> ব্লগে পা দেয়া ১০ মাস আগে ।
>> কি বিরক্তিকর এই চর্চা -- তুমি কবে পারা দিয়েছো তাতে কার কি এসে যায় :-<
> চুপরাও বেয়াদব আমাকে বলতে দাও -- হ্যা যেটা বলছিলাম -- দশমাস দেখতে দেখতে চলে গেলো
>> দশমাস দেখতে দেখতে যায়নি --গর্দভ -- দশমাস দশমাসের মতো চলেছে । তোমার এত ন্যাকামি দেখে আফসুস হচ্ছে ।
> তুমি আমাকে বলতে দেবে না কি ? {বিব্রতকর হাসি }
হে হে হে ওর কথায় মাইন্ড করার কিছু নাই -- ও নেহাতই আমার খড়গজিভ স্বত্তা । আসলে ব্লগে আসা আরো অনেক আগে ২০০৭ এর দিকে -- রেজি করেছিলাম -- কিন্তু ভুলে গেছি । এরপর অনেক দিন বিচ্ছেদ । প্রথম প্রথম বাংলা টাইপ করতে অনেক কষ্ট হতো । একটা কমেন্ত লিখতে ২০ মিনিট লাগতো । ব্লগ পলিটিক্সের সাথেও পরিচয় ছিলো না ।
প্রথম দিকে কারো সাথে পরিচয়ও ছিলো না বলা যায় ।
পোষ্টের পর পোষ্টে কমেন্তের দেখা নাই । পরিচিত না হলে কেউ লেখা পড়েও না
>> আরে বাবা -- সোজা বাংলায় বলো না -- আই স্ক্র্যাচ ইউর ব্যাক - ইউ স্ক্র্যাচ মাইন ।
> এটা বুঝি বাংলা হলো ?
>> ইয়ে মানে ? :#> আজকাল তো এসবই স্মার্টনেস । ১০০ তম পোষ্টে তুমি না পারো - আমি একটু স্মার্টনেস দেখাই ।
> অনেক বকবক করেছো এখন ১০ মিনিটের জন্য চুপ থাকো । পাঠকের বিরক্তি ধরাচ্ছো তুমি । আর "ফর ইউর ইনফরমেশন " ইংরেজি বলাটা স্মার্টনেসের কোন সংজ্ঞার মধ্যে পরে না ।
হে পাঠক কূল -- বিনীত অনুরোধ -- ওটা কে ইগনোর করুন।
তো -- আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচিতি বাড়লো ।
ব্লগীয় ইন্টারেকশন যাকে বলা যায় । সেলেব্রিটি থেকে নন-সেলেব্রিটি সবার ব্লগ পড়া শুরু করা । সাথে সবাইকে কমেন্ত দেয়া। আমি যেহেতু টেকি -- তাই টেকিদের আশে- পাশে ঘুরাঘোরি করতাম বেশি। বাইরে থাকার কারনে গল্প উপন্যাস ও পড়া হতো না তেমন । সেটার চাহিদাও মিটলো ।
বলা যায় প্রথম দুতিন মাস ছিলো মধুমাস ।
>> হমমম অথবা হিটাংকাখী মাসও বলা যায় । একটা কমেন্তের জন্য অপেক্ষা । হোহোহো ।
> বলতে থাকো । তারপরই শুরু হলো ব্লগীয় ব্যানব্যানানি খেলা । সকাল বিকাল খাবার পোষ্ট । আমিও নতুন বিপ্লবীর মতো সবার সাথে সামিল হৈলাম । সবার সাথে নতুন করে হৃদ্যতা হলো ।
>> ওফ ! গ্রো আপ । এইসব ব্যান আনব্যান -- সবই হিটের কারনে -- সামুর হিটের আকাল হলেই এসব শুরু হবে । এটা বুঝতে এত দিন লাগলে তোমার কপালে দু:খ আছে ।
> কি জানি -- আমি পুরোপুরি একমত না । প্রথম কথা হলো কাউকে ব্যান হতে দেখলে বিরক্তি লাগে । আসলে কেউ ঠিক সিওর না এসব বেলাই কি হয় । কোন সময় মনে হয় ব্লগারদের এভাবে রি এ্যাক্ট করা ঠিক হয়নি । কোন সময় মনে হয় ছাগল মডু কনটেক্সট বোঝে নি । ওপেন স্পেস মানেই সব সম্ভবের অলীক দেশ না । আবার মডুদের নীতিমালা আকড়ে ধরে রাখার কোন কারন নাই -- নীতিমালা মানুষেরই তৈরী । তারচে বড়ো কথা হলো -- ব্লগারদের ইন্টারেষ্ট আর কর্তৃপক্ষের ইন্টারেষ্ট এক না ।
ঠিক তারপর পর ই পিলখানার হত্যাকান্ড শুরু হয়ে গেলো । ব্লগ ভাগ হয়ে গেলো দু শিবিরে । কেউ আর্মির পক্ষে - কেউ বিপক্ষে । কিন্তু যেই পক্ষেই হোক হত্যাকান্ডের অমানুষিকতায় স্তব্ধ ।
>> আর্মির উপর যাদের ব্যক্তিগত বিদ্বেষ আছে -- তারা এই সুযোগে বেশ ঢোল পিটিয়ে নিলো -- তাই না ?
> সেতো নিবেই -- খুব কম মানুষই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বাইরে যেতে পারে ।
>> হ্যা -- ব্লগে মুখোশ পড়া খুব সহজ -- ব্লগে মহান সাজা খুব সহজ ।
> সবারই ত্রুটি বিচ্যুতি আছে । তাই বলে সবাই সব দাগ দেখায় বেড়ায় না ।
এরপর নাস্তিক-আস্তিক ক্যাচাল দেখলাম । অনেক গুলোতে গলা ফাটিয়ে চেচালাম । নিজের বোধের মনে হয় তেমন পরিবর্তন হয় নাই । শুধু জ্ঞান বাড়ছে এই যা । কথায় আছে না -- হোয়াটএভার ডাজেন্ট কিল ইউ , অনলি মেক ইউ স্ট্রংগার ।
>>এটাও হিট বাড়ানির আরেক ফন্দি । আর তারচে বড়ো কথা তুমি নিজেও বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী নিয়ে শিওর না ।
> সেটা সত্য । আমার জ্ঞান এখন পূর্ন হয় নাই । তারপর অর্ধসত্য -- বিকৃত সত্য কে কনফিডেন্স নিয়ে পরিবেশন করতে দেখলে রাগ লাগে ।
ততদিনে আমি মোটামুটি পরিচিতি পেয়ে গেছি । মানুষ ব্লগ লিখলে পড়ে -- ইন্টারেকশনের কারনে কমেন্ত পাই ও বেশ ।
এবার শুরু আমার প্রতিকাব্য লেখার পালা । শুরুতে অনেক যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়েছে । সবাই উৎসাহ দেয়ায় যাত্রা থেমে যায় নি ।
>> হো হো হো প্রতিকাব্য -- প্রথমে অন্যের কবিতার ফরম্যাটে কবিতা লেখার চেষ্টা । দুর্বল শব্দ -- বানান বিভ্রাট ।
দূর্বল আইডিয়া । আমার তো সন্দ আছে এগুলো আসলে মানুষ কাব্য বলে কিনা ।
> খামোশ!! সবাই তাহলে এমনিতে বাহবা দেয় বলতে চাও । আর কিছু লিখলে একদম মানদন্ড মেনে ভালো হতে হবে এটা তোমাকে কে বলেছে । যার কাছে ভালো লাগার লাগবে -- না লাগলে নাই ।
কাব্য বিষয়ে কাউকে সমালোচনা করলে খেপে যাওয়াই স্বাভাবিক -- সেটা যদি হয় চাছাছোলো সমালোচনা । বা উস্কানি দেয়ার জন্য সমালোচনা । কবিতা জিনিসটার সাথে দূর্বলতা নরোম একটা ব্যাপার জড়িয়ে থাকে বলে আরো খারাপ লাগে ।
মুক্তিযুদ্ধ -- আমাদের আরেক আবেগের নাম । অনেকের পোষ্ট পড়ে তাদের আবেগ খানি ধরতে চেষ্টা করেছি । নতুন করে অনেক কিছু জেনেছি । ব্লগিং যে কারনে অনেক দারুন -- অনেক মানুষের সংস্পর্শ পাওয়া যায় -- যাদের সাথে জীবনে কথা হতো কিনা খোদা মালুম । যারে তারে ছাগু ট্যাগ দিয়ে গালি দেয়া অবশ্য আমি পক্ষপাতী না । যে কোন নিরীহ লোক এর পাল্লায় পরে যেতে পারে । তবে জামাতিদের গালিও দিয়েছি যখন মনে হয়েছে এটার প্রকৃত বাসস্থান পাকিস্থান । ইন্ডিয়া আমাদের মা-বাপ এমন মনোভাবধারীদের গালি যদিও দেয়া হয় না -- তবে ঘৃনা করা যায় । আসলে এসব ব্যাপার কোন ভাবমূর্তি (!) ধরে রাখা কঠিন । আমরা বাংগালি বলে কোন না কোন ট্যাগ পেয়েই যাই ।
>> মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা গালিবাজি ব্যবসা করে -- শেইম অন দেম !!
> আস্তে ধীরে বৎস -- তম পোষ্টে গ্যান্জাম করতে হয় না ।
গালিবাজি প্রসংগে চলে আসে নিক বাজি আর ট্রোলিং । একমুখে দুইকথার প্রকৃষ্ট উদাহরন । তবে বাস্তবতা হলো -- দুনিয়াটা ভালো মানুষের জায়গা না । চালাক না হতে পারলে নিশ্চিন্হ হতে হবে । না হয় -- আক্রমনের শিকার হয়ে যেতে হবে । এসব ব্যাপারে কাউকে কিছু বলে লাভ নেই । যে যেমন আছে সে তেমন ছিলো আর - থাকবে ।
তো এরপর চলে আসি পোষ্ট বিস্বাদে । এখন আর প্রথম দিকের মতো ১টা কমেন্তের জন্য তীর্থের কাকের মতো বসে থাকা লাগে না । তারপর পোষ্ট দিতে ইচ্ছে হয় না । একটা কথা আছে না কোন কিছু অর্জন করার চে রক্ষা করা কঠিন ।
তাছাড়া সবই আসলে একঘেয়ে হয়ে যায় একসময় ।
মানুষ, মদ , সিগারেট , প্রেমিকা , বাচ্চা , গাড়ী ,টাকা , খাবার , গান, বই । সবকিছুই ।
>> আবার ?! বোরিং - বোরিং - বোরিং !!!
> আবার পূর্নরুপে ক্যাচালে ফিরব কিনা চিন্তা করি । আজকাল কিছুতে উৎসাহ পাই না ।
রাজনীতি দেখে বিরক্তি লাগে । এরা দেশ কে চুষে খাবে ।
খাচ্ছে । এত রাগার কি হলো । রাজনৈতিকের কাজ ই এটা ।
আমাদের কাজ ভোট দিয়ে তাদের ক্ষমতায় পাঠানো ।
তাদের কাজ চোষা ।
নারীবাদী তর্ক গুলো দেখি মাঝে মাঝে । আমি নিজে ভ্রমে আছি -- না অন্যরা ভ্রমে থাকে এটা বুঝতে পারি না । আজকাল সংসার -- পরিবার -- ধর্ম -- সমাজ সবকিছুর ইন্সট্যান্ট ম্যাগি নুডলসের মতো ফর্মুলা আবিস্কার হয়ে গেছে । এসব গিলতে পারি না ঠিক মতো । ছেলে মেয়ে পরস্পরের পরিপূরক । দুনিয়ার অন্য সব যুদ্ধ বিগ্রহের মতোই এখানে কেউ কাউকে ছাড় দিতে চায় না।
>> তোমার তত্ত্বকথা শুনতে মানুষের বয়েই গেছে ...
> বেশী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু । ব্লগিং করে -- অফিসে কাজকামে
অসংখ্য ফাকি দিয়েছি । এখনো দিচ্ছি । মাঝে মাঝে পরিবারকেও ফাকি দিয়েছি । কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয় । তারপরও এটাই মনের কথা বলার শেষ আশ্রয় ।
ওভারওল বিবেচনায় ব্লগ নিয়ে আমি আশাবাদী । কিছু দারুন বন্ধু জুটেছে । আমি সবসময় চিন্তা করতাম -- আমার মতো যারা চিন্তা করে এরা কই থাকে । কেন এদের দেখা পাই না ।
বন্ধুদের সাথে বৈষিয়ক আলাপই বেশী হতো । সেটা খারাপ না -- তবে একটা ভালো গান শুনলে , একটা ভালো বই পড়লে , একটা ভালো মুভি দেখলে শেয়ার করার কাউকে খুজে পেতাম না । ব্লগিং এই মানসিক চাহিদাটা পূরন করেছে ।
লেখালেখির একটু স্বপ্ন ছিলো -- সেটার দুধের স্বাদ ঘোলে মিটছে ।
কারো নাম উল্লেখ করালাম না ইচ্ছে করেই -- কোন পোষ্টে মানুষ নিজের নাম সবার আগে খুজে । না পেলে মন খারাপ হয় । তাই কাউকে হতাশ করতে ইচ্ছে হলো না ।
কমেন্তের মধ্যে ভাব-ভালবাসা তো চলেই -- এই পোষ্টে
লিখতে হবে এমন কোন কথা নাই ।
>> নিজের ব্যাপারে ঘ্যান ঘ্যানানি বাদ দিয়ে মানুষের কথা কিছু বলবে -- এতক্ষন ধরে পোষ্টটা পড়ছে কিছু শোনার আশায়
> ও হ্যাঁ । ধন্যবাদ । ব্লগ এসে নানান টাইপের ছাগলের সাথে যেমন পরিচয় হয়েছে - তীক্ষ্ন বুদ্ধির কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে । কিছু কিছু গল্প -- কবিতা তো ক্লাসিক পর্যায়ে । আমি লেখালেখি ভালো করিনা ঠিক -- তবে কোনটা ভালো লেখা এই বিষয়ে ভালো জ্ঞান আছে ।
অসংখ্য ভালো মানুষ আছেন ব্লগে -- যাদের সংস্পর্শে এসে কৃতার্থ হয়েছি । অসংখ্য ভালো লেখা -- ইন্টারেষ্টিং পোষ্ট -- ছবি দেখেছি । অনেক আড্ডাবাজি করেছি সিনেমা, কবিতা , বই নিয়ে ।
গান শুনেছি -- শুনিয়েছি । ব্লগের ইন্টারেকশনটা লেখালেখির জন্য যেমন খারাপ -- আড্ডাবাজির জন্য তেমনি দারুন ।
শততম পোষ্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
>> আবার ন্যাকামি ?
> তুমি চুপ ! একবারে চুপ
আমার নিজেকে অভিনন্দন তম পোষ্টের হ্যাপা মুক্ত হয়ে।