somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ বিশ্ব এইডস দিবসঃসঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এইচআইভি ও এইডসঃ সঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন


এইচআইভি হচ্ছে এক ধরনের ভাইরাসের নাম। এর পুরো নাম হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস। এই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে ও বীর্যে থাকতে পারে। এই ভাইরাস সংক্রামণের কারণে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরেধীরে নষ্ট হয়েযায়- ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগী মৃত্যুবরণ করে।

এইডস হচ্ছে এইচআইভি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার একটা পর্যায়। সাধারণভাবে এই অবস্থাটি কয়েকটি রোগের উপসর্গ ও লক্ষণের মিলিত ফল। যেমন: বিশেষ ধরনের নিউমোনিয়া, দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া. যক্ষ্মা, ত্বকে সংক্রমণ ইত্যাদি। জানা থাকা প্রয়োজন যে, এইচআইভি শরীরে প্রবেশ করার পর থেকে এইডস হিসেবে প্রকাশ পেতে বেশ কিছু সময় লাগতে পরে। এই সময়কালে ব্যক্তির শরীরে কোন লক্ষণ দেখা নাওযেতে পারে।

কবে থেকে এইচআইভি চিহ্নিত হয়ঃ

আনূষ্ঠানিক ভাবে ১৯৪৭ সালে পরীক্ষাগারে সংরক্ষিত রক্তে এইচআইভি পাওয়া যায়। ১৯৮৩ সালে এইডস’র কারণ হিসেবে এইচআইভি ভাইরাসকে চিহ্নিত করাহয়। সব প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে সব সীমা অতিক্রম করে এইডস আজ সারা বিশ্বের সব দেশের জন্য একটি প্রতিরোধ যোগ্য সংক্রামক রোগ হিসাবে পরিণত হয়েছে।

যেভাবে সংক্রামিত হয়ঃ

অনিরাপদ যৌনমিলন, ইনজেকশনের সূচের মাধ্যমে মাদক গ্রহণ, এইড ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ ও গর্ভবতী মায়ের থেকে নবজাত শিশুর দেহে, এইচআইভি ভাইরাস সংক্রামিত হয়।

বাংলাদেশে এইচআইভিঃ

পার্শ্ববর্তী দেশ সমূহে যেমন ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডে এইচআইভি আক্রান্তের হার অনেক বেশী।বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের এইচআইভির জন্য জনগণ ঝুঁকিপূর্ণ-যেমনঃ

(ক)দারিদ্র এবং মৌলিক চাহিদা পূরণের অভাব।
(খ)নারী ও পুরুষের মধ্যে অবস্থানগত বৈষম্য।
(গ)যৌন ব্যবসার ব্যাপকতা অনিরাপদ শারীরিক সম্পর…

(ঘ)পেশাদার রক্তদাতাদের মধ্যে অনেকেরই সূঁচের মাধ্যমে নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ ক্রমবর্ধমান মাদক সেবীদের জন্যও আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছি। সঠিক তথ্য ও জ্ঞানের অভাবে আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারছিনা।

নারীর ঝুঁকি বেশিঃ

সামাজিক ও শরীরিক এই দুটি কারণে নারীর ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি দেখাযায়। নারীর প্রজননতন্ত্রেও গঠন এমন যেখানে ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ছাড়া আছে সম অধিকারের প্রশ্ন, জেন্ডার বৈষম্য।তাই যখন প্রবাসী স্বামী ফিরে আসে, কিংবা স্বামীর অন্য নারী সঙ্গী আছে জানা সত্বেও নারীরা স্বামীকে প্রশ্ন করতে পারেনা, বরং অসহ্য যন্ত্রনাবিদ্ধ হয়েও সহ্য করে ঐ বিষয়ে চুপ থাকে।ফলে সহজেই স্বামী আক্রান্ত হলে তা সহজে স্ত্রীকেও আক্রান্ত করে।আক্রান্ত হয় অনাগত ভবিষ্যত।

বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটঃ

১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে। সরকারি তথ্য মতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১৪৩৫ জনের দেহে এইচআইভি ভাইরাস পাওয়া যায় এবং ৪৬৫ জন এইডস রোগী সনাক্ত করা হয়।সরকারী তথ্যমতে এ রোগে মৃত্যুবরণ করেছে ১৮২ জন।

এইডস সনাক্তকরণের উপায়ঃ

একমাত্র রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এইচআইভি ভাইরাস সনাক্ত করা সম্ভব। দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ভাইরাস পরীক্ষা করা যায়।

এইচআইভি সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কিছু সাধারণ ও সহজ নিয়মঃ

(১)ধর্মীয় অনুশাসন সঠিকভাবে মেনে চলা
(২)স্বামী ও স্ত্রী একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা
(৩)অন্যের ব্যবহূত সুঁচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহার না করা
(৪)অনিরাপদ (এইচআইভিমুক্ত) এবং সহজলভ্য রক্ত সরবরাহ সুনিশ্চিত করা
(৫)যৌনবাহিত রোগের ক্ষেত্রে পরামর্শ ও চিকিৎসা গ্রহণ করা।

প্রয়োজন সহযোগীতা ও সচেতনতাঃ

এইচআইভির ঝুঁকি এড়াতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সচেতনতা ও সহযোগিতা, মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকা, ধর্মীয় অনুশাষণ মেনে চলার মাধ্যমে আমরা এইচআইভি প্রতিরোধ করতে পারি।

এইচআইভি আক্রান্তদের প্রতি আচরণঃ

আক্রান্ত ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করা এবং সম্ভব হলে বাজার, রান্না ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে সহায়তা করা,তার প্রতি মনোযোগ দেওয়া, তার সাথে সময় কাটানো এবং প্রয়োজনে ও সম্ভব হলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

শেষ কথাঃ

আমাদের সমাজ এইচআইভি পজেটিভ ব্যক্তিকে একঘরে করে দেয়। ফলে তার মানসিক শক্তি কমে যায়। সমাজের একপেশে আচরণের জন্য এই রোগাক্রান্ত ব্যক্তি নিজের পরিচয় গোপন করে। ফলে এই রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ কথা সত্যি যে একজন এইচআইভি পজেটিভ ব্যক্তি পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে এবং নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন কর্মক্ষম থাকতে পারে। তাই সঠিক তথ্য জেনে তাদের যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:৩০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×