——————————
নুসরাত, প্রিয়াংকা রেড্ডী ..........এবং সকল নারী
———-
তুমি পোষাক পড়বে সেভাবেই যেন
ততটাই দেখা যায় , যতটা দেখলে
দৃকমাত্র লোলুপের লালা থাকে সংযত ,
যদিও তোমার ছায়াতেও তার লালশা বৃষ্টি ঝরে !
ঘুরবে ফিরবে- সীমার মধ্যে, মাথার ওপরে আকাশ যেন না টানে।
স্রষ্টার আকাশ উদার-অপার তোমার জন্যে নয়।
যেখানেই যাও, বেলাবেলি ঘরে ফিরো -
নির্জন পথ পাশে পড়ে থাক, ভীড়টাও এড়িয়ে যেও।
তোমার জন্যে গৃহকোনই ভালো , যদিও এখন
বাহির যুদ্ধে নড়বড়ে হাতে বাড়তি শক্তি লাগে-
এবং গৃহকোনও কোনো শ্বাপদমুক্ত অভয়রন্য নয়।
তুমি কোন কথা বলবে না । কখনওই নয়।
কখনও বলবে গা ঘেসে দাঁড়াবেন না,
না, কোন অভিযোগ নয়- রুখে দাড়ানোও নয়
শ্লীলতাহানি তো তোমারই প্রাপ্য, ধর্ষণ, মৃত্যুও-
চিঁ- চিঁ করেও কোন প্রতিবাদ তোমার জন্য মানা।
চুপচাপ থাকবে এবং জানবে, এই তো ঢের বেশী
নি:শ্বাস নিচ্ছ , খাচ্ছ - দাচ্ছ, চলছ- ফিরছ-
কখনও সখনও রঙীন সজ্জাতে হোচ্ছ দৃশ্যমান -
এত প্রাপ্তির বিলাসী সাগরে
তোমার তো টুঁ- শব্দটিও করবার কথা নয়!
বিস্তর হাড়ভাংগা পরিশ্রম করে করে -
এই সভ্যতার বিকট জঙ্গলবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে ।
সেখানে তুমি সেচন করবে সকাল বিকাল
আড়ালে থেকেই পুষ্ট করবে, তুষ্ট করবে।
সেজন্যে, তোমাকে যখন-যেভাবে-যেখানে
থাকতে বলা হবে -তুমি তাই থাকবে ।
সে বলবে, টানটান বিছানার চাদর দিয়ে ঢাকা
পালংক হয়ে থাক-
তুমি তাই থাকবে ।
সে বলবে, রাস্তার মোড়ে সুদৃশ্য ভাস্কর্য হয়ে দাঁড়াও-
তুমি তাই দাঁড়াবে ।
সে বলবে নর্তকী হও -
তুমি দেহের তন্ত্রে তন্ত্রে নৃত্যের মুদ্রা ফুটিয়ে তুলবে
তারা মাতোয়ারা হবে ।
আবার,
সে বলবে, তুমি নরকের দরজা, তুমি পাপ,
তুমি তেঁতুল, তুমি অন্ধকার, তুমি দূর হও।
তুমি ক্রমশ: অন্ধকারে নিজেকে মুড়ে নিয়ে অদৃশ্য হতে হতে
এক কোনে কোনমতে অদৃশ্যমান হয়ে থাকবে,
একপ্রস্থ মাংসের সমাহার বৈ-কিছু নও তো তুমি!
অলঙ্ঘনীয় এইসব অন্ধকারে পুড়তে পুড়তেই তুমি
তাকে নির্মাণ করছ -নিজের শক্তিকে রূপান্তর করে,
তিল তিল শ্রম আর মমতা দিয়ে তাকে পুষ্ট করছ।
তার সকল ক্ষোভ, বিক্ষোভ, আগুন, হিংস্রতা, লালসা, আর
বিকৃতির অবমুক্তির ভাগাড় হয়ে তাকে ধারন করছ-
তুমি সর্বংসহা ।
তাকে বয়ে নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছ এক বন্দর থেকে আরেক বন্দরে,
এক সময় থেকে আরেক সময়ে ।
বস্তুত: সে প্রবল অস্তিত্বমান ও পরাক্রমশালী হয় তোমার জন্যেই-
কেবল, তুমি জানছ না - জেনেও।
তুমি শুধু জান, তুমি কেউ নও, তোমার কিছু নয়,
তোমার জন্যে কিছু নয় ।
তোমার কেবলই ঝরে যাবার কথা ,
পুড়ে যাবার কথা- মরে যাবার কথা-
পুড়তে পুড়তে তোমার সকাল গিয়েছে -পুড়তে পুড়তে দুপুর
পুড়তে পুড়তে এতদূর এলে -
আরও কত পোড়া বাকী?
ক্লান্তি কি এল, ক্লান্তি আসে কি- পুড়তে পুড়তে ,
অবসাদ- ঘেন্নাও?
ক্রোধের আগুন জ্বলে না কখনও?
কোন একদিন ক্লান্তি-ঘেন্না-ক্রোধ ঘনীভূত হলে পড়ে-
দগ্ধ শরীর মশাল উচিয়ে ধরে
জ্বলন্ত বেগে গলা ছেড়ে ডাক দিও-
অনেক তো হ’ল- এবার একটি দাবানল গড়ি চল।
————————-
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৮