মালয়েশিয়ার রাজা মশাই ৬ই জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে পদত্যাগ করে ফেডারেল রাজধানী কুয়ালালামপুর এর রাজ প্রাসাদ ছেড়ে নিজ রাজ্য কেলানতানে ফিরে গেছেন।
আমার নিজের ধারণা, রাষ্ট্রীয় ঝুট ঝামেলা তার ভালো লাগে না। তাই বিরক্ত হয়ে পদত্যাগ করেছেন। প্রথম স্ত্রীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ছিল। সম্প্রতি রাশিয়ায় গিয়ে সেখানকার সাবেক মিস মস্কোকে বিয়ে করেছেন বলে রটনা আছে। তাই মনে হয় তিনি নিরালায় থাকতে চান। তিনি ছিলেন এক জন দিলদরাজ রাজা। সময় পেলেই গ্রামে সাধারণ মানুষের মাঝে গিয়ে মিশতেন। তাদের দুঃখ, কষ্ট আর আনন্দ বেদনা বুঝার চেষ্টা করতেন।
রাজার পদ ত্যাগ করলেও নিজ রাজ্যের সুলতান পদ তার অবশ্যই আছে। তিনি এখন আবার কেলানতানের সুলতান পদে আসীন। ছোট রাজ্য নিয়ে সুখে রাজ কার্য করতে থাকবেন। মালশিয়া নতুন রাজা খুজেঁ নেবে।
২৪ জানুয়ারি নতুন রাজা নির্বাচন করার জন্য সব প্রদেশের সুলতানগণ বসবেন। সেখানে তারা গোপন ব্যালটে ভোট প্রদান করে নতুন রাজা নির্বাচন করবেন। এই ভোট কেবল প্রাদেশিক সুলতানগণই দেবেন। রাজাও নির্বাচিত হবেন প্রাদেশিক সুলতানগণের মধ্য থেকে। রাজা নির্বাচনের সময় তারা রাজার ডেপুটিও নির্বাচন করে রাখেন। তবে ডেপুটি কেবল রাজার অনুপস্থিতিতে কাজ করেন। রাজা হন না।
মালয়েশিয়ার রাজাকে বলা হয়- “মালয়েশিয়ার শাসক” (Ruler of Malaysia) আর প্রদেশের সুলতান গণকে বলা হয় “মালয়েশিয়ার শাসকগণ( Rulers of Malaysia”।
ব্লগার চাঁদ গাজীর মতো আমারো প্রশ্ন জাগে, একুশে শতকে রাজা বাদশাহর ব্যাপারটি কেমন যেন লাগে। কিন্তু বাস্তবতা হলো – পৃথিবীর অনেক দেশে এমনকি ইউরোপের অনেক দেশেই রাজা- রানী আছেন। পৃথিবীর অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ যুক্তরাজ্যেও রাণী দ্বারা চলে। সেই রাণীর আবার অনেক পাওয়ার। তিনিই একই সাথে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা সহ আরো বেশ কটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। আরব দেশগুলোতে এখনো নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র চালু আছে।
স্মরণকালের মধ্যে এক মাত্র নেপাল আর আফগানিস্তান ছাড়া কোন দেশে রাজার অবসান হয়েছে বলে আমার জানা নেই। নেপালে রাজার বিলুপ্তি ঘটেছে সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্রর কারণে। আর আফগানিস্তানের জহির শাহ আবার মসনদ ফিরে পেতে চান নি বলে সেখানে রাজা প্রথার বিলুপ ঘটেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:১২