somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমকামীতা কোনো মনোবিকার নয়, স্বাভাবিক যৌন প্রবৃত্তি

১২ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ইং তারিখে আমার লিখা“ সমকামী সাজ্জাদের মৃর্ত্যুর জন্য দায়ী কে? শীর্ষক প্রবন্ধ দেশের শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পরিবর্তন ডট কম এ প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন মহলের সাধুবাদ প্রাপ্তিসহ অনেকের নিকট থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি পাওয়ার সাথে সাথে গত ২৫ আক্টোবর ২০১৭ ইং তারিখে একই নিউজ পোর্টালে জনৈক বিশেষজ্ঞ আইনজীবী হিসাবে পরিচয়দানকারী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান (রাহীল) “সমকামিতা জিনগত নয়, মনোবিকার ” শীর্ষক একটি কাউন্টার প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। আমি প্রথমেই আইনজীবী বন্ধুকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাচ্ছি যে তিনি মনযোগ দিয়ে আমার প্রবন্ধটি পাঠ করেছেন এবং অন্যদের মত হুমকি প্রদান না করে কাউন্টার লিখার মাধ্যমে তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। যেহেতু আইনজীবী বন্ধুর লিখাটির অধিকাংশ ক্ষেত্রের সাথে আমি সহমত প্রকাশ করি না এবং তিনি অধিকাংশ ভেইক যুক্তি প্রদান করেছেন তাই আমাকে নতুন করে কিছু লিখতেই হচ্ছে। অনলাইন নিউজপোর্টাল পরিবর্তনে লিখাটি প্রকাশের জন্য অনুরোধ করলে অজ্ঞাত কারণে পরিবর্তন কর্তৃপক্ষ লিখাটি প্রকাশ না করায় অন্য নিউজ মিডিয়া/ব্লগে লিখাটি প্রকাশ করছি।

আইনজীবী বন্ধু তার লিখায় বলেছেন, “সমকামিতা হল নারী ও পুরুষের স্বাভাবিক পারস্পরিক যৌন আকর্ষণের বিপরীতে গিয়ে নারী বা পুরুষ নিজেদের সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করা”। প্রথম শব্দটা খেয়াল করলে দেখা যায়, তিনি বলছেন, “সমকামিতা নারী পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্কের বাইরে গিয়ে আকর্ষন”। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কী সমকামিতা অস্বাভাবিক।? কিন্তু কী বলছে আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো? মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন বলছে, এটা বিষমকামী যৌনতার মত স্বাস্থ্যকর ও স্বাভাবিক।[১]। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংগঠন প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশন বলছে, বিস্তৃত পরিসরে ঐক্যমতে পৌছে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে সমকামিতা যৌন অভিমুখিতারই একটি সাধারণ প্রকরণ এবং একে কোনো প্রকার রোগ হিসেবে আর বিবেচনা করা যাবে না[২]। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে একে মনোবিকার মনে করে না, বা মনোবিকারের তালিকা থেকে সেই ১৯৯০ সালে বাদ দিয়েছে, তা নিশ্চয়ই বিজ্ঞ বন্ধুর অজানা নয়।

এরপরেই আমার বিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধু বলেছেন, “প্রাণীজগতে অন্য কোনো প্রজাতির মাঝে এই বিষয়টি দেখা যায় না”। উনার প্রতি তীব্র শ্রদ্ধা রেখে বলছি, তিনি বিষয়টা সম্বন্ধে কোনো কিছুই জ্ঞাত নন। গবেষনাগুলো বলছে যে, ১৫০০ প্রজাতির বেশী প্রানীর মধ্যে সমকামিতার প্রবনতা দেখা গিয়েছে।[৩]। এখন অবশ্য তিনি যদি বলেন ১৫০০ প্রজাতির প্রানী কোনো প্রানীই নয়, তাহলে অবশ্য ভিন্ন কথা। এরপরে তিনি যা বলছেন তা নিছকই মাঠ গরম করা বক্তব্য, যার একাডেমিক কোনো ভ্যালিডিটি নাই।

তিনি বলছেন, “মানব ইতিহাসে এই ধরনের যে কয়টা কাহিনী আমাদের জানা আছে তার বেশিরভাগই ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলোর ইতিহাসের সাথে জড়িত। সাম্প্রতিক মেক্সিকোর ভূমিকম্পে ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকাটিতেও এইরকম কিছু মানুষ আছে বলে আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমে এসেছে। তাছাড়া ঐ অঞ্চলে মায়ানদের ইতিহাসও আমরা জানি যারা ধ্বংস হবার আগে ঠিক এই কাজটিই করত। কিংবা জর্ডানের সেই অঞ্চল যা একই কারণে ধ্বংস হবার কথা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত”। এগুলো যে সমকামিতার জন্য ধ্বংসপ্রাপ্ত, এই মহান তথ্য কোন গবেষনা থেকে তিনি পেয়েছেন, তা দিলে উপকৃত হতাম। আমার বিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধু এরপর অপ্রাসঙ্গিকভাবেই বিবর্তন প্রসঙ্গ টেনেছেন, যা নিয়ে কথা আপাতত নাই বা বলি।

আইনজীবী বন্ধু তার লিখায় বলছেন, “অথচ নিরপেক্ষ ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এমন একটিও নির্ভুল গবেষণা নেই যা সমকামিতাকে এক মুহূর্তের জন্যও স্বীকৃতি দেয়”, আমি এই বিষয়টা নিয়ে একেবারে শেষ অংশে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।

এরপর আমার বিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধু অনেক কথাই বলেছেন, সমকামীদের বিকৃত মস্তিষ্কের বলেছেন। নিশ্চয়ই সমকামীরা বিকৃত মস্কিষ্কের।! যেমনঃ আইফোনের চিফ এক্সিকিউটিভ টিম কুক একজন বিকৃত মস্তিষ্কের সমকামী।! বলিউড সেলিব্রিটি করণ জোহর একজন বিকৃত মস্তিষ্কের সমকামী! ট্যুরিং টেস্টের উদ্ভাবক এলাং টুরিং একজন বিকৃত মস্তিষ্কের সমকামী এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যে স্বল্প কিছু বাইরের দেশের মানুষ অবদান রেখেছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন এলেন গিন্সবার্গ। যার কবিতা সেপ্টেম্বর অন যশোর রোডে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভয়াবহ সে আক্রমণের চিত্র ফুটে উঠেছিল। যদি এরকম আরো মানুষের নাম জানার ইচ্ছা থাকে, তাহলে ১৮০০ পুরুষ সমকামীর এই তালিকাটা আইনজীবী বন্ধু পড়ে দেখতে পারেন। [৪]

আমার বিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুর কাছে প্রশ্ন, মানছি সমকামীরা বিকৃতমস্তিষ্কের, কিন্তু বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ যদি হয় এ রকম; তবে কী সমাজে তা একটু বেশিই প্রয়োজন নয়? এরপর অবশ্য তিনি বিজ্ঞান দিয়ে সমকামীতাকে এক হাত নিয়েছেন। এবার আমরা সেটা একটু দেখি। তিনি প্রথমে পার্থেনোজেনেসিস এর উদাহরণ টেনেছেন। তিনি বলেছেন, অপুংজনির সাথে সমকামিতার সংযোগ কোথায়? বেশ এবার আমি প্রাণীজগতের সমকামিতার সুনির্দিষ্ট উদাহরনগুলো দেখাইঃ

গল্পটা হচ্ছে নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের চিড়িয়াখানার দুইটা পেঙ্গুইনের। তাদের নাম যথাক্রমে রয় ও সিলো। সংক্ষেপে বলি- রয় আর সিলো উভয়ই পুরুষ ছিল। কিন্তু তারা সবসময় একসাথে থাকতো। কখনোই আলাদা হত না। নিজেরা অন্য পেঙ্গুনদের মত পাথর জমিয়ে ঘর বেধেছিল। এক সাথে ঘুমাতো, উঠতে একসাথে। একদিন রয় একটি পাথরে তা দেওয়া শুরু করে। কারণ তারা ডিম পারতে পারত না। তখন চিড়িয়াখানার পরিচালক অন্য পেঙ্গুইন জোড়া থেকে ডিম এনে তাদের দেয়। রয় সিলো সে ডিম নিয়ে যায় ঘরের ভিতর। তাতে পালা করে তা দেয় এবং একসময় বাচ্চা ফুটে বের হয়। তার নাম রাখা হয় ট্যাঙ্গো। এই ট্যাঙ্গোকে আদর দিয়ে সাতার শিখিয়ে খাবার দিয়ে রয় সিলো যুগলভাবে বড় করে।ভ এঘটনা নিয়ে পরবর্তীতে ট্যাঙ্গো মেকস থ্রি নামে একটি বই বের হয়[৫]।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ৮ শতাংশ ভেড়া সমকামী হয়, যারা বিপরীত লিঙ্গের সাথে সঙ্গমে অনাগ্রহী থাকে।[৬]। এই ধরণের সমকামী ভেড়া সঙ্গমের সময় আরেকটি পুরুষ ভেড়ার দিকে অগ্রসর হয়, তাদের আদর সোহাগ জানাতে থাকে আর যৌনাঙ্গ শুঁকতে থাকে। অবশেষে পেছন দিক থেকে ভেড়ার উপর আরোহন করে ভেড়ার উলের উপর বীর্জ নিক্ষেপ করে (এরা কখনো পায়ুকামে প্রবৃত্ত হয় না)। চার্লস রসেলি এ সমস্ত ভেড়ার মস্তিস্ক বিশ্লেষণ করে দেখান যে, এদের মস্তিস্কের কিছু অংশের আকার ‘স্বাভাবিক’ ভেড়াদের থেকে অনেকাংশে ভিন্ন। তিনি ‘সেক্সুয়ালি ডাইমরফিক নিউক্লিয়াস’ বলে মাথার হাইপোথ্যালমাসের একটা অংশে উল্লেখ করার মত পার্থক্য পান [৭]।

এছাড়াও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটা হিউজ তালিকা এখানে দেওয়া আছে। [৮] শুধু কী তাই, সমকামিতা দেখা যাওয়া প্রাণীদেরও একটা তালিকা এখানে দেওয়া আছে। [৯] এরা কেউই অপুংজনি বা পার্থেজেনোসিস না, বরং সবাই স্বাভাবিক সমকামিতায় লিপ্ত হয়। দেখাই যাচ্ছে যে, প্রাণীজগতে সুনির্দিষ্টভাবে সমকামিতা দেখা যায়। এরপরেও, বিজ্ঞ বন্ধু যদি বলেন, প্রাণীজগতে সমকামিতা দেখা যায় না, এ দাবী কি আর ধোপে টিকবে?

এরপরে আইনজীবী বন্ধু যে লম্বা লম্বা বক্তব্য দিয়েছেন, তা পড়ে হাসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তার কথা একই সাথে মর্মান্তিক, পীড়াদায়ক, এবং একই সাথে আমরা যে কতটা পশ্চাৎপদ প্রসারিত তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। তিনি চয়েজ সাপোর্টিভ বায়াজে সম্পুর্ণভাবে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি। আসুন দেখি কী বলেছেন তিনি। তিনি ডিন হ্যামারের গবেষণাটিকে উদ্ধৃত করেছেন, “জন্মগতভাবে সমকামী হবার সম্ভাবনার কথা বলতে অনেকে Dean Hamer এর সাম্প্রতিক (?) গবেষণার উদাহরণ দেন... অথভ ডিন হ্যামারের গবেষণাটা সাম্প্রতিক না”। আমাদের আইনজীবী বন্ধু তার অজ্ঞতার চূড়ান্ত রুপ এখানে প্রকাশ করেছেন এবং কিভাবে তা এখানে পড়লেই বুঝা যাবে।

পাঠকের সুবিধার্থে গবেষনাটা নিয়ে কিছু বলতে হয়। গবেষণাতে দেখা যায় যে, সমকামীদের সংখ্যা মায়ের দিকের আত্মীয়-স্বজনদের থেকে একটু বেশি হয়। এখানে আসলে কোনো গে জিন খুজে পাওয়া যায় নি, এবং এটা শুধুমাত্র একটা অনুমান ছিল যে, সমকামিতার সাথে জিনগত একটা সংযোগ আছে। আমার আইনজীবী বন্ধু এরপর ডিন হ্যামারের কিছু উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যেগুলো ডিন হ্যামার ২০০১ সালের পুর্বে করেছেন।

কিন্তু ২০১৪ সালে ডিন হ্যামার কী বলছেন? ২০১৪ সালের নভেম্বরে এমন একটি গবেষনা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা পুরো বিশ্বে আলোড়ন তোলে। আর সেই গবেষনা প্রতিবেদন দেখে হ্যামার বলেছেন, আমার গবেষনাটা অবশেষে ক্ল্যারিফায়েড হলো। যাকে তিনি দেখছেন তার কাজের কনফার্মেশন হিসাবে।[১০]।

গবেষনাটা কী ছিল? সমকামীদের উপর এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় গবেষনা থেকে এটা প্রমাণ করা হয়েছে যে, অন্তত পক্ষে পুরুষ সমকামিতার জন্য জিনগত কারণই দায়ী [১১]। গবেষকরা দেখেন যে পুরুষ সমকামিতার জন্য ৮ নং ক্রমোজমের পেরিসেন্ট্রোমিক এলাকা আর এক্সকিউ২৮ দায়ী। পাঠক, ডিন হ্যামার সমকামিতার জন্য জিনগত কারণ বা এক্সকিউ২৮ কে একদম সুনির্দিষ্টভাবে দায়ী করেনও নি। তিনি শুধুমাত্র একটা প্রস্তাবনা করেছিলেন এবং গবেষনার স্যাম্পল সাইজ নিয়ে একটা বিতর্ক ছিল।

কিন্তু ২০১৪ সালের গবেষনাটি সমস্ত বিতর্ককে বাক্সবন্দি করে ফেলে। তবে শেষ পেরেকটি মেরেছে ২০১৭ সালের নভেম্বরে করা আরো একটি গবেষনা। সমকামিতার জন্য দায়ী এরকম স্বতন্ত্র দুইটি জিন আবিষ্কারের খবর ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে [১২]। এই গবেষনার প্রতিবেদন সম্বন্ধে জানতে বিজ্ঞানযাত্রার আর্টিকেলটা তিনি পড়তে পারেন, একেবারে খাটি বাংলায় লেখা। [১৩] সমকামিতা যে জিনগত এব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ আছে কী?

এরপর তিনি ২০০৩ সালে সম্পন্ন হওয়া হিউমান জিনোম প্রজেক্টের উদাহরণ টেনেছেন। প্রসঙ্গত এটা শুধুমাত্র ম্যাপিং করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা সমস্ত জিনের কার্যক্রম কিন্তু জানি না। এ বিষয়টা নিয়ে পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষভাবে জানার জন্য এখনো গবেষনা চলছে। আইনজীবী বন্ধু দাবী করছেন যে, ২০০৩ সালের এ প্রজেক্ট থেকে কোনো গে জিন শনাক্ত করা সম্ভব হয় নি। যদিও ২০১৪ আর ২০১৭ সালের গবেষনার কথা আগেই বলছি। এবার বলি ২০০৭ সালে এই প্রজেক্টের হেড ফ্রান্সিস এস কলিন্সের সমকামিতা [১৪] নিয়ে বক্তব্যের কথা। তিনি সমকামিতা নিয়ে তার বক্তব্যে বলেছেন যে জিন কোনো কিছুর জন্যই ১০০% দায়ী নয়। পরিবেশ একটা বড় ফ্যাক্টর এখানে। সমকামিতার জিন আছে, তবে সমকামিতার জন্য শুধুমাত্র জিনই শতভাগ দায়ী তা ঠিক নয়।

এরপর তিনি নারী সমকামিতার উদাহরণ দিয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বলছেন যে নারীরা একবার সমকামী ও একবার বিষমকামী হয়, তিনি ধরেছেন সঠিকই। কিন্তু মুলে গিয়ে অনুসন্ধান করেন নাই। [১৫] সেখানে দেখানো হয়েছে যে, নারীদের যৌন তারল্য অধিক, যার ফলে তাদের যৌন অভিমুখিতা নিয়ে গবেষনা করাটা দুরুহু। কিন্তু আরেকটা গবেষনা ঠিকই বলছে যে, সমকামিতার জন্য জিনগত কারণই দায়ী।[১৬]। নারী কেন এরকম যৌন তারল্য প্রদর্শন করে তা নিয়েও গবেষনা করা হয়েছে এবং তা করা হয়েছে বিবর্তনীয় ম্যাকানিজমের দিক থেকে।[১৭]। কিন্তু আমার আইনজীবী বন্ধু যেহেতু আবার বিবর্তন বিরোধী, তাই বিবর্তন প্রসঙ্গে আর আগাচ্ছি না।

এরপর তিনি ১৯৯৩ সালের গবেষনার রেফারেন্স দিয়েছেন। যা থেকে সমকামিতা জিনগত নয় বলে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন। যদিও ২০০৭ সালের হিউমান জিনোম প্রজেক্ট, ২০১৪ সালের গবেষনা আর ২০১৭ সালের গবেষনা থেকে সমকামিতা জিনগত প্রমাণ হয়েই গেছে।

আমার আইনজীবী বন্ধু বলছেন, “সঠিক ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে সমকামিতা থেকে ফিরে আসা যায়... তিনি বলছেন, সমকামীরা বিকৃত”।

প্রথমত, পৃথিবীর কোনো স্বাস্থ্য গবেষনা, মনস্তাত্ত্বিক গবেষনা, বা স্বাস্থ্য অথবা মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন সমকামিতার চিকিৎসার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয় নি। [১৮] বরং এধরনের চিকিৎসাকে ক্ষতিকর বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সমস্ত মনস্তাত্ত্বিক সংগঠনগুলো[১৯]। তাহলে কিসের ভিত্তিতে তিনি বলছেন যে চিকিৎসার মাদ্যমে সমকামী ব্যক্তিতে বিষমকামীতে রুপান্তর করা যায়?

সমকামিতা কী বিকৃত? গবেষনা বলছে, সমকামীরা বিষমকামীদের ন্যায় মানসিক ভাবে সুস্থ এবং সমকামিতার মাঝে অপ্রাকৃতিক কিছু নেই। [২০]

এরপর তিনি সমকামিতার কারণ হিসেবে অনেক তথ্যই দিয়েছেন। যার কোনোটারই রেফারেন্স না থাকায় ক্রসচেক করার উপায় নাই। পাশাপাশি গবেষনাগুলো পিয়ার রিভিউড রিসার্চ আর্টিকেল দ্বারা প্রমাণিত নয়। তবে কাউন্টার আর্গুমেন্ট বাদ দিয়ে এবার আমরা দেখব সমকামিতা সম্বন্ধে গবেষকরা আসলে কতদুর এগোলেন।

ক) জিনগতঃ সমকামিতা যে জিনগত তা আপনারা আগেই জেনেছেন। ১৯৯৩ সালের পর ২০০৭, ২০১৪ আর ২০১৭ সালের গবেষনা সে তথ্য সম্পুর্ণ ভাবে নিশ্চিত করেছে।

খ) মস্তিষ্কগতঃ সমকামিতা যে সহজাত তা নিয়ে এ প্রসঙ্গে আরো কিছু গবেষণা প্রায়সই আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আর তা হলো সমকামিতা নামক এই যৌন অভিমুখিতার সাথে মস্তিষ্কের সংযোগ। মস্তিষ্কের INAH3 নামক অংশ পুরুষের ক্ষেত্রে নারীর তুলনায় বড় হয়। কিন্তু সাইমন লিভ্যে নামক একজন স্নায়ুবিজ্ঞানী দেখেছেন সমকামী পুরুষের INAH3 আর বিষমকামী নারীর INAH3 প্রায় সমান। [২১] অর্থাৎ সমকামী পুরুষের INAH3 বিষমকামীর পুরুষের চেয়ে আকারে সংকুচিত। তবে এ সংকোচন কতটা? এটা হচ্ছে মহিলাদের INAH3 এর আকারের ন্যায়। এই গবেষণাটি পুনঃপ্রতিলিপিতকরা হয়েছে যা আগের গবেষণাটিকে নিশ্চিত করে [২২]। আরো দেখা গিয়েছে বিষমকামীদের সাথে সমকামীদের INAH3 এর ক্রস সেকশনাল এলাকা ও নিউরনের সংখ্যায় কোনো পার্থক্য নেই।

এই জায়গা থেকে অনেকের ধারণা হয়েছিল যে, সমকামী পুরুষদের হয়তো বিষমকামী নারীর ন্যায় হাইপোথ্যালামাস থাকে। কিন্তু আরেকটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে যে, পুরুষ সমকামীদের সুপ্রাকায়াজম্যাটিক নিউক্লিয়াস বিষমকামী পুরুষ ও নারীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। [২৩] গবেষণায় আরো দেখা গিয়েছে যে, পুরুষ ও নারী সমকামীর বাম এমিগডালা বিস্তৃত। পক্ষান্তরে নারী পুরুষ বিষমকামীর ডান এমিগ ডালা বিস্তৃত। [২৪] তাছাড়া দেখা গিয়েছে যে, দুইটি সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ারকে সংযোগকারী হোয়াইট ম্যাটার ফাইবার সমৃদ্ধ এন্টিরিওর কমিশার নারী ও পুরুষ সমকামীতে বিষমকামী পুরুষের তুলনায় বড় [২৫]।

অনেকে বলতে পারেন যে, হয়তো জন্মের পরে সমকামিতার দরুণ এই ব্রেইনের নানা অংশের পরিবর্তন ঘটেছে, হয়েছে সংকোচন-প্রসারণ। কিন্তু ২০১০ সালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা থেকে বলা হচ্ছে যে, এই ধরনের ব্রেইনের বিকাশ মার্তৃগর্ভেই বিকশিত হয়, যা সোশাল ইমপ্যাক্টের কারণে কোনো ধরনের প্রভাবে প্রভাবিত হয় না। [২৬]

গ) এপিজেনেটিক সংযোগঃ জীববিজ্ঞানের উদীয়মান এই শাখা থেকে দেখা যায় যে, সমকামিতার সাথে এপিজেনেটিক সংযোগ আছে[২৭]।

ঘ) বড় ভাইয়ের সাথে সংযোগঃ সমকামিতার সাথে বড় ভাইয়ের একটা গভীর সংযোগ নিয়ে সাম্প্রতিক সময় গুলোতে বেশ আলোচনা ও গবেষণা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে অজস্র গবেষণা হলেও ২০১৭ এর ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি গবেষণা সকল গবেষণাকে অতিক্রম করে। এখান থেকে সুনির্দিষ্টভাবে দেখা গিয়েছে যে, কেন অধিক বড় ভাই থাকলে ছোট ভাইয়ের সমকামী হবার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে [২৮] (এই বিষয়ে বিস্তারিত বিজ্ঞান যাত্রা থেকেও দেখতে পারেন [২৯])

ঙ) নারীর উর্বরতাঃ গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে যে, সমকামী পুরুষের নারী আত্মীয়রা অধিক সন্তান জন্ম দেয়। অর্থাৎ সমকামীতার সাথে নারীর উর্বরতার একটা ইতিবাচক সংযোগ রয়েছে। [৩০] তাহলে কী এই কারণে সমকামিতার মত অ-উপযোগী একটা বিষয় বিবর্তনীয় ছাকুনিতে এভাভাবে টিকে গেলো?- এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় কি?। [জীববিজ্ঞানের অন্যান্য প্রাণিতে উর্বরতার সাথে সমকামিতার এই সংযোগ নিয়ে পড়তে পারেন, [৩১]

চ) হ্যান্ডেডনেস বা কে কোন হাত ব্যবহার করবে: অসংখ্য মেটা এনালাইসিস থেকে দেখা গিয়েছে যে, যারা বাহাতি এবং ডান হাত ব্যবহার করেন না তাদের মধ্যে সমকামিতা অধিক হারে দেখা যায়। [৩২])

ছ) প্রযুক্তিগতঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, সমকামিতার সাথে টেকনোলজির একটা গভীর সংযোগ সামনে চলে এসেছে। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা তৈরী করেছে। সেই ইন্টেলিজেন্স একজন মানুষের চেহারা দেখেই সে সমকামী না বিষমকামী তা নির্ধারণ করে ফেলতে পারবে। গবেষকরা বলছেন যে, এই বিষয়টা সমকামিতা যে জন্মপুর্ব থেকে নির্ধারিত এই তথ্যটিকে নিশ্চিত করে। কারণ, একজন মানুষের চেহারা কেমন হবে তা তার জিন ও তার জন্মপুর্ব হরমোনগুলোই নির্ধারণ করে। তাই প্রযুক্তি যেহেতু মানুষের চেহারা দেখেই ধরতে পারছে যে সে সমকামি না বিষমকামী। সেহেতু এই কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে যৌন অভিমুখিতা নির্ধারণে প্রকৃতিই ভুমিকা রাখে।[৩৩]

বলতে দ্বিধা নেই যে, আইনজীবী বন্ধুর এর পরের প্রসঙ্গে লিখাগুলো খুবই যুক্তিপুর্ণ। যদি তিনি তথ্যসুত্র সঠিক ভাবে দিতেন তাহলে এগুলো ক্রসচেক করা যেত। তবুও সেগুলো সত্য মেনে নিয়ে আমরা একটু ধাপে ধাপে দেখি-যেমন তিনি বলছেন যে, জেলখানায় দশকের পর দশক আটকে থাকলে স্বাভাবিক যৌনাচারণের পর রুদ্ধ থাকায় অনেকে সমকামী হয়। তিনি এর সাথে সংযুক্ত করে বলেছেন যে, এরা ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এমন হয়। কিন্তু আমার আইনজীবী বন্ধু যা এড়িয়ে গেছেন তা হলো আমাদের মাদ্রসাগুলোতে ইদানীং কালে হুজুর দ্বারা ছেলে শিশু ভয়াবহভাবে ধর্ষিত আছে। যদিও তার কোনো সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই, কিন্তু তবুও ছেলে শিশু বলাৎকার লিখে গুগলে অন্বেষন করলে যে পরিমাণ ফলাফল আসবে তা আতঁকে উঠার মত।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে মাদ্রসার হুজুররা কী ধর্ম কম বুঝেন? তাহলে ধর্মকে বাদ দেওয়ায় কেউ এই আচরণ করছে তা কিভাবে বলা যায়? আবার যদি স্বাভাবিক যৌনাচারণের পথ রুদ্ধ করায় কেউ সমকামী হয় তাহলে সাজ্জাদের ক্ষেত্রে কী ব্যাখ্যা। তাকে তো স্বাভাবিক যৌনাচারের দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। অথবা পাশ্চাত্যের এলাং টুরিং থেকে টিম কুক তাদের কি স্বাভাবিক যৌনাচারের উপায় নেই, এই কথা বলার মত পাগলামি কী আইনজীবি করবেন? আসলে বিষয়টাতে পার্থক্য আছে, যা স্পষ্ট হওয়া উচিত।

প্রথমত, মাদ্রাসার হুজুররা ঠিকই বউ বাচ্চা নিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে অল্প বয়সী ছেলেদের মধ্যে একটা কামভাব জেগে উঠে। যা একপ্রকার বিকৃত ভাবনা, এধরনের মানসিকতাকে বলে পেডোফিলিয়া। আর হুজুরগুলো একেকটা হয়ে উঠে পেডোফেলিক। হুজুরদের এই মানসিকতার সাথে সমকামিতাকে যদি কেউ দায়ী করে তবে নিঃসন্দেহে বলতে হয় যে, যেসব লম্পট ৪ মাসের শিশুকে ধর্ষন করে সেসব লম্পটের লাম্পট্যের জন্য দায়ী বিষমকামিতা।

এবার আসা যাক জেলখানা প্রসঙ্গে। হ্যা নারী বিবর্জিত থাকায় এসব আসামী বা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে যে যৌনাচার গড়ে উঠে তাকে সম-লিঙ্গে যৌনাচারণ বলা যেতে পারে। কিন্তু তাদের কোনোভাবেই সমকামী বলা যাবে না। কারণ তারা যখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে, তখন তারা কিন্তু ঠিকই বিষমকামিতায় অভ্যস্থ হয়ে পরে। তাহলে এসব মৌসুমী সমলিঙ্গে যৌনাচারীকে সমকামী কিভাবে বলা যাবে? কিন্তু যারা প্রকৃতপক্ষে সমকামী যেমনঃ সাজ্জাদ বা পাশ্চাত্যের টিম কুক সহ প্রকাশ্যে আসা সমকামীরা স্বাভাবিক যৌনাচারের সুস্থ উপায় থাকা সত্ত্বেও সমকামিতার জীবন বেছে নেয়। কারণ এটা তাদের সহজাত প্রবৃত্তি।

এরপর তিনি বলছেন যে, সমকামী হবার পিছনে শৈশবেই যৌন নির্যাতন দায়ী। প্রথমত এই বিষয়টা নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক আছে। তার মধ্যে একটা হলো যে, জন্ম থেকেই যারা সমকামী তাদের আচরণটা পরিবারের লম্পট চরিত্রের বড়দের আকর্ষণ করে যার ফলে সে সেক্সুয়ালি এবিউজের শিকার হয়। এছাড়াও আরেকটা বিষয় হলোযে, সমকামীরা এবিউজের শিকার হওয়ার কারণেই যদি সমকামী হত তাহলে নিঃসন্দেহে এই চয়েজটাকে কনভার্সন থেরাপির মাধ্যমে পালটানো যেত। কিন্তু কনভার্সন থেরাপির মাধ্যমে কারো ওরিয়েন্টেশন পালটানো যায় না বলে সব স্বাস্থ্য, মনোসংগঠন গুলো জানিয়ে দিয়েছে [৩৪]। তাছাড়া, সমকামিতা ছড়ানোর পিছনে তিনি পর্ন মিডিয়া কে দায়ী করেছেন, যার কোনো রেফারেন্স তিনি দেন নাই, তাই তার এই বক্তব্যের কোনো বৈধতা নাই।

এরপরে তিনি লম্যান এর স্টাডিকে আলোচনায় টেনেছেন। গবেষনায় দেখানো হয়েছে যে, শহরাঞ্চলে সমকামীদের সংখ্যা গ্রামাঞ্চলের চেয়ে বেশি। এটা খুবই গুরুত্বপুর্ন একটা আলোচনা। কারণ, এটা থেকে খুব সহজে যে প্রশ্নটা উত্থাপিত হয় তা হলো সমকামিতা যদি জিনগত হয় তাহলে সর্বত্র তার প্রভাব সমান থাকার কথা ছিল। এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করা যাক। পৃথিবীর যে দেশেই সমকামিতা বৈধ হোক না কেন বাস্তবতা হলো সমকামীরা এখনো মানুষের ক্ষোভ আর রাগের মাঝে থাকে। গবেষনাগুলোতে দেখা গিয়েছে যে, পশ্চিমে সমকামীরা সন্তান নেওয়ার স্বীকৃতি পেলেও এখনো তাদের সন্তানকে বুলিং এর শিকার হতে হয়। যার ফলে তারা তাদের অভিমুখিতা আড়ালেই রাখেন। আর এ বিষয়গুলো অধিক দেখা যায় গ্রামাঞ্চলেই। ফলে গ্রামে সমকামীদের জন্য শহরের তুলনায় একটা বৈরী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার ফলে গ্রামের সমকামীরা শহরে স্থানান্তরিত হতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে। না এটা আমার কথা না। উত্তর আয়ারল্যান্ডে এমনটাই দেখা গেছে।[৩৫] এভাবে মাইগ্রেশন এক দিকে গ্রামাঞ্চলে সমকামীদের কমায় অপরদিকে শহরে তার মাত্রা বৃদ্ধি করে। এখান থেকে কী এটা পরিস্কার হয় না যে কেন শহরাঞ্চলের সমকামীদের সংখ্যা গ্রামের তুলনায় বেশি!

সময় এসেছে সকল প্রকার বৈষমম্যমূলক ধ্যান ধারণা পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত, সমাজবদ্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সংস্কারমুক্ত হয়ে সমকামী ব্যক্তিদের সমাজের আর দশজন মানুষের মত গ্রহণ করে মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার। যৌন প্রবৃত্তি নিয়ে কোন বৈষম্য নয়, নয় কোনরূপ নির্যাতন বরং সমকামী ব্যক্তিদের সকল প্রকার নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার অর্থাৎ মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করায় আমাদের অঙ্গীকার হোক।

লেখকঃ মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী ও ব্লগার; জাস্টিসমেকার্স ফেলো, সুইজারল্যান্ড; মোবাইলঃ ০১৭২০৩০৮০৮০, ইমেইলঃ [email protected]; ব্লগঃ http://www.shahanur.blogspot.com
১) Click This Link
২) Click This Link
৩) Click This Link
৪) Click This Link
[৫] And Tango Makes Three, Peter Parnell and Justin Richardson, Simon & Schuster Children’s Publishing, April 26, 2005
[৬] Click This Link
[৭] Roselli C, Stadelman H, Reeve R, Bishop C, Stormshak F (2007). “The ovine sexually dimorphic nucleus of the medial preoptic area is organized prenatally by testosterone”. Endocrinology 148 (9): 4450–4457; এছাড়া দেখুন, Faye Flam, The Score: How The Quest For Sex Has Shaped The Modern Man, Avery, 2008
৮) Click This Link
৯) Click This Link
১০) Click This Link
১১) Click This Link
১২) Click This Link
১৩) Click This Link
১৪) Click This Link
১৫) Click This Link
১৬) Click This Link
১৭) Click This Link
১৮) Click This Link
১৯) Click This Link
২০) Click This Link
২১) Click This Link
২২) Click This Link
২৩) Click This Link
২৪) https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/18559854
২৫) https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/7571001
২৬) https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/19955753
২৭) Click This Link
২৮) http://www.pnas.org/content/115/2/302
২৯) Click This Link
৩০) https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/15539346
৩১) https://www.istishon.com/?q=node/26150
৩২) Click This Link
৩৩) https://osf.io/zn79k/
৩৪) http://www.apa.org/research/action/gay.aspx
৩৫) Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:২৭
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরাধের সেকাল ও একাল

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

সেকাল
--------------------------------------------------------
স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা হেনরি বেভারিজ ছিলেন বৃটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য৷বেভারিজ ১৮৭০ সালের মার্চ হতে ১৮৭১ সালের মার্চ এবং ১৮৭১ সালের জুন থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×