মোবাইলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যবহার
মোবাইল শব্দটি আমাদের কাছে এখন অত্যন্ত সুপরিচিত একটি নাম। দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজে আমরা এই শব্দটি ব্যবহার করে আসছি। মোবাইল প্যান্ট একসময় খুব জনপ্রিয় ছিল তরুনদের কাছে, মোবাইল কোর্ট দেখলে অনেকেই ভয় পায়। তবে আজকের বিষয় এধরনের কোন মোবাইল নিয়ে নয়। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আমরা আরও কি কি করতে পারি এবং আমাদের দৈনিিন্দন চলার পথ অনেক সহজ ও সুন্দর করতে পারি সে বিষয়ে আজকের এই লেখা।
আমাদের দেশে মোবাইল ফোন প্রথম আসে ১৯৯৩ সালে। তখন মোবাইল সেটের দাম ছিল অনেক বেশি। সেসময় অনেকে হয়তো কল্পনাও করেনি এত দ্রুত মোবাইল ফোন আমাদের দেশে এত জনপ্রিয় এবং বিস্তার লাভ করবে। প্রথম যখন এই মোবাইল ফোন দেশে আসে তখন এটি ছিল শুধুমাত্র কথা বলার একটি যন্ত্র। কিন্তু বর্তমানে এটিকে আর শুধু কথা বলার যন্ত্র বলার সুযোগ নেই। এই যন্ত্রটি ব্যবহার করে ছবি তোলা ও ভিডিও করা, গান শোনা, রেডিও শোনা, এসএমএস পাঠানো (ডাক বিভাগকে প্রায় অচল করে দিয়েছে), ইন্টারনেট ব্যবহার করা, বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা যেমনঃ পানি, বিদ্যুত, গ্যাস ইত্যাদির বিল পরিশোধ করা, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম পুরোন ও প্রবেশপত্র সংগ্রহ করা, ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া (বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর ডাক্তার সেবা প্রদান করছে), কৃষকদের জন্য বিভিন্ন তথ্য প্রদান করা, এসএমএস ব্যংকিং করা, বিভিন্ন পাবলিক পরিক্ষার ফলাফল এসএমএস এর মাধ্যমে জানা। স¤প্রতি যুক্ত হয়েছে ট্রেনের টিকেট কাটার সুবিধা ও এসএমএস এর মাধ্যমে লটারীর টিকেট কাটার সুবিধা।
খুব শিঘ্রই আরও দুটি সুবিধা মোবাইলের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব হবে আশা করা যাচ্ছে। একটি হচ্ছে মোবাইল একাউন্টঃ এটি হবে একটি ব্যাংক একাউন্টর এর মত একটি একাউন্ট। যেহেতু প্রত্যেক মোবাইল নম্বর ইউনিক সেজন্য এই মোবাইল নম্বরটিই মোবাইল একাউন্ট নম্বর হিসেবে সহজেই ব্যবহার কার সম্ভব। এই মোবাইলের মাধ্যমে সকল ধরনের লেনদেন করা সম্ভব হবে। আপনার অফিসের বেতন ব্যাংক একাউন্টর মত মোবাইল একাউন্ট এ ট্রান্সফার হবে। আপনি সেই একাউন্ট থেকে আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কেনাকাটা ও লেনদেন করতে পারবেন। দোকানে গেছেন চারশ টাকার বাজার খরচ করেছেন, মোবাইলের ব্যালান্স ট্রান্সফার এর মাধ্যমে আপনার বাজারের দাম দোকানীকে পরিশোধ করে দিলেন। বাসের টিকেট কেটেছেন মোবাইলের মাধ্যমে ট্রান্সফার করে দিলেন। নগদ টাকার ঝামেলাও নেই, টাকা চুরি বা ছিনতাইয়ের ভয়ও নেই। আবার যদি আপনার নগদ টাকার দরকার পরে তবে বিভিন্ন অপারেটার / নির্ধারিত ব্যাংকে গিয়ে আপনার মোবাইলের ব্যালান্স থেকে নগদ টাকায় পরির্বত করে আনছে পারবেন। ভাবছেন আজগুবি গল্প করছি। না আজগুবি নয়। আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এধরনের পদ্ধতি সেখানে সফলভাবে কাজ করছে। টাকা পয়সার হিসাব আপনি অনায়াসে মেলাতে পারবেন মোবাইলের মাসিক বিস্তারিত বিল দেখে।
এই পদ্ধতির সুবিধা শুধু কাগজে নোট ব্যবহার কমবে আর টাকা চুরি ছিনতাই কম হবে তা নয়। আপনার অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত, ব্যাংকে লাইনে দাড়ানোর হয়রানি কমানো, সন্তানের টাকা খরচ করার খাত সমূহ মনিটরিং সহ আরও অনেক কাজ সহজ করে দিবে।
এই মোবাইলর মাধ্যমে আরও একটি কাজকে সহজ করা সম্ভব। যেমনঃ মোবাইল মার্কেট। এই মার্কেট হবে একটু ভিন্ন ধরনের। গতানুগতিক নয়। প্রত্যেক পাড়ায় পাড়ায় যে সকল সুপারশপ আসে তাদের কাছে যে প্রডাক্ট আছে সেগুলো বিক্রি হবে মোবাইলের মাধ্যমে এবং প্রতিদিন সেই সুপারশপ কর্তৃপক্ষ হোম ডেলিভারীর ব্যবস্থা করে দিবে। এই ডেলিভারী প্রতিদিন ৩/৪ বার করে হতে পারে। এই জন্য গ্রাহকরা সামান্য কিছু সার্ভিজ চার্জ প্রদান করবে। আর অনেক গ্রাহকের প্রডাক্ট একসাথে ডেলিভারী দিলে বিক্রেতারও ভালো লাভ থাকবে।
পদ্ধতিটি হতে পারে এরকম, ঢাকা শহরকে যদি আমরা উদাহরণ ধরি তবে ঢাকায় অনেক চেইন সুপারশপ আছে তাদের কাছে অনেক প্রডাক্ট পাওয়া যায়। তারা তাদের সকল প্রডাক্টের বৈশিষ্ট্য ও দাম সহ একটি ক্যাটালগ তৈরি করবে। সেই ক্যাটালগে প্রত্যেকটি আইটেমের ইউনিক কোড নাম্বার থাকবে। সেই কোড ব্যবহার করে গ্রহকরা সেকল প্রডাক্টের অর্ডার করতে পারবে। এর জন্য সেই সকল সুপার শপে আরও ১/২ জন বাড়তি জনবল লাগবে। যারা এই প্রডাক্টের অর্ডার সমূহ বাছাই ও পৌছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে। আর মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাহকরা টাকা প্রদান করতে পারবে। এজন্য অবশ্য মোবাইল অপারেটরদের সাথে চুক্তির প্রয়োজন আছে।
এখন প্রশ্ন হলে, এই পদ্ধতিতে গ্রহকরা কেন কিনবে? ঢাকা শহরের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে এই শহরের বর্তমানে অন্যতম একটি সমস্যা যানজট ও পরিবহন সমস্যা। যদি আপনি আপনার রিকশা ভাড়ার সমপরিমান বা তার চেয়েও কম সার্ভিস চার্জে কোন সুপারশপ আপনাকে আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী আপনার বাসায় পৌছে দিয়ে যায়, তবে আপনি নিশ্চই সেই সেবা গ্রহণ করবেন। এতে আপনার সময় ও অর্থ দুটোই বাচলো।
আলোচিত ব্লগ
আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।
আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার
মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের
আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন
ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান
উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!
এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন