আইভরিকোস্টের আইন ও সমাজ ব্যবস্থায় বিয়ে করতে চাইলেই পাত্রকে পাত্রীর বাবার হাতে আগে নগদ অর্থ ও মদের বোতল তুলে দিতে হবে। আর স্বামীর মৃত্যু হলে দেবরকে বিয়ে করতে হবে। নতুবা স্বামীর বাড়িতে সন্তানদের রেখে চলে যেতে হয় পিতার কাছে। অধিকাংশ তরুণীর প্রেমিকের সাথে বিয়ে হয় সন্তান জন্মের পর। বয় ফ্রেন্ড কিংবা প্রেমিকের সাথে বসবাস ও অবাধ মেলামেশার অধিকার রয়েছে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি পরিশ্রমী। স্বামী উপার্জন করে ও স্ত্রী ঘরে বসে থাকে না। তারা সকাল-সন্ধ্যা বাইরে কাজ করবেই। শহর কিংবা গ্রামের বাজার হোক না কেন দোকানে বিক্রেতা হিসাবে সব বয়সের নারীদের দেখা যাবে। বেশীরভাগ পুরুষই অলস।
জেন্যুলা রেডিওর নিউজ সেকশনের প্রধান অলিভার। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের খবর পেয়ে তিনি নিজেই দেখা করতে ছুটে আসেন। অলিভার জানালেনঃ তার বাবা স্কুল শিক্ষক এবং মা ফল বিক্রেতা। আবিদজান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রেম করলেও বিয়ে করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এর প্রধান কারণ তারা জন্মসূত্রে আইভরিয়ান নন। আইভরিকোস্ট স্বাধীন হওয়ার পর তার বাবা ও মা বারকিনাফাসো থেকে এদেশে এসেছিলেন।
অলিভারের জন্ম বোয়াকে শহরে। আইভরিয়ান না হওয়ার কারণে বিয়ের জন্য প্রেমিকার পিতাকে রাজী করাতে পাঁচ বছর সময় লেগেছিল। প্রেমিকার পিতা গত মার্চ মাসে বিয়েতে মত দেন। এরপর অলিভার নগদ এক লাখ ১০ হাজার সিফা ও ১০ বোতল মদ নিয়ে প্রেমিকার পিতার হাতে দেন। গত এপ্রিলে বিয়ে করে বউ ঘরে উঠিয়ে নেন।
নগদ অর্থ প্রদান ও মদ দেয়া আইভরিয়ান নিয়ম। মেয়েকে লালন-পালন করতে বাবার যে খরচ হয় তাকে সম্মান দেখানো এবং বিয়ের আয়োজন করতে নগদ অর্থ দেয়া নিয়ম। মদ হচ্ছে আমোদ-ফুর্তি করার জন্য। সমাজে ছেলের অবস্থান বিবেচনা করে নগদ অর্থ ও মদ দাবি করা হয়। অলিভার জানানঃ স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীর জীবন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। দুই পরিবারের প্রথম সিদ্ধান্ত হচ্ছে স্বামীর ছোট ভাই থাকলে তাকে বিয়ে করতে হবে। মেয়ে যদি তার দেবরকে বিয়ে করতে রাজী হয় তাহলে সন্তানদের কাছে রাখতে পারবে এবং স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু দেবরকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মৃত স্বামীর সম্পত্তির কিছুই পাবে না। একই সাথে স্বামীর বাড়িতে সন্তানদের রেখে একাকী বাবার বাড়িতে ফিরে যেতে হয়।
আইভরিকোস্টের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হেনরি কোনান বেদীর এলাকা ডাউক্রোর যুবক মুসা জানান, বিয়ে হবে ধর্মীয় নিয়ম মেনে। তবে ধর্ম যাই হোক না কেন আইভরিয়ান আইনে মেয়ের বাবাকে নগদ অর্থ ও মদের বোতল দিতেই হবে। মুসার পিতা আহসান ১৯৫৮ সালে মালি থেকে আইভরিতে এসেছিলেন। পেশায় ছিলেন লরি চালক। মা সিতা বেগম ২০০৫ সালে মারা যান। তার স্ত্রী হাওয়া ডাউক্রো বাজারে ফলের ব্যবসা করেন।
অলিভার ও মুসা আরো জানান, শিক্ষিত পুরুষরা চাকরি কিংবা ব্যবসার সাথে জড়িত। তদুপরি পুরুষদের সিংহভাগ অলসভাবে সময় কাটিয়ে দেয়। মা-বোন কিংবা স্ত্রীর উপার্জনে সংসার চলে এবং এই অলস পুরুষরা বসে বসে খায়। তারা এতোটাই অলস যে বাসার সামনে অথবা বাজারে একটি চেয়ারে হেলান দিয়ে অন্য চেয়ারে দু’পা উঠিয়ে পুরো দিনটাই পার করে দেয়। এই দু’জনের কথার সত্যতা পাওয়া গেছে পুরো আইভরিকোস্টে। মেয়েরা দোকান, হাট-বাজার ও ক্ষেতে কাজ করার পর বাড়িতে ফিরে সংসারের কাজ করে। প্রতিটি শহরের ফুটপাতে ছোট ছোট টং দোকানে পসরা সাজিয়ে নারীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকে।
বিঃদ্রঃপোষ্টের সঙগে ছবির কোনো সম্পর্ক নাই
আইভরি কোষ্টে বিয়ে করতে চাইলে পাত্রীর বাবাকে তুলে দিতে হয় নগদ অর্থ ও মদ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বস্তিবাসী সেই অগ্নিকন্যাকে নিয়ে লেখা একটি কাব্যগাথা

ঢাকার আকাশ তখন ধুলোমাখা সন্ধ্যার রঙে ছিল ডেকে
বস্তির সরু গলিতে শিশুদের কান্না
নর্দমার স্রোতের মতো দীর্ঘশ্বাস ফেলে
সেই অন্ধকার জন্মঘরে প্রথম আলো দেখেছিল
এক বস্তিবাসী কন্যা শিরিন
এখনো এক অচেনা নাম
যার ভেতর... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাবুল আলীই আমাদের বাংলাদেশের প্রতীক

আপনাদের কি এই ছবিটার কথা মনে আছে? এই বছরের শুরুতে চলতি বছরের জানুয়ারীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বেআইনিভাবে বাংলাদেশের জমিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রিয় চাচা

সরকার বাড়ির প্রিয় চাচা, ক্ষমা চাওয়ার
ভাষাটা হারিয়ে ফেললাম-চোখে বৃষ্টিস্নাত;
অগুনিত স্মৃতিপাতায় শুধু বাড়ই পাড়া
প্রগতি সংঘের রোদ বৃষ্টি ঝড়; খোলা আকাশটা
আজ বড়ই শোকাহত চাচা- আপনাকে হারিয়ে
ফেললাম, সেই রাজনৈতিক ঝগড়া, রাগ... ...বাকিটুকু পড়ুন
=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=
আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগ কি শিখিয়েছে?

অপমান, অপদস্থ থেকে বাঁচার উপায় শিখাইনি? ওস্তাদ মগা শ্যামী পাহাড়ে বসেও এসবের সমাধান করতে পারে, আপনি সামান্য অসুস্থতার জন্যও ব্লগে মিলাদ দেননি, দোয়া করেছেন কার জন্য? খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।