somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলিশ কোন ইয়ের ইয়ে

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীরা যখন, ‘পুলিশ কোন ইয়ের ইয়ে ( )’ বলে স্লোগান তুলেছিলো তখন আমার মনে হয়েছিলো এদের অনেকের তো নিজেদেরই ইয়ের ইয়ে ওঠেনি। আর পুলিশকে এসব বলার কি আছে, কারণ পুলিশ তো রাষ্ট্রের ইয়ের ইয়ে। কিন্তু ওই মুহূর্তে এটা নিয়ে কিছু বলা ছিল ভুল এবং বোকামি। কারণ সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস যখন ওঠে তখন নোংরা অনোংরা সব কিছু নিয়ে ওঠে। জলোচ্ছ্বাসের কোন ধর্ম অধর্ম নেই (এই দুই লাইন ব্লগ থেকে নেয়া)। কখনো কোন লণ্ডভণ্ড ধারা নিয়ম মেনে হয় না, সভ্য থেকে হয় না, সব লণ্ডভণ্ড করেই হয়। কাজেই যেভাবে যে ভাষাতেই তীব্র ক্রোধ ফুঁসে উঠেছে সেভাবেই এটাকে জোরালো সমর্থন দিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। ক্রোধের শক্তিই হল একেবারে সব ছিঁড়ে ফেলা, কোন বাঁধ না মানা।

দেবী দুর্গার আরেক রূপ কালী। দুর্গা তাঁর স্বরূপেই অর্থাৎ সভ্য সুশীল রুপেই অসুর বধ করতে পারেন। তাহলে কালী হতে হয় কেন ? ক্রোধের সর্বোচ্চ পর্যায়ের শক্তিই তাঁকে কালী হতে বাধ্য করে। এমন নয় যে স্বেচ্ছায় তিনি তেমন হন। তীব্র ক্রোধে আপনাআপনি তিনি এরুপে প্রকট হন। তখন তাঁর পোশাক, সভ্যতা কোন কিছুই নিয়ম মানে না। সমস্ত লণ্ডভণ্ড করে ক্রোধের শক্তির উদগীরন ঘটিয়ে তবেই তিনি শান্ত হন। এ অবস্থাতে কিন্তু তিনি থাকতে পারেন না, কারণ তাহলে জগতের সব খারাপের বিনাশের সাথে সাথে ভালোও বিনাশ হতে থাকে। শক্তির উদগীরন শেষে তাঁকে আবার সভ্য শান্ত বেশে ফিরে আসতে হয়। কিন্তু এই কালী রূপ ধারণে যদি দেবতারা তাঁকে বাঁধা দিতো তাহলে কি হতো। তিনি অসুরদের সাথে দেবতাদেরও বধ করে দিতেন। এবং একসঙ্গে বিশাল অসুরের পাল বধ করা সম্ভব হতো না। অথচ এই দেবতারা তাঁর সমর্থনে থাকেন বলেই ক্রোধের উদগীরন শেষে তাঁরা তাঁকে শান্তরুপে ফিরিয়ে আনতে পারেন। দেবতারা নিজেরা অসভ্য হননা ঠিক কিন্তু কালীর এই রুপকে তাঁরা সমর্থন দিয়ে যান এবং পরে তাঁকে আবার সুশীল রুপে ফিরতে সহায়তা করেন।

ঠিক তেমনি ছাত্রদের এই আন্দোলনে যাঁরা ভাষা নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছিলেন তাঁরা আসলে শক্তিটাকে ক্ষয় করেছেন। ছাত্রদের ক্রোধের শক্তি প্রকাশে তাদেরকে অপরাধীদের সাথে সাথে আপনাদের সাথেও লড়তে হয়েছে। কালী রূপ ধারণ যেমন আটকানো যায় না তেমনি ক্রোধে ভাষার এরুপ প্রকাশও আটকানো যায়নি। কিন্তু বাধা দিয়ে উল্টো আপনারা শত্রু হয়ে গেছেন। এবং এটা ছিল একটা বিরাট ভুল। বরং আন্দোলন চলাকালে যদি সবাই অকুণ্ঠ সমর্থন দিতো, তাহলে কসম বদমাশদের আরশ আরও অনেক বেশী কেঁপে উঠতো। আবার গুজব নিয়েও আরেকদফা বিপুল পরিমাণ লোক তাঁদের শক্তি ক্ষয় করলো। ভাষাটা ছিল আপনাদের নিজেদের উপলব্ধি না থাকা আর গুজবটা ছিল রাজনীতির ষড়যন্ত্র বুঝতে না পারার বোকামি। এই দুইরকম বাধায় শক্তি ক্ষয় হয়ে আখেরে একটাও অসুর বধ না করে ছাত্রদের ফিরে যেতে হয়েছে। উল্টো এই অসুররা এখন প্রতিশোধের নেশায় আরও আসুরিক হয়ে উঠেছে। সবার উচিত ছিল অন্ততপক্ষে একটা হলেও অসুর বধের পর ছাত্রদের শান্ত করার। কারণ ওরা ছাত্র, ওরা শিশু, অসুরের পাল বধ করা ওদের দায়িত্ব নয়। এরপর ছাত্রছাত্রীরা আপনাআপনি সভ্য বেশে ফিরতে না পারলে ওদেরকে ফিরিয়ে আনা সুশীল সমাজের মায় সকলের দায়িত্ব হত।

এখন ওরা শান্ত হয়ে ফিরেছে। কিন্তু ভাষা ব্যবহারে কতটুকু মার্জিত থাকবে তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত হয়ে উঠেছেন অনেকে। চিন্তা স্বাভাবিক এবং দরকারও। কিন্তু বিষয়টা এখন জটিল করে ফেলেছেন নিজেরাই। একে তো নিজেরা প্রতিবাদে ব্যর্থ, তার উপর ছোটদের আন্দোলন ব্যর্থ করে দিয়েছেন। বোকা শত্রু হয়েছেন। তাহলে এই ব্যর্থ, বোকা সুশীল বড়দের ছোটরা মানবে কেন। কোন কারণই তো নেই তাদের মানার। তারা নিজেদের মত করে সব সভ্যতা, অসভ্যতা, নীতি নৈতিকতা, মূল্যবোধ বানাবে এবং সেই মত চলবে। বলাই বাহুল্য তাদের বয়সজাত বুদ্ধির অপরিপক্কতার জন্য এসবের মধ্যে অনেক ভুলভ্রান্তি এবং অসংলগ্নতা থাকবে। কিন্তু অভিভাবক এবং শিক্ষকরা তাদের আর ঠেকাতে পারবেন না কারণ তারা আপনাদের বোকামির জন্য ওদের আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার দিকে আঙ্গুল তুলবে।

যারা স্লোগান তুলেছে তাদের এবং আমাদেরই অসংখ্য আত্মীয় স্বজন পুলিশ বিভাগে আছে। ওরা সরকারের চাকর, সরকার যা বলে ওরা সেই মত চলে। তাই সরাসরি যদি বলা হত, ‘পুলিশ সরকারের ইয়ের ইয়ে’ তাহলেই সবচেয়ে সাহসী এবং উপযুক্ত হত। কথায় আছে, মুরুব্বীরা যা বলে বুদ্ধিমানরা সেই মত চলে। এখন মুরুব্বীরাই যদি বোকার মত বলে, তবে বুদ্ধিগাছেও তো বোকা ফল ফলে। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের মুরুব্বীদের বোকামির ফল এখন টের পাচ্ছে সবাই। না জানি ছাত্রদের আরও কত হয়রানি সহ্য করতে হবে সামনে।

বি.দ্রঃ- যে যে ধর্মেরই হোন, মানুষের ক্রোধের শক্তিকে বোঝার জন্য উপরের উদাহরণটি নিতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৭
৪৮টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×