somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেমের হেচকি

১৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অফিসের সহকর্মী ভয়ানক শব্দে হেচকি তুলছেন। প্রতি বার মুখটা সামনের দিকে এনে উয়াক উয়াক স্বরে হেচকি তুলছেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললো “বইলেন না গ্যাসের সমস্যা । গ্যাস উপর দিকে উঠছে।“ আমি মনে মনে ভাবলাম গ্যাস যদি উপর দিকে না উঠে নীচের দিকে নামতো হেচকির ব্যাপারটা কি কুৎসিতই না হতো। ভাবতে গিয়ে হাসি পেয়ে গেলো । আমি হিহি করে হেসে দিলাম , সহকর্মী রেগে গেলেন “ আপনি হাসসেন কেনও? কি ব্যাপার??” আমি বিপদে পরে গেলাম। ৪৫/৫০ বছর বয়েসী মানুষ।ঠিক যে কারনে হাসছি তাকে তা বলা যায়না। বানিয়ে বললাম-“ ছোট বেলায় একবার বট গাছের নীচে গুয়ে পাড়া দিয়েছিলাম, প্রথমে ডান পা রেখেছিলাম, তারপর বা পা। তাই ভেবে হাসছি। হি হি”। লোকটা অবাক হয়ে বললো “গুয়ে পাড়া দেবার মাঝে এতো হাসির কি পেলেন? আমার নাকেতো ভক কইরা গুয়ের গন্ধ এসে পরলো। থু থু”। থুথু করলেও হেচকি কমানো গেলোনা। ব্যান্ড বাজানোর মতো ছন্দ ময় করে হেচকি তুলছেন। হঠাৎ নাকে হাত চেপে ধরে এক গ্লাস পানি খেলেন তিনি । আমার দিকে তাকিয়ে বললেন “নাক চেপে ধরে পানি খেলে হেচকি পানিতে ডুবে যায়। হেচকি সাতার জানেনা”। পানি খেয়ে কাজ হলোনা। হেচকি পানিতে ডুবে গেলোনা। সম্ভবত প্রেমের হেচকি। প্রেমের মরা জলে ডুবেনা, প্রেমের হেচকিও জলে ডূবেনা। “প্রেমের হেচকি” শব্দ টা মনে হতেই হাসি পেয়ে গেলো।( এই নামে কি কোন বাংলা ছবি হতে পারে? শাকিব খান-অপু বিশ্বাস!)। তিনি আবার খেপে বললেন “আপনি হাসছেন কেনো?” আমি আবারো মিথ্যে মিথ্যে বললাম “ছোট বেলায় একবারে এইডস উচ্চারন করতে গিয়ে ভুল করে আলাদা আলাদা ভাবে এই ডোস উচ্চারন করেছিলাম। বাংলা স্যার কান ধরিয়ে রেখেছিলেন। হি হি হিহি”
-আপনি এতো ছোট বেলার কথা ভাবেন কেনো বলেনতো?” আমি চুপ করে গেলাম। ভালো মুশকিলে পরা গেলো। এতো হাসি আসছে কেনো?।তবে মানুষটার হেচকি দেখে মনটা খারাপও হয়ে গেলো। কিছু করা দরকার।একটা বুদ্ধি মাথা আসলো। হঠাৎ করে চমকে দিতে পারলে হেচকি থেমে যায় শুনেছি। লোকটার পিওন তাকে আড়ালে নিয়ে বললাম -“মাই নেম ইস শিলা” গানটা শুনেছেন। “
-অবশ্যই শুনেছি। এই গান টা একবার অন্তত না দেখলে বউ নিয়া ঘুমাইয়া আরাম পাইনা।বউরে রাত্রী বেলায় আমি শিলা বইলা ডাকি।মিস শিলা। হে হে!
-আজ এই গানটার সাথে নাচবেন । আপনার বসের সামনে ।বসকে চমকে দিতে হবে। নইলে বসের অবস্থা আরো খারাপ হবে, হেচকি থামবেই না।বসরে বাচাতে হবে, বুঝেছেন।“

বসের জীবন রক্ষার্তে পিওন ছেলেটা দ্রুতো ক্যাটরিনা হয়ে গেলো।সে মোবাইলে গান ছেড়ে চমৎকার ভাবে নাচ শুরু করলো। ক্যাটরিনার মতো করে লুঙ্গী হাটুর উপর পর্যন্ত তুলে নাচ। সহকর্মী হা হয়ে তাকিয়ে আছেন। হেচকি থেমে গেছে। আনন্দে আমার চোখে জল চলে আসলো। নিজেকে বিজ্ঞানী বিজ্ঞানী লাগছে। হঠাৎ শুনলাম আমার সহকর্মী ফিস ফিস করে বলছেন “ শ্বাস থেমে গেছে। শ্বাস থেমে গেছে। জানালা খুলে দে”। আমি পিওনের দিকে তাকিয়ে বললাম “ কি নাচ দেখাইলা। হেচকি তো হেচকি দম পর্যন্ত বন্ধ হইয়া গেছে চমকে গিয়ে।“ জানালা খুলে দেওয়া হলো। শ্বাস ফিরে এলো। স্বাভাবিক হবার পর সহকর্মী বললো “এইটা তো খুব ভালো জিনিস । আপনার ভাবিও মাঝে মাঝে হেচকি আক্রান্ত হয়। “শিলা চিকিৎসা” করা গেলে ভালো হয়”। আমি ভাবার চেষ্টা করছি। মধ্যবয়সী এই লোকটা বউয়ের সামনে লুঙ্গী উপরের দিকে তুলে নাচছে “ মাই নেম ইস শীলা...” প্রচন্ড হাসি পেয়ে গেলো। সহকর্মী চেচিয়ে উঠলো- আপনি আবার হাসছেন কেনো?”
-ছোট বেলার কথা মনে করে। ছোট বেলায় একবার হয়েছে কি......

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×