somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার শৈশব এবং যাদুর শহর (১৭)

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(আশা করছি এই শেষ, বাকিটা হয়ত ছাপার হরফে পড়া যাবে, কোন অলস দুপুরে, ইনশাআল্লাহ, তবে আমি অলস লোক এই যা, ভয়! )



বই পড়া থেকে কত দূর চলে এলাম, এমনই তো হয় মানুষের চিন্তা লিখা ভাষা তো এক বহমান নদী, চলে যায় কোথায় কোথায়। বই আমরা পড়তাম খুব, নাওয়া খাওয়া ছেড়ে, বন্ধুরা বই ওলট পালট করে প্রচুর পড়তাম। দুটো টাকা হাতে এলেই কেনো বই। সে সময় হঠাৎ করে ইন্ডিয়ার রুপির দাম পরে গেল, আগে ইন্ডিয়ান বই কিনতে তিন গুণ টাকা দিতে হত, তখন হয়ে গেল এক টাকা তিরিশ পয়সা কি চল্লিস পয়সা। আনন্দের ছোটদের বই গুলো তখন কিনতে পাচ্ছি, চোদ্দ টাকা, পনের টাকায়, পাগলের মত কিনি আর পড়ি। একদিন সন্ধ্যায় বাসায় স্কুলের পড়া করছি, হঠাৎ কেমন যেন নেশা উঠে গেল, একটা নতুন বই পড়তেই হবে, এক্ষুনি। কিন্তু বড় ভাবীকে বড় ভয় পেতাম আর সন্ধ্যার পর শীতকালে ব্যাডমিন্টন খেলা ছাড়া বের হওয়ার কোন নিয়ম ছিল না বাসায়। কি করি? ভাবীকে বললাম ভাবী আমার খাতা শেষ নিচের দোকান থেকে একটা খাতা নিয়ে আসি। ভাবী সরল বিশ্বাসে বলল যাও। আমি কি আর থাকি, দুদ্দার করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে দৌড়াতে দৌড়াতে লালমাটিয়া, এক দৌড়ে আসতে হয়েছে না হলে সময়ের হিসেব মিলবে না। মহিলা কলেজের উল্টো দিকে একটা লাইব্রেরী ছিল, নাম মনে নেই ওখানে কিছু ভালো বই থাকত। দ্রুত কিনে ফেল্লাম ”ঋজু’দার সংগে জঙ্গলে”, বুদ্ধ দেব গুহর লেখা, তারপর ঋজু‘দা কে শার্টের ভিতর চালান করে বাসায় ফেরা। নেশার কাছে আসলেই মানুষ বড় অসহায়। আরেকবার জ্ঞানকোষ থেকে হূমায়ুনের আয়না ঘর কিনে স্কুল শেষ বাসায় ফিরেছি, কিন্তু ভিতরে আর ঢুকলামই না, সোজা চলে গেলাম চিলে কোঠায় এক বসায় বই শেষ করে ঢুকলাম, নাহলে দেখা যেত খেতে হচ্ছে, হাতমুখ ধুতে হচ্ছে, কত্ত সময় যাবে, তার চেয়ে এই ভালো, বই শেষ করে ঢুকি। উহ কি গভীর আনন্দ, কিসের সাথে যে এর তুলনা দেই, আমার জানা নেই।

বন্ধুরাও জুটেছে সব এমন। সুবন্ত পছন্দ করত খুব ওয়েস্টার্ন, শাহিন ভাবতো নিজেকে হিমু এমন এক এক জনের প্রিয় বই নিয়ে কি তর্ক বিতর্ক। আমাদের আরেক বন্ধু নাম আর বললাম না সে একদিন এক খানা গল্প নিয়ে হাজির নিজের লিখা, খুব যে শিশুতোষ ছিল এমন নয়, আবার ছদ্ম নাম নিয়েছে, তারপর বাকীটা ইতিহাস। কেন না নাম খানা ছিল “নজরুল ঠাকুর”! গল্পের বিষয় আর বিবেচ্য রইলো না, নাম খানাই হয়ে গেল ইতিহাস! আমরা সবচেয়ে বেশী আড্ডা দিতাম ধান্মন্ডী সাত’এ, সুবন্তদের বাসায়, অবারিত দ্বার ছিল সে বাড়ীতে আমাদের জন্য। আঙ্কেল ছিলেন এঞ্জিনিয়ার আর অভিনেতা, সকাল সন্ধ্যার সেজো খালু হিসেবে ছিলেন জনপ্রিয়, আন্টি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক,দু’জনেই থাকতেন ব্যস্ত, আর ভাইয়া আর নিলা আপা যেন ছিল বন্ধুর মতই, খুব মজার আড্ডা হত। আঙ্কেলের এক খানা সাত না আট ব্যান্ডের রেডিও ছিল, ক্রিকেট খেলা শুনতেন এটি দিয়ে, আর এই রেডিও এর একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল আমাদের কাছে। নাহ! ক্রিকেট না তার চেয়েও বেশী মজার কিছু ছিল সেটি। অত গভীরে আর নাই গেলাম। আর আমাদের বন্ধুদের মাঝে সবার আগে ওদের বাসায়ই কমপিউটার এসছিল, সেটিও ছিল আমাদের এক বিস্ময়। সে ডসে চলা যনত্‌রে প্যারানয়েড খেলাতেই যেন এক গর্বিত আনন্দ ছিল। আর আটারিতে খেলতে গেলে যেতাম সবাই শিমুলের বাসায়। আমি বরাবরি অবশ্য এসব খেলায় যাতা রকম খারাপ। ভিডিও গেমস তাই আমাকে খুব টানেনি। আমাদের যুগে মাত্র শুরু হয়েছিল ময়লা পর্দা ফেলা অন্ধকার ঘর, আর ছেলে পুলেদের দিনরাত গেইম খেলা, বিশেষত “মুস্তাফা” যদিও গেইমটির নাম ছিল “ক্যাডিলাক অ্যান্ড ডাইনোসর” বা এইরকম কিছু, কিন্তু “মুস্তাফা” নামেই হিট ছিল, এটি মনে হয় আমরা যখন এইট কি নাইনে পড়ি তখন শুরু হয়েছে, তার আগে শান্তি নগরে “সানটানা” নামে একটা দারুন গেইমসের দোকান হয়। এর আগে এসব গেইম শুধু দেখতাম “সিল্ভার স্পুন” টিভি শোতে। আমরা কখন স্কুল পালিয়ে এসব খেলতাম না, স্কুল পালানো মানে সংসদ ভবনে নয় লালমাটিয়ার নিউ কলোনি মাঠে, প্রচন্ড রোদে খেলা। কিংবা সুবন্ত কি শিমুলের বাসায় আড্ডা। আর ক্লাস সেভেন থেকে শুরু হল সিরিয়াস একটা কাজের মত গান শোনা। আমাদের বাসায় গান বাজনার চল সবসময়ই ছিল, গান নিয়ে অনেক কথার কিছু আগেই বলেছি, সেই মারফি রেডিও গ্রাম, অনুরোধের আসর। কিছু বলবার আছে আর কিছু হয়ত বলবার মত নয়। এ লেখার শুরুর দিকে ৩১, কলাবাগানের গল্প করেছিলাম, আমার বড় খালা লিলি আন্ট’এর বাসা, আমরা কাছাকাছি বয়সের কিছু কাজিন ছিলাম। সেই বাসার সব চেয়ে ছোট ছেলে মিলু। মিলু সিরিয়াসলি গান বাজনা না করেও এখন একজন জনপ্রিয় সংগীত ব্যক্তিত্ব, তার সবার সাথে একেই ভাবে মিশবার ক্ষমতা আর ওয়েস্টার্ন মিউজিকের সম্পর্কে জানা, শোনা আর কালেকশান। কয়েকটি রেডিও ষ্টেশনে শো হোস্টও করেছে তাঁদের মাল মসলাও জোগার করে দিয়েছে, বাক সর্বস্ব জকিদের শিখিয়ে পড়িয়ে দিয়ে পপুলার প্রোগ্রাম দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

তখনও শীত নামেনি শহরে, আসবো আসছি করছে। এর মাঝে আমার ঢাকা ছাড়ার পর আর কলাবাগানে, আসা হয়নি, কোন এক সকালে আমি হঠাৎ হাজির সে বাসায়। সবাই তো খুব অবাক আর খুশি, অনেক হই চই হল, গল্প গুজবে আড্ডায় সময় কেটে গেল, সেই রাত্রে আমার আর বসায় ফিরা হল না। পরদিন সকাল বেলা হাঁটতে হাঁটতে গেলাম এলিফ্যান্ট রোডে, মিলুরা সেখানে কমপিউটার শিখে। সেখানে দেখলাম ভারি চশমা পড়া একটা লোক গিটার বাজাতে বাজাতে আসলো আমাদের সামনে, কি মিষ্টি হাত গিটারের আমি চোখ বড় বড় করে শুনছি। আর কেউ নন তিনি, রেনেসাঁর রেজা ভাই, কি অদ্ভুত বাজান উনি! তারপর গেলাম গলিতে। “গলি” বলতে সেই সময় থেকে এই সময় পর্যন্ত এ শহরের যারাই ওয়েস্টার্ন মিউজিক পছন্দ করেন তারাই জানেন, কফি হাউসের পিছে সরু এক বিস্ময় গলি। রেইনবো, রিদম্‌ আর সুর বিচিত্রা, মিউজিক লাভারদের তীর্থ তখন। নো ইউটিব,নো ডাউন লোড। আর সন্তর মত কবির ভাই, দীর্ঘ কেশ আর লেনোনের চশমা চোখে। এরপর আরেক অধ্যায়, সে কথায় আসছি পরে।
দু’ভাই ফিরে আসি আবার বাসায়। মিলুদের বাসাটির সামনে রাস্তা আর আরেক পাশে সরু গলি, আর ওর ঘরখানা ছিল এক কোনায় গলি থেকে ওর ঘরের জানালা, দেখা যায়। বিকাল হতেই টক করে একটা ঢিল, মিলু উঁকি দেয় আর বলে ও তুষার, ও মনি, ও সুমেল আর বার বার নিচে যেয়ে গেইট খুলে নিঃশব্দে এক এক জন কে নিয়ে আসে। মিলু আমার থেকে একটু বড় তাই তার বন্ধুরাও বন্ধুই হয়ে গেল এবং বন্ধু হয়েই রয়ে গেল, যদিও সবার নামের শেষে ভাই বলি। ওরা সবাই নিউ মডেলে এক সাথে পড়েছে। এদের মাঝে তুষার ভাই আর সোহান ভাই এর সাথে পরে আরো অনেক গাঢ় সম্পর্ক তৈরি হয়। অনেক পরে আমি আর তুষার ভাইরা কাছাকাছি বাসায় উঠে আসি।

সে সময় মিলুর বাসা একটা জমজমাট জায়গা। শুধু রাত্রে থাকলে ভোর বেলায় খালুর সাথে জামাতে নামাজ পড়তে হয়, সে বয়সে একটু কষ্ট হত। এভাবে দিন তিনেক ওদের বাসায় আমি, সকালে দুই ভাই বের হই, হেঁটে হেঁটে “গলি”তে যাই কিংবা অন্য কোথাও। সেবার ঢাকায় হঠাৎ খুব পোকা বের হয়, হাঁটলেই মুখে নাকে লাগে, কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম পোকা গুলো শুধু রোদেই থাকে, রাস্তার যে সাইডে ছায়া থাকে সে সাইডে নেই। আমি পোকা গুলোর নাম দিলাম “রোদেলা পোকা”, জ্বালিয়েছিল খুব। সেদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ ওদের বাসায় আমার বড় বোনের ফোন এল, আমি ওই বাসায় কিনা জানতে? আমার তখন টনক নড়ল আরে আমি তো বাসায় কাউকে বলে আসিনি। আমি তো ভয়ে অস্থির কি করবো, তখন সন্ধ্যা সাতটা কি আট্টার মত বাজে অত রাতে তো আর ফেরার উপায় নাই। রয়ে গেলাম সেই রাতেও, পরদিন ভোর বেলায় বাসায় ফিরে যাই, বকা তেমন খাইনি কিন্তু শামীম ভাই শুধু বলল ”তোমার বলে যাওয়া উচিৎ ছিল”, এই কিন্তু, অনেক আমার জন্য। এত বোকা বোকা লাগলো নিজেকে। আসার আগে মিলু আমাকে ওর ছোট্ট লাল স্টেরিওতে একটা ক্যাসেট রেকর্ড করে দেয়, ক্যাসেটটি হারিয়ে গেছে, কিন্তু গান গুলি রয়ে গেছে। ক্লিমি ফিসার এর “লাভ চেঞ্জেস”, রেইনবোর “অন দ্য ষ্ট্রীট অফ ড্রিম”, আ হার “টেইক অন মি” সহ আরও অনেক সুন্দর আর সারা জীবনের প্রিয় হয়ে যাওয়ার মত কিছু গান ছিল। সেই থেকেই শুরু সিরিয়াস গান শোনার আর ক্যাসেট রেকর্ড করার। এর আগে আমরা গান রেকর্ড করতাম নিউ মার্কেট থেকে কিংবা কিনতাম। একটা ক্যাসেট দিয়ে তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করতাম, কবে ডেলিভারি পাবো, আর আরেকটা উত্তেজনা ছিল, ফিল আপে কবির ভাই কি দেন, তাই শোনার জন্য। ফিল আপে কি দিবো বললে আমি সব সময় বলতাম আপনি দিয়েন, জানতাম কবির ভাই ভালো কিছুই দিবেন। ক্যাসেটের সেই দিন গুলি কি যে এক আনন্দের ছিল! এল, পি (তখন আমরা ভিনাইল বলতাম না), সিডি দুইটাতে একই এ্যালবাম থাকলে আমি এল পি থেকে রেকর্ড করাতাম, কারণ দুটি গানের মাঝখানে একটা পট পট সাউন্ড করতো সেটি আমার খুব ভালো লাগতো। কত স্মৃতি, কত হাসি, কত গল্প, ফুচকা চা, কুন্দনের সিঙ্গারা, ক্যভিয়ারের মোগলাই। এর কিছু দিন পরে আরেক তুষার ভাই এর সাথে আমাদের ভাব হয় খুব, এলিফ্যান্ট রোডে, গলির পিছেই উনাদের বাসা,তুষার ভাই এর গ্যারেজের উপরের সেই রুমটা ছল বিস্ময়কর রকম আনন্দময় এক ঠিকানা। তিনি আর মিলুই পরে বেশ ক’টি রেডিওতে কন্ট্রিবিউট করেছেন। গলিতে তখন আমার যাওয়া আসা বেরে গেলো মিলুর পিছে পিছে। আরও সব প্রিয় মুখ, যাদের অনেক স্নেহ ও ভালোবাসা পেয়েছি, বিখ্যাত ফটোগ্রাফার এম, এ বেগ স্যার এর ছেলে ইমতিয়াজ আলম বেগ, ইমতি ভাই, আর রোক্সানা খ্যাত গায়ক শাহেদ ভাই,আরও অনেকেই। আরও পরে যখন বুয়েটের হলে এসে আমি উঠি, তখন রোজ রাতে আলাপ আড্ডা শেষে আমাদের পাওয়া যেত লা বোনানজাতে, কারোয়ান বাজারের সে সময় হিট রেস্তোরাঁ। বিশেষ করে আমি আর ইমতি ভাই, উনার বাসায় তখন কেউ নেই, স্যার মারা গেছেন নিজেও সংসার ধর্ম শুরু করেননি। আমারও রাত করে হলে ফিরলে খাবার না পাবার স্মভাবনা, দুজনেই হাজির হতাম সেখানে। লা বোনান জা তখন মিউজিক সার্কিটে খুবই পপুলার, একটু রাত হলেই, বাঘা বাঘা সব আর্টিস্টরা এখানে আড্ডা জমাতেন। আর ইমতি ভাই তখন একমেবাদ্বিতীয়ম ফটোগ্রাফার সব বড় বড় ব্যান্ডের জন্য। বেশ একটা জমাটি ব্যাপার ছিল সেই দিন গুলিতে।
ছিলাম কিন্তু বই পুস্তকে, আবার কোথায় চলে এলাম। বই পড়া আর গান শোনা সে সময় যেন নেশার মত চেপে বসেছিল মাথায়। রক, হার্ড রকের নেশা ধমনীতে ঢুকতে থাকে ধীরে ধিরে,সাইক্যাডেলিক ধীরে ধীরে, ব্লুজ যেন হুর মুর করে। কোন এক দিন মিলুর কাছ থেকে সি টু সি* রেকর্ড করে এনেছিলাম আয়রন মেইডেনের “লাইভ আফটার ডেথ”, পরে ছিল অনেক দিন খুব তেমন শুনিনি। একদিন বিকেলে কেউ বাসায় ছিল না, আমি জোড়ে বাজিয়ে দিলাম সে এ্যালবাম। আমি ভুলিনি এখনও, কি যে অভিভূত হয়েছিলাম, কি এক নেশা যে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল আমাকে, ডিকিন্সন, হ্যারিস, এড্রিন স্মিথ। বেইজের প্রতিটি নোট, ড্রামের প্রতিটি বিট, আর গিটার এর প্রতিটি সোলো, গা শিউড়ে উঠল আমার! ডিকিন্সনের ভোকাল তো ছিলই! লেড জেপলিন, ব্ল্যাক সাবাথ, ইউরিয়া হিপ, মোটর হেড, কিংডম কাম, স্করপিয়ন্স, ডিপ পার্পল, রেইন বো, লিখতে লিখতে শেষ হবে না, এরা সব্বাই খুব প্রিয় ছিল কিন্তু সে বুধবার, ধুসর সে বিকেলে আমার যে অ্যাটাক হল, আয়রন মেইডেন যা করল, অনেকটা ভড় করবার মত, যেভাবে আমি বিবস হয়ে গিয়েছিলাম সে আর বলবার মত নয়। আরও কিছু গান এমন ভাবে আমায় ঘায়েল করেছিল। আমার জন্মদিন ছিল, সন্ধ্যায় মিলুদের বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। একটু রাতেই গিয়েছিলাম, মিলু তার হেডফোনে ঘর অন্ধকার করে একটি গান শুনিয়েছিলও, সেবার একটু আগে আগেই বুঝি শীত এসেছিল শহরে, সেই শীত শীত সন্ধ্যা কি রাতে অন্ধকার ঘরে একটা করুন বাঁশি বেজে উঠেছিলো, সাথে অপূর্ব এক প্লাকিং …
“My name is mean Nothing
My fortune is less
My future is shrounded in darkwilderness
Sunshine is faraway, clouds linger on
Everything I possesd- now they are gone.”

Black Sabbath, one of the finest creation of Almighty.

এমন অভিভূত হয়েছিলাম তা আর বলবার নয়। কি লিরিক কি কম্পোজিশন! এ এক ব্যাখ্যার অতীত অভিজ্ঞতা। এমনই কত গান জড়িয়ে ছিল। ছিল কি এখনো আছে, তবে মাঝে মাঝে মনে হয় আমি একটা লুপেই আটকে আছি। ভালো গান যে কোন এখনো স্পর্শ করে তবে ভালো গানের সংজ্ঞা তো এক একজনের কাছে এক এক টা। আমার কাছে ভালো গান মানে যা সতস্ফুর্ত, যা লিরিসিস্ট এবং কম্পোজারের একান্ত নিজের অনুভুতির প্রকাশ, আর গায়কের সেই অনুভবকে ডেলিভারি দেয়া।

গান নিয়ত স্মৃতি জাগানিয়া, ঢাকার তখন হিট কোচিং “মিশাও”। আমরা দল বেঁধে সেখানে ভর্তি হলাম, সন্ধ্যায় ক্লাস শেষ করে হাঁটতে হাঁটতে এক সাথে সব বত্রিশের ব্রিজ পার হয়ে আটাশ নাম্বার দিয়ে মিরপুর রোডে উঠতাম, সোবাহানবাগের বন্ধুদের সাথে রাস্তার ওপারে যেয়ে একটা রেস্টুরেন্টে বসতাম। আটাশ নাম্বার রাস্তায় আসলেই সবাই এক সাথে গান ধরতাম, ফেইথের বিখ্যাত গান... ...
“নিস্‌চুপ মাঝরাত এখন শহরে,
নিভে গেছে বিজলির আলো,
ঘরে ঘরে, জনহিন পথ নিস্থব্ধ,
একা আমি চলেছি নিয়নের আলো জ্বলা পথে,
চলেছি জীবন হতে পালিয়ে...”
ধান্মন্ডী আটাশ নম্বর ছিল অপূর্ব সুন্দর একটি রাস্তা,ছিল ঝিরি ঝিরি কৃষ্ণচূড়া আর ঠিক গাছটির ওপর ল্যাম্প পোষ্ট, নিয়নের আলো যেন ঝরে ঝরে, গলে গলে ঝর্ণার মত পাতা গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে, ফুল গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে পড়ত। মনে হত যেন হাত দিলে আলোর রেণুগুলো হাতে লেগে থাকবে, হারানো ফুলেদের গন্ধের মত। মানুষ জন ভিড় ভাট্টা তখন ছিলই না, রাস্তার মোড়ে রিক্সাওয়ালাদের গুল তালি মারাও ছিল না। পরিচ্ছন্ন প্রশস্ত পীচ কালো সে রাস্তা সটান, ছিল কিছুটা বুঝি নিঃসঙ্গ। আমরা ক’জন, হাওয়ায় ভাসাতাম গান খুব। “ছায়া, ছায়া যায় দেখা কাঁচের আড়ালে তোমাকে…” জড়তাহীন গাওয়ার চেষ্টা ছিল আপ্রান, সদ্য স্বরভাঙ্গা কিশোর কন্ঠে কত আর সুর থাকে, তবু গাইতাম, গান নয় যেন ভালোবাসা। “তুমি আজ দাঁড়িয়ে আছ তমসার আলোতে জানালায় দাঁড়িয়ে তুমি, পর্দা সরিয়ে দু’হাতে, আমি আসব বলে ফিরে...” যেন দেখতে পেতাম সে ছবি, কোন এক জানালায় সত্যি বুঝি কেউ দাঁড়িয়ে একা। তারপর মিরপুর রোড পার হলে সোবহান বাগ ঢোকার ঠিক মুখটাতে হাতের বামে একটা রেস্তোরাঁ ছিল, এর নামও ছিল এরাম কিন্তু এটি সেই কুখ্যাত এরাম না, নিতান্তই চা পুরি সিঙ্গারা মোঘলাই সর্বস্ব! সেখানে ঝোল দিয়ে পুরি খেতাম, আহা সে কি স্বাদ, গরম সব ফোলা ফোলা পুরি আর কে জানে কিসের সে ঝোল,কি এক মুখরোচক রসায়ন যে তৈরি হত, পুরির কুড়মুড় মচমচে সাথে গরম ঝোলের মোলায়েম স্বাদ সুরুত জিব গলে যেন অমৃত, সে সস্তা গণ্ডার দিনে।

এফ এম রেডিওই আজকালকার বাংলা গানের সাথে একটা যোগাযোগ ঘটায়।কিছু সুন্দর, কিছু এলোমেলো , কিছু বা “কেন যে গায়”, শুনি, সময়টাকে বুঝবার চেষ্টা করি।একটা সহজ ট্রেন্ড হচ্ছে হিন্দিতে যে প্যাটার্নটা চলে সেটা কপি করলেই হিট। কারণ জনপ্রিয় বাজারটা হিন্দি মুখী, তর্কাতীত ভাবে। দুঃখজনক হলেও সত্যি। তবে সবচেয়ে ভয় যা নিয়ে, সব চেয়ে যে বিভীষিকা সেটি লিরিক, আজ এফ এম রেডিও তে একটা গান বাজছিল, ফ্রেশ অ্যান্ড নাইস সাউন্ড,ভালো লাগছিলো শুনতে কিন্তু কোরাস পার্টটা আসতেই, চুপ হয়ে গেলাম। লিরিক টা যেন একটু কেমন লাগলো। আসলে লিখতে গেলে যে পড়তে হয় খুব সে চলটাই আজকাল নেই। না পড়লে শব্দরা আসবে কোথা থেকে, কাব্য শাস্তর পড়তে হবে না, একটু তো ছন্দ জানতে হবে। সহজ একটা বই আছে আমার মনে হয় যাদের একটু লিখবার ইচ্ছে হয়, তাঁদের পড়া উচিৎ “কবিতার ক্লাস”, কবি নীরদ চক্রবর্তীর লিখা। আজকাল গানে তুই তোকারিও নাকি খুব বিকোচ্ছে, তাই এমন গানই হচ্ছে ও চলছে খুব। এটাই নাকি পাবলিক “খায়”। এটাই নাকি মূল ধারা। কষ্ট হয় বড়।

গাজি মাজহারুল আনোয়ার, আমজাদ হোসেন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, খন্দকার নুরুল আলম, মাসুদ কারিম, নজরুল ইসলাম বাবু, মনিরউজ্জামান, রফিকুজ্জামান, শামসুল হক এমন কি ব্যান্ডের গানের লিরিসিস্ট শহীদ মোঃ জঙ্গি, পাচু (কুমার বিশ্বজিতের চতুর্দোলাতে চরে দেখ ওই বধূ যায়, গানটি লিখেছেন তার ভাল নামটি জানা নেই) সহ অসংখ্য গীতি কবি ইনাদের, এই উত্তরসূরি আসবে কখন ভেবেছিলেন?

কে লিখবে এই কথা...
“কত বেদনার বিষণ্ণ মেঘে ভেসে ভেসে,
এলে তুমি অবশেষে,
তাই বাতায়নে ময়ূর এল,
ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি আজ সারা দিন ধরে,
আমার দুচোখ ভরে, তুমি এলে”
-আবু হেনা মোস্তফা কামাল

কবিতার মত সুন্দর, কে লিখবে আর...
“আমি আজ আকাশের মত একেলা,
কাজল মেঘের ভাবনায়,
বরষার এই দিন ঘিরেছে ব্যাথায়,
আমি আজ আকাশের মত একেলা, একেলা। একেলা।
সজল উদাস বায়ে বুকের কাছে,
স্বরণের তারাগুলি ঘুমায়ে আছে।
বিলাপের ভাঙ্গা সুর থেমে গেছে আঁধার বীণায়।
কাজল মেঘের ভাবনায়,
বাদলের এই রাত ঘিরেছে ব্যাথায়।। “
(পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় এর লিখা আর প্রভাস রায়ের সুর)

সোলস থেকে শুরু করে কত ব্যান্ড কি সুন্দর কথার গান দিয়েছে, এমন কি অর্ণব তাকে তো এই জেনারেশনেরই ভাবি কি অপূর্ব লিখেন “ভাবনা আমার শিমুল ডালে লালচে আগুন জ্বালে...” কিংবা বাবনা ভাইদের লিখা “অবাক ভালবাসা”... এই গান গুলো লিখার সময় তারা কিন্তু বিশ বাইশ বছরের তরুণই ছিলেন। তাহলে এখন এমন কেন হচ্ছে? এ নিয়ে কিন্তু ভাবা দরকার। শুধু বাংলা গানেই কিন্তু এ খরা তাই না, ইংরেজি গানেও দেখি তাই। “বহেমিয়ান রেপসোডি” ফ্রেডি মারকারি একাই লিখেছেন, “রান টু দ্য হিলস্‌” লিখেছেন স্টিভ হ্যারিস কিংবা ইম্যাজিনের মত গান। আজকাল শুনি রিয়ানা, অমুক তমুক এদের এক একখানা গান লিখে চার পাঁচজন মিলে আর লিরিক কি, সব অদ্ভুত!

“Come and put your name on it
Put your name on it
Come and put your name on it
Your name
Bet you wanna put your name on it
Put your name on it
Come and put your name on it”
Ba-Ba-baby (Rihanna: Birthday Cake)

সারা পৃথিবী জুড়ে চলেছে বানিজ্য বাতাস। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতও তার বাইরে নয়। খুব ছোট বেলায় নিস্তব্ধ দুপুর বেলা বাবা বাসায় ফিরলে, বাবার চুল টেনে দিতে হত। বাবা শুয়ে থাকতেন আমি কিংবা আমার বোন বিছানার হেড বোর্ডের পিছে বসে চুল টানতে থাকতাম, বাবা ক্যসেটে বাজাতে থাকতেন রবি শঙ্কর কি বিসমিল্লাহ খাঁ, কখন বাবার খুব প্রিয় নাজাকাত আলী, সাফকাত আলী (তাঁদের পরম্পরা এখনো সংগীত জগত আলো করে আছেন)। তখন হয়ত আচ্ছন্ন হতাম না কিন্তু সেই যে শোনার জন্য কান তৈরি হল, তাই পরবর্তী ভালো মন্দ শোনার একটা অভ্যাস হল। বাবা যখন কালচারাল মিনিস্টারে অবনমিত হলেন, জাস্টিস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হয়ে আসার পর তখন একবার নাজাকাত আলী, সাফকাত আলী কে এদেশের অতিথি করেছিলেন, আমাদের ধান্মন্ডীর বাসাতেও নাকি তাঁরা খুব ঘরোয়া একটা মাজলিস করেছিলেন। ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম অত কি আর বুঝি সে বয়সে। মানুষকে রুচি তৈরি করতে হয়। হেমেন মজুমদারের একটা বই আছে “ছবির চশমা”, সেখানে রুচি তৈরি করার ব্যাপারে খুব জোড় দিয়েছেন। মানুষ হঠাৎ এক সুন্দর সকালে বিলম্বিত লয়ে রাগ মেঘমল্লার শুনতে শুরু করতে পারবে না। যতই ইংরেজি গান শুনে হেড ব্যাঙ্গিং করুক চাইকোভস্কির “সোয়ান লেইক”, শুনতে একটা রুচি তৈরি করতে হয়। সব শিল্পের ব্যাপারেই এ কথা সঠিক। আর এখন তো আর্টের ফিলসোফি পুরোই বদলে গেছে। এখন বলা হয় “ আর্ট ফর আর্ট সেইক” মানে শিল্পের জন্যই শিল্প, সেই শিল্পকে বুঝতে গেলে একটা ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করতে হয়।ক্যামেরা আবিস্কারের পড় থেকে ছবি আঁকার ভাবনাই পাল্টে গেল। কি দেখছি আর জরুরী নয়, কিভাবে দেখছি তাই জরুরী। আলোর সাথে কিভাবে সব বদলে যায়, তাই খুঁজে দেখেছেন ইমপ্রেশনিস্টরা তাঁর পড় থেকে সব বদলেই যেতে থাকল, আঁকা বদলে গেল, পদ্য বদলে গেল, উপন্যাস বদলে গেল।

বাংলায় এ সংক্রান্ত বেশ কিছু খুব ভালো বই রয়েছে, উৎসুক পাঠকের জন্য সেগুলো একটু বলে রাখি, “পশ্চিম ইউরপের চিত্রকলা”- অশোক মিত্র, হেমেন মজুমদারের “ছবির চশমা”, আরনেস্ট ফিসারের “নেসেসিটি অফ আর্ট”, পূর্ণেন্দু পত্রীর “ছবি, কবি, কবিতা”, “টপ্পা ঠুমড়ি” আরও অনেক কয়টা পড়বার মত বই আছে। আরও হল সুনীলের “ছবির দেশে, কবিতার দেশে” নীললোহিতের “সুদূর ঝর্ণার জলে”। এ গুলো খুব সহজ ভাবে মানুষকে শিল্পের একটা খোঁজ খবর দেয়। কম বেশী শিক্ষিত মানুষকে এসব জানতে বুঝতে হয়। বিদেশে দেখেছি মানুষ জন কম বেশী কিছু জানেন শিল্প, সাহিত্য, স্থাপত্য নিয়ে। আমাদের দেশে এর চর্চা কম। সুযোগও কম, পথ দেখানোর লোকের বড় অভাব। আবদুল্লাহ আবু সাইদ আর কজন আছেন? সো কল্‌ড মটিভেশনাল স্পিকাররা কত কথা বলেন, সিক্সডিজিট ইনকামের কথা বলেন, কই বলেন নাতো, “যাও এই ছবিটা দেখে আসো” এই বইটা “পড়”! সাইদ স্যারের একটা বই আছে “নিস্ফলা জমির কৃষক” এই বইটি সবার পড়া উচিৎ, সান জু’র “দ্য আর্ট অফ দ্য ওয়ার” যেমন সবার পাঠ্য সাইদ স্যার এর বইটিও তেমন। তিনি যেমন বলেন “সফলতা নয় সার্থকতাই মুখ্য” জীবনটাকে সার্থক করাই জীবনের উদ্দেশ্য, যেভাবেই হউক, এ চির সত্য, এ অনুধবনের বিষয়। সফলতার হিসেব টাকা আনা পাই এ, কিন্তু সার্থক জীবন বিশাল এবং ব্যাপক। এমন আলোকিত মানুষ এ সমাজে ক্রমেই যাচ্ছে কমে। চিন্তার বৈকল্য বাড়ছে, ছেলেপুলেরার আজকাল অনেক কিছু জানছে, বুজছে কিন্তু নিজেদের কে হারিয়ে ফেলছে, নিজেদের সৃষ্টিশীলতা কে ভাসিয়ে দিচ্ছে, বেনো জলে। অলস দুপুরে বই পড়তে পড়তে কই যে হারিয়ে যেতাম আমরা, সে রাজ্যার ঠিকানা আজ হয়ত তেমন কেউ খুঁজে পায় না। জানালায় বৃষ্টি অঝোর ,অপলক তাকিয়ে আছি আকাশে, এ বিশাল সৃষ্টির কিছুটা আভাস হয়ত মনের কোনে উঠে আসছে চুপি চুপি। নিজেদের সাথে নিজেদের কেটে যেত কত বেলা, তা আজ কাল আর হয় কই? এই শিশুদেরই কিবা দোষ আমরাই তাঁদের খাচায় পুরে রাখি, তাদের চিন্তাকে আটকে রাখি অন্তজালের খাঁচায়।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×