somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট ছোট কথামালা (১) বেইজ্জতি কান্ড

২০ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। ঘেউ ঘেউ বাপরে বাপঃ

আগে সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাদে গিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করতাম । একদিন ছাদে উঠে দেখি আমার আগেই আরেক ভদ্রলোক উঠে বসে আছে , অনেক্ষন ঘুমানের পর ব্যাটা ঝিমায়া ঝিমায়া রেস্ট নিতাছে । আমি তারে একটা নুরানী ভেটকী দিয়া টম-জেরির টম মিয়ার মত আস্তে করে এক পা দু'পা করে পিছাইতে লাগলাম । সেও হাই তুলে ইয়া বড় এক হা করে মুচকি হাসল , তারপর চমকে উঠে আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকল । আমিও অপলক তাকিয়ে থাকলাম ।B-)

পরী কিংবা মানুষ পরী হলে যুগ যুগ ধরে তাকায়ে থাকা যেত । কিন্তু এ দুটোর কোনটাই না হওয়াতে আমি চিল্লায়া উঠলাম । আমার দেখাদেখিতে সেও তার ভাষায় পেত্নীর মত হাউ মাউ খাউ ঘেউ ঘেউ করে চিল্লায়া উঠল । খায়া ফালাইলোরে খায়া ফালাইলোরে বলে লাফিয়ে লাফিয়ে পুরো ছাদে উসাইন বোল্ট মার্কা কয়েকটা চক্কর দিলাম । বেটা কি বেক্কল ! হয় সাহসিকতার সাথে ছাদ থেকে লাফ দিবি না হয় সিড়ি দিয়া ভদ্র ভাবে নেমে যাবি । এগুলা কিছুই না করে কখনো আমার সামনে আবার পিছনে পড়ে ঘেউ ঘেউ করতে করতে (মনে হয় তার ভাষায় , খায়া ফালালো রে ) সেও চক্কর দিতে থাকলX((



কেম্নে কেম্নে যে সিঁড়ির দরজা দিয়া চার পাঁচ লাফে নিচে নেমে আস্লাম আল্লাই জানে । একতলার ছাদ থেকে সেও দুই তিন লাফে নেমে চিল্লাইতে চিল্লাইতে বাহিরে চলে গেল । ব্যাটাকে যে ভয়টাইনা পাইয়ে দিয়েছিলাম ভাবতেই হাসিপায় । যাকগে সে কথা, মনে হয় জীবনে আর ভুলেও আমাদের এদিক মুখো হয়নি আর । আত্মীয় স্বজন বন্ধু-বান্ধব সবাইরে সতর্ক করে দিছে এদিকে সিফাত আছে সাবধান;) !

এদিকে বাসার সবাই ভেবেছে যে আমি ভীষন ভয় পেয়েছি । আমারে জোর কইরা ধইরা ছুরিতে লবন নিয়া গরম কইরা খাওয়াই দিছে , সবার বিশ্বাস এতে নাকি ভয় কমে ! গরম ছুরি জিহবাতে ছ্যাকা লাগাতে আমি আউ করে উঠি । আউ এর সাথে সাথে ভয়-ডর এগুলো বাহির হচ্ছে ভেবে সবাই চেপেচুপে ধরে আরো একবার ছুরির ছ্যাকা দিয়া দিল :-/

মনে মনে কুকুরটাকে ধন্যবাদই দিলাম , ভালোয় ভালোয় সব অল্পের উপর দিয়া গেছে । কুকুর হওয়াতে মাত্র দুটা ছ্যাকা খেলাম তাও বাসায়। সে সময় সেখানে কোন মানুষ পরী কিংবা রিয়েল পরী থাকলে কয়টা যে ছ্যাক খাইতাম আল্লাই জানে !

বাপরে বাপ বড় বাঁচা বাইচা গেছি !!

২। বেইজ্জতি কান্ডঃ

আগে রেমন্ড এর সেলাই করা প্যান্টগুলো পড়তাম । একদিন ঢাকা থেকে বাসে উঠব বলে বাসস্ট্যান্ড গেছি । প্রচন্ড গরম , শার্ট প্যান্ট ভিজে চুপ চুপ হওয়ার দশা । মামের দেড় লিটার পানি কিনে মুখে কিছু পানির ঝাপটা দিয়ে অল্প একটু পানি খেলাম । আহ শান্তি ! ফুরফুরে মেজাজে বাসে উঠেই মেজাজটা খারাপ হল । শালা প্রথম থেকে শেষ সিট পর্যন্ত সবাই জানলার পাশের সিটগুলো দখল করে আছে । একটু হতাশ হয়েই একটা সিটে নিজেকে ধপ করে এলিয়ে দিলাম । /:)

ওম্মা ! একি ! প্রচন্ড টান খেলাম একটা তারপর কাপড় ছেড়ার আওয়াজ ! বাসের হাতলের সাথে প্যান্টের পকেট লেগে সেখান থেকে হাটু অবধি সেলাই ছুটে গেছে । কেউ বুঝল কিনা এদিক সেদিক তাকাতেই বাসের অপর পাশে পেছন থেকে দুইটা আপুর হাসাহাসি শুনতে পেলাম B:-) । ভালোভাবে খেয়াল করে দেখলাম তারা আমাকে নিয়ে নয় , নিজেরা নিজেরাই পক পক করছে । কেউ বুঝেনি কিংবা অনুসরন করছেনা দেখে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম ।

বাস চলা শুরু করাতে গরম কিছুটা কমে গেল । মামের পানির বোতল ডানপাশে বর্মের মত রেখে দিলাম । এতে কেউ আমার পা দেখবে না । প্যান্টের সেলাইয়ের ছেড়া অংশ দিয়ে অল্প অল্প বাতাস ঢুকাতে আরামই লাগছিল । তৃষ্ণা পাওয়াতে এক ঢোক পানি খেলাম আর মনে মনে ভাবলাম মানীর মান এত সহজে নষ্ট হয় না । এক্সট্রা বর্মের দরকার নেই । প্যান্টের ভেতরে ইজ্জত রক্ষাকারী বর্ম থাকাতে ইজ্জত এত সহজে খোয়াবে না । আহ শান্তি ! এত গরমে প্যান্টের ফাঁক দিয়ে ভেতর ফুরফুরে বাতাস যাওয়াতে আরামই লাগছিল । পুরোটা পথ হাওয়া খেতে খেতে আসলাম 8-|

যাক বাবা সব ভালোভাবে গেল , কেউ বোধহয় বুঝেনি । বাসার গেইট দিয়ে ঢুকে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম, বাসায় গিয়েই প্যান্ট পাল্টাব । কলিং বেল টিপছি এমন সময় দেখি পাশের বাসার আপু আর তার বাবু শপিং করে আসছে । আপুটার হাতে বড় ব্যাগ আর পিচ্চিটার হাতে ছোট ব্যাগ । পিচ্চিটা আমার দিকে তাকায়া তারপর তার আম্মুরে বলে , “ আম্মু আম্মু দেখ আংকেলে দুষ্টামি কর্তে কর্তে প্যান্ট ছিড়া ফেলছে । আংকেলকে মাইর দাও । ”

আপু হাস্তেছে , আর আমি তো লা জওয়াব !!


৩। গাভীর দুধঃ


এটা একটা শোনা ঘটনা । স্কুলের কোন এক ব্যাচের ছাত্র কৃষি শিক্ষায় গাভী পালনের এক প্রশ্নের উওরে লিখেছিল,
গাভীকে প্রয়োজন মাফিক খড়, কাঁচা ঘাস আর সুষম খাদ্য খাওয়ালে ভাবী বেশি বেশি দুধ দিবে ।:-*



সবাই এটা শুনে খুব হেসেছিল । কিন্তু আমার মনে হয় যে লিখেছিল সে হয়ত ঠিকই লিখেছিল । কারন গাভীকে পুষ্টিকর খাবার দিলে গাভী বেশি দুধ দিবে আর গাভী বেশি দুধ দিলেই তো পরে ভাবী দেবরকে বড় মগে করে বেশি বেশি দুধ খাওয়াতে পারবে । সিম্পল হিসাব :-0

মাইনষে ক্যান যে সবকিছুরে এত জটিল কইরা দেখে ?!!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩৩
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×