম্রাজ্য এগুলির অস্তিত্ব কখনও ছিল। কিন্তু এতদিন পরে ডার্থ ভেডারের পথ ধরে আসছে কাইলো রেন। সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে।


ছবি: সাম্রাজ্য তেরী আক্রমণের জন্য।

ছোটখাট আরও কিছু তথ্য দিয়ে রাখি। সাম্রাজ্যের সেনাদের বলা হয় স্টর্ম ট্রুপার। সাদা পোশাক পড়া চরম গাধা লেভেলের সৈনিক। কিন্তু নতুন মুভিতে খুব সম্ভবত নায়ক নিজেই একজন স্টর্ম ট্রুপার। এছাড়া জেডাইদের এক ধরণের লেজার তলোয়ার আছে যেটি পিঁয়াজ হোক কিংবা মানুষের মাথা সবই কাটতে পটু। তলোয়ারগুলিকে বলা হয় লাইট সেবার। এছাড়া হান সোলোর সংগী চিউবাকা ওরফে চিউই এক জন উকি। এক ধরনের শক্তিশালী এলিয়েন কিন্তু কথা বলতে পারেনা। এলিয়েন বলা হয়তো ঠিক হচ্ছে না কারন এই মুভিতে পৃথিবীর উল্লেখ নেই। সেকারণে মূল চরিত্ররা আসলে মানুষই না।

আশা করতে পারি স্টার ওয়ারস সম্পর্কে কিছু তথ্য দিতে পেরেছি। যদিও লেখাটা একটু বড় হয়েগেছে। দেখা যাক কেমন হয় Star Wars: Episode VII: The Force Awakens।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১০
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×