হুট করেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল; খুব অস্থিরতা কাজ করছে কবিরের!! কতদিন যে অনিন্দিতার সাথে দেখা নাই! ওকে একদিন না দেখলেই অস্থির লাগে আর আজ তো এক সপ্তাহ হতে চলল.........
সেইদিন খুব করে বলেছিল অনিন্দিতা, আমি তোমার, দেখো সারাজিবন তোমার সাথে থাকব। তোমাকে ছেড়ে কোত্থাও যাবনা। এমন কি পরলোকেও না। তুমি আজ আমাকে গ্রহণ কর। আজ যদি তুমি আমায় স্পর্শ না কর তাহলে আমি কোন দিন নিজেকে মাফ করতে পারব না।
খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন রে পাগলি?
কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে উত্তর দিল_______ আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।
___ স্বপ্নে দেখলেই সত্যি হয়ে গেল নাকি? পাগলি!
____ না। তারপরেও............... তুমি আমাকে ভালোবাসো না বল? থাকবে সারাজীবন আমার সাথে? কখনো কি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার প্ল্যান আছে নাকি?
_____ কেন তুমি জান না?
___________ তাহলে এত ভনিতা করস কেন? যা বলছি তা করছ না কেন?
_______ তুমি তো জানো তোমাকে স্পর্শ করা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার।
_______ আর তোমার আজ আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া আমার কাছে তার থেকেও বড় ব্যাপার।
পাগলিটার বিশেষ আবদারেই সেইদিন ওর ঠোঁট স্পর্শ করেছিলাম। ওর ঠোঁটটা অনেক মিষ্টি ছিল। জানিনা ঐটা ওর প্রতি আমার ভালবাসার প্রতিফলন নাকি ও মিষ্টি খাবার খেয়েছিল।
সেদিনটা আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর আর পবিত্র দিন ছিল। আর সেটাই ছিল সবচেয়ে নিকৃষ্টতম দিন। সেইদিন বাসায় গিয়ে অনিন্দিতা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়। হসপিটালে ভর্তির পর জানা যায়, ওর থাইরয়েড, তাই ব্লাড প্রেসার হাই হয়ে ও সেন্সলেস হয়ে গেছে।
ও দিন দিন মুটিয়ে যাবে, চুল পরে যেতে পারে, বাচ্চা ধারন করতে সমস্যা হবে; এইসব ভেবে অনিন্দিতা আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। কোনভাবেই আর যোগাযোগ করতে দেয়নি পাগলিটা। আমিও হাল ছাড়িনি। ওর অপেক্ষাতেই সারাটা জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। জানতাম, ওকে আসতে হবে।
একদিন বিকেলে বড় আপু ফোন করলো______ একটু বাসায় আসবি এখনি?
গেলাম। গিয়ে দেখি অনিন্দিতা। প্রায় ৩বছর পড় ওর সাথে দেখা!! আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম এতদিন পরে ওকে দেখে। বুঝতে পারছিলাম না, কি করব!! চোখের পানি সংবরণ করে আপুকে জিজ্ঞেস করলাম, আপু উনি কে?
_____ বলব। পড়ে বলব।
_________ উনি বিবাহিতা?
_____ ওকে বিবাহিতা করার জন্যই তোকে ডেকেছি। দেখ, পছন্দ হয় মেয়েটাকে? তাহলে ওর বাসায় প্রস্তাব পাঠাব।
আমি সাহস করে অনিন্দিতা সামনে গিয়ে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম, কেন এমন করলে অনিন্দিতা?
অনিন্দিতা মাথা তুলে আমাকে দেখল। তারপর কোন কথা না বলে গটগট করে হেঁটে চলে গেল।
টেলিফোনের শব্দ কবিরের স্মৃতি চারণে বাঁধ সাধল।
________ হ্যালো, তোমার ফোন কি সাইলেন্ট আছে? কখন থেকে ফোন করছি!
____________ ওহ স্যরি, তোমার কথা ভাবছিলাম।
___________ তাই!! তা কি এতো ভাবছিলেন শুনি?
_________ ভাবছিলাম, তুমি তোমার কথা রেখেছ। যেমন টা বলেছিলে, আমকে ছেড়ে পরলোকেও যাবে না তেমনটাই করছ। যমদূত কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তুমিও আমার ফিরে এসেছ, আমাদের বাবুটাকেও পৃথিবীর আলো দেখিয়েছ। you are really a brave guy.
__________ থাক হয়েছে।
__________ ওহ শোন, কবে আসবা বলত? এতদিন বাবা মায়ের সাথে থেকেও সাধ মিটে নি!!
_____________ ওহ হ্যাঁ, এই জন্যই ফোন করেছিলাম। আমি কাল রওনা দিচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২১