somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরো একটি উজ্জ্বল তারা

২৩ শে মার্চ, ২০০৭ সকাল ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিনটি- ১৫'ই মে ২০০৬। অবশ্যই এটা একটা স্বরণীয় ঘটনা ছিলো। চাকুরীর সুবাদে আমি সে সময়ে তুরুস্কে আছি। একটি বিশেষ গুরুত্বপুর্ন আনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেছিলাম তুরুস্কের ুগ্রান্ড ন্যাশনাল এ্যাসেম্বেলিতে (পার্লামেন্ড)। প্রেসিডেন্ড বুলেনত্ অ্যারিঞ্চ এর নিমন্ত্রনে মাইক্রোক্রডিট এর জনক প্রফেসর মুহাম্মাদ ইউনূস এর আগমন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান। আমরা প্রায় ১০ জন বাঙ্গালী নিমন্ত্রন পেয়েছিলাম। ক্ষুদ্রতার কারণে বাংলাদেশের পার্লামেন্টের কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের যোগ্যতা যেখানে রাখিনা সেখানে মুহাম্মাদ ইউনূস এর আশির্বাদে বাঙ্গালী হিসাবে তুরুস্কের মতো দেশের জমকালো এক অনুষ্ঠানে যাওয়া নিঃস্বন্দেহে গুরুত্বপূর্ন।
প্রফেসর ডঃ আজীজ আকগুল (সংসদ সদস্য ও তুরুস্ক মাইক্রোক্রেডিট এর সি.ই.ও) এর উদ্দোগ্যে এই আয়োজন।
আমি বসেছিলাম ঠিক ডায়াসের সামনেই তৃতীয় সারিতে। আমার ডান পাশে ছিলো মিঃ শাসসুল আলম খান চৌধুরী (প্রজেক্ট ডাইরেক্টর, টার্কী গ্রামীণ মাইক্রোক্রেডিট প্রজেক্ট) আর বাম পাশে ছিলো মিসেস এ্যায়শা বাতুল (প্রজেক্ট ম্যানেজার, ভান প্রদেশ)। প্রথমেই উদ্ভোধনী বক্তব্য রাখলেন প্রফেসর আজীজ। তার বক্তব্যের বিষয় বস্তু ছিলো- তুরুস্কের কোথায় কোখায় মাইক্রোক্রেডিট এর কাজ চলছে। তাদের জন্য এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। ভবিষ্যত পরিকল্পনা এবং সর্বপরি গ্রামীণ ব্যাংক তথা বাংলাদেশের ভূমিকার আকাশচুম্বি প্রসংশাই ছিলো তার মূল কক্তব্য।
এর পর ডায়াসে এলেন প্রেসিডেন্ড বুলেনত্ অ্যারিঞ্চ। তিনি সকলকে ধন্যবাদ এবং মুহাম্মাদ ইউনূস কে শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করলেন। ২০০৩ সালে প্রধান মন্ত্রী তাইপ এরদোয়ান এর নিমন্ত্রনে প্রফেসর ইউনূস তুরুস্কে এসে মাইক্রোক্রেডিট এর কাজ কি করে শুরু করলেন- এই ইতিহাস তিনি বললেন। অনুন্নত, উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশে কেন এই কাজ ভিষন দরকার তাও তিনি স্বল্প পরিসরে ব্যাখ্যা করলেন।
অবশেষে ডায়াসে আসলেন প্রধান অতিথি প্রফেসর মুহাম্মাদ ইউনূস। তিনি সহজ ইংরেজীতে তাঁর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। শুরুর কাহিনী, গ্রামীণ ব্যাংকের পথ চলা, তাত্ত্বিক দিক, তুরুস্কের মাইক্রোক্রেডিট, মাইক্রোক্রেডিট আইন, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়ে তিনি সাবলিল বক্তব্য রাখলেন। তাঁর কক্তব্যে জানিনা কি ছিলো! তিনি যখন বলছিলেন পুরা হলরুমে পিং পতন শব্দের আওয়াজ টুকু ছিলোনা। সবার চোখ ডায়াসের দিকে আর কান ছিলো সাউন্ড বক্সের দিকে। এমন প্রানবন্ত বক্তব্য সত্যি আমি শুনিনি কখনও। বক্তব্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে শত শত আমন্ত্রিত ব্যাক্তিবর্গ একসাথে দাঁড়িয়ে গেলো এবং প্রায় ১০ মিনিট পর্যন্ত বিপুল উৎসাহে হাততালি দিতে থাকলো।
এ্যাসেম্বেলি সানাত হল থেকে বেরিয়ে তিনি গেলেন পাশের আর একটি রুমে বেশ কিছু টিভি চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকার দেবার জন্য। অনেকের সাথে আমিও গিয়েছিলাম। সেখানে পরিচয় হলো এ্যম্বাসেডর মেজর জেনারেল (অবঃ) রেজ্জাকুল হায়দারের সাথে।
লাঞ্চের জন্য গেলাম এ্যাসেম্বেলির মারবেল হলে। নিঃস্বন্দেহে এটাও ছিলো জমকালো এক আয়োজন। আপর ৫ জনের সাথে এক টেবিলে বসেছি। এদের মধ্যে ৩ জন টার্কীস, ১ জন আজারবাইজান (মহিলা), আপর জন আরব (মহিলা)।
এ্যাসেম্বেলি ভবন অনেক বড় এরিয়া নিয়ে। বাংলাদেশ সংসদ ভবনের চাইতে এর পরিধি প্রায় ৭ গুন বড়। এর গুরুত্বপুর্ন হল গুলো মাটির নিচের ফ্লোরে আবস্থিত। খুব দ্রুত হেঁটে গেলেও এর এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে যেতে ১ ঘন্টার বেশী সময় লাগবে। বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ভবনের মানচিত্র। মানচিত্র ফলো না করলে যে কারো জন্য পথ ভুলে ভুতের চক্রে পড়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

রাতে ডিনারের নিমন্ত্রন ছিলো প্রফেসর আজীজ এর বাসায়। তুরুস্কের বহু গুরুত্বপুর্ন ব্যাক্তিত্ব (উপ-প্রধান মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ব্যাবসায়ী, প্রায় ১০টি দেশের এ্যম্বাসেডর এবং তাদের সাথে অতি ক্ষুদ্র এই আমি)।

(এ্যাসেম্বেলি তে ছবি তোলা নিষেধ থাকায় এই কাজটি করতে পারিনি।)

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×