somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্পবাখের বাঁকে ৩

১১ ই মার্চ, ২০২০ রাত ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


৭.
খুব সম্ভবত মরে-টরে গিয়ে স্বর্গে চলে এসেছি। নইলে চারিদিক তীব্র আলোয় ভেসে যাচ্ছে কেন? ধাঁধাটা ভাঙ্গতে ঝটকা মেরে উঠে বসলাম। সাথে সাথে কলকব্জাগুলো ক্যাঁচকোঁচ করে উঠল। যাব্বাবা, হাড়গোড়ের আর্তনাদ মানে জ্যান্তই আছি। তবু জানালার বাইরেটা দেখে ভ্রম কাটছে না। কাঁচা রোদের খপ্পরে পড়ে শ্বেতশুভ্র আল্পবাখ আসলেই স্বর্গ বনে গেছে।

স্বর্গসুখ উবে যেতে সময় লাগলো না। কপালে আজকে স্নো-শ্যু হাইকিং নামের বিষম নরক আছে। মনটা আলপিন খাওয়া বেলুনের মত চুপসে গেলো। চ্যাঁচামেচি করা বাঙ্গালী কলিজায় মাইকিংটা খুব সয়। কিন্তু হাইকিংটা ঠিক ধাতে পোষায় না। কালকে রাতেই হাতে নাতে প্রমান মিলেছে। আরেক দফা অত্যাচার সইলে ধড় থেকে জান সটকে পড়ার ভয় আছে।

প্যাঁচা মুখ নিয়ে কাঁধ ঝুলিয়ে হোটেল থেকে বেরোলাম পা ঘষটে ঘষটে। যথারীতি কাতিয়া পাশে হাঁটছে। ‘দেখেছো কি জব্বর আবহাওয়া’ জাতীয় এক-দুই বাক্য খরচ করে কিপটে হয়ে গেলাম। অবাক করে দিয়ে কাতিয়া গল্প জুড়ে দিল। ‘বেকি তোমার উপহারটা পেয়ে দারুন খুশি হয়েছে।‘ বেকিটা কে মনে করতে কয়েক সেকেন্ড লেগে গেল। ‘ওহ, তাই নাকি?’ জবাব দিলাম। কাতিয়ার মেয়ে বেকি। দেশ থেকে আড়ংয়ের একটা পাটের ব্যাগ নিয়ে এসেছিলাম ওর জন্যে।

এগারো বছরের বেকি স্কুল ছুটি থাকলে মায়ের সাথে অফিসে চলে আসে। টুকটাক হোমওয়ার্ক করে সময় কাটায়। আমাকে দেখলেই প্রশ্ন ছোড়ে, ‘জ্যুসিগকাইট আছে তোমার কাছে?’ জার্মান জ্যুসিগকাইট মানে বাংলা মিঠাইমন্ডা। বেকির জ্যুসিগকাইটের আব্দারে ডেস্কে ‘কাইত’ হয়ে থাকা আমি সোজা হয়ে উত্তর দেই, ‘আছে, নিয়ে যাও।‘ বলেই একটা চকলেট বাড়িয়ে ধরি। সেই সূত্রে বেকির সাথে সামান্য সখ্যতা আছে।

তা, উপহার পেয়ে বেকি খুশি হয়েই ক্ষান্ত হয় নি। সে উপহারের উৎস্য দেশটা নিয়ে গবেষক মায়ের সাথে খানিকটা গবেষনাও করেছে। আকারে অতি ছোট কিন্তু জনসংখ্যার প্রকারে অতি বড় ইত্যাদি গড়পড়তা খবরের চাইতেও বাংলাদেশে যে হাজারে বিজারে নদী আছে-এই তথ্যে সে অভিভূত। হাজার নদীর ছোট্ট দেশটা দেখতে কেমন- তাই নাকি সে ঘুরে ফিরে ভাবছে এই কয় দিন। সামান্য একটা পাটের থলের মানচিত্র তুলে ধরার শক্তি দেখে আমিও অবাক।

৮.
সামান্য দুঃশ্চিন্তা লাগছে আজকের প্রেজেন্টশন নিয়ে। কয়েকজন মিলে খেটে খুটে যা ফল যোগাড় করেছি, সেটাই সবার হয়ে একজন মেলে ধরবে। কাজ মন মতো না হলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ধুয়ে ফেলার একটা ভয়ংকর রীতি চালু আছে জার্মানিতে। তেমন হলে আর ইজ্জত নিয়ে ফিরে যেতে হবে না। বৈজ্ঞানিক জীবনে ইস্তফা দিয়ে অন্য ধান্দার ফিকির করা লাগবে। পকেটের কোনায় একটা জং ধরা পিএইচডি নিয়ে হয়তো মিউনিখের ফুটপাথে প্যাঁ পোঁ ভাঙ্গা হারমোনিয়াম বাজিয়ে সিকি আধুলি জুটিয়ে পেট চালাতে হবে। ভাবতেই গা শিউড়ে উঠলো।

ঘন্টা খানেক পরের কথা। প্রজেক্টের হোমড়া চোমড়া একজন, ডক্টর মাইকেল কোয়ান্টে সবার হয়ে দারুন প্রেজেন্টশন দিয়েছে। কান কাটা যাবার হাত থেকে বেঁচে গিয়ে হালকা মন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এ বেলার মত সেশন শেষ।
রিসার্চ কন্সোর্টিয়ামের কো-অর্ডিনেটর ডরোথি সবাইকে তাড়া দিচ্ছে এক জায়গায় জড়ো হবার জন্যে। আমরা জড়ো হবার তোয়াক্কা না করে ছাড়া গরুর মত চরে ফিরছি। বেচারা আর না পেরে শেষে সবাইকে ফেলে যাবার হুমকি দিলে কাজ হল। গরু লাইনে আনতে এমন রাখালের দরকার হয় বই কি। দু’চার বার হ্যাট্ হ্যাট্ করতেই সাজিয়ে রাখা সরঞ্জামগুলোর কাছে চলে এলাম সবাই।

সরঞ্জাম বলতে দু’টো ভীষন চোখা হাইকিং স্টিক আর এক জোড়া অদ্ভুতদর্শন ধাতব ফ্রেম ধরিয়ে দেয়া হল জনে জনে। এই ফ্রেমই নাকি স্নো-শ্যু। ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না। একটা ফোল্ডিং চেয়ার মাঝ বরাবর পটাং করে ভেঙ্গে স্নো-শ্যু বলে চালিয়ে দিলেই হল? এখন এই ভাঙ্গা চেয়ার পায়ে গলিয়ে হাঁটবো কি করে। মনিকা আর দীপ্তিকেও দেখছি না। ভারত ভগ্নীরা কাছে থাকলে একটা উপায় হত। লোকজন ঝটপট এই বস্তু জুতার সাথে বেঁধে ছেঁদে রওনা দিয়ে দিয়েছে। পিঁপড়ার লাইনের মত তাদের সারিটাও আস্তে আস্তে এগোতে শুরু করেছে।

‘আমি একবার দেখিয়ে দেই?’ রাবারের স্ট্র্যাপগুলো যেন-তেনভাবে গেঁড়ো বাঁধা বাদ দিয়ে তাকালাম ভদ্রলোকের দিকে। বয়স ষাটের ওপরে হবে। বাঁধানো দাঁতে ঝকঝকে এক গাল হাসতেই সহজ হয়ে গেলাম। পটাপট কি জাদুবলে স্নো-শ্যুয়ের ফ্রেমে আমার হাইকিং জুতা জোড়া ঠিকঠাক জুড়ে দিয়ে দুষ্টুমি চোখে হাত বাড়িয়ে বললো, ‘ওহ্, নামটাই বলা হয় নি। আমি জিম, দুই নম্বর জিম।‘

‘আর আমি এক নম্বর জিম, হা হা হা...’। ভ্যাবাচেকা খেয়ে ফিরতি কিছু বলার আগেই আরেক দুষ্টু বুড়ো পেছন থেকে বলে উঠল। নম্বর-রহস্য বুঝতে না পেরে বোকার মত বলে ফেললাম, ‘অ্যাঁ, মানে কি?’ ‘মানে আবার কি, আমাদের দু’জনেরই নাম জিম। কাকতাল, বুঝলে না। আমরা আজকের ট্যুর গাইড। তোমার আর কি খেদমত করতে পারি বলে ফেলো তো জলদি।‘ দুই বগলে দুই ফ্রেম চেপে এগিয়ে আসা মনিকা আর দীপ্তিকে দেখিয়ে দিলাম হাতের ইশারায়। জিম বুড়োরা ছোকরার গতিতে তাদের দিকে ছুটে গেল। মিনিট দুয়েকের মনিকারাও তৈরি। তারপর ধীর গতির তিন তিনটে বাদামী মেয়েকে সাথে নিয়ে দলের একেবারে সবার শেষে হাসিমুখে রওনা দিল এক আর দুই নম্বর জিম।


৯.
ডিগবাজি খেয়ে উল্টে না পড়ে কিভাবে যেন লাঠি ঠুকে ঠুকে এগোতে থাকলাম। দুই দিনের তাজা এক হাঁটু তুষার জমাট বেঁধে সারতে পারে নি। পা দেবে যাচ্ছে পেঁজা তুলোর অতলে। এসব অনর্থক হাইকিং না করে তুষারের বিছানায় শুয়ে আকাশ দেখতে পারলে বেশ হতো। খানিক দূরেই এক খন্ড মেঘ ভাসছে। যেন ডাকলেই চুপচাপ কাছে এসে দাঁড়াবে। কিন্তু মেঘবালিকা হবার ইচ্ছেটাকে ঠেলে সরিয়ে পা চালালাম।

উল্টো পথে একজনকে ফিরে আসতে দেখে শুধালাম, ‘ঘটনা কি, যাচ্ছো কই?’ মেয়েটা জানালো, তার হাঁপানির রোগটা ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছে। তাকে আর আটকে না রেখে বিদায় দিয়ে দিলাম। সেও অদৃষ্টের উদ্দশ্যে ভয়ংকর দু’টো গাল পেড়ে নেমে গেল। বিজ্ঞানের মত সূক্ষ্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করা লোকেদের মাঝে গালি দেবার মত স্থূল একটা বদস্বভাব আছে। একটু আগে নিজেও এক প্রস্থ গাল ছুড়েছি ভাঙ্গা চেয়ার, মানে স্নো-শ্যু জোড়া পড়তে গিয়ে। চোস্ত বাংলা গালি বলে কেউ বোঝে নি ভাগ্যিস। নইলে ভালোমানুষি চেহারার জারিজুরি সব ফাঁস হয়ে যেত মুহূর্তেই।

এদিকে, নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখি, আমরাও সংখ্যায় কমে গেছি। মনিকা আর আমার গদাই লস্করি চালকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দীপ্তি বাকিদের সাথে ভিড়ে গিয়েছে কোন ফাঁকে। এক নম্বর জিমকেও দেখছি না। দুই নম্বর জিমই শুধু সাথে আছে। মনিকাও হাঁপিয়ে হেদিয়ে বেশ পিছিয়ে পড়েছে। তার সুবিধের জন্যে গতি কমিয়ে জিম আর আমি গল্প জুড়েছি ঢিমে তালে।

‘তোমার ফুসফুস টুসফুস ঠিক আছে তো? পারবে তো বাকিটা পথ?’, জিমের গলায় উদ্বেগ। দুষ্টুমি করে বললাম, ‘ফুসফুসের বাতাস ফুরিয়ে গেছে সেই কখন। এখন কলিজার চিপা থেকে বাতাস বের করে তাই দিয়ে চলছি।‘ জিম হো হো হেসে উঠল, ‘তুমি দেখি দারুন পাজি। কথার মারপ্যাঁচ এত শিখলে কোত্থেকে?’ অস্ট্রিয়ানদের জার্মান উচ্চারন অন্য রকম। জিমের কথায় সেই টান নেই। মুচকি হেসে উত্তর দিলাম, ‘কথার খেলা আমার খুব প্রিয় একটা খেলা। আচ্ছা বলো তো, গাইডের কাজ করছো কত দিন?’ জিম জানালো, ‘এই ধরো তিরিশ-চল্লিশ বছর। যখন একটা কি দু’টো দাড়ি মোচ গজিয়েছে ঠিক তখন থেকে শুরু’।

তিরিশ আর চল্লিশের মাঝে প্রায় এক যুগ ফারাক, জিমকে সেটা ধরিয়ে না দিয়ে পথের পাশের এক আস্তাবলে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলাম। অতিকায় গোটা পাঁচেক ঘোড়া দাঁড়িয়ে। ট্রোজান হর্স আকারের পাহাড়ি ঘোড়াগুলোর একেকটার পেটে আস্ত এক প্লাটুন স্পার্টা সৈন্য এঁটে যাবে, এমনই ভীষন তাদের চেহারা। চোখ ঘেঁষে বাদামী ঘন কেশর নেমে এসেছে ঘাড়ের পাশে। ভারী পশমে খুর পর্যন্ত ঢাকা। দু’টো পাখা থাকলে বোধহয় উড়েই যেত আকাশে। জিমের কাছ থেকে জানলাম, কয়েক ঘর চাষী আছে এই এলাকায়, ঘোড়াগুলো তাদেরই। ‘গরমের সময়ে এক বার এসো আল্পবাখ। ঘোড়ায় চড়ে পাহাড়ি রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দারুন লাগবে।‘ সায় দিয়ে মনে মনে তারিফ না করে পারলাম না প্রানীগুলোর।

জিমের সাথে কথায় কথায় বাড়িঘর, লোকালয় পেরিয়ে কখন যে অনেকটা দূরে চলে এসেছি, টের পাই নি। ভয়ংকর সরু খাদটার কিনারায় এসে টনক নড়লো। দুই পা পরিমান চওড়া পথটার পাশে নেমে গেছে গভীর খাদ। নিচে এক চিলতে পাথুরে ঝরনা। পড়ে গেলে হাড়গোড় গুড়িয়ে সলিল সমাধি। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। প্রকট উচ্চতা ভীতি খোলস খুলে বেরিয়ে এসেছে। এই পুলসিরাত আমি পার হতে পারবো না কিছুতেই। জিমকে ডাকতে গিয়ে দেখি কোথাও কেউ নেই। অনেকটা পিছিয়ে পড়ে মনিকাকে হাতে ধরে এগিয়ে আনতে ব্যস্ত সে।

ভয়ে আতংকে ভেউ করে কেঁদে দেবো কিনা ভাবছি। হঠাৎ মনে হল, আরে দলের একশো লোক একটু আগেই এই পথে দিব্যি হেঁটে পার হয়ে গেছে। আর আমি বাঙ্গাল ঢোক গিলে খাবি খাচ্ছি। ধ্যাত্তেরি, ভয়ের কপালে ম্যাচ জ্বালিয়ে আগুন দেই। লম্বা এক দম নিয়ে রাস্তাটা উড়িয়ে দিলাম। পেছনে তাকিয়ে দেখি জিম দুই হাতের বুড়ো আংগুল দেখিয়ে বলছে, সাবাশ, সাবাশ।

পরক্ষনেই বুড়ো আঙ্গুলটা ভাঁজ করে চার আঙ্গুলের ইশারায় কি যেন কি বলতে লাগলো জিম। ফিরে যেতে বলছে সে। মনিকা ধপ্ করে বসে বসে পড়েছে। জিম তার সাথে ফিরে যাবে। চাইলে আমি রয়ে যেতে পারি ইত্যাদি। এক মুহূর্ত ভেবে আমিও ক্ষ্যামা দিলাম। কারন, ঘেমে ভিজে ভারি জ্যাকেট চুপ চুপ করছে। দেখা গেল পানিশূন্যতায় একটা দফা রফা হয়ে ফিট খেয়ে পটল তুলে ফেললাম। তখন বাংলাদেশের কাগজে বেরোলো, ‘পর্বতারোহনে গিয়ে প্রবাসী মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু’। ওদিকে, মেধাবীও নই, আর শিক্ষার্থী হবার বয়সও পেরিয়ে গেছে কবে। সিদ্ধান্ত নিলাম, যাহ্, ফিরেই যাই। প্রায় ঘন্টা দুয়েক ধরে হাইকিংয়ের আদ্যোপান্ত যথেষ্ট দেখা হয়েছে। হেই দুনিয়ার মাবুদ, আরেক দফা এই দুনিয়াবী পুলসিরাতটা পার করে দাও দেখি। পাঁড় ধার্মিক বনে গিয়ে তিন কুল পড়ে বুকে ফুঁ মেরে ইন্ডিয়ানা জোনস্ কায়দায় লাফিয়ে পেরোলাম পথটুকু।

১০.
ফিরে যাচ্ছি শর্টকাট ধরে। এতে নাকি তাড়াতাড়ি হবে। জিম কাঁধের ব্যাগ থেকে একটা কার্বোনেটেড ড্রিংক ধরিয়ে দিয়েছে। তরমুজের রসের মিষ্টি পানীয়ের খানিকটা কারবালার তৃষ্ণা নিয়ে গলায় ঢেলে বাড়িয়ে দিল মনিকা। জান বাঁচানো ফরজ, তাই জানতেও চাইলাম না ওতে অ্যালকোহল আছে কি না। জিম বুড়ো না থাকলে আজকে আর দেখতে হত না। এগিয়ে যাওয়াটা এ যুগে এত বেশি জরুরী যে পিছিয়ে পড়াদের দিকে খেয়াল করবার ফুসরত মেলে না কারো। কিন্তু পিছিয়ে পড়ে খুব যে খারাপ লেগেছে তা না। বরং প্রাইভেট গাইড জিমের সাথের আল্পবাখের আকে বাঁকে ঘোরাঘুরিটা হয়েছে বাড়তি বোনাসের মতন।

‘ঐ যে বড় গাছটা দেখছো না, ওর বয়স কত জানো?’ আন্দাজ করার আগেই জিম জবাব দিয়ে দিল, ‘আটশ বছর, বুঝলে পাক্কা আটশ। এ তল্লাটের সব চেয়ে পুরানো গাছ। লোকে দেখতে আসে খুব’। হিসেব কষলাম, আটশ বছর আগের সেই সময় গাছটা যখন মাত্র চারা, তখন পৃথিবীর আরেক প্রান্তে দিল্লির সুলতান ইলতুৎমিশ বাংলা আক্রমণ করে হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। এত পুরানো অথচ জ্যান্ত কিছু এর আগে আর দেখি নি বলে বিস্ময় আর ধরে না। জিম বুড়ো আমাদের বিস্ময় দেখে তৃপ্তির হাসি হাসছে। তার দিনটাও একেবারে বাজে খরচ হয় নি।

আরো ঘন্টাখানেক পরে কংগ্রেস সেন্টারের কাছে ফিরে হাজার খানেক ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় দিলাম বুড়োকে। নাম দুই নম্বর জিম হলেও মনটা তার একেবারে এক নম্বর।

বিজ্ঞান, গবেষনা, সম্মেলন ইত্যাদি ব্যাপারগুলো আসলে একেবারে শুষ্কং কাষ্ঠং না। এর ফাঁকতলে ঘুরে নিলে কত রঙের মানুষ আর কত কিছুর দেখা মেলে। কনফারেন্স হলে বসে স্বচ্ছ কাঁচে ঢাকা দেয়ালের ওপাশে ঝিরি ঝিরি তুষার পড়া সন্ধ্যেটার দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম কথাগুলো। কফি কাপের উষ্ণ চুমুকে ডুবে আবার মন দিলাম প্রজেক্টরের বিশাল স্ক্রিনে। (সমাপ্ত)



মিউনিখ, জার্মানি
০৮.০৩.২০২০
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০২০ রাত ২:৪২
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×