somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন একরামের এক বিগত ছাতি!

০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই দিন যাবত একরাম হত্যাকান্ডের প্রকাশিত অডিও নিয়ে মানুষ হতাশামূলক স্টাটাস প্রসব করছেন। বিশ্বাস করুন আমি একবার মাত্র অডিওটা শুনেছি। দ্বিতীয়বার শুনারমত ধৈর্য আমার ছিলোনা। কেউ হয়ত এমন অডিও দ্বিতীয় বার শুনতে চাইবেনা। কখনো না।
অডিওটা শুনে অনেকের ভিতর নানা প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এমন কিছু প্রতিক্রিয়া হয়েছে যা সবার সাথে এক বিন্দুতে মিলে যায়। কিছু প্রতিক্রিয়া:

একরামের দিক থেকে:
(ক) একরাম জানত নিশ্চিত সে ক্রুশ (ক্রস)! ফায়ায়ে মারা যাবে।
(খ) একজন বাবা হিসেবে সন্তানদের কে মৃত্যুর আগ মহুর্ত পর্যন্ত আগলে রাখতে চেয়েছেন। সন্তানরা যাতে কষ্ট না পান সেজন্য মৃত্যুর কথা অতি কষ্টে গোপন রেখেছেন! তিনি কাঁদো কাঁদো গলায় কথা বলেছেন। তার গলা ধরে.. আসছিলো।
আকরামের ভাগ্য ভালো... পরিবারের সাথে শেষ বারের মত কথা বলতে পেরেছেন! (এমন কথা উচ্চারণ করার জন্য মাফ চেয়ে নিচ্ছি)। কিন্তু এমন হাজারো একরাম ক্রস ফায়ায়ে মরেছেন যারা পরিবারের সাথে শেষ বারের মত কথা বলতে পারেনি! সেদিক দিয়ে একরাম ভাগ্যমান!

(খ) সে হয়ত জানত বাসার ফোনে অটো কল রেকডিং হয়। সেজন্য লাইন বিছিন্ন করেনি।
অথবা, সে নিশ্চিত মৃত্যুজনিত চাপের কারণে ফোনের লাইন বিচ্ছিন্ন করতে ভুলে গেছেন।
অথবা, ঘাতক বাহিনী চেয়েছে তার মৃত্যুটা যেন পরিবার কে সাক্ষী রেখে করা হয়।

আকরামের পরিবার দিক থেকে:
অফ নো....... আমারো দুইটি মেয়ে আছে........। পরিবার আছে......। এমন অনুভূতি বলার ভাষা আমার জানা নেই। সব কিছু বলার ভাষা থাকতে নেই। এদেশে অনেকে ক্রস ফায়ারে নিহত হয়েছে, তাদের পরিবার, সন্তানদের দিকে শুধু একটিবার নিজের পরিবার মনে করে তাকালেই সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।

র‍্যাব বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিক থেকে:
(ক) ক্লাইম্যাক্স ঠিক মতই চলছিলো। শিকার ধরতে কষ্ট হয়নি। শিকার এখন খাঁচায় বন্ধি। শিকার নিয়ে দুই চারজন লুতুপুতু খেলছিলো। শিকার ধরে লুতুপুতু খেলা তাদের কাছে মোয়া ভাত। শিকার ধরে লুতুপুতু খেলা কারো কারো সখ।
তাদের মধ্যে কেউ কেউ গেডির রগ দেখে নিচ্ছে। রগ যদি ফুলে উঠে তাহলে শিকার কে কষ্ট দিয়ে মারার দরকার নেই, জাষ্ট ফায়ারিং - এই নীতি মেনে চলেন নতুন মেজর স্যার।। আজকে শিকারের রগ একটা দেখা যাচ্ছে, আরেকটা লাফাচ্ছে । একজন সদস্য সে রগে বেয়ানট স্পর্শ করে রক্তের গরম মাপার চেষ্টা করছেন। শিকারের ভিতর থেকে জোড়ে জোড়ে বাতাস বের হচ্ছে। অপর একজন মন্তব্য করল, সে মনে হয় এম্নিতেই বেশি কষ্ট পাচ্ছে। কি দরকার এতো কষ্ট পাওয়ার! আল্লাহ্‌র মাল আল্লাহর কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি -এই যা। পাশে অপর জনের হাত নিশপিশ করছে, তার হাত বারবার টিগারে চলে যাচ্ছে। কাছে বসা একজন বুকে হাত দিয়ে ছাতি মাপছেন। তার হাতে চায়না অটোমেটিক রাইফেল। এই রাইফেল দিয়ে বুকের ছাতি ভেদ করা কোন ব্যাপারই না। তিনি কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেলেন, আগেকার বাহিনীদের কতই না কষ্ট করতে হতো। তাদের থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে কাজ সাড়তে হতো! থ্রি নট থ্রি কোন রাইফেল হলো? আজকাল চায়না দিয়ে কাম সাড়া কত সোজা! সরকার যদি রাশিয়ান তৈরী ওরিজিনাল একে ৪৭ দিতো তাহলে কাজে আরো গতি বাড়তো।
যিনি ট্রিগারে হাত দিয়েছেন তার আর দেরি সহ্য হচ্ছেনা। আজকের স্পটটা কেন যে দূরে পড়ল! এর আগে সে অনেক ক্রস ফায়ারে অংশ গ্রহণ করলেও কাউকে সরাসরি ফায়ারিং করেনি। আজকে মেজর স্যার কে বলে সে দায়িত্বটা নিয়েছে। কে জানে কাজটা ঠিক মত করতে পারলে প্রমোশন হবে কিনা? এর আগে এই লাইনে এসে অনেকের প্রমোশন হয়েছে!

খাঁচা সহ শিকার গাড়ির ভিতর..... গাড়ি চলছে। শিকারের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে, তার এক ঢোক পানি পেলে ঢোকের নড়াচড়া হয়ত কমত।। কিছুক্ষণ পর পাশে বসা থাকা একজন আরেকজন কে ফিস ফিস করে বললো, কাছাকাছি আইসা পড়ছি, রিহার্সেল মনে আছে তো? অপর জন উত্তর দিলো, এই লাইনে দীর্ঘ দিন যাবৎ আছি। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর নাটকের সব দৃশ্য, সংলাপ নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। তুই এখন চুপ কর। স্যার আবহ সংগীত তৈরী করার জন্য ইশারা দিয়েছেন।

এমন সময় একরামের মেয়ের ফোন, হ্যালো.... বাবা......।.............। না আর কল্পণা করতে পারছিনা। শুধু বলব, অনিচ্ছাসত্ত্বেও অডিওটা ভালো করে শুনে নিবেন।

হয়ত দু'এক দিন পর একরাম ধামাচাপা পড়ে যাবে! নতুন কোন একরাম বা নুরু'র মৃত্যু আমাদের মনের ভিতর দাগ ফেলবে! কথা হলো.......... হোয়াট নেক্সট?




সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ৩:৪৪
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×