somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সিংগাপুর ও মালেশিয়া ভ্রমন পর্ব(১)

২৩ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা ৩ জন যেতে চেয়েছিলাম ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ বালি আর মালেশিয়ায়। প্লেন ফেয়ার কমানোর জন্য, ইন্ডিয়া থেকে এয়ার এশিয়ায় মালেশিয়ায়, মালেশিয়ায় বিমান বদল করে বালি, বালিতে ৩/৪ দিন থেকে আবার সোজা মালেশিয়া । সেখানে ২/৩ দিন থেকে, ইন্ডিয়া হয়ে দেশে চলে আসবো, এরকম একটা ট্যুর প্ল্যান করলাম। প্ল্যান মত,ইন্টারনেট থেকে এয়ার এশিয়ার সস্তা টিকিট কাটা হলো । মালেশিয়া আর ইন্দোনেশিয়ার ভিসা নেওয়া হলো। বাকি থাকলো ইন্ডিয়ার একটা ডবল জার্নি ভিসার।

ইন্ডিয়ার ভিসা ব্যাপারে আমার এক্সপেরিয়েন্স মোটেও ভালো নয় ,তার উপর আবার ডবল জার্নি ভিসা।(গত বছর ভ্রমনের পরই ঠিক করেছি ব্যবসার কাজে ছাড়া আর কোনদিন ইন্ডিয়া যাবো না।) কিন্তু সহযাত্রিদের সুবিধার কথা ভেবে নিমরাজি হলাম। যথারীতি বহুত ত্যানা প্যাচাপ্যাচির পর ,দু দুবার আবেদন করেও ডবল জার্নি ভিসা পাওয়া গেল না। প্রথমে অতি বেয়াদপ মহিলাগুলা ,ভিসার ডকুমেন্ট গ্রহন করতেই রাজি হয় নাই।পরে ওদের এক বসের কাছে ক্লিয়ারেন্স নিয়া রিসিভ করেছে। তখনই ওরা বলল, "এজাতীয় ভিসা ঢাকা থেকে দেয়না।" তাহলে ওয়েবে এই অপশনটা রেখেছে কেন ? বাংলাদেশিদে জন্য ভিসা আইনে এই পয়েন্টগুলা মেনশন করতে পারতো। যতসব ফাউল কাজকাম। অন্য তিন দেশের ভিসা জয়পুরহাটে একরকম ঘরে বসে পেয়েছি। কিন্তু দাদাদের ভিসা নেয়ার জন্য কাজকাম ফেলে দুই বার ঢাকা যেয়ে চার দিন থাকতে হলো। আর ফলাফল শুন্য। আসলে ইন্ডিয়া চায়না আমরা ওদের দেশে যাই।X((

দাদাদের ভিসা না পেয়ে লস করে এয়ার এশিয়ার টিকিট ক্যানসিল করা হলো। আবার প্লান করতে বসলাম ,কিভাবে সহজে এবং কম খরচে বালি আর মালেশিয়ায় ঘুরে আসা যায় । বালির কোন ডিরেক্ট ফ্লাইট না থাকায় মেইনলি ভেজাল টা লাগলো। কোনভাবে কিছুই মেলাতে পারছিলাম না । শেষে একটা সহজ উপায় বের হলো, সেটা হলো মালেশিয়ার একটা ডবল এন্ট্রি ভিসা নেয়া। তাহলে সস্তা এয়ার এশিয়া তে এই দুই দেশ আরামে ঘুরে আসা যায় । কিন্তু যেহেতু কিছুদিন আগেই মালেশিয়ার একটা ভ্যালিড ভিসা নেয়া হয়েছে, সেটা ক্যনসিল করে আবার ডবল এন্ট্রি ভিসার ঝামেলায় গেলাম না। তাই এই প্ল্যান বাতিল। আর একটা উপায় হলো, সিংগাপুর থেকে বালি, বালি থেকে মালেশিয়া , মালেশিয়া থেকে ঢাকা এইরকম একটা ট্রিপ প্ল্যান কর। কিন্তু এতে আবার খরচ বেশি হচ্ছে। ভেজালের শেষ নাই। এই সব প্ল্যান করতে করতে ৩ মাস পার হয়ে গেল। এদিকে মালেশিয়া আর ইন্দোনেশিরার ভিসার ডেট শেষ হওয়ার পথে। এতসব ভেজাল দেখে আমাদের এক সহযাত্রি ট্যুর ইস্তেফা দিলো।

বাকি থাকলাম আমি আর পিয়াস। শেষ মুহুর্তে আমি এক রকম ডেসপারেট হয়ে গেলাম, যে ভাবেই হোক, যেদিক দিয়েই হোক, সুজা হোক, আর বাকা হোক ,যেতেই হবে । কারন আমার সিংগাপুরের একটা ভিসা মিস আছে । এখন আবার পরপর এ দুটা দেশের ভিসা মিস হয়ে গেলে সমস্যা হতে পারে। সিরিয়াল ৩ টা দেশে ভিসা নিয়া একটাতেও যাই নাই ব্যাপারটা এমন হয়ে যাচ্ছে। নেকষ্ট টাইম কোন এ্যামবাসিতে এটলিষ্ট ভিসার জন্য গেলে পিডাইতেও পারে। এ অবস্হায় ,আমি আর আমার বন্ধু পিয়াস ফাইনাল ডিসিশান নিয়ে নিলাম । আগে সিংগাপুর যাবো তারপর অবস্হা বুঝে ব্যবস্হা নেব। সিংগাপুর এমনিতেই ডবল এন্ট্রি ভিসা দেয়। যেটা আমাদের জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট। খুজে খুজে আবার সস্তা এয়ারওয়েজ টাইগার বের করলাম। ওদেরকে দিয়েই ভিসা করালাম । ভিসা হাতে পেয়ে অবাক হলাম, এবার সিংগেল এন্ট্রি ভিসা দিসে। তাই টাইগারের রিটার্ন টিকেট আবার ক্যানসিল করলাম। এবার অবশ্য ডোনেশান দিতে হয়নি।

কোথা থেকে কোথা যাবো তার ঠিক নাই। বাট শেষে মালেশি্যা থেকে দেশে আসবো, তাই ইউনাইটেড এয়ারের রিটার্ন কর্নফাম টিকিট কাটলাম। টিকিট ক্যানসেল বা ডেট বদল করা যাবেনা ,এই শর্তে একটু কম টাকা লাগলো টিকেটে । হায়রে সস্তা ! সস্তা খুজতে খুজতে ঘাড়ে আর একটা দেশ এসে পরলো। আর সস্তার যে ত্রিশ অবস্হা হয় সেটা টাইগারে উঠে বুঝতে পারলাম। ওটা একটা নাইটমেয়ার ছিলো। যাউক গা, এতকিছু করে অবশেষে ২৩ জুন ভোর ৫ টায় সিংগাপুরের মাটিতে পা রাখলাম।

সিংগাপুর এয়ারপোর্টে টাইগার এয়ারওয়েজ আমাদেরকে বাজেট টার্মিনালে নামিয়ে দিল । বাজেট টার্মিনাল ডমেস্টিক এয়ার আর টাইগারের মত বাজে প্লেন গুলার জন্য বরাদ্দ। চাংগি এয়ার পোর্টের বাজেট টার্মিনাল দেখে নিজের দেশের এয়ারপোর্টের দীন্যতা আর অব্যবস্থাপনার কথা মনে করে খুব খারাপ লাগলো। ইমিগ্রেশান এর ভেতরে নোংরা টয়লেট ব্যাবহার করতে বমি এসে গিয়েছিলো । ইমিগ্রেশানে পুলিশ হুদাই সময় নষ্ট করলো। আমার ৮ বছরের পুরানো হাতে লিখা পাসপোর্টের ছবি পুরাতন হয়ে গিয়েছে। এখন একটু মোটাসোটা হয়ে গেছি। এই নিয়ে গ্যাজানো । অনেক সময় নিয়ে আমাকে ঝামেলায় ফ্যালানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে শেষে ডিপার্টাচার সিল মেরে দিলো ।
সিংগাপুরের ইমিগ্রেশানে অফিসার এক ঝুরি চকলেট নিয়া বসে আছে। মাত্র দুটা প্রশ্নের জবার দিতে হয়েছে। তারপর ইমিগ্রেশানের অফিসার হাসি মুখে ওয়েলকাম টু সিংগাপুর বলে পাসপোর্টে এরাইভাল সিল মেরে দিলো। সেখানেই ঠিক করলাম বালি মালিতে গিয়ে আর কাজ নাই। সিংগাপুরেই ট্যুরের অর্ধের সময় কাটিয়ে মালেশিয়া চলে যাবো।

এয়ারপোর্ট থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড (এম আর টি) ট্রেনে লিটিল ইন্ডিয়া চলে এলাম। সেখানে হোটেলে ব্যাগপত্র রেখে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করলাম।( উইকি ট্রাভেল আর গুগুল ম্যাপ এর কল্যানে ডেস্টিনেশান গুলা পানির মত সোজা হয়ে গেছে কোন ঝামেলা হলো না।) তারপর ছুটলাম http://www.sentosa.com.sg/en/' target='_blank' >সেনটোসা আইল্যন্ডের দিকে। শুরু হলো আমাদের ঝটিকা সিংগাপুর এক্সপ্লোরিং ।













সেনটোসা তে ছোট ছোট সুন্দর কিছু বিচ আছে ।বিখ্যাত http://www.underwaterworld.com.sg/' target='_blank' >আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড , ইউনিভারসেল স্টুডিও ক্যাসিনো ছাড়াও অনেক কিছুই আছে সেনটোসাতে ।আর আছে সেরকম সেরকম কাপরচোপর পরা মানুষজন ।:P

এ ব্যাপারে একটা কথা না বললেই নয়, সেটা হলো সেনটোসায় ঘুরতে ঘুরতে চোখে পরলো বিকিনি পড়া কিছু মেয়ে স্টেজে র্যাম্প করছে। ওটা একটা ইভেন্ট ছিলো যা রেগুলার হয় না ।মিস সিংগাপুরিয়ান বিউটি কনটেস্ট চলছিলো মনেহয় সেখানে অনেক ভীর ছিলো। সবাই ছবি তুলছে মডেলদের। চামেচামে আমিও কিছু তুলছি। B-)











পরে জনপ্রতি ৫০ ডলার দিয়ে আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড এ ঢুকেছিলাম।












শার্ক











ধন্যবাদ আজ এ পর্যন্তই।

পরের পর্বে সিংগাপুর মেরিনা বে আর রিভার সাইড এর ছবি এবং বর্ননা থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১২:৩৮
১৩টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×