সন্তান হারানো যে কত বড় কষ্টের তাহা যার সন্তান হারাইছে সে-ই কেবল বুঝবেন। ব্যাপারটা বুঝা আসলে মোটামুটি সম্ভব নয় সবার জন্য। এই পোস্টেই খানিকটা তার প্রমাণ পাইবেন।
উপরের যে কোট শেয়ার করলাম সেইটা হইতেছে বাইবেল থেকে ক্রিস্চিয়ানো রোনালদোর মা দোলারেস এর উদৃত কত সুন্দর উপরোক্ত বাক্যটি।
ঘটনার শানে নুযুল বড়ই মর্মবিদারক। জমজ জন্ম নেওয়া ভাই বোন থেকে একজন মারা যায় যার ফলশ্রুতিতে সিআরসেভেন লিভারপুলের সাথে খেলতে পারেন নি। তবে তাঁর সম্মানে লিভারপুল সমর্থকরা অভাবনীয় এক সম্মান ও সাহস সিআরসেভেন'কে দেয় যা ক্রিড়া জগতের জন্য খুব সুন্দর বিষয়। ম্যান ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচের সপ্তম মিনিটে রোনালদোকে সান্ত্বনা দিতে সমর্থকেরা এক মিনিট ধরে হাততালি দেন যা ম্যাচের পরে কোচ ইউর্গেন ক্লপ খুব সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছেন।
এ তো গেল তারকার সন্তানের মৃত্যু। এবার আসুন অন্য এক ঘটনায়-
"নিউমার্কেট এলাকায় দোকানমালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় মারা যান নাহিদ। তিনি ডি-লিংক নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ‘ডেলিভারিম্যান’ ছিলেন। নাহিদের বাসা রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের রনি মার্কেটের মেম্বার গলিতে।ওই দিন সকাল ১০টায় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পান নাহিদ। রাতে তাঁর মৃত্যু হয়"
"গলির ভেতরে একটু এগোতেই হাতের ডান পাশে নাহিদদের বাড়িটা। আধা কাঠা জমির ওপর বাড়ির কাঠামোটি। দেড় হাত প্রশস্ত চিকন সিঁড়ি বেয়ে উঠে দোতলার ঘর। এ ঘরে থাকেন বাবা নাদিম হোসেন, মা নার্গিস এবং ছোট দুই ভাই শরীফ ও ইব্রাহিম। আর তৃতীয় তলায় টিনশেডের ঘরে থাকতেন নাহিদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ডালিয়া। পুরো বাড়ির কাঠামো তৈরি হয়েছে কেবল। পলেস্তারা হয়নি, চুনকামও হয়নি। ঘরের কাজ এখনো অনেক বাকি। ধীরে ধীরে বাড়ি-সংসার সাজানোর কথা ছিল নাহিদের।"
"নাহিদকে হারিয়ে সেই বাড়ির পরিবেশ এখন আহাজারিতে ভারী। বাড়িভর্তি আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশী। কেউ সমবেদনা, কেউ সান্ত্বনা জানাচ্ছেন। তাঁরা বলছিলেন, দুই পক্ষের মারামারিতে পড়ে নিরীহ একটা ছেলের প্রাণ গেল। এটা কেমন বিচার? ছেলে হারিয়ে শোকাহত মা নার্গিস বলেন, ‘আমরা বিচার চাই না। নাহিদকে তো আর ফেরত পাব না। বিচার চেয়ে কী হবে। বিচার চাইলেই তো আর বিচার পাব না। আমার ঘর-সংসার কীভাবে চলব।’
মামলা করবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলা চালাতে টাকাপয়সা লাগে। এগুলো করে লড়তে পারব না। মামলা করে কী করমু। এগুলো করলে কি আমার ছেলে ফেরত আসবে? অত্যাচারটা করে আমার ছেলেকে মারা হলো। আমার যা যাওয়ার চলে গেছে।’"
"বেতনের পুরো টাকাই সংসারে দিতেন বলে জানান নাহিদের মা। নিজে থেকেই ছেলের কথা বলছিলেন আর ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন। নাহিদের মা বলেন, ‘নাহিদের বাবা একটা কোম্পানিতে কাজ করে অল্প কিছু টাকা পায়। এটা দিয়ে ঋণ শোধ করতে হয়। আর সংসার চালাত আমার ছেলে নাহিদ।’"
নাহিদদের নিয়ে আপনি আমি কোন কনসার্ন করার দরকার নাই কারন আপনার আমার কেহ নন এই নাহিদ। নাহিদেরা যদি স্কান্ডিনেভিয়ান কোন দেশের হইত তবে খবর ভিন্ন কিছু হইত। এই দেশে বিচার চাহিয়া মানুষ/পরিবার আরো বড় দৌড়ের মধ্যে পড়ে। ঘুরেফিরে পয়সা খুই যাবার রাস্তা তৈরি হয় যা এই গরিব ফ্যামিলির নাই। উহারা তাই বিচারই চাহে না। এই হইল জিডিপি প্রবৃদ্ধির বাংলাদেশ। কথা কিলিয়ার?
নাহিদ এর খবর সুত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:৪৪