somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাগো বাংলাদেশ ৩

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এই তো সেদিনও এই প্রজন্মের তরুণ তরুণীদের মেরুদণ্ডহীন মনে করা হত। মেরুদণ্ডহীন মনে করা হত বেশ সঙ্গত কারণেই। যে প্রজন্মের পূর্ব পুরুষেরা ৫২’তে ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। দেশের সম্ভ্রম রক্ষা করতে ৭১’এ ঝাঁপিয়ে পড়েছে পাকিস্তানী শত্রু সেনাদের উপর। পূর্ব পুরুষের সেই প্রজন্ম কি করে আজ নির্যাতন সন্ত্রাস, দুর্নীতি, অন্যায় মেনে নিয়ে সহবস্থানে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। কেমন করে চোখের সামনে ধর্ষণের সেঞ্চুরিয়ানদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে মিথ্যের সাথে সহবাস করছে।

কোন আন্দোলনই পরিকল্পনা করে গড়ে তোলা যায়না। সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস হত্যা, গুম, আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে অনেক চেষ্টা করেও বিএনপি-জামায়াত সফল হতে পারেনি। আরব বসন্তের সমীকরণে আন্দোলন চেষ্টা করেও মাহী বি চৌধুরীরা সফল হতে পারেনি। আন্দোলনের মূল শক্তি গন-মানুষের আস্থার অভাবে সে সকল আন্দোলন গড়ে উঠেনি। সেই জন্য প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা সুশীল সমাজ বারবার হতাশা প্রকাশ করেছেন। আর বুঝি এদেশটাকে স্বপ্নের প্ল্যাটফর্মে দাড় করানো সম্ভব হলো না।

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল বলে খ্যাত দলও বাংলার মানুষের অনুভূতি ও আবেগ নিয়ে বারবার উপহাস করেছে। সাধারণ মানুষের সাধারণ চাওয়াকে মূল্যহীন বলে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে, তখন দেশের গন-মানুষের হতাশা আকাশ চুম্বী হয়েছে। আঁধারের মাঝে আলো জ্বালাবার কোন সম্ভাবনাও অবশিষ্ট থাকেনি।

আমাদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ব্যবধান বেড়ে অসাধন যোগ্য উচ্চতায় উঠে গেছে। কি ছিল সাধারণ মানুষের মানুষের প্রত্যাশা?

বাংলাদেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে। যখন প্রতিটি মানুষ রক্তঝরা ঘামের বিনিময়ে প্রতিদিন একবেলা খাবারের আশায় সমস্ত শক্তি বিনিময় করেও অর্জন করতে না পারে, তখন তাঁদের প্রত্যাশা আর কিইবা অবশ্যিষ্ট থাকতে পারে। প্রত্যাশা প্রাপ্তির সমীকরণটা অতি সহজ, ঐকিক নিয়মে অংক কষে এর উত্তর পেতে হয়না। কিন্তু বিগত সরকারগুলো এই মেহনতি মানুষের আবেগ আর ছোট ছোট চাহিদার সাথে ছলনা করেছে। সংসদে বসে কোটি টাকা খরচায় নিজেদের হিস্যা নিয়ে দর কষাকষি করেছে। গন-মানুষের প্রত্যাশার দিকে ফিরেও তাকায়নি।

দেশের কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক শুধু বড় বড় কথা বলে পত্রিকা টেলিভিশনে বক্তৃতা দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছেন। আবার রাতের আঁধারে নিজের স্বার্থ আদায়ের দরদামে মত্ত থেকেছেন, স্বার্থ অদায়ে কলম চলেছে, গন-মানুষের অধিকারের দিকে ফিরেও তাকায়নি। সুশীল সমাজ বুদ্ধিজীবীরা একটি দলের কেনা দাসে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের কথায় একসময় এ জাতি গর্জে উঠেছিল, তাঁদের কথাতেই সাধারণ মানুষ ধিক ধিক বলেছেন। তাঁদের মুখস্ত কথা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে অপ-চর্চা চলছে তাঁতে দেশের সাধারণ মানুষের দিকে তাকানোর মত কোন গোষ্ঠী বা ব্যক্তিগত কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

একটি গণতান্ত্রিক দেশে স্বৈরাচারের চেয়েও বেশী নির্যাতন ও অধিকার হরণ করা হয়েছে। হত্যা গুম ধর্ষণের মত বর্বর সমস্ত কাজগুলো যেকোনো সময়ের চেয়ে রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে গেছে। দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বারবার দেশকে ধর্ষণ করেছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে। যে মানুষের জন্য আইন, সেই আইন সাধারণ মানুষকে দাবিয়া রাখতে, নির্যাতন করতে ব্যবহৃত হয়েছে। আর সরকার প্রধান তাঁদের এই কর্মকে বাহ বাহ দিয়ে উৎসাহিত করেছেন।


আজ যখন প্রজন্ম জাগরণের আন্দোলন দেখলাম। এই প্রজন্মকে আবার জাগতে দেখলাম, তখন মনের মাঝে আশাগুলো জ্বলজ্বল করে উঠলো। আবার স্বপ্ন দেখতে চাইলাম। নেতিবাচক অনেক কিছু ভাবতে গিয়েও থেমে গেলাম। ফেসবুক, ব্লগে বন্ধুদের অনেক হতাশা ও আশংকার কথা শুনেও আশাহত হলাম না, আমার বিশ্বাস আরও প্রবল হলো। জ্বলে উঠা, জেগে উঠা, নবজাগরনের নবীন প্রজন্মের সাথীদের গলায় জড়িয়ে বলতে চাইলাম, শুধু যুদ্ধাপরাধী কসাই রাজাকারদের ফাঁসি চাওয়া নয়। যারা স্বামী আর পিতার দোহাই দিয়ে এ সোনার দেশটাকে তামায় পরিণত করছে। দেশটাকে কারবালা বানাচ্ছে, দুর্নীতি, হত্যা গুমের খেলা খেলছে, ওদেরকেও ছাড় দেয়া হবেনা। জেগে উঠো বাংলাদেশ, শুধু দেশ বিরোধী, মানবতাপরাধী কসাই রাজাকারদের বিচার নয়। এই বাংলায় নব্য কসাই, নব্য মীরজাফরদেরও বিচার করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ্‌।

প্রজন্ম জেগেছে আজ
মুছে দিতে সব দাগ
আর নয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব ও-মিছিল
এপার ওপার হয়ে যাক একাকার
বিজয় কেতনে মশাল দেখি স্বপ্নিল

জাগো বাংলা জাগো বাংলা
বৃদ্ধ তরুণ বণিতা
আঁধারের দিন শেষ ভোরের সূর্য ঐ বেশ
শুনা যায় বিজয়েরও বারতা
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×