মধুচন্দ্রিমা শেষে রিয়াদে শ্বশুরবাড়িতে ফিরলো সুলতানা। তার শাশুড়ি প্রথম দিন থেকেই তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করলো এবং সুলতানা ও কারিমের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করতে লাগলো। সৌদি আরবে সামাজিক বৈষম্যের কারণে আমাদের দেশের মত ছেলেদের মূল্য বেশী বলে মনে করা হয়। মায়েরাও এই কারণে পুত্রসন্তানের জন্য ব্যাকুল থাকে। পুত্রসন্তানহীন মায়েরা পরিবার ও সমাজে নানা রকম অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হয়। সুলতানার শাশুড়ি নুরার তিন ছেলে আর চার মেয়ে। বড় ছেলে কারিমের বয়স যখন ১৪ বছর তখন তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে। দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল লেবানিজ এবং অনেক সুন্দরী। তখন থেকেই দুই স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
প্রথম স্ত্রী নুরাহ ইথিওপিয়ান এক জাদুকরকে অনেক টাকা দিয়ে তার সতীনের উপর জাদুটোনা করায়, যেন তার বাচ্চা না হয়। এই জাদুকর রাজার প্রাসাদে কাজ করতো তবে রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও টাকার বিনিময়ে তাকে দিয়ে জাদুটোনা করাতো। কয়েক বছর পর দেখা গেলো যদিও লেবানিজ স্ত্রী কোন সন্তান জন্মদিচ্ছে না তারপরও কারিমের বাবা তাকে ভালবেসে আশ্বাস দিয়েছে যে তার জন্য সন্তান কোন ব্যাপার না। তখন নুরাহ ঐ জাদুকরকে আরও টাকা দেয় যেন জাদুর কারণে দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে। কোনভাবে এই জাদুর কথা কারিমের বাবার কানে যায় এবং সে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে তার প্রথম স্ত্রী নুরাহকে বলে যে যদি তার দ্বিতীয় স্ত্রী নুরাহর আগে মারা যায় তাহলে সে নুরাহকে তখনই তালাক দিবে এবং সন্তানদের সাথে যোগাযোগ করতে দিবে না। নুরাহর বিশ্বাস জাদুর কারণে তার সতীনের বাচ্চা হচ্ছে না তাই সে ভয় পেল হয়তো দ্বিতীয় জাদুর কারণে সতীনের মৃত্যু হতে পারে। ফলে তখন থেকে সতীনের যেন মৃত্যু না ঘটে সেই কামনা করতে সে বাধ্য হোল।
সুলতানা প্রতিদিন সকাল ৯ টায় কারিমকে প্রাসাদের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয়। কারিম যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই শাশুড়ি নুরাহ সুলতানাকে আদেশ করে তার জন্য চা বানানোর জন্য। অথচ ঐ প্রাসাদে তেত্রিশ জন কাজের লোক আছে তাদের সেবার জন্য। সুলতানা এই ধরণের আচরণ ধৈর্যের সাথে সহ্য করতো কারণ সে বিশ্বাস করতো যে পরিস্থিতি তার অনুকুলে একদিন আসবে।
কারিমের ছোট ভাই মুনির বাইশ বছর বয়সে আমেরিকা থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছে। দেশে ফিরে সে কিছু রাজপুত্রের সাথে চলাফেরা করতো যারা বিভিন্ন বেআইনি ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজকর্মে যুক্ত ছিল। এরা নারী-পুরুষ মিশ্রিত পার্টির আয়োজন করতো যেখানে বিদেশী মহিলা হাসপাতালকর্মী ও বিমানবালারা অংশ নিত। এই রাজপুত্রেরা মাদক ও এলকোহলে আসক্ত ছিল। এরা চাইত পশ্চিমের মত খোলামেলা সমাজ। এইসব কারণে এদের অনেকে রাজা ও তার শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করতো ও বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখত। বাদশাহ ফয়সাল এদের সম্পর্কে বেখবর ছিলেন না বরং তরুণদের সঠিক পথে আনার জন্য তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কাউকে পরিবারের ব্যবসায় লাগিয়ে দেয়া হত কাউকে সেনাবাহিনীতে পাঠানো হতো যেন উল্টা পাল্টা চিন্তা বাদ দিয়ে এরা গঠনমূলক কাজে সময় ব্যয় করে। বাদশাহ ফয়সালের মাধ্যমেই মুনিরের বেপরোয়া জীবনের কথা তার পরিবারের কানে যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে উল্টা রাজপরিবারের লোকদের দুর্নীতি আর অপচয়ের অভিযোগ তোলে। সে দৃঢ় কণ্ঠে বলে যে সে ও তার বন্ধুরা একদিন এইসব অনাচারের অবসান ঘটাবে। সে কিছু ন্যায্য কথা বললেও তার দৈনন্দিন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে এইসব আদর্শবাদী কথার কোন মিল ছিল না।
১৯৫২ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে বিদেশী অমুসলিমদের জন্য মদের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল না। কিন্তু দুইটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে বাদশাহ আব্দুল আজিজ এই নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। ঐ সময় আব্দুল আজিজের ছেলে নাসির আমেরিকা থেকে ফিরে মদ ও নারীতে আসক্ত হয়ে পড়ে। সে ছিল রিয়াদের গভর্নর, তারপরও সে গোপনে পার্টি দিত যেখানে ছেলে- মেয়ে একসাথে অংশগ্রহন করতো। ১৯৪৭ সালে গভীর রাতের একটা পার্টিতে অতিরিক্ত মিথানল মিশ্রিত মদ খেয়ে ৭ জন মারা যায়, যার মধ্যে কয়েকজন মেয়েও ছিল। বাদশাহ আব্দুল আজিজ এই ঘটনায় এতো ক্রুদ্ধ হন যে তিনি নিজের হাতে ছেলেকে প্রহার করেন এবং তাকে জেলে পাঠিয়ে দেন। ১৯৫১ সালে বাদশাহ আব্দুল আজিজের আরেক পুত্র মিশারি মাতাল হয়ে ব্রিটিশ প্রো-ভাইস কন্সুলকে গুলি করে হত্যা করে এবং তার স্ত্রিকেও হত্যা করতে উদ্যত হয়। এই ঘটনার পরে আব্দুল আজিজ মদের উপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কালো বাজারে মদ বিক্রি শুরু হয়ে যায়। সুলতানার পরিচিত অনেক পুরুষ ও মহিলা সামাজিক অনুষ্ঠানে মদ খায়। এদের একটা বড় অংশ মদে আসক্ত। বাসায় মদ রাখে না এমন পরিবার সুলতানা কখনও দেখেনি। অতিথিদের অনেক দামী ও ভালো মদ দিয়ে আপ্যায়ন করানো হয়। নিষেধাজ্ঞার কারণে ১৯৫২ সালের পরে এক বোতল স্কচ মদের দাম ২০০ ডলার হয়ে যায়। টাকা বানাতে অনেকেই এই অবৈধ মদের আমদানি ব্যবসায় জড়িয়ে পরে। মুনির ও তার দুইজন গোত্রীয় ভাই মিলে জর্ডান থেকে গোপনে মদ আমদানি শুরু করে। সন্দেহ করলে শুল্ক কর্তৃপক্ষকে এরা ঘুষ দিয়ে ঠাণ্ডা করতো। একমাত্র বিপদ ছিল মুতাওয়া ( ধর্মীয় শৃঙ্খলার জন্য পুলিশের মত বাহিনী)।
মুনিরের মদের এই অবৈধ কারবার সংক্রান্ত একটা ঘটনা সুলতানাকে নিজের অবস্থান মজবুত করার সুযোগ করে দেয়। একদিন কারিম ঘরে ফিরলে সুলতানার শাশুড়ি কাঁদতে কাঁদতে কারিমের কাছে সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। সে বলে যে সুলতানা তাকে সম্মান করে না এবং কোন কারণ ছাড়া তার সাথে ঝগড়া শুরু করেছে। ঐ স্থান ত্যাগ করার আগে সে সুলতানার হাতে চিমটি কাটে। সুলতানাও ব্যথায় ও রাগে শাশুড়ির দিকে ছুটে যায়। যদিও কারিমের বাধার কারণে তার দ্বারা কোন অনিষ্ট করা সম্ভব হয়নি। শাশুড়ি কারিমকে বলে যে সুলতানা একটা অযোগ্য বউ এবং তার কাজ কর্মের খবর কারিম যদি জানত তাহলে সে তাকে তালাক দিত। সেই দিন ঘরে ফেরার আগে কারিম জানতে পারে যে লন্ডন স্টক মার্কেটে তার এক মিলিয়ন ডলারের বেশী ক্ষতি হয়েছে। ফলে তার মাথা ছিল আগে থাকতেই গরম। মায়ের কাছে অভিযোগ শুনে ও সুলতানার ছুটাছুটি দেখে রাগ সামলাতে না পেরে সে পরপর ৩ টা চড় সুলতানার গালে বসিয়ে দেয়। প্রত্যুত্তরে সুলতানা তার হাতের কাছের দামী ফুলদানী কারিমের দিকে ছুড়ে মারে। সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে একটা লাখ ডলার মূল্যের ছবিকে ধ্বংস করে। এরপর সুলতানা একটা বহু মূল্যবান হাতির দাঁতের ভাস্কর্য কারিমের দিকে ছুড়ে মারে। কারিম বুঝে ফেলে যে সুলতানা রুমের বাকি সব মূল্যবান জিনিসও একে একে ভেঙ্গে টুকরা করবে। কারিম মাথা গরম করে এবার সুলতানার চোয়াল বরাবর এক ঘুষি দেয়। সুলতানা জ্ঞান হারায়।
কিছুক্ষন পর জ্ঞান ফিরলে সে বাসার ভিতর কোলাহল শুনতে পায়। সে কাজের মেয়ে মারসির কাছ থেকে জানতে পারে যে এই কোলাহল অন্য বিষয় নিয়ে। বাদশাহ ফয়সাল কারিম ও তার বাবাকে ডেকেছেন কারণ মুনিরের অবৈধ মদের চালান মুতাওয়াদের হাতে ধরা পরেছে। সুলতানা তার শাশুড়ির কান্না শুনে সেদিকে গেলো। শাশুড়ি মুনিরের কথা চিন্তা করে কান্না করছিল। তাকে দেখে নুরাহ কান্না থামাল। অনেকক্ষণ চুপ থেকে সে বলল কারিম তাকে বলেছে যে সে সুলতানাকে তালাক দিবে। মানুষের স্বভাব বদলায় না। তুমি জংলিদের মত আচরণ করছ এবং এই ধরণের মেয়ের এই বাড়িতে জায়গা হবে না। সুলতানা জবাবে বলে যে সে নিজেই বরং কারিমের কাছে তালাক চাইবে। মারসি তার ব্যাগ গোছাচ্ছে এবং এক ঘণ্টার মধ্যে সে বাড়ি ছাড়বে। সে আরও বলে যে সে তার বাবাকে বলবে যেন সে মুনিরের এই অন্যায় কাজের জন্য রাজার কাছে শাস্তি দাবি করে। শাস্তি হলে মুনিরকে বেত্রাঘাত করা হবে অথবা জেলে দেয়া হবে অথবা উভয় দণ্ডই দেয়া হবে।
সুলতানা চলে আসলেও শাশুড়ি নুরাহর মনে ছেলে মুনিরের জন্য ভয় ঢুকে গেলো। কারণ সুলতানার বাবা বাদশাহর অনেক কাছের আত্মিয়। সুলতানা কিন্তু জানে যে এই ধরণের কথা যদি সে তার বাবাকে বলতে যায় তাহলে সে বরং সুলতানাকে ঘর থেকে বের করে দেবে। কিছুক্ষন পর সুলতানা যখন মারসিকে নিয়ে ঘর থেকে চলে যাবার জন্য দরজার কাছে গেলো তখনই দেবর মুনির ঘরে ঢুকছিল। মুনির তার সম্ভাব্য দুর্দশার কথা তখনও অনুধাবন করতে পারেনি। সুলতানা যখন বলল যে তার শাশুড়ি চায় যে কারিম তাকে তালাক দিক তখন মুনির তাকে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো। ইতিমধ্যে তার শাশুড়িও দরজার কাছে চলে এসেছে। সেও সুলতানাকে বারবার যেতে নিষেধ করতে লাগলো। তাদের জোরাজুরিতে সুলতানা সিদ্ধান্ত বদলালো।
সেই রাতে কারিম অনেক দূরত্ব রেখে বড় বিছানার এক পাশে শুয়ে পড়লো। এপাশ ওপাশ করে নির্ঘুম রাত দুজনে কাটালো কোন কথা ছাড়া। নিজের আচরণের কারণে সুলতানার মন কারিমের প্রতি কিছুটা নরম হোল কিন্তু সকালে কারিমের নীরবতা তাকে হতাশ করলো। এক সময় সুলতানা কারিমকে বলল যে আমাদের মনে হয় তালাকের কথা চিন্তা করা উচিত। যদিও মনে মনে সে আশা করছিল যে কারিম মিটমাটের কথা বলবে। কারিম শুকনো ও ভয় মিশানো গলায় বলল যে তুমি যা ভালো মনে করো তাই হবে তবে মুনিরের সমস্যার সমাধান হওয়ার পর আমরা আমাদের ভুল বোঝাবুঝির সমাধান করবো। অফিসে যাওয়ার আগে কারিম সুলতানাকে বলল যে সুলতানা তুমি তোমার হাসির আড়ালে লুকানো আক্রমণাত্মক আচরণ দিয়ে আমার সাথে প্রতারনা করেছ।
কারিম যাওয়ার পরে সুলতানা বিছানাতে কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে পড়লো। শাশুড়ি আম্মা সুলতানাকে অনেক বুঝিয়ে ঝগড়া মিটিয়ে ফেললো। সে তার এক ড্রাইভারকে দিয়ে একটা মূল্যবান হীরার নেকলেস সুলতানার জন্য কিনে আনাল। পরে সুলতানা নিজেও গেলো স্বর্ণের দোকানে। সেখান থেকে মোট ৮০,০০০ ডলারের গহনা কিনলো। মুনিরের ঘটনার সমাধান হতে কয়েক সপ্তাহ চলে গেলো। সুলতানার বাবা এবং আরও কয়েকজন প্রভাবশালী রাজপরিবারের সদস্যের অনুরোধে এবারের মত মুনির বেঁচে গেলো। নুরাহ ভাবলো তার পুত্রবধু সুলতানা তার বাবাকে এই ব্যাপারে প্রভাবিত করেছে বলেই বিপদ কেটেছে। শাশুড়ি এখন তাকে অনেক ভালবাসে। মুনির তার বাবার জেদ্দার ব্যবসাতে যোগ দিল। তার অসন্তুষ্টি দূর করার জন্য সরকারের বড় বড় ঠিকাদারি তাকে দেয়া হোল। কয়েক মাস পরে সে তার বাবাকে জানালো যে সে বিয়ে করতে চায়। উপযুক্ত পাত্রীও পাওয়া গেলো। কয়েক মাসের মধ্যে সে ঠিকাদারি করে প্রচুর অর্থের মালিক হোল যার পরিমান অনেক ছোট দেশের বাজেটের সমান ছিল।
কারিম আলাদা রুমে থাকছে সেই দিনের কথার পর থেকে। তালাকের ব্যাপারে তার মনোভাব পরিষ্কার না। হঠাৎ একদিন সুলতানা বুঝতে পারলো যে সে মা হতে যাচ্ছে। কারিমের সাথে মনোমালিন্যের কারণে তার কাছে মনে হোল যে গর্ভপাত ছাড়া দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই। সে গর্ভবতী একথা জানলে কারিম কখনও তালাক দিতে রাজি হবে না। রাজপরিবারে তার এক বান্ধবীর কাছে সে জানতে পারলো যে তার বোনের গর্ভপাত একজন ভারতীয় ডাক্তার করে দিয়েছে। মেয়েটা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল কিন্তু তার মা এই ব্যবস্থা করে দেয়।
একদিন সে গোপনে সেই ডাক্তারের অফিসে যায় গর্ভপাতের জন্য। হঠাৎ সে কারিমকে উত্তেজিতভাবে হুড়মুড় করে ঐ অফিসে ঢুকতে দেখে। ওখানে অনেক বোরকা পরা মেয়ে থাকলেও সুলতানার জুতা আর আবায়া দেখে কারিম তাকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। সে সুলতানাকে জোর করে ওখান থেকে নিয়ে আসে। আসার সময় সে অফিসের রিসিভশনিস্তকে হুমকে দেয় যে সে ডাক্তারকে জেলে পাঠাবে। কারিম একবার তাকে আদর মিশ্রিত কণ্ঠে ভালোবাসা জানায় আবার তাকে বকাঝকা করতে থাকে। সুলতানাও কারিমের আচরণ উপভোগ করে। কারিম বলে যে সে কখনই তাকে তালাক দেয়ার কথা ভাবেনি। সে রাগ ও অহঙ্কারে এই ধরণের আচরণ করেছে।
মারসি ছাড়া আর কেউ এই গর্ভপাতের কথা জানত না। মারসি আরেকটা কাজের মেয়েকে কথাটা বলে দেয়। সেই মেয়েটা সরাসরি শাশুড়ি নুরাহকে বলে দেয়। নুরাহ শোনামাত্র পাগলের মত ঘুরে ঘুরে কারিমকে তার এক মক্কেলের অফিসে খুঁজে পায় এবং হিস্টিরিয়া রোগীর মত বলে যে সুলতানা তার অনাগত সন্তানের গর্ভপাত করাতে গিয়েছে।
কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সুলতানার বাচ্চাটা বেঁচে গেলো। বাসায় গিয়ে কারিম সুলতানাকে অনেক বকলো আবার অনেকবার চুমা দিল। তারা উভয়ে অনেকক্ষণ কেঁদেকেটে সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাল।
মার্কিন লেখিকা জিয়ান সেসন (Jean Sasson) এর বই Princess: A True Story of Life Behind the Veil in Saudi Arabia তে বর্ণিত রাজকন্যা সুলতানার জীবন কাহিনীর সারসংক্ষেপ।
ছবি – ইন্টারনেট
আগের পর্ব - ৮
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৪