somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী ও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারীর মন বলতে কিছু নেই, অবিবাহিতদের প্রেমের ফাঁদ পাতা নিত্য অভ্যাস, স্বামীর পকেট খসানেই বিবাহিতা মেয়েদের একমাত্র কাজ।
বিয়ে অত্যন্ত ভয়ংকর একটা জীবন, দাম্পত্য কলহের মূলে নারী দায়ী। নারীর সৌন্দর্য, নারীর বডি ফিগার, বাপের বাড়ি থেকে প্রাপ্ত গহনা-সম্পদ, টাকা-কড়ির উপর নারীর মূল্য নির্ধারণ হয়ে থাকে। চার দেয়ালের মধ্যেই নারীর স্থান।

এই ধারণা গুলো আমাদের সমাজব্যবস্থায় প্রচলিত রয়েছে। মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত হওয়া ও চাকরি করার ব্যাপারে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, বিয়ের বাজারে দাম বাড়ানোর জন্য মেয়েদের সামান্য লেখাপড়া করানোর মত লজ্জাজনক প্রথা প্রচলিত রয়েছে। ‘নারী স্বামীর ঘরে গিয়ে যতই দাপটের সঙ্গে চলুক, স্বামীর উপর যতই চোটপাট করুক, যতই বিলাসিতার মধ্যে গা ভাসাক। তবুও নারী স্বামীর ঘরে বা বাপের ঘরে কোথাও স্বাধীন নয়। নারীদের পছন্দের ছেলেকে বিবাহ করা অথবা বিয়ের ব্যাপারে মতপ্রকাশ করতে পারার কোন স্বাধীনতা নেই। এমনকি ধার্মিক পরিবার গুলোতেও মেয়েদের মতামত মূল্যায়ন করা হয় না। পাত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে চরিত্রবান, শিক্ষিত ও ধার্মিক ছেলের পরিবর্তে ধনী ছেলেদের পছন্দ করার মত পশ্চিমা কালচার আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে।

একজন পুরুষ স্বামী হিসেবে ‘বউকে ভয়’ পেতে পারেন, তার চাহিদা পুরণের জন্য অস্থির হতে পারেন, তাকে নানা মধুর বিশেষণে ভূষিত করতে পারেন, তাতে ঐ নারীর কিছুতেই সম্মান করা প্রমাণ হয় না। বরং নারীর সৌন্দর্য ও দৈহিক লালসা থেকেও এমন মধুর আচরণ করা হয়ে থাকে। নারীর দাপট অহংকার পুরোটাই ফাঁপা, কোনটাই তার অর্জিত নয়, কোনটাই তার নিজস্ব নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, মুহূর্তের মধ্যে একজন পুরুষ ডাকসাঁইটে বউকে চুপসে দিতে পারে, বউয়ের নাকে বর্ষি বেঁধে ঘুরাতে পারে। আমাদের সমাজ পুরুষের এই ক্ষমতা নিশ্চিত করে রেখেছে।’’

অনেকেই নারীর প্রতি ব্যাঙ্গ করে বলে থাকে, "বিয়ের পর নারীরা এতটাই অসহ্য হয়ে উঠে যে, কখনো কখনো পুরুষ তার মৃত্যুকামনা করতে বাধ্য হয়। আবার মেয়েদের বুদ্ধি নিয়ে সর্বত্রই আছে অবজ্ঞা আর উপহাস। কবিতা, সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, গানে, গল্পে, কৌতুকে; নারীর প্রতি যে ঠাট্টা, উপহাস ও তামাশা করা হচ্ছে, তা আইয়্যামে জাহিলিয়াতকেও হার মানায়।

যেমন কেউ কেউ বলেন, "স্রষ্টা মেয়েদের সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন যাতে পুরুষ তার প্রেমে পড়ে, আর মেয়েদের নির্বোধ করে সৃষ্টি করেছেন যাতে তারা পুরুষের প্রেমে পড়ে"।

লম্পট কবি সাহিত্যিরা তাদের কবিতা ও সাহিত্যে নারী দেহ নিয়ে অরুচিকর কথা লিখেছেন। সিনেমা পরিচালরাও নারীকে ভোগ্য পণ্য হিসাবে উপস্থাপন করেছে। বিজ্ঞাপনে নারী শরীরকে লোভনীয় দৃষ্টিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। নারীরা এখানে ‘দজ্জাল’ বা ‘কলহপ্রিয়’ ইমেজে উপস্থাপিত হয়েছে। আর যে মেয়েরা দৃষ্টিনন্দন তারা সাধারণত ‘ছলনাময়ী’ ‘মাথামোটা’ অথবা ‘শপিং-বিলাসী’ রূপে আবির্ভূত। অর্থাৎ নারী সর্বদাই রূপায়িত হয়েছে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে।

অথচ এইসব কলহপ্রিয়, শপিং-বিলাসী, বহুগামিনী, অর্থলিপ্সু নারীর বিপরীতে যেসব দায়িত্বহীন, সংসার উদাসীন, মাতাল, লম্পট স্বামী থাকে তা কখনো উপস্থাপন করে না। আবার সুন্দরী প্রতিযোগিতাকে তুলে ধরা হয় নারী স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে। অথচ নারী তার সচেতন স্বজ্ঞায় উপলব্ধি করছে না যে, এই প্রতিযোগিতা পণ্যসর্বস্ব পুঁজিবিশ্বের প্রসাধন সামগ্রীর বিপণন বিজ্ঞাপনের বৃহত্তম মঞ্চ।

নারীর প্রতি এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে ইসলামই একমাত্র সমাধান দিয়েছে। নারীর উপযুক্ত সম্মান একমাত্র ইসলাম দিয়েছে। নারীর সম্মান, স্বাধীনতা, নারীর অগ্রাধিকার, নারীর নিরাপত্তা বিধানে ইসলাম একমাত্র সমাধান। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে নারীদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক অপপ্রচার রয়েছে; তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন। বরং ইসলামী সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হলে, নারীরা সবার আগে মুক্তি পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০৮
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×