somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি রাজকন্যার জীবন কাহিনী (পর্ব: ৮) – রাজকন্যা সুলতানার বিয়ে

০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সুলতানা আর তার পিঠাপিঠি ভাই আলীর মধ্যে সব সময়ই একটা যুদ্ধংদেহী অবস্থা বিরাজ করতো। একজন আরেক জনকে বিপদে ফেলতে অথবা বোকা বানাতে চেষ্টা করতো। তার বড় নয় বোন এই দুইজনের কাজ কারবার নিয়ে অনেক হাসাহাসি করত। একবার সুলতানা আলীকে বোকা বানানোর জন্য একটা ফন্দি আঁটলো। সে তার এক বান্ধবীকে দিয়ে আলীকে ফোন করালো। আলীকে পটানোর জন্য সেই বান্ধবী আলীকে বলল যে তাকে তার খুব ভালো লেগেছে। সুলতানা ও তার বোনেরা আগে থেকেই ঐ বান্ধবীর বাসায় গিয়ে তার পাশে বসেছিল। আনাড়ি প্রেমিক আলীর প্রেমের প্রস্তাব শুনে ওরা সবাই হাসতে হাসতে একে অন্যের গায়ে গড়াগড়ি দিতে লাগলো। সুলতানার বান্ধবী আলীকে একটা নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে থাকতে বললো যেন বান্ধবীর গাড়িচালক আলীকে তার বাসায় নিয়ে আসতে পারে। সে আরও বললো যে তার বাবা মা শহরের বাইরে গেছে তাই তার বাড়িতে আসতে কোন সমস্যা নাই। সে আলীকে বললো যে সে যেন একটা ছোট ছাগলের বাচ্চা কোলে করে দাড়িয়ে থাকে যেন ড্রাইভার তাকে চিনতে পারে। কিছুক্ষন পর দেখা গেলো যে আলী একটা ছোট ছাগলের বাচ্চা কোলে নিয়ে নির্ধারিত জায়গায় দাড়িয়ে তীর্থের কাকের মত বান্ধবীর ড্রাইভারের জন্য অপেক্ষা করছে। সুলতানা, তার বান্ধবী ও বোনেরা তাদের বারান্দা থেকে এই দৃশ্য দেখে হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে লাগলো। বেচারা আলী এভাবে কয়েক ঘণ্টা দাড়িয়ে ছিল তার ফোনে পাওয়া প্রেমিকার ড্রাইভারের অপেক্ষায়। ঐ মেয়ে আলীকে মোট তিন দিন এমন ঘোল খাইয়েছিল।

একদিন সন্ধ্যায় সুলতানার বাবা তাদের বাড়িতে এসে সবাইকে জানালো যে সুলতানার জন্য একজন যোগ্য পাত্র পাওয়া গেছে। সেই রাতে সুলতানা প্রায় পুরো রাত জেগে রইলো। পরের দিন বড় বোন নুরা এসে জানালো যে রাজপরিবারের সদস্য এবং তাদের গোত্রীয় ভাই কারিমের সাথে সুলতানার বিয়ে ঠিক হয়েছে। সুলতানা ছোট বেলায় কারিমের এক বোনের সাথে খেলতো। কারিম এখনও অবিবাহিত এবং বয়স ২৮ বছর। বোন নুরা বললো যে ফটো দেখে কারিমকে অনেক হ্যান্ডসাম মনে হয়েছে তার। শুধু তাই না সে ইতিমধ্যেই লন্ডন থেকে আইনের উপর ডিগ্রি নিয়ে এসেছে এবং রিয়াদে তার নিজের বড় ল ফার্ম আছে। নুরা বললো যে সুলতানা অনেক ভাগ্যবান কারণ কারিম সুলতানার বাবাকে বলেছে সে চায় সুলতানা আগে স্কুলের পড়াশুনা শেষ করুক যেন তার হবু স্ত্রীর সাথে মনের ভাব প্রকাশ করতে তার সমস্যা না হয়। সুলতানা মুখ বাঁকা করে বিছানার চাদর দিয়ে তার মুখ ঢাকলো আর চিৎকার করে নুরাকে বললো যে, ভাগ্যবান সে না বরং ভাগ্যবান হোল কারিম।

পরে সুলতানা কারিমের বোনকে ফোন করে বললো যে সে যেন তার ভাইকে বিয়ের ব্যাপারে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে বলে। সে বললো যে যদি তাদের বিয়ে হয় তাহলে কারিম একাধিক বিয়ে করতে পারবে না। যদি করে তাহলে সে বাকি স্ত্রীদেরকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে। সে আরও বললো যে তার বাবার পাত্র খুজতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে কারণ কিছুদিন আগে স্কুলের ল্যাবে কাজ করার সময় তার মুখ এসিড লেগে ঝলসে গেছে। পরের দিন সুলতানার বাবা কারিমের দুই খালাকে নিয়ে তাদের বাড়িতে হাজির। সুলতানাকে তাদের সামনে সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকতে হোল। সুলতানার চেহারায় এসিডের ক্ষত খুজতে লাগলো তারা। তার কোনও অঙ্গ বিকল কি না সেটাও তারা পরীক্ষা করলো। সুলতানা এতো রেগে গিয়েছিল যে সে তার মুখ হা করে ওদের বললো যে সাহস থাকলে আমার দাঁত পরীক্ষা করে দেখ। সে ওদের খুব কাছে গিয়ে শব্দ করে কামড় দেয়ার ভঙ্গি করতে লাগলো। সে চিৎকার করে ওদেরকে তার পায়ের তলা দেখাতে লাগলো। আরবে এভাবে কাউকে পায়ের তলা দেখানো অত্যন্ত অপমানজনক। ভয়ে মহিলারা বাসা থেকে চলে গেলো।

তারা যাওয়ার পর সুলতানার বাবা সুলতানার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। শেষে মাথা নাড়তে নাড়তে হঠাৎ করে হেসে ফেললেন। সুলতানা ভেবেছিল তার বাবা হয় তাকে চড় মারবে অথবা কিছু কড়া কথা শোনাবে। তিনি হেসে উঠবেন এটা সে কল্পনাও করতে পারেনি। সুলতানাও বাবার সাথে সাথে হাসা শুরু করলো। সুলতানার বাবা চোখের পানি মুছতে মুছতে সোফায় বসে পরলেন। তিনি সুলতানার দিকে তাকালেন এবং বললেন “তুমি যখন ওদের কামড়াতে চেয়েছিলে তখন ওদের চেহারাটা খেয়াল করেছিলে? তোমাকে একটা ঘোড়ার মত লাগছিলো। মা, তুমি একটা বিস্ময়। তোমার হবু বর কারিমকে আমি ঈর্ষা করবো না কি তাকে বেচারা বলবো এটা আমার মাথায় ঢুকছে না। তার সাথে তোমার জীবন হবে তুফানের মত।“ বাবার মমতা পেয়ে সে মাটিতে বসে বাবার গায়ে হেলান দিল। বাবা যখন তার কাঁধ স্পর্শ করে হাসতে লাগলেন তখন সুলতানার মনে হচ্ছিল সে যদি এই মুহূর্তটাকে চিরদিনের জন্য ধরে রাখতে পারতো। বাবাকে দুর্বল পেয়ে সে জিজ্ঞেস করলো কারিমের সাথে সে বিয়ের আগে দেখা করতে পারবে কি না। বাবা কোন জবাব না দিয়ে সারাকেও তার পাশে বসতে বললেন। কিছুক্ষন নীরবে সময় কাটালো ওরা। কথা না বললেও রক্তের বন্ধন দিয়ে বাবার সাথে ওরা নীরবে ভাব বিনিময় করলো। মেয়েদের প্রতি বাবার এরকম ভালবাসা প্রকাশের দৃশ্য দেখে আলী বিস্ময়ে বোবা হয়ে গেলো।

পরের সপ্তায় কারিম ও তার বাবা সুলতানার বাবার অফিসে আসলো। কারিম বিনয়ের সাথে সুলতানার বাবাকে বলল যে সে সুলতানার সাথে দেখা করতে চায়। অবশ্যই প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বজায় রেখে। কারিমের খালাদের সাথে সুলতানার আচরণের কথা সে শুনেছে। শোনার পর সে নিশ্চিত হতে চাচ্ছে মেয়েটা কি আসলে বদ্ধপাগল না কি খুব তেজস্বী মেয়ে। অনেক আলোচনার পর সুলতানার বাবা তাদের প্রস্তাবে রাজি হলেন। এই খবর শুনে সুলতানা তো মহা খুশি। সুলতানা ও তার বোনদের কাছে ব্যাপারটা অকল্পনীয় মনে হোল। কারণ সৌদি সমাজে এরকম সাধারনত হয় না।

ঠিক হোল যে কারিম তার মাকে নিয়ে সুলতানাদের বাসায় চায়ের দাওয়াতে আসবে। কারিমের সাথে সুলতান যখন কথা বলবে তখন সেখানে তার বোন সারা, নুরা, দুই খালা এবং কারিমের মা উপস্থিত থাকবে। সুলতানা অধীর হয়ে সেই দিনের অপেক্ষাতে ছিল কারণ তার জানার ইচ্ছা কারিমকে তার পছন্দ হবে কি না। কিন্তু তার মনে একটা আশংকাও কাজ করছিল। সে সারার মত সুন্দরী না তাই কারিম যদি তাকে পছন্দ না করে। সুলতানা আয়নার সামনে বেশী সময় কাটাতে লাগলো। সে তার ছোট আকারের দেহ আর চুল নিয়ে চিন্তায় পরে গেলো। নিজের নাককে চেহারার তুলনায় ছোট মনে হতে লাগলো, চোখকে মনে হতে লাগলো দ্যুতিহীন। সে ভাবলো বিয়ের দিন পর্যন্ত চেহারা নেকাব দিয়ে ঢেকে রাখাই মনে হয় ভালো। বোন সারা তাকে শান্ত করার জন্য বলল যে ছেলেরা ছোট আকারের মেয়েদের পছন্দ করে যাদের নাক ছোট এবং চোখে থাকে হাসি। সারা আরও বলল যে পরিবারের সব মেয়ে সুলতানাকে একজন সুন্দরী মেয়ে হিসাবেই জানে। তবে রুপের অবহেলা না করে তাকে এখন রুপের যত্ন নিতে হবে।

কারিমের সাথে সাক্ষাতের দিন কোন পোশাক পরবে তা বাছাই করতে গিয়ে সুলতানার মনে হোল, তার সেরকম কোন পোশাক নাই। সুলতানা বাবাকে ব্যাপারটা জানাল। বাবাও মনে মনে খুশি হলেন এই ভেবে যে সুলতানার বিয়ের জন্য আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। তিনি কেনাকাটা করার জন্য বড় বোন নুরা ও তার স্বামীর সাথে সুলতানাকে তিনদিনের জন্য লন্ডন পাঠালেন। লন্ডন থেকে সুলতানা মনের মত পোশাক কিনলো আর বিউটি পার্লার থেকে চুলের স্টাইল পরিবর্তন করলো। সাক্ষাতের দিন সুলতানা লন্ডন থেকে কেনা পোশাক পরে, সাজগোজ করে তৈরি হয়ে থাকলো। প্রথম দর্শনেই সুলতানার কাছে মনে হোল কারিম যেন পৃথিবীর সবচেয়ে হ্যান্ডসাম ছেলে। কারিমের মুগ্ধ দৃষ্টিতে সুলতানার মনে হোল এই পৃথিবীতে তার চেয়ে সুন্দরী কেউ নেই। পরিচয় পর্বের কয়েক মিনিট পরেই সুলতানা বুঝে গেলো কারিমের পক্ষ থেকে এই বিয়ে পাক্কা। সুলতানা এই প্রথম খেয়াল করলো যে তার মধ্যে একটা বিশেষ ক্ষমতা আছে যে ক্ষমতার দ্বারা একটা মেয়ে নিজের মনোবাসনা পূরণের জন্য নিপুনভাবে পরিস্থিতি নিজের অনুকুলে আনতে পারে। সে অনুভব করলো যে পুরুষদের প্রলুব্ধ করার একটা জন্মগত ক্ষমতা তার মধ্যে আছে। সে ঠোট আর চোখের খেলা দেখিয়ে কারিমকে আকৃষ্ট করতে সমর্থ হোল। কারিমের মা সুলতানার এই ছেলে পটানো আচরণ অনেক কষ্টে সহ্য করছিলেন। নুরা, সারা আর সুলতানার খালারাও হতাশ দৃষ্টিতে একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছিলেন। কিন্তু কারিমেকে সম্মোহিত করতে পেরে সুলতানা এক মুহূর্তের জন্যও ওদের পরওয়া করলো না ।

বিদায়ের সময় কারিম জানতে চাইল সে বিয়ের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার ব্যাপারে সুলতানার সাথে একবার ফোনে কথা বলতে পারবে কি না। সুলতানা খালাদের সুযোগ না দিয়েই বলে ফেললো “ অবশ্যই, রাত নয়টার পর যে কোনো সময় ফোন করা যেতে পারে”। যাওয়ার সময় কারিমের বিদায় সম্ভাষণের জবাবে সুলতানা কারিমকে একটা প্রতিশ্রুতি মিশ্রিত স্নিগ্ধ হাসি উপহার দিল। ওরা যাওয়ার পরে নুরা, সারা আর খালারা যখন সুলতানাকে তার অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ সম্পর্কে বলছিলেন তখন সুলতানা তা হেসে উড়িয়ে দিয়ে গুনগুন করে একটা আরবি প্রেমের গান গাইতে লাগলো। তারা বললো যে কারিমের মা নিশ্চিতভাবে এই বিয়ে ভাঙ্গার ব্যবস্থা করবেন কারণ সুলতানা সত্যি সত্যিই ঠোট আর চোখের সাহায্যে কারিমকে প্রলুব্ধ করেছে। সুলতানা ওদের বললো যে তোমাদের হিংসা হচ্ছে কারণ আমি বিয়ের আগে আমার হবু বরকে দেখতে পেরেছি। সে তার খালাদের জিভ দিয়ে ভেংচি কেটে বললো যে তরুণ-তরুণীদের হৃদয়ের স্পন্দন বোঝার বয়স তোমাদের পার হয়ে গেছে। তারা সুলতানার সাহস দেখে আহত মনে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো। সুলতানা নিজের বাথরুমে গিয়ে গলা ছেড়ে গান গাইতে লাগলো।

পরে সে নিজের আচরণ নিয়ে চিন্তা করলো। তার মনে হোল সে যদি কারিমকে পছন্দ না করতো সেই ক্ষেত্রে সে এমন কিছু করতো যেন কারিম তাকে অপছন্দ করে। সুলতানা কারিমকে পছন্দ করেছিল তাই সে কারিমকে প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছিল। সে বুঝেশুনেই এমন আচরণ করেছিল। কারিমকে তার পছন্দ না হলে সে বিয়ে বাতিলের চেষ্টা করতো। সেই ক্ষেত্রে সে ওদের সামনে অশোভনভাবে খাবার খেতো, কারিমের মায়ের মুখের উপর ঢেকুর তুলত আর কারিমের গায়ে গরম চা ফেলে দিত। সৌভাগ্যক্রমে এই সাক্ষাতের পরে কারিমের পরিবার যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। কারণ তাদের ধারণা ছিল যে সুলতানা হয়তো কারিমকে পছন্দ করবে না। সুলতানাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো কারণ তাকে একটা বয়স্ক লোককে বিয়ে করতে হবে না এবং কারিম ও তার জীবন প্রেমময় হবে। ফুরফুরে মনে সে তার বাসার কাজের মেয়ে মারসিকে নিজের ছয়টি সাজসজ্জার উপকরণ দিয়ে দিল আর বললো যে মারসিকে সাথে করে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেতে পারবে কি না সেটা সে তার বাবার কাছ থেকে জেনে নিবে।

এক রাতে কারিম সুলতানাকে ফোন করলো। সে হাসতে হাসতে সুলতানাকে বললো যে তার মা সুলতানার সাহস দেখে রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলেছে যে এই মেয়ের কারণে কারিমের হৃদরোগ হবে এবং পরিনামে পরিবারে একটা মহা বিপদ আসবে। নিজের সদ্য আবিষ্কৃত ছলাকলা গুনের কথা মনে করে সুলতানা কপট রাগ দেখিয়ে বললো যে সেই ক্ষেত্রে তার উচিত তার মায়ের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা। কারিম ফিশ ফিশ করে বললো যে সুলতানা তার স্বপ্নের প্রেমিকা যে কি না রাজপরিবারের মেয়ে, বুদ্ধিমতি এবং ভালো মেজাজের। সে বলল যে তার মা তার জন্য যে মেয়েগুলিকে বিভিন্ন সময় পছন্দ করেছিল তাদেরকে সে বিয়ে করেনি। অনেক চেষ্টার পরও সে রাজি হয়নি। সুলতানার মত একটা তেজি মেয়েকে সে পেয়েছে তাই অন্য কোন মেয়েকে তার ভালো লাগবে না। সে বলল যে সুলতানার সৌন্দর্যে তার নয়ন জুড়িয়েছে। সে হঠাৎ একটা অদ্ভুদ বিষয়ে প্রশ্ন করলো। কারিম সুলতানার কাছে জানতে চাইল যে তার খৎনা হয়েছে কি না। সুলতানা জবাব দিল যে এর জবাব সে তার বাবার কাছ থেকে জেনে বলতে পারবে। কারিম বললো যে বাবাকে জিজ্ঞেস করার কোন দরকার নাই কারণ যদি ব্যাপারটা তোমার মনে না থাকে তার মানে তোমার খৎনা হয় নাই।

পরের দিন সুলতানা মুখ ফসকে খাবার টেবিলে তার ও তার বোনদের খৎনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে ফেলে। সবাই একটু বিব্রত হয় এবং ব্যাপারটা এড়িয়ে যায়। বড় বোন নুরা পরের দিন তাদের বাড়িতে এসে এই ব্যাপারে সুলতানাকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে। সুলতানাকে সে জিজ্ঞেস করে যে স্বামী- স্ত্রী বাসর রাতে কি করে তা সে জানে কি না। সুলতানা বলে যে সে এগুলি জেনেছে মহিলাদের পার্টি থেকে। সৌদি আরবে শুক্রবার ছাড়া রাজপরিবারের সদস্যদের বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই মেয়েদের পার্টি হয়। সেখানে মহিলারা তাদের বাসর রাতসহ যৌন জীবনের আলাপ করে কোন রাখঢাক না করে। মেয়েদের খৎনার ব্যাপারে নুরা বলে যে সৌদি আরবের প্রথম বাদশাহ খৎনা নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু গোত্রের লোক গোপনে খৎনা করাতো। সুলতানার মা এই রকম একটা গোত্রের ছিল। ফলে তিনি নিজ উদ্যোগে তার প্রথম ৪ মেয়েকে খৎনা করিয়েছিলেন। ( নুরার ও তার আরেক বোনের খৎনার বিস্তারিত বর্ণনা ছিল। কিন্তু আমার কাছে এগুলিকে ভয়ংকর বর্ণনা মনে হয়েছে তাই লিখতে ইচ্ছে করছে না – সাড়ে চুয়াত্তর )।

রাজকীয় জাঁকজমকের সাথে সুলতানা আর কারিমের বিয়ে হয়ে গেলো। ওরা দীর্ঘ ১০ সপ্তাহর মধুচন্দ্রিমায় মিশর, প্যারিস, নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, হাওয়াই ভ্রমণের জন্য দেশ ত্যাগ করলো। তবে মজার ব্যাপার হোল ঐ সময় ওরা নিজেরা নিজেরা ঠিক করলো যে যতদিন তারা একে অন্যকে ভালোভাবে না চিনতে পারবে ততদিন তারা পৃথক রুমে থাকবে। তবে সুখবর হোল যে ৪ দিনের মাথায় সুলতানা তার স্বামী কারিমকে নিজের বিছানায় ডেকে নিলো। সে কারিমের কানে কানে বলল, সে রিয়াদের সেইসব বিরল স্ত্রীদের মত হতে চায় যারা স্বামীর সাথে ফুলশয্যা উপভোগ করে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৬
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×