যুগল হারানো সেই কানের দুলটি আর তাকে ধারণ করা বোকা বাক্সটি অনেক টা সময় এক সাথে কাটালো । অনেক বছর পর, দুলটি অল্প অল্প হাসতে শুরু করলো। কারণ, তাকে হাসি ফিরিয়ে দেবার জন্য, বোকা বাক্সটির আপ্রাণ চেষ্টা তার হৃদয় স্পর্শ করতে শুরু করেছে। কারণে অকারণে, সেই দুলটি আবার হাসতে আরম্ভ করে। বোকা বাক্সটি ও তার চকমকে হাসির ঝলকানি মুগ্ধ হয়, আর তার দিকে ধাবিত হতে থাকে। তীব্র আকর্ষণ অনুভব করতে থাকে। কাছে থাকার আকর্ষণ, সাথে থাকার আকর্ষণ … তার বুকে সেই ছোট্ট দুল টিকে চিরদিনের জন্য ধারণ করবার আকর্ষণ ।
দিন গুলো ভালই যেতে থাকে তাদের। বোকা বাক্সটি মনস্থির করে, সে দুলটি কে বলবে যে …তার অনুভুতির কথা। তার সাথে বাকি টা জীবন কাটানোর কথা। বোকা বাক্স একটি দিন ঠিক করে , যেদিন দুলটি কে তার মনের কথা বলবে। দিনটি হবে, দুলটির সৃষ্টি দিন ।
আজ দুলটি কে বেশ আনন্দিত দেখাচ্ছে। অন্যদিনের থেকে ও আজ মনে হচ্ছে সে অনেক বেশি ঝলমল করছে। কে জানে, হয়তো বিশেষ একটি দিনে সবাই এমন ঝলমল করে। সে যাই হোক , আজ কে বোকা বাক্স তার মনের কথা বলবেই । নিশ্চয়ই দুলটি তার কথা শুনে অধিক আনন্দিত হবে।
বোকা বাক্স দুলটি কে বলতে …যাবে … ঠিক এমন সময়, বোকা বাক্সের ঢাকনাটা খুলে গেল।
বোকা বাক্স স্তম্ভিত। মনে হল… সমস্ত বাক্সের দেয়াল জুড়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যাচ্ছে। বাক্সটি ক্রমেই তার আবরণ ত্যাগ করতে থাকে, তার চারটী বাহু কেমন খয়ে খয়ে যেতে থাকে। এমন তো হবার কথা ছিল না। তবে এমন হল কেন।
বোকা বাক্সটি এখনো নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না, যে জোড়া বিহীন দুলটি কে সে এত দিন বুকে জড়িয়ে বেঁচে থাকলো – তার জোড়া আজ ফিরে এসেছে। সেই যুগলহীন দুলটি আজ কে আবার যুগলে পরিণত হল। তাদের কে এক সাথে বেশ হাসি খুশি লাগছে, ফুরফুরে আর প্রাণ চঞ্চলতায় আবারও তাঁদের মুখর দেখা যাচ্ছে। যে দুলটির প্রানবন্ত আর অমায়িক হাসির জন্য বোকা বাক্সটি অপেহ্মা করছিল … এত বছর, আজ কে আবার তাকে ঠিক সেই চিরচেনা হাসিতে দেখা যাচ্ছে।
বোকা বাক্সটি হাসল নিজ মনেই আর ভাবলও সত্যি সে বোকা । এমনটাই তো হওয়ার কথা ছিল … সবসময় এমনটাই ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩০