বৈরুতকে একসময় প্রাচ্যের প্যারিস বলা হত । ৪০এর দশকে আমাদের এই অঞ্চলের ছেলেরা বৈরুতের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেত । ওখানে চিকিৎসা এবং হাসপাতাল ব্যাবস্থা খুব উন্নত ছিল । জীবনযাত্রার মান পাশের অনেক দেশ থেকে এগিয়ে ছিল লেবানিজরা । ইসরাইলিদের বসতি স্থাপনের সময় পরিস্থিতি বদলে যায় । বিতাড়িত ফিলিস্তিনিরা লেবাননে ঢুকে পড়ে এবং এখনও তারা ক্যাম্প জীবন যাপন করছে । সিরিয়ার শরণার্থীর ঢেউ আরেক ধাক্কা দিল লেবাননকে । দেশটি এখন রিফিউজিদের হাতে । একদিকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধা আরেকদিকে হিজবোল্লাহ , হামাস ও অন্যদিকে ক্রমশ দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ত্রাসে লেবানিজরা নিজ দেশে রিফিউজির মতো। এরই মধ্যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো ৫ তারিখের ভয়াবহ বিস্ফোরণ । পুরো বন্দর এলাকা গুড়িয়ে দিয়েছে ওই বিস্ফোরণ । আসুন দেখি অ্যামেনিয়াম নাইট্রেট কি যাতে এত মারাত্মক ক্ষতি হয় জনজীবন ও সম্পদের ।
অ্যামেনিয়াম নাইট্রেট স্ফটিকের মত সাদা কঠিন পদার্থ যা কৃষিকাজে নাইট্রোজেনের উৎস হিসাবে সারে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে এই রাসায়নিক জ্বালানি তেলের সাথে মিশিয়ে বিস্ফোরক তৈরি করা হয়, যা ব্যবহার করা হয় খনির কাজে এবং নির্মাণ শিল্পে। জঙ্গীদের অতীতে এই রাসায়নিক ব্যবহার করে বোমা বানানোর নজিরও আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট তুলনামূলকভাবে নিরাপদ একটা রাসায়নিক যদি তা সঠিকভাবে নিরাপদে গুদামজাত করা হয়। অবশ্য প্রচুর পরিমাণে এই রাসায়নিক দীর্ঘদিন মজুত রাখলে তা নষ্ট হতে শুরু করে।
কয়েক বছর আগে চীনের থিয়ানজিনের বন্দরের কাছেই গুদামে একই জিনিসের বিস্ফোরণ ঘটে কয়েক শ’ মানুষ মারা গেছিলো । চেন্নাই এয়ারপোর্টের পাশেই কিছু মজুদ আছে যা এখন ঘিরে রাখা হয়েছে কোন বিপদ যাতে না ঘটে । লেবানিজ সরকার এতই ঢিলেঢালা যে এই বিপজ্জনক জিনিস যা ২০১৩ সাল থেকে ওখানে পড়ে আছে তার কোন সুরাহা তারা করেনি । বেশ কিছু ছবি পোস্ট করলাম বন্ধুদের জন্য ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০০