১) তারা দুইজন একে অপরের স্টাটাস আর ছবিতে লাইক আর কমেন্ট দেয়, নিশ্চয় গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড।
ভাই থামেন লাইক আর কমেন্ট দিলেই কেউ বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড হয়ে যায় না। অবশ্য কেউ কেউ কোন ব্যাক্তি বিশেষ এর কাছ থেকে কন্টিনিউস লাইক পাইয়া খুশি হইয়েন না; এইটার মানে একটাই সে আপনারে রেগুলার ফলো করতেছে। তবে বিবাহিত, এনগেইজড পোলাপাইন আর বিশেষ কইরা বিবাহকরবা এমন পোলাপাইন সাবধান ভূলেও কোন মেয়ের ছবি আর স্টাটাসে লাইক দিবা না, লাইক দিছ ত মরছ। তখন তাহারা বলবে, “U liced her stataas, that mean u lic her”. তাহলে আর রিয়েল লাইফে কাউরে সারাজীবন লিক করা লাগবে না, ভার্চুয়ালি লিক কইরা কাটানো লাগবে। আর বিবাহিত পোলাপান এর কথা ত বাদ ই দিলাম, পরে দেখা যাইব রেডকার্ড দিয়া মাঠ থেকে বের কইরা দিছে, আর খেলাধুলা করা লাগবে না।
২) সে সারাদিন বিরহের কবিতা ওয়ালে পোস্ট দেয়, নিশ্চয়ই ছ্যাকা খাইছে।
ভাই থামেন, লেখালেখি হইল হাগার মত, যখন হাগা আসবে যেই টাইপের হাগা আসবে; তখনই সেই হাগাই বের হবে। আপনি পাতলা গু পছন্দ করেন না বলে, আপনার কমোড যে সবসময় শক্ত গু পছন্দ করবে এমন না। আপনি যেমন আপনার পছন্দ মত হাগতে পারবেন না, তেমনি আপনার হাত দিয়া যেই লেখা বের হইব ওইটা আপনি লেখতে পারবেন, অন্য কিছু না। আর বিরহ নিয়া কবিতা লেখলেই কেউ ছ্যাকা খায় না।
৩) আরে ছেলেটা এত স্মার্ট, মেয়েটার এত সুন্দর সুন্দর ছবি; নিশ্চয়ই ছেলেটা/মেয়েটা খুব সুন্দর, খুব ভাল ।
আপারা/ ভাইয়েরা থামেন। আপনি জানেন বাজারে আটা-ময়দার কেজি কত বাড়ছে? আজকাল মানুষ আটা ময়দা শুধু খায় ও না মাখেও। আর সেইসাথে ফটোশপ আর লাইট রুম ত আছেই। মানুষের সৌন্দর্য তার খোমাতে না, মানুষের সৌন্দর্য তার মননে। আপনারে এক প্লেট বিরিয়ানীর সাথে, যদি প্লেট এর এক কোণায় একটু গু লাগাইয়া দিই সেই বিরিয়ানী কি আপনি খাইতে পারবেন? কখনও না। বরং তার জায়গায় কলা পাতায় দেয়া একটু ভাত আর মরিচ ভর্তাই দেখা যাইব আপনি তৃপ্তি কইরা খাইছেন।
৪) ছেলেটার/মেয়েটার এত্তগুলা ফলোয়ার, আরে তারা ত ফেইসবুক সেলিব্রিটি, তারা যা বলে নিশ্চইয় সব ভাল বলে, ঠিক বলে।
সেলিব্রিটি আমার চুল। আর যা বলে তার সবই যে ভাল বলে ঠিক বলে তা আরও বড় চুল। DO not Judge the Truth by the People. Judge the people by the truth. Because what is true and right, is always right even only a single man follows it. সুতরাং কারও ফেইসবুকীয় বড় বড় বচন দেইখা আর সেই বচনের লিক সংখ্যা দেইখা তার বচন যে সত্য বচন তা ভাবার কোন কারণ নাই। ইউ হ্যাভ দা ট্রউ ফিলোসফী ইন দা বুক, গো টু দ্যাট নলেজ এন্ড জাজ দেম বাই ইট। অন্তত এই ফিল্টারটা সবার বসানো দরকার আছে বইলা আমি মনে করি। কেউ যদি এই ফিল্টার দিয়া যায় তারে সারাদিন চাটেন কোন সমস্যা নাই; কিন্তু কেউ যদি এই ফিল্টার দিয়া না যায়, তার চাটার দায়িত্ব আপনার - পরে আপনার জিহবাতেই ঘা হইব; আর যারে চাটছিলেন তার ঘা ত আগে থেকেই আছে।
৫) ফেইসবুক প্রোফাইল বন্ধ নিশ্চয়ই কোন ঘাপলা আছে। নিশ্চয়ই কোন মেয়ের সাথে আকাম কইরা ফেইসবুক প্রোফাইল বন্ধ কইরা রাখছে, নাহ এই ছেলেরে বিয়ে করা যাবে না।
আপারা থামেন। আমার ফেইসবুক প্রোফাইল বন্ধ ছিল মানে আমি আকাম করছি তা না। কারও ভার্চুয়াল লাইফ দেইখা যদি আপনি তার রিয়েল লাইফ বিচার করতে চান তাইলে আপনি বড় ভূল করবেন। আপনি যদি আমারে আসলেই জাজ করতে চান, আগে দেখেন আমি আমার পরিবারের লোকজনের সাথে কী ধরনের আচরণ করি, আগে দেখেন আমি আমার মা-বাবা-ভাই-বোন এর প্রতি কতটা কেয়ারিং। আগে দেখেন আমি একজন অপিরিচিত মানুষের সাথে কিরূপ আচরণ করি। আগে দেখেন আমার চেয়ে কম যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষদের আমি ঠিকঠাক সম্মান করি কি না। আমার কাছে কেউ সাহায্য চাইতে আসলে কেউ সাহায্য পায় কিনা। আগে আমার আইডলজি দেখেন, আমার মোরাল ভেলু কি সেইটা দেখেন; আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড আর ফলোয়ার না।
পুনশ্চঃ লেখাটা নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। আমরা এমন একটা সময়ে বাস করি যেইখানে রিয়েলিটির চেয়ে ভার্চুয়ালিটির গুরুত্ব বেশি। এবং আমাদের আশে পাশেই আমরা কারও কারো ভার্চুয়াল লাইফ দেখে নিজেদের লাইফ নিয়ে হতাশ আর কনফিউজড। কারও ভার্চুয়াল লাইফে হাজার হাজার ফ্রেন্ড, কোটি কোটি ফলোয়ার তার মানে এই না সে খুব আহামরি কেউ। এমনও হইতে পারে তার নিজের পার্সোনাল লাইফই মেসড আপ। আপনি ততটুকুই দেখেন যা সে আপনাকে দেখায়। কাউরে নিজের লাইফের গুরু মানার আগে আগে দেখেন তার সাথে তার পরিবারের সম্পর্ক কেমন। নিজের পারিবারিক জীবন সম্পর্কে কারও পরামর্শ গ্রহণ করার আগে, আগে দেখেন যার পরামর্শ নিতেছেন তার নিজের পরিবারের অবস্থা কী। তার সাথে তার স্বামী কিংবা স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন। আমি এমন অনেক মানুষ দেখছি যে তার নিজের আসল লাইফে পুরাপুরি একলা, কালকা যদি সে মরে তার জন্য কান্নাকাটি করারও কেউ থাকবে না। কিছু কিছু মানুষ আপনাকে আপনার বিবাহিত জীবন নিয়ে উপদেশ দিবে, অথচ সেই প্রতিদিন তার স্বামী কিংবা স্ত্রীর সাথে ডব্লিউ ডব্লিউ ই খেলে। আর সো কলড সিঙ্গেল লোকজন এর কথা ত বাদই দিলাম। মানুষ খুব অস্থির লেভেলের দুচীর ভাই, খুব কম মানুষই আপনাকে সত্য কথা বলবে। Stick to your own moral values what your parents especially your mother has instilled inside you. যেই ব্যাক্তি তার মা কে সম্মান করে না, তার মা এর দেয়া শিক্ষাকে সম্মান করে না - সে কখনই আপনাকে সম্মান করতে পারবে না। সময়ের সাথে সংস্কৃতি তথা কালচার এর চেইঞ্জ হবে, কিন্তু মোরাল ভেল্যু এইগুলা অপরিবর্তনীয়। যেই মানুষ সময়ের সাথে তার মোরাল ভেল্যুগুলার পরিবর্তন করে ফেলবে, মনে রাখবেন সময় হলে সে আপনাকেও রিপ্লেস করে দিবে।