আমি যখন অষ্টম শ্রেনিতে পড়তাম তখন বিশাল এক ঝামেলাই পরে গিয়েছিলাম।তখন মাদ্রাসাতে পড়তাম। যখন রেজিসটেশন এর সময় আসল মাদ্রাসাতে তখন আমার রেজিসটেশন করতেছিলনা ।কারন আমার ৫ম শ্রেনির সার্টিফিকেট নাই।আমি ৫ম শ্রেনির পরীক্ষা দেইনি।এই জন্য আমার রেজিসটেশন হয়তেছিল না।তখন আমার মাথা পুরাই নষ্ট।তখন আমার যে কি অবস্থা তা আমি ছাড়া আর কেউ জানে না।যখন আর এক দিন বাকি রেজিসটেশন এর তখন আমার ভাইয়া রাজু বলল টেনশন কর না,মাদরাসাতে হল না ত কি হয়ছে,স্কুল আছে না।তুমি এক কাজ কর স্কুল এ রেজিসটেশন করে ফেল।তখন আমার এলাকা কাঁপানো কান্না অল্প থামল।তখন তরিঘড়ি করে স্কুল এ ভর্তি হলাম।স্কুলে তখন এই নিয়ম ছিল যে,৫ম শ্রেণিতে এক্সাম না দিলেও ৮ম শ্রেণিতে এক্সাম দেওয়া যাই।(২০১৩তে)।যাই হোক অনেক কাঠখড় পেরিয়ে অবশেষে স্কুলে ভর্তি হলাম।তখন আমার গুরুত্তপূর্ণ চার টি মাস চলে গিয়েছিল।আগে কোন দিন স্কুলে পড়ি নাই। জীবনের প্রথম যখন স্কুলে পড়তে গেলাম তখন আমার অন্য রকম অনুভূতি হয়তেছিল মনের ভেতর।কারন কোন দিন মেয়েদের পাশে বসি নাই আর কথা বলা ত অনেক দূরে।কিন্তু স্কুলের প্রথম দিন আমাকে মেয়েদের পাশে বসতে হয়েছিল।একদিন দুদিন করে আমাদের half yearly exam চলে এসেছিল।এক্সাম অনুযায়ী আমার অত পড়াশুনা হয় নাই। এর মাঝে স্কুলে অনেক বন্ধু জোগার করে ফেলেছিলাম।আর মেয়েদের ধারেকাছে যাই নি।কারন মেয়েদের আমি খুব ভয় পাই।কিন্তু এক্সাম এর সীট পড়ছিল আমাদের শ্রেণির প্রথম মেয়ে ইসরাত জাহান এর পাশে।প্রথম অনেক ভয় পেয়েছিলাম।পরে তা কেটে যাই।আমার টেস্ট এক্সাম আসতে আসতে তার সাথে আমার ভাল খাতির হয়ে যাই।এই অল্প খাতিরে কখন যে আমি তাকে ভালবেসেফেলি তা আমি জানি না।শ্রেণির অন্য বন্ধুরা আমাকে প্রায় বলত ইসরাত কে যেন আমি আমার ভালবাসার কথা বলে দিই।কিন্তু আমি সাহস পাইনি,আমাদের ভাল সম্পর্কটা যদি নষ্ট হয়ে যাই।টেস্ট এক্সাম চলে গেল,আমার মনের কথা বলা হল না।দেখতে দেখতে ফাইনাল (J S C)এক্সাম চলে আসল।তবুও বলা হল না,না বলার কথা।আর এদিকে আমার বন্ধুরা আমাকে আমার ভালবাসার কথা বলতে খুব চাপ দিতেছিল।আমি ঠিক করলাম যেদিন আমাদের (J S C)এক্সাম এর রেজাল্ট দিবে সেদিন আমি তাকে আমার,না বলার কথা বলব।দিনটি 31 December 2013, সকাল থেকেই অন্য রকম অনুভুতি বিরাজ করতেছিল আমার মনে।অনেক দিন পর ইসরাত কে আমি ভালবাসার কথা বলব। অনেক আনন্দ লাগতেছিল।৫টা সময় তার সাথে দেখা করতে গেলাম তার বাড়ীর পাশে।গিয়ে দেখি আমার আগেই সে এসে অপেক্ষা করতে ছিল আমার জন্য।
ইসরাত বললঃ ওই কি খবর তুমার,রেজাল্ট এর খবর কি?
আমি বললামঃ বেশি ভাল না। 4.44 পাইছি। তুমি কি পাইছ?
ইসরাত বললঃ মনটা খুব খারাপ (A+)পাইলাম না।4.56 পাইছি। তুমার ব্যাপার বুজলাম না,তুমি(A+) পাইলা না কেন,তুমি ত অনেক ভাল এক্সাম দিছ।
আমি বললামঃ থাক ওসব কথা।তুমার কথা বল।
ইসরাত বললঃ আমার কথা কি বলব,আমার কোন কথা আছে না কি।
আমি বললামঃ আচ্ছা ইসরাত তুমাকে একটা কথা বলব,রাগ করবা?
ইসরাত বললঃ কি এমন কথা যা আমি শুনলে রাগ করব।আচ্ছা বল রাগ করব না।তাড়াতাড়ি বল আমায় চলে যেতে হবে।
আমি আমার ব্যাগ থেকে একটি ডাইরি বের করে দিলাম তার হাতে।ইসরাত মুখ খোলার আগেই আমি বললাম,দয়াকরে ফিরত দিও না, আমি খুব কষ্ট পাব।
এই বলে আমি আর সেখানে দাড়ালাম না, চলে আসলাম। (সে জানে না যে ডাইরির ভিতর একটি চিঠি আছে)। যাই হোক, আমি তার চিঠির আশাই পথ চেয়ে থাকলাম।কিন্তু সে আমাকে কোন চিঠি লিখলনা।
এমন কি কোন যোগাযোগও করল না।আমি জানি না আমার কি ভুল ছিল। সে কি পারত না আমার হতে?
আজও তোমায় মনে পরে ইসরাত জাহান
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৩