somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাহজাহান আলী
অামি শাহজাহান অালীnসবে মাত্র এমএসএস অর্থনীতিতে মাস্টার্স শেষ করলাম। ব্যাচেলার আছি। বর্তমানে ঢাকার একটি প্রাইেভট স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত আছি। গল্প, কবিতা, সংবাদপত্র পড়তে ভালবাসি।

লজ্জা না থাকলে যা হয়!

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোনো এক গ্রামে বিচিত্র প্রাণীর মাঝে গাধারাও ছিল। এদের মধ্যে একটা গাধা ছিল ভীষণ দুষ্ট। কোথাও সি স্থির থাকতে পারতো না, ঘুরে বেড়াতেই তার ভালো লাগতো। প্রতিবেশিদের বাগ বাগিচায় ক্ষেত খামারে মুখ দিতো। ফসল নষ্ট করতো দেদারসে। দিনের পর দিন এভাবে ফসল নষ্ট করার ফলে গ্রামের বাসিন্দারা একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে গেল। অবশেষে একদিন তারা ঐ গাধার অত্যাচারের কথা মালিককে জানিয়ে সতর্ক করে দিলো। বলল: তোমার গাধাকে যদি না সামলাও তাহলে এমন কাণ্ড ঘটনো হবে যে সারাজীবন পস্তাতে হবে। মানুষ সেই কাণ্ড নিয়ে গল্প লিখবে, মুখে মুখে প্রবাদের মতো বলে বেড়াবে।

গাধার মালিক ভড়কে গিয়ে বলল: ঠিকাছে, সামলাব। কিন্তু পারলো না। পরদিনই গাধা গ্রামের এক প্রতিবেশির গম ক্ষেতে গিয়ে তছনছ করে দিল সব। গম খেতে দেখে প্রতিবেশিদের কয়েকজন এসে গাধাটাকে ধরে ফেললো এবং রেগেমেগে গাধার শাস্তি হিসেবে লেজ কেটে দিয়ে বলল: তোর লেজ কাটলাম কেন জানিস? যাতে আর কারো বাগানে বা ক্ষেত খামারে না যাস। ঘটনাটা গাধার মালিকের কানে যেতেই তাড়াতাড়ি চলে এলো ঠিকই কিন্তু লাভ হলো না, ততোক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

কী আর করা। অগত্যা লেজহীন গাধাকে নিয়ে মালিক ফিরে গেল বাড়ি। বিরক্ত হয়ে গাধাকে নিয়ে খোঁয়াড়ে ঢুকালো। খোঁয়াড়ের অন্যান্য পশুরা গাধার লেজ নেই দেখে বিষয়টা নিয়ে কথাবার্তায় মতে উঠলো এবং ব্যাপক হাঁসাহাসি করলো। তবে একটা গাধা ছিল একটু চালাক। সে লেজকাটা গাধার জন্যে সহমর্মিতা দেখাল, হাঁসল না। বলল: যা হবার হয়ে গেছে। আমি এতো বললাম যে দুষ্টামি করিস না, বদনাম হবে, বিপদে পড়বি, শুনলি না। এখন হলো তো..ভবিষ্যতে সতর্ক থাকিস। লেজহীন গাধা বলল: গাঢ়া আবার লেজহীন হয় নাকি!
চালাক গাধা বলল: তোর তো এখন লেজ নাই, কী করবি?
দুষ্ট গাধা বলল: কী আর করবো, লেজ লাগাবো। এভাবে তো চলে না, সবাই আমাকে চিনে ফেলবে..
চালাক গাধা বলল: তা কি হয়? তুই নিজে একেবারে হাতে ধরে এই বিপদ ডেকে এনেছিস..
দুষ্টু গাধা তার কান দুটো সশব্দে ঝাড়া দিয়ে বলল: হ্যাঁ, হয়। আমি যাবো, যেখানে আমার লেজ কাটা গেছে, সেখানে। কাটা লেজ খুঁজে নিয়ে আসব। খোঁয়াড়ের ভেতরের অন্যান্য গাধা হেঁসে উঠল।
চালাক গাধাটি বলল: এসব ছাড়! আবারো বিপদে পড়তে চাস? শুনছ নাই, খারাপ অবস্থাকে আরো খারাপ হতে দেয়া ঠিক না?
লেজহীন গাধা বলল: একাজ করলে ‘খারাপ’ ভালো হয়ে যাবে, দেখে নিও!

এই চিন্তা করে গাধা পরদিন ঠিকই আবারো গেল সেই ক্ষেতে যেখানে তার লেজ কাটা হয়েছিল। একটু গম খেয়ে লেজ খুঁজতে শুরু করলো। অন্যদিকে খেয়াল করার মতো অবস্থাই ছিল না তার। হঠাৎ সমস্বরে চীৎকার শুনতে পেল সে: এই কে কোথায়! সবাই এসো! দুষ্টু গাধাটা আবারো এসেছে, চলো সবাই, ধরবো তাকে ইত্যাদি...। চিৎকারের সাথে সাথে একেবারে চোখের পলকে সবাই এসে গাধাকে ঘিরে ধরে ফেলল।
একজন বলল: মার, ভালো করে মার..যাতে আর গাধামি না করে।
আরেকজন বলল: না, মেরে লাভ নেই, চলো মালিকের কাছে পৌঁছে দেই।
অপরজন বলল: না, তাতে কোনো কাজ হবে না। এই গাধার যদি শিক্ষা হতো তাহলে এতোদিনে হয়ে যেত.. তারচেয়ে বরং চল, সেদিন তো ওর লেজ কেটেছি, আজ তার কা ন দুটো কেটে দিই....।
গাধা এবার টের পেলো কী বোকামিটাই না করেছে সে..। কিন্তু এখন আর অনুতপ্ত হয়ে কী লাভ...! গ্রামের লোকজন ততক্ষণে তার দুটো কানই কেটে দিলো। এরপর ছেড়ে দিলো তাকে...

দুষ্টু গাধা ধীরে ধীরে নিজের খোঁয়াড়ে গিয়ে পৌঁছল। মালিক তাকে দেখেই বলল: দেখছিস...কী বিপদটাই না ডেকে এনেছিস হাতে ধরে..? তুই আবারো গেছিস দুষ্টামি করতে! তুই এখন অন্যান্য গাধাকে কী বলবি?
লেজ-কানকাটা গাধা খোঁয়াড়ে ঢুকতেই অন্য পশুরা তাকে দেখে হাঁসতে হাঁসতে ক্লান্ত হয়ে পড়লো। চালাক গাধাটা এতোক্ষণ চুপচাপ ছিলো। একজন তাকে বলল: তুমি চুপ করে আছো কেন? হাঁসছো না কেন?
এবার সে বলল: কেন হাঁসবো! আমাদের সবার উচিত কান্নাকাটি করা। পুনরায় এ কাজ করে আর চাইনা নিজেদের আরো বেশি বদনামী হোক। সবাই আমাদের কথা মুখে মুখে বলে বেড়াক, দুর্নামের গল্প লিখুক!

একটি গাধা জিজ্ঞেস করল: কী বলবে ওরা!
চালাক গাধা বলল: বলবে,


দুষ্ট গাধা করলো তার
কাটা লেজের সন্ধান
পেলো না তো লেজ সে
উল্টো হারালো দুই কান

এরচেয়ে আর লজ্জার কী হতে পারে? ওই ঘটনার পর থেকে যখনই কেউ কোনো ভুলের কারণে কোনো কিছু হারায় এবং তার সন্ধানে ছুটতে গিয়ে বাকি জিনিসও হারায় তখনই লোকজন এই প্রবাদটিকে আনমনে উচ্চারণ করে। আর যখনি এই প্রবাদটি কারো মুখে উচ্চারিত হয় তখনি এই প্রবাদের পেছনে গাধার গাধামির গল্প মনে পড়ে যায় সবার।#
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×