somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। নানা কেলেঙ্কারিতে দরবেশের নাম, ‘স্পর্শ’ করার সাহস দেখাননি কেউ

১৫ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




দেশের সবার কাছে ‘দরবেশ’ নামে পরিচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার নৌপথে পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০০৬-২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও ঋণখেলাপিসহ নানা অভিযোগে জেলে গিয়েছিলেন সালমান এফ রহমান। এরপর বের হয়ে নাম জড়ান ২০১০-১১ সালের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারিতে। এতকিছুর পরও তাকে স্পর্শ করার সাহস হয়নি কারও। তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের জোরপূর্বক গণভবনে নিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রীর পাশে আছি’ বলে বক্তব্য রাখানোর অভিযোগ উঠেছে।

মূলত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সালমান এফ রহমান। শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবসায়ী নেতার পর ২০১৮ সালে এমপি ও টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হন।

হাজারো ব্যবসায়ীকে পথে বসানো শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির এক অবিচ্ছেদ্য নাম সালমান এফ রহমান। ২০১০-১১ সালে শেয়ার বাজার ধসের পর এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। রিপোর্টে তিনি সালমান এফ রহমান থেকে পুজিবাজারকে সতর্ক রাখার পরামর্শ দেন।

রিপোর্টে পুঁজিবাজারে ফিক্সড প্রাইস, বুক-বিল্ডিং, রাইট শেয়ার, ডিরেক্ট লিস্টিং, সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন, প্রেফারেন্স শেয়ারসহ সকল ক্ষেত্রেই অনিয়ম হয়েছে এবং এর সঙ্গে সালমান এফ রহমানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া, তিনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রমাণ পায় কমিটি। অথচ এসব অনিয়মের সঙ্গে সালমান এফ রহমানসহ আরও কয়েকজনের নাম জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সূত্র জানায়, সালমান এফ রহমানের বিভিন্ন অপকর্মের মধ্যে জমি জালিয়াতি অন্যতম। ঢাকার কালিয়াকৈরে সাধারণ মানুষের প্রায় ২৪১ একর জমির জাল দলিল করার মতো প্রতারণার সঙ্গে তিনি জড়িত বলে অভিযোগ আছে।

২০০০ সালের দিকে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট লি. এসব জমির ভুয়া দলিল নিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকে গিয়েছিল, বড় অঙ্কের ঋণের জন্য। ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরবর্তীতে এসব জমির ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন— জমিগুলো আসলে ক্রয়ই হয়নি। জমির মালিকরা আতঙ্কিত হয়ে গাজীপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের শরণাপন্ন হলেও তিনি তাদের সাহায্য করেননি।

এরপর তারা তৎকালীন ইউএনওর কাছে গেলে তিনি তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ব্যক্তিগতভাবে ইউএনও খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হন যে, প্রকৃত মালিকরা বেক্সিমকোর কাছে জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি। বরং রেজিস্ট্রি অফিসে ভুয়া মালিক সাজিয়ে এসব দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এরপর ইউএনও লিখিতভাবে বেক্সিমকো প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট লি. কে নোটিশ পাঠান। এই সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ওই ইউএনওকে নানা লোভ এবং ভয়ভীতি দেখিয়েও ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে ইউএনও নিজে বাদি হয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এই জমি জালিয়াতির সঙ্গে সালমান এফ রহমান সরাসরি জড়িত দাবি করে তিনি আর্জির সঙ্গে ১০৮ পৃষ্ঠার তথ্যপ্রমাণও জুড়ে দেন।তবে সালমান বা তার প্রতিষ্ঠানের কিছুই হয়নি বরং শেষ পর্যন্ত বদলি হন সেই ইউএনও। ২০০৬-০৭ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতিবিরোধী একটি টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। টাস্কফোর্স বিভিন্ন দেশে অনুসন্ধান চালিয়ে তথ্য বের করেন যে, ১২২ জন রাজনৈতিক নেতা ও আমলা দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ৪৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ মোট ১৭টি দেশে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে। পাচার হওয়া ৪৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা সালমান এফ রহমানের। আমেরিকায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসার নামে এসব টাকা পাচার করা হয়েছে।


অল মিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:১১
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×