somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপারপাওয়ারের কেচ্ছা

০৬ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমেরিকার পরবর্তী ‘সুপারপাওয়ার’ কে হতে পারে?
চায়না, রাশিয়া, ইন্ডিয়া নাকি অন্য কোন দেশ?
এমন ধরণের প্রশ্ন ঘুরে ফিরে প্রায়শঃই ফেসবুকে দেখি; সংগে দেখি বিভিন্ন মতামত, গবেষনা, গল্প-কথা। মহাত্ম গান্ধি থেকে শুরু করে অনেকেই নাকি ক্রমান্বয়ে চায়না এবং এরপর ইন্ডিয়াকে সিরিয়াল দিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ আমেরিকা এক সময় তার ক্ষমতা হারাবে এবং সেই সুপারপাওয়া এর স্থানটা দখল করবে চায়না।
অর্থাৎ, নেক্সট সুপারপাওয়া হতে যাচ্ছে চায়না বা পিআরসি। পিআরসি বলার কারণটা হলো স্পেসিফাই করে দেয়া; কারণ এই বিশ্বে বর্তমানে চায়না নামে একটি নয় বরং দু’দুটি দেশ রয়েছে। একটি গণপ্রজাতন্ত্রী চায়না অপরটি প্রজাতন্ত্রী চায়না বা আরওসি।
গণপ্রজাতন্ত্রী চায়না বা মেইনল্যান্ড চায়নাকে ইংরেজীতে বলে পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না বা ‘পিআরসি’ এবং অপরটি মানে তাইওয়ান বা রিপাবলিক অব চায়নাকে বলা হয় ‘আরওসি’।
আমরা কথা বলবো পিআরসি বা মেইনল্যান্ড চায়না নিয়ে।
চায়নার বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৪৩ কোটি এবং তাদের বার্ষিক মাথাপিছু (নমিনাল) আয় ১০,৮৭২ ডলার, এবং টোটাল অর্থনীতির সাইজ প্রায় ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার। অপরদিকে আমেরিকার বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৩৩ কোটি এবং তাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় ৬৭,৪২৬ ডলার, এবং টোটাল অর্থনীতির সাইজ প্রায় ২২ ট্রিলিয়ন ডলার। প্রকৃতপক্ষে বার্ষিক মাথাপিছু আয়ের হিসাবে একটা দেশের অর্থনীতি বা দেশটির আর্থিক সক্ষমতা কিছুটা উপলব্ধি করা যায়; সেই হিসাবে একজন আমেরিকানের বার্ষিক ৬৭ হাজার ডলারের বিপরীতে একজন চাইনিজের বার্ষিক আয় ১০ হাজার ডলার বা প্রায় ৭ ভাগের এক ভাগ।
আমি সঠিক জানি না চায়না যতদিনে ৬৭ হাজার ডলার বার্ষিক আয়ে পৌছবে ততদিনে আমেরিকান বার্ষিক আয় কয়শ হাজার ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে! এখানে আর ৩৩ কোটি মানুষের বিপরীতে ১৪৩ কোটি মানুষের তুলনা না আনলাম।
একটা সময় ছিল যখন প্রতি ৩ মাসে আমি অন্তত ২ বার চায়না ভিজিট করতাম; বেইজিং স্যাংহাই, শেনজিন, কুনমিং, চেংদু, ইও, বাউডিং, হুনজুসহ কমবেশী আরও গোটা ৩০টি শহর আমি ভিজিট করেছি। চায়না অনেক উন্নতি করেছে, এতে কোনই সন্দেহ নেই। সেই সময়টাতে আমি নিজেও ভাবতাম চায়না একদিন হয়তো সুপারপাওয়ার হবে।
কিন্তু আমেরিকায় আসার বছর খানেকের মধ্যেই আমার ধরণাগুলি তুরুপের তাসের মতোই উবে গেল যেন। আসলে ‘সুপারপাওয়ার’ শব্দটি অত্যন্ত ভারী একটি শব্দ। চায়নাতে যেসব ইনফ্রাসট্রাকচার আমি দেখেছি বা চায়নার টাকার যে বাহাদুরী আমি উপলব্ধি করে এসেছিলাম- সেগুলো আমেরিকার পাওয়ারে কাছে স্রেফ খেলনা। চায়না আরও ১ হাজার বছর ধরে তাদের বর্তমান ধারা বজায় রাখলেও আমেরিকার ধারে-কাছেও ভিড়তে পারবে না; সুপারপাওয়ার হওয়া অনেক দূরের হিসেব।
দেখুন, আমেরিকার কিন্তু কোন গণপ্রডাক্ট নেই যেটা বিক্রি করে আমেরিকাকে চলতে হয়; যেমন রয়েছে চায়নার; তাদের ১৫০ কোটি মানুষ প্রডাক্ট তৈরীতে ব্যস্ত; সেই প্রডাক্টস তৈরী করে তারা টাকা ইনকাম করে। কিন্তু আমেরিকা সেভাবে কোন প্রডাক্ট তৈরীও করে না। উপরোন্ত আমেরিকার নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার্য দ্রব্যাদির প্রায় ৭০%ই ইমপোর্ট করা হয় চায়না থেকে।
তাহলে, আমেরিকা করেটা কি?
এখানেই মজার প্রশ্ন এবং তার উত্তর লুকিয়ে রয়েছে।
উইন্ডোজ একটি সফটওয়্যার যা আসলে একটি অপারেটিং সিষ্টেম। এই সিষ্টেমটি তৈরী করেছেন বিল গেটস। যা বর্তমান পৃথিবীর ৯০% কমপিউটারে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হয়; ইভেন চাইনিজদের ব্যবহৃত কমপিউটারের জন্যও। আর বাদবাকী ১০% ব্যবহার করে আপেল ওএস সেটাও আমেরিকান পন্য। আপনার হাতের ফোনটি হোক সেটা আইফোন বা এন্ডরয়েড- সবই আমেরিকানদের তৈরী। কোরিয়ান স্যামসংগ কোম্পানীর আমেরিকা অফিস থেকে স্যাংমসঙ রিলিজ হয়। এন্ডরয়েড গুগলের প্রডাক্ট।
এই যে আমরা আজ সোসাল মিডিয়া ব্যবহার করছি, ইকমার্স করছি তার সবই আমেরিকায় তৈরী হওয়া। ইন্টারনেটসহ আধুনিক যা কিছু প্রযুক্তি তার সবই আমেরিকানদের মাথা থেকে বের হয়।
আমেরিকার যে পরিমান খালি জায়গা রয়েছে সেখানে যদি ধান চাষ করা হয়, সেই ধান বিক্রি করেই ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার রাজস্ব আসতে পারে। আমেরিকায় যে পরিমান খনিজ তেল আর গ্যাস রয়েছে তার যদি তারা তুলে বিক্রি করে- তাহলে তেলের দাম পানির দামের সমান হয়ে যাবে বাদবাকী বিশ্বে। বোয়িং এর বিমান বা স্যাটেলাইন এর প্রসংগ না হয় না ই আনলাম এখানে।
আসলে আমেরিকা চলে শুধুমাত্র তাদের মাথার বুদ্ধি বিক্রি করে। আর মাথায় যদি বুদ্ধি থাকে তাহলে চলতে টাকা লাগে না। টাকা এমনিতেই চলে আসে। আমেরিকার টাকা এমনিতেই আসে। ধরেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম গরীব একটা দেশ- এই দেশটিও নিউ ইয়র্ক ফেডে ৩৩ বিলিয়ন ডলার জমা করে রেখেছে। আর বাদবাকী বিশ্ব? ইওরোপ, কানাডা, বৃটেন, অষ্ট্রেলিয়া, জাপান, কোরিয়া, সিংগাপুর, রাশিয়া, চায়না, হংকং, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ইন্ডিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য এবং বাদবাকী সব দেশেরই একটা বড় সাইজের টাকা ইউএস ডলারে নিউ ইয়র্ক ফেডে জমা রয়েছে; রয়েছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিংন টন গোল্ডবারও ওই নিউ ইয়র্ক ফেডের কাছেই।
আমেরিকার শক্তি, ক্ষমতা, টাকা এসব সম্পর্কে আমরা ধারণাও করতে পারি না। এক আমেরিকার ডলারের ভয়ে, পুরো পৃথিবী অন্যায্য জেনেও ইরানের সংগে ব্যবসা করার স্পর্ধা দেখায় না, আমেরিকা রাগ হলে তারা দেওলিয়া হয়ে যাবে এই ভয়ে।
সামরিক শক্তি যদি বিবেচনায় নিই, তাহলে পরিসংখ্যান ঘেটে এটা বলা যেতেই পারে যে, ইউএস নেভির যে সক্ষমতা, বাকি সব দেশের সক্ষমতা এক করলে তার এক চতুর্থাংশ হবে। ইউএস এয়ার ফোর্সের সক্ষমতা তো কিংবদন্তী পর্যায়ের। আর্মিও সক্ষমতায় যোজন এগিয়ে।
সুপারপাওয়ার সম্পর্কে কয়েকটি কথা না বললেই না।
প্রথম কথাটি হচ্ছে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ যা ছিল প্রকৃত পক্ষে আমেরিকাকে সুপারপাওয়া বানিয়ে দেয়া। তখন সুপারপাওয়ারে স্বদাবীদার ছিলেন এডলফ হিটালারের জার্মানী। আর তাদের প্রতিদ্বন্দি দেশগুলো ছিল রাশিয়া, বৃটিন, ফ্রান্স, স্পেন ইত্যাদি। আমেরিকা যুদ্ধের কোন পক্ষ ছিল না তবে ‘মনে মনে’ আমেরিকা মিত্রপক্ষ বা রাশিয়া, বৃটিন, ফ্রান্স, স্পেন দেশগুলোকে সমর্থন করতো।
জার্মানীর পক্ষে ছিল জাপান এবং পদানত ইটালী।
যুদ্ধের শুরুতে জার্মানী ছিল অপ্রতিরোদ্ধপ্রায়। তারা ইওরোপ দখলে নিতে শুরু করে, রাশিয়াতে আক্রমণ করে; ওদিকে জাপানও দক্ষিন ও দক্ষিন পূর্ব এশিয়ান কয়েকটি অঞ্চলসহ কোরিয়া, চায়না থেকে শুরু করে আমাদের ঘরের কাছে মিয়ানমারের কিছু অংশ পর্যন্ত দখল করে ফেলে। বৃটিশ সাম্রাজ্যের অনেকটা ছিল তাদের দখলিকৃত অঞ্চলে।
দু’টো বিষয় ঘটে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে।
ইওরোপের দেশগুলোর হাতে বিশেষত বৃটেন, ফ্রান্স, স্পেন এসব দেশের হাতে তখন সারা পৃথিবীতে তাদের উপনিবেশগুলো থেকে লুটপাট ও ব্যবসা করে আনা ট্রিলিয়ন টন সোনা ছিল রিজার্ভ ব্যাংকগুলোর কাছে; তখনও অবধি এক দেশের সংগে অন্য দেশের লেনদেনে মুলত স্বর্ণকেই ব্যবহার করা হতো। মিত্রশক্তি ভয় পেয়ে যায় যে জার্মানী যদি তাদের দেশগুলি দখল করে ফেলে তাহলে তো এইসব স্বর্ণ জার্মানীর হাতে চলে যাবে; তারা শূণ্য হয়ে যাবে।
তাই তারা চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে তাদের সংগ্রহিত সব স্বর্ণ তারা নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে রাখবে এবং যুদ্ধ শেষ হলে বা সুবিধা মতো সময়ে সেসব স্বর্ণগুলো সেই ‘নিরাপদ স্থান’ থেকে ফেরত আনবে। তাদের সকলেই ধারণা ছিল ঐ ‘নিরাপদ স্থান’টা হতে পারে আটলান্টিক এর ওপাড়ে ‘আমেরিকা’। অনেকটা শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেবার মতোই।
আমেরিকাকে প্রস্তাব দিলে সংগে সংগে সেই প্রস্তাবে রাজী হয়ে যায় আমেরিকা এবং তাদের কাছে স্বর্ণ জিম্মা দিতে বলে। ইওরোপিয়ান দেশগুলি তাদের যাবতীয় স্বর্ণভান্ডার বড় বড় জাহাজে করে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকার হাতে পৌছে দেয়। এবং আমেরিকা তাদেরকে প্রাপ্ত স্বর্ণের হিসাব বুঝে নিয়ে তার বিনিময়ে ‘রিসিপ্ট’ ধরিয়ে দেয়।
এবং, আমেরিকা তখনই সবচে মোক্ষম চালটি খেলে।
তারা ইওরোপকে বলে দেয় যে তোমরা স্বর্ণ ফেরত না নিয়ে তার পরিবর্তে আমাদের থেকে ‘রিসিপ্ট’ নিয়ে তা দিয়ে বৈশ্বিক লেনদেন করো। তোমরা যেহেতু আমাদের বিশ্বাস করেছোই সেহেতু ঐ রিসিপ্টকেই আন্তর্জাতিক লেনদেন হিসাবে চালু করো।
আর আমেরিকার দেয়া সেই রিসিপ্টটিই ছিল ‘আমেরিকান ডলার’।
পরিণতিতে আজ পুরো পৃথিবী আমেরিকান ডলারের বাজারে প্রবেশ করে। এবং স্বর্ণের জায়গাটা একতরফা দখল করে নেয় মার্কিন ডলার।
যাই হোক, দ্বিতীয় খেলাটি আরও চমৎকার ছিল। জাপান যুদ্ধে একটা ছোট ভুল করে, তারা আমেরিকান দ্বীপ-ষ্টেট হাওয়াই (যা মুলত আমেরিকান মেইনল্যান্ড ও জাপানের মাঝামাঝি প্যাসিফিক অঞ্চলে অবস্থিত) পার্ল হারবারে বোমা হামলা চালায়। অবশ্য জাপানের করা সেই ভুলের আগে বৃটেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যখন প্রায় পরাজিত হতে যাচ্ছিল তখন তারা বাধ্য হয়ে আবার আমেরিকার কাছে আরেক দরখাস্ত নিয়ে যায়; তারা আমেরিকাকে এই যুদ্ধে ‘হেল্প’ করার অনুরোধ জানায়। বাস্তবিক অর্থে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে আমেরিকা বৈশ্বিক রাজনীতিতে বা আন্তর্জাতিক পরিসরে সেভাবে উল্লেখ করার মতো শক্তি কখনওই প্রদর্শন করেনি বা বাইরের বিশ্ব বুঝতেই পারেনি যে আমেরিকা ভেতরে ভেতরে নিজেদের প্রস্তুত করে ফেলেছে ‘সুপারপাওয়ার’ হতে।
আমেরিকা যুদ্ধে জড়াতে (বৃটেন বা মিত্র শক্তির পক্ষে) রাজী হয় কিন্তু একটা মজার শর্ত জুড়ে দেয়; আমেরিকার শর্তটি ছিল পুরো পৃথিবী জুড়ে বৃটেনের যে অসংখ্য উপনিবেশ (ভারতসহ) রয়েছে সেখান থেকে বৃটেনকে যুদ্ধ শেষে পাততারী গুটিয়ে ফিরে আসতে হবে এবং সবগুলো উপনিবেশকে স্বাধীনতা দিয়ে দিতে হবে। এবং বৃটেন নাকে খত দিয়ে আমেরিকার এই কথায়ও রাজী হয়ে যায়।
এবার আর আমেরিকার যুদ্ধে জড়াতে কোন আপত্তি থাকে না।
আমেরিকা যুদ্ধে জড়ায় এবং যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায়। আমেরিকান বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনী পুরো পৃথিবী জুড়ে তাদের শক্তি প্রদর্শন করে বিশ্বকে সম্পূর্ণ তাক লাগিয়ে দেয়। জাপানের বোকামীর জন্য খেতে হয় দু’দুটো এটম বোমা। ধ্বংশ হয়ে যায় হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরদু’টো। দখল হয়ে যায় জাপানের মালিকানাধিন অসংখ্য অঞ্চল।
ওদিকে বৈশ্বিক ক্ষমতার সিড়ি থেকে নীচে পরে যায় বৃটেন; জন্ম নেয় স্বাধীন ভারত-পাকিস্তানসহ অসংখ্য স্বাধীন দেশ।
আত্মসমর্পন করে জার্মানী ও জাপান। আমেরিকা জার্মানী ও জাপানের ভেতরেই তৈরী করে বসে নিজেদের মিলেটারী বেইস। জাপান জার্মানীসহ এই পৃথিবীতে গুনে গুনে ৭০টি দেশে আমেরিকা তৈরী করে তাদের স্থায়ী মিলেটারী বেইস। আর সর্বমোট ১৫০টি দেশে তারা তৈরী করে তাদের অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্প। মিত্র পক্ষকে হাতে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করে জাতিসংঘ; মুলত পৃথিবীর যাবতীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে আমেরিকা।
এতটা বুদ্ধি কি ১৫০ কোটি চাইনিজের সবগুলো মগজ জোড়া দিয়েও বের করতে পারবে চায়না?
আরও একটা কথা বলি, আমেরিকা তার দু’টি মহাদেশের একক ক্ষমতাধর দেশ। উত্তর বা দক্ষিন আমিরেকার বলতে গেলে সবগুলি দেশই আমেরিকার কথায় উঠ-বস করে। আমেরিকাস দেশগুলো অনেকেই আজ আমেরিকান ডলার ব্যবহার করছে নিজেদের মুদ্রা বিলুপ্ত করে। শুধুমাত্র উত্তর-দক্ষিন আমেরিকা নয়, প্যাসিফিক রিজিয়নেও বেশীরভাগ দ্বীপরাষ্টও আজ আমেরিকান ডলার ব্যবহার করে থাকে। আর চায়না তাদের নিজেদের দক্ষিন চীন অঞ্চলটুকুই ঠিক মতো রক্ষা করতে পারছে না- এতটাই অসহায় তারা।
তার উপর আমেরিকা পুরো পৃথিবী চষে সেরা মেধাবী মানুষদের, সেই সংগে দুর্দান্ত সাহসী ও কর্মঠ এবং সৌভাগীবানদেরও নিজের দেশে স্থান করে দেয়, বিধায় এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মেধাবীরা আমেরিকান ভুখন্ডেই বসবাস করে সমৃদ্ধ করে চলছে আমেরিকাকে। বিশ্বের দ্বিতীয় কোন দেশ এভাবে মেধা সংগ্রহ করতে পারছে না বা করছে না। চায়নাতে শুধুমাত্র চাইনিজরাই বসবাস করার সুযোগ পায়- বিদেশীদের সেখানে কোন কালেও নাগরিকত্ব দেয়া হয় না; অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপ বা রাশিয়া কিছু সুবিধা দিলেও তা পর্যাপ্ত নয় এবং আমেরিকার সংগে তারা কোন তালই মেলাতে পারে না। তাছাড়া আমেরিকার মতো সামাজিক-অর্থনৈতিক সম-সুবিধা, মানবতা পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন দেশে অনুপস্থিত। আর তার বিনিময় বা ফলাফল তো সেই জার্মানী থেকে আলবার্ট আইনসটাইন থেকে শুরু করে আজকের ইলন মাস্ক পর্যন্ত দেখাই যাচ্ছে। এই পৃথিবীতে কোন দেশটা পেরেছে আইনসটাইন বা ইলন মাস্কদের ধরে রাখতে? এক আমেরিকাই।
আর, আইনসটাইন বা ইলন মাস্কদের ছাড়িয়ে যাবে- এমন মেধা এই পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা আছে না কি? না হবার সুযোগ রয়েছে?
যাই হোক, ভারতের কথা বলি। ভারত বড়জোর বাংলাদেশ পাকিস্তানের সংগে প্রতিযোগীতা চালিয়ে যেতে পারবে সমানে সমানে কিন্তু কোন কালেও এশিয়ান পাওয়ারও হতে পারবে না- সুপারপাওয়া হওয়ার স্বপ্ন দেখা তো মুজিবের স্বপ্নগুলির মতোই খেয়ালী আর হালকা।
আসলে আমেরিকা নিজেদের অবস্থান এমন এক উচ্চতায় তৈরী করে ফেলেছে এমনভাবে যে ওখানে কেউ হাত লাগাবার কথা চিন্তায়ও আনতে পারবে না।
একটি ব্যাপক ও ধ্বংশাত্বক বৈশ্বিক যুদ্ধ যদি কোন কালে পুরো পৃথিবীকে উলট-পালট করে দিতে পারে শুধুমাত্র তখনই আমেরিকার জায়গাটা অন্য কেউ নিতে পারবে- যদিও সামরিক শক্তি, প্রযুক্তি এবং উন্নয়নের এই যাত্রাপথে তেমনটা হবার মতো কোন পরিবেশ তৈরী হওয়া বর্তমান বাস্তবতায় অসম্ভব।

সৌজন্যেঃTaufiqul Islam Pius
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:১৬
১৮টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×