somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এলোমেলো ডায়েরী: শৈশবের ৯ টি সবচেয়ে স্বস্তির, মজার মুহূর্ত! আমার সাথে আপনারটা মেলে কি? :) :)

২০ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পূর্বের পর্বগুলো: এলোমেলো ডায়েরি: ঈদ ইন বিদেশ ভার্সেস বাংলাদেশ। দেশীয় ঈদের যে ৬ টি জিনিস প্রবাসে সবচেয়ে মিস করি!
এলোমেলো ডায়েরী (২): ৭ টি গা জ্বালানি বাংলাদেশী সমাজের কথা, শুনলে মনে হয় বক্তার মাথায় গরম পানি ঢেলে দেই!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

১) ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হবার পরে বাড়িতে ফেরার মুহূর্তটা। যা পড়তাম তার বেশিরভাগই পরীক্ষায় উগড়ে দেবার পরপরই মাথা থেকে মুছে যেত। কিন্তু রবীঠাকুরের ঐ ছড়াটি পুরো রাস্তা মনে মিষ্টি একটি সুরের মতো করে বাজতে থাকত! ঐ একটি পড়া জিনিস কোন বছর ভুলতাম না। হাহা।

ওটুকুই আসল "ছুটির" মজা ছিল। বাড়িতে ফেরার পরে এতদিনের সব "এটা করব, ওটা করব" প্ল্যান গুলোকে হুট করে কেমন যেন ফিকে মনে হতো! কোন কিছু "পাব পাব" সময়টা অনেক বেশি আনন্দের, পেয়ে যাবার পরে কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে চারপাশ।



২) যে পরীক্ষায় খারাপ করব ধরে নিয়েছিলাম, সেখানে অস্বাভাবিক ভাবে ভালো করা! আর যেদিন হোমওয়ার্ক করে যাইনি সেদিন যদি টিচার পড়া না ধরতেন বা ধরলে আগডুম বাগডুম বললেও অন্যমনস্ক টিচার বুঝতে না পারতেন! পুরোটা নার্ভাস টাইম পার করার পরে যখন সেই ক্লাস শেষের ঘন্টা পড়ত অথবা টিচার ভুলভাল পড়া শুনেও "গুড বা ঠিক আছে" বলে বসতে বলতেন। উফফ! স্বর্গ! :)

৩) চিপস ও চুইংগামের প্যাকেটের মধ্যে সেই খেলনা বা স্টিকারটি পাওয়া যেটি এখনো কালেকশনে নেই। চিপস কেনাই হতো ফ্রি খেলনাগুলোর জন্যে অথবা প্রিয় খেলোয়াড়, রেস্টলারদের কার্ড পাওয়ার জন্যে। তখন ট্যাটু স্টিকার কালেকশন করাটাও একটা হবি ছিল বাচ্চাদের। সেগুলো রুমে, ব্যাটে, হাতে লাগানো মানে "ভাবস" ;) বেড়ে যাওয়া।





৪) টিফিনে লুচি, লাড্ডু, পুড়ি, সামুচা, কালো মিষ্টি ইত্যাদি পাওয়া! মা সাথে মজার মজার টিফিন দিয়ে দিত, কিন্তু ঐ যে, "পরের বাড়ি পিঠে, খেতে বড় মিঠে!" ;)
যদি ডিম আর কলা টিফিনে আসত কি যে মন খারাপ হতো সবার! টিফিন টাইম হবার আগেই অনেকে খোঁজ নিতে চলে যেত, টিফিন মাসির গামলায় কি আছে জানার চেষ্টা করত। হাহা।

৫) গোসলের সময়ের আগ দিয়ে বৃষ্টি হওয়া, কেননা তখন বড়রা ভিজতে অতোটা বাঁধা দিতেন না। তারা ভাবতেন, ভিজে কাঁদামাটি লাগলে সমস্যা নেই, গোসল তো করেই ফেলবে বাচ্চারা।
কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই বৃষ্টি অসময়ে আসত। এমন যে কতবার হয়েছে, মেঘলা আকাশ দেখে গোসল করতে যাচ্ছিনা, বৃষ্টিতে ভিজে তবেই যাব। বেলা বেশি হয়ে গেলে মা জোর করে গোসলে পাঠাত, আমিও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে বোরড। ওমা! কি অবাক ব্যাপার, গোসল করে বের হয়ে চুলও মুছতে পারলাম না, জোরে জোরে বৃষ্টি পড়া শুরু!



৬) ঈদের কয়েক মাস আগে প্রথম কারো কোন কথায় মনে হওয়া, "আরেহ বছর ঘুরে আবার ঈদ আসছে!" হয়ত বাবা মা ঈদে কার জন্যে কি উপহার নেবেন সেটা লিস্ট করছেন, বা বান্ধবীরা ঈদে নানার বাড়ি যাবে না দাদার বাড়ি যাবে এটা নিয়ে আলোচনা করছে।
এটা সবাই মানবেন যে ঈদের দিনের চেয়েও বেশি আনন্দের "ঈদ আসছে, ঈদ আসছে!" সময়টা!
ঈদের রাতে আমার মনটা যে কি ভীষন খারাপ হতো! বুকটা খালি খালি লাগত!



৭) বেশ অনেকদিন নানা নানী, দাদা দাদী, মামা মামী বা যেকোন আত্মীয়ের বাসায় কাটিয়ে নিজের বাড়িতে, নিজের বিছানায় শরীর এলানোর মুহূর্তটা! আপনজনদের ছেড়ে আসার সময়টা ভীষন কষ্টের, কিন্তু নিজের আপন নীড়ের যে কি মায়া! সেই মায়ায় ঘরে ঢোকামাত্র মন খারাপ পালিয়ে যেত!

৮) ছোট ছোট মজা - বড় কারো জামা পড়ে, ছোট কাজিন বা ভাই বোনদের ভয় দেখানো যে আমার দু হাত গায়েব! পাওডার মেঝেতে ফেলে "পিছলাপিছলি" খেলা! দরজার পিছে দাড়িয়ে থাকা, কেউ আসলে "ভু" বলে ভয় দেখানোর জন্যে। গাড়িতে যেতে যেতে চাঁদকে চোখে চোখে রাখা, কে আগে যায় চাঁদ না গাড়ি? :D



৯) বহুদিন বহু চেষ্টার পরে কোন ভিডিওগেম জেতা বা ফাইনাল স্টেজে যাওয়া। ওহ দোজ ওয়ের দ্যা ডেজ আই মিন গেমস!
রোডর‌্যাশে আমার সবচেয়ে প্রিয় পার্ট ছিল কিকিং আদার বাইকস। আমার ছেলে সাথী বন্ধুরা শুধু শেষে "উইনার কিস" পাওয়ার জন্যেই খেলত। :`> ছেলেগুলো ছোট থেকেই শয়তান হয়! হাহাহা।


ডেস্কবলের ঐ পাওয়ারগুলো মনে আছে? গুলি করার, আগুন ছোড়ার, অনেকগুলো বল পাবার ইত্যাদি নানাকিছু! মনের মতো পাওয়ার পেতে কি যে ভালো লাগত! আর খেলায় হারা হারা সময়ে "লাইফ" পাওয়া! মনে হতো আসলেই দ্বিতীয় জীবন পেয়েছি!


ডুম ওয়াজ রিয়েলি স্কেয়ারি। যখন একেক জায়গা থেকে একেক ভূত আসত, সত্যিই চমকে উঠতে হতো। বাট কয়েকবার খেললে একটা আইডিয়া হয়ে যেত। কোথায় লুকানো উচিৎ, কোথায় লাইফ বাড়বে ইত্যাদি!


আর ভি কপ? তিনটি ধরণ শেষ করে দ্যা আলটিমেট বসকে প্রথমবার মারার মুহূর্তটা কখনো ভোলা যাবেনা!



-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

খুঁজলে এমন অনেক হাজার সুন্দর মুহূর্ত পাওয়া যাবে। ছোটবেলাটা হয়ই এমন আনন্দময়! আপনাদের সাথে কোনগুলো মিলল আর নতুন কি কি মজা করতেন সেটা অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।

সকল ছবিসূত্র: অন্তর্জাল!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৫
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×