somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি- প্রায় ভুতের গল্প

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সামুতে এখন দিন রাত জুড়ে জ্বীন ভুতদের সদর্প পদচারনা! সামুর পাতায় এখন চোখ বোলাতে গেলেই ভয় লাগে- রাতে ভাল ঘুম হবে কিনা এই দুশ্চিন্তায় অস্থির থাকি।
আমাদের গ্রাম্য একটা কথন আছে- চ্যাং ওঠে ব্যাং ওঠে খইলস্যা বলে আমিও উঠি!
সবার দেখাদেখি আমিও স্মৃতি হাতড়াতে শুরু করলাম; মগজের ফাঁকে কোন ভুতের গল্প জমা আছে কিনা? সেই চেষ্টায় ফের ভুত ঘুম(ভাতঘু ম) হারাম! অবশেষে একখানা না দু দু’খানা ভুতের গল্প খুঁজে পেলাম!
মনে যখন পড়েই গেছে- এই ভুতের হাত থেকে ব্লগারদের আর নিস্তার নেই!! তবে লেখা শুরুর আগে বলে নিই; আমি কিন্তু ভুত-প্রেতে বিশ্বাস করিনা, তবে চরম ভয় পাই!
১৯৮১/৮২ সালের কথা! স্বভাবতই আমি তখন শৈশব থেকে কৈশরে ড্রাইভ মারার পায়তারা করছি।বেড়াতে গিয়েছিলাম যশোর আমার ফুফুর বাড়িতে। আমাকে সাথে নিয়ে আমার দুই বোন সঙ্গে কয়েকজন কাজিন মিলে সেই সময়ের যশোরের বেশ জনপ্রিয় শীতকালীন মেলায় ঘুরতে গিয়েছল। সেই মেলাতেই জীবনের প্রথম মোগলাই পরোটা খেয়ে আমি পৃথিবীর বাকি সব খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম!
মেলায় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ আমার ছোট আপা বড় আপাকে জিজ্ঞেস করল,
-জেসমিন-তোর কি গরম লাগছে?
ডিসেম্বর মাস!বাইরে প্রচন্ড শীত হলেও প্রচুর লোক সমাগমের কারনে মেলায় একটু শীতের তীব্রতা কম- তাই বলে গরম লাগার কথা না। বড় আপা অবাক বিস্ময়ে তার দিকে চেয়ে বলল,
-নাতো। তোর কি গরম লাগছে?
ছোট আপা রীতিমত ঘামছে তখন। সে বলল,
-হ্যরে- একটু আগে আচমকা একটা গরম দমকা বাতাস লাগল গায়,আমি ভাবলাম এমনিতেই।পাত্তা দেই নাই। কিন্তু তার পর থেকেই ঘাম শুরু হোল।
বড় আপা একে একে সবাইকে জিজ্ঞেস করল;কারো গায়ে গরম বাতাস লেগেছে কিনা? কিংবা কারো গরম লাগছে কিনা?
সবাই বলল,না,তেমন কিছু অনুভব হচ্ছে না।
ওদিকে ছোট আপার অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে দেখে বড়রা সবাই বাকি মেলা না ঘুরেই 'গোল মার্কেটে'র কাছে ফুফুর বাড়িতে বাড়িতে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিল।
আমার ভীষণ মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল সবাই বাড়িতে ফিরছে দেখে- ছোট আপাকে পাঠিয়ে দিলেইতো হয়, অযথা আমরা কেন ফিরব? কিন্তু আমার মত পিচ্চির কথার কে-ই বা দাম দিবে।
সে রাতে ছোট আপার কাপুনি দিয়ে ভীষন জ্বর আসল। পরদিন সকাল হতেই সে ফের সুস্থ!
পরের রাতে আবার তার জ্বর! ঘুমের ঘোরে বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছিল-সেই সাথে আবোল তাবোল বকছিল। আমার বড় আপা রসিক, সাহসী আর কর্মঠ। সে রাত জেগে ছোট বোনের সাথে মজা করল আবার সেবাও করল।
পরদিন যশোর বেড়ানো অসামপ্ত রেখে সবাই আমাদের বাড়িতে ফিরে আসলাম। চরম মন খারাপ আমার তখন। আহা কত কিছু দেখার কত জায়গায় যাবার বাকি রয়ে গেল!
বাড়িতে ফিরে এসে ছোট আপা সারাদিন ভাল- কিন্তু সন্ধ্যের পড়েই শুরু হয় জ্বর আর কাঁপুনি।
স্থানীয় ডাক্তারদের ওষুধ পথ্য আর আর তাবিজ কবজ ফু ফা তে কাজ হচ্ছিল না।
৫ম রাতে ছোট আপা মাঝরাতে প্রচন্ড ভয়ে চিৎকার করে উঠল!
আমাদের ছিল বারোয়ারি বাসা। ছোট চাচা আর রেলওয়েতে চাকুরিরত এক ফুফা স্থায়ীভাবে আমাদের বাসায় ডেরা বেঁধেছিল। সাথে ছিল জায়গীর মাস্টার বিশ্বনাথ দা। ওদিকে দু-চার দশজন আত্মীয় পরিজনের ভীড় লেগেই থাকত সারা বছর। বড় ঘরে পার্টিশান করে এক পাশে আমার বোনদ্বয় ঘুমাত আর অন্য পাশে দুটো খাটে আব্বা মা আর আমরা ছোট ভাই দু’জন ঘুমাতাম!
বোনের চিৎকারে ঘরের মধ্যে সবাই ঘুম জড়ানো চোখে ছুটে গেল বোনের কাছে।
বোন তখন বড় বড় চোখ করে খোলা জানালার দিকে চেয়ে থর থর করে কাঁপছে। শরিরে তখন তার জ্বর নেই- গা টা একদম ঠান্ডা।
সেই অবস্থা থেকে তার ধাতস্ত হতে লাগল পাক্কা মিনিট দশেক।উপায়ান্তর না দেখে মা চড় থাপ্পড় দিয়ে হুশ এনেছিল।
বাস্তবে ফিরে আসার পরে সে যা বলল সেটা হচ্ছে; ঘুমের ঘোরে সে অনুভব করছিল অতি তুলতুলে বিড়ালের মত একটা নরম হাত তার সারা শরির হাতড়ে বেড়াচ্ছে! ঘুম ভেঙ্গেও তার সেই একই অনুভুতি। ভয় পেয়ে গায়ের লেপ সরাতেই কি যেন একটা ধুপ করে বিছানা থেকে নেমে খোলা জানালা দিয়ে বেড়িয়ে গেল!
লে ঠেলা! আর কি ঘুম আসে- এ কাতে শুলে মনে হয় ওপাশ দিয়ে ভুত আসছে ও-কাতে শুলে মনে হয় এ পাশ দিয়ে ভুত আসছে!! বিছানায় শুয়ে সারারাত জানালা আর দরজার ফাঁকের দিকে বার বার তাকাই! গায়ের লেপ মনে হয় সেই বিড়ালের মত কোম্ল হাতে বার বার সুড়সুড়ি দেয়।
সারারাত আমরা কেউ ঘুমালাম না। সকাল হতেই সব ঠিক- ছোট আপা পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। আর বড় আপা তাকে নিয়ে মজা করছে;সে সবাইওকে বোঝাচ্ছে যে,এইটা আইরিনের কাম চুরির ফন্দি!
ওদিকে আমার চরম সাহসী আর ভীষন শক্তিশালী মা্যের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ! তার কিশোরি মেয়ের ঘাড়ে জ্বীন ভুতের আসর হয়েছে এটা জানাজানি হয়ে গেলে এ মেয়ের বিয়ে দিতে কষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি ডাক্তারের পাশাপাশি গোপনে পীর ফকিরদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেন।
ওদিকে আমরা ছোটরা পড়লাম ভীষণ বে-কায়দায়। এমনিতেই সন্ধ্যের আগে ঘর ফিরতাম- এখন বিকেলেই ফিরে আসি। সন্ধ্যে হতেই ঘরে বন্দী। তখন দিনে রাতে ৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকত না। সারারাত প্রায় ভরসা ছিল হারিকেন আর কুপি। আমাদের বন্দিদশা জোর করে নয় স্ব ইচ্ছায়। ঘর থেকে বের হবার মত বুকের পাটা আমাদের ছিল না।
পরের রাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি – এক বার নয় কয়েক বার!সে রাতে শুধু আমাদের নয় পুরো বাড়ির সবার ঘুম হারাম হয়ে গেল!
আমার ফুফাজান খুব ধার্মিক মানুষ ছিলেন। তাকে কোনদিন ঘরের মধ্যে ঘুমাতে দেখিনি। তিনি সারারাত বারান্দায় পাতা জলচৌকিতে এবাদত করতেন আর বিশ্রাম নিতেন! প্রচন্ড বৃক্ষ পাগল সেই মানুষটাকে দেখেছি একটা মানুষ যতটা কৃচ্ছতা সাধন করতে পারে ততটাই কৃচ্ছতা সাধন করতেন।
আমার দুই বোনকে প্রচন্ড ভালবাসতেন তিনি। সারাক্ষন ছোট আম্মা আর বড় আম্মা বলে ডাকতেন।
আমার ভয়ঙ্কর রাগী বাবাকে বশে আনতে হলে আমার বোনদ্বয় ফুফাজানকে কাজে লাগাতে!
সেই ফুফা সারা রাত ধরে আমার ছোটা পার মাথার কাছে বসে দোয়া দরূদ পড়ে ফুঁ দিয়ে গেলেন।
কিন্তু বোন আমার একটু ঘুমের মত আসলেই সেই একই অনুভূতি।
সপ্তমদিন বিকেল থেকেই বোনের অবস্থা ভয়াবহ রুপ নিল! তার হেলুসিনেশন শুরু হোল। সে ঘরে বিভিন্ন প্রান্তে কারো সরব উপস্থিতির কথা জানিয়ে চিৎকার করতে লাগল।

-মা ওখানে কে দাঁড়িয়ে আছে? মা দেখ আমার দিকে কেমন কটমট করে তাকাচ্ছে?
-মা আমাকে শাসাচ্ছে! বলছে যাবেনা – মাকে মেরেই নাকি যাবে। মা আ আ বলে সে চিৎকার করে কাঁদছে।
ছোট মফস্বল শহর এ খবর বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে! সন্ধ্যা থেকে ভীড় বাড়তে শুরু করল আমাদের বাড়িতে। শত শত পরিচিত অপরিচিত মানুষের ঢল!
আমার চাচা ভায়েরা বাবা ছুটল একেকজন একেক দিকে। যে যাকে পারছে ধরে নিয়ে আসছে। বিশ্বনাথ দা নিয়ে আসল ‘মহেন্দ্র ডাক্তার’কে। খুব নাম করা ডাক্তার নয়,কিন্তু সাহসী।
তিনি এসেই মাছি তাড়ানোর মত করে হাতের তালু ঝেড়ে ভুত-টুত সব উড়িয়ে দিলেন।
বড় ভাই সরকারি হাসপাতাল থেকে ধরে নিয়ে আসল তার পূর্ব পরিচিত ‘সিভিল সার্জন’ ডঃ; ফারুক’কে( তিনি পরবর্তীতে মহাখালী কলেরা হাসপাতালের বড় ডাক্তার ছিলেন- এখন অবসরে)
চাচা নিয়ে আসল -জয়নাল ডাক্তারকে। জয়নাল ডাক্তার ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। ঠিক এম এ জি ওসমানীর মত চেহারা ছিল তার। গোঁফজোড়াও ছিল তেমন শুভ্র ও পাকানো! অনেকেই তাকে ‘ওসমানী’ বলে ডাকত। তবে কু জনেরা তকে ডাকত আজ্রাইল বলে। ডাক্তার হিসেবে তিনি মোটামুটীই ছিলেন,কিন্তু কাটা ছেড়ায় তার নাম ছিল সাংঘাতিক! কারো গ্যাংগ্রিন হয়েছে আঙুল কেটে ফেলে দিতে হবে- কারো মাথায় ফেটে চামড়া হা হয়ে গেছে, অজ্ঞান না করে আটখানা সেলাই দিতে হবে। সেই সব কাজে ডাক পড়ত জয়নাল ডাক্তারের।
তিনি এসেই একধমকে রোগীর জবান বন্ধ করে দিতেন। উল্লেখ্য তিনি ভুত প্রেতে একদম বিশ্বাস করতেন না।
ওদিকে মা খবর দিয়ে এনেছেন সবার শ্রদ্ধেয় অতি বয়স্ক এক সুফি ডাক্তারকে। ডাক্তারিতেও ছিলেন তিনি নামকরা আবার আধ্যাত্মিকতায়ও ছিলেন তিনি নামকরা! ফর্সা ঋজু দেহ। শুভ্র শ্মশ্রু গোঁফ সাদা পাঞ্জাবী আর পাজামায় তাকে দেখেয় ভক্তি করতে ইচ্ছে হত। তিনি সাধারনত তুক-ফাক করতেন না। কিন্তু সবাই জানত তার সাথে নাকি জ্বীন থাকে। প্রমত্তা পদ্মা শুকিয়ে গেলে তার বাড়িতে যেতে দীর্ঘ এক বিরান চর পাড়ি দিতে হত। আমাবস্যা পূর্ণিমায় একখান টর্চ-ই ছিল তার ভরসা। রাত করে রোগী দেখে বাড়ি ফিরয়ার সমায় রোগীর আত্মীয় স্বজনরা তাকে পৌছে দিতে চাইলে তিনি নিষেধ করতেন। বলতেন আমার সাথে লোক আছে!
অনেকেই নাকি দেখেছেন সেই চরের রাস্তা দিয়ে বাড়ির পথে হেটে যেতে যেতে কার সাথে যেন কথা বলছেন!
বোনের চারিদিকে ডাক্তার কবিরাজ ঘিরে বসে আছে। আরো সেখানে ছিল রাজবাড়ির বর্তমান যিনি জেলা চেয়ারম্যান সেই ফকির জব্বার সাহেব! সাথে স্থানীয় অনেক গন্যমান্য লোক ছিল আমি মনে করতে পারছি না।
সিভিল সার্জন থেকে শুরু করে সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছেন ছোট আপার এই অবস্থা দেখে! কি করবে তারা বুঝে উঠতে পারছে না। জয়ানাল ডাক্তারের বিরাশি সিক্কার ধমকেও কাজ হয়নি।
সেই মুহূর্তে আসলেন সেই সুফি ডাক্তার কাদের সাহেব।মুরুব্বি দেখে সবাই তাকে স সন্মানে জায়াগা করে দিলেন। বাড়ির বাইরে তখন কয়েক হাজার লোকের জমায়েত।
তিনি একখানা টুলে বসে আমার আপার দিকে অতি শান্ত ভঙ্গীতে কিছুক্ষন চেয়ে রইলেন।তারপরে সিভিল সার্জনের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করলেন;
-আপনাদের ডাক্তারি করা কি শেষ?
কোন উত্তর খুঁজে না পেয়ে ইয়াং সিভিল সার্জন আমতা আমতা করতে লাগল।
-যদি হয়ে থাকে তাহলে আমাকে চিকিৎসা করতে দেন। দয়া করে চুপ চাপ বসে থাকবেন।
একজনকে তিনি বললেন,- এক গামলা পানি আনতে সাথে একটা গামছা।
পানি আর গামছা আনা হোল।
পানিতে অনেক্ষন দোয়া দরূদ পরে ফুঁ দিয়ে তিনি গামছাটা ভিজিয়ে হালকা চিপরে আমার মাকে বললেন, ভাবি সাহেব আপনি শক্তিশালী মানুষ আপনি মেয়ের পেছনে গিয়ে বসেন।
মা গিয়ে বসলে,তিনি মায়ের হাতে গামছা দিয়ে বললেন এটা দু-ভাঁজ করে ওর পুরো মুখে পেঁচিয়ে পেছনে শক্ত করে ধরে রাখুন।
সঙ্গে সঙ্গে সিভিল সার্জন বাধা দিলেন,
-এ কি করছেন জনাব? ভেজা গামছা দিয়ে এভাবে পেঁচিয়ে ধরলেতো ও নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবে।
কাদের সাহের ওনার দিকে ফিরে মৃদু হেসে বললেন,
-আপনারা আছেন কি করতে? জ্বীন-ভুতে বিশ্বাস নেই না? সবে ডাক্তারি শুরু করেছেন। জীবনের এখনো অনেক পথ বাকি- বাকি জীবনে আজকের ঘটনা মনে রাখবেন এই গ্যারান্টি দিচ্ছি। চুপ থাকেন শুধু।আমাকে আমার কাজ করতে দিন।
সিভিল সার্জন তার কথায় এই যে চুপসে গেলেন বাকি সময় আর কোন টু শব্দ করেননি।
মা আমার বোনের মুখ ভেজা গামছা দিয়ে শক্ত করে পেঁচিয়ে ধরতেই ছোট আপা নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার ভয়ে কাঁদতে শুরু করল!
কাউকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কাদের ডাক্তার সামনে রাখা গামলার পানিতে দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়ে সেই পানি হাতের তালুতে করে উঠিয়ে আমার বোনের মুখে ঝাপটা দিতে লাগলেন।
প্রথম ঝাপটাতেই ছোট আপা একদম চুপ মেরে গেল।
দু-তিনবার ঝাঁপটা দেবার পরে হঠাত সে শিরদাড়া সোজা করে গোঙ্গানীর মত করে দুর্বোধ্য ভাষায় কি যেন বলল। ভেজা গামছার জন্য আমরা শুধু শব্দ পেলাম কোন কথা কেউ বোঝেনি।
ফের পানির ঝাঁপটা দিতেই যেন হিংস্র ভয়ঙ্কর এক চেহারা গামছা ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসতে চাইল।তার সেই ভয়ঙ্কর চেহারা আর পৈচাশিক গোঙ্গানি শব্দে সেখানে উপস্থিত সবারই চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল!
এভাবে চলল মিনিট পাঁচেক।
ডাক্তার সাহেব প্রশ্ন করে যাচ্ছেন,আর সে দুর্বোধ্য ভাষায় উত্তর দিচ্ছে। আমি ভয় পেয়ে কুঁকড়ে মুকড়ে বড় আপার কোলের মধ্যে গিয়ে বসলাম।সে এক থমথমে ভয়াবহ পরিবেশ!
আচমকা ডাক্টার সাহেব মা’কে বললেন,
-ভাবি সাহেব ওকে এখন ছেড়ে দেন- ও অজ্ঞান হয়ে যাবে।'
মা তাকে ছাড়তেই ভীষণ এক ঝড় হাওয়ার মত ঘড় দাপিয়ে কি যেন ছুটে গেল – ঠিক তখুন আমাদের টিনের চালে প্রচন্ড জোরে দড়াম করে শব্দে আশেপাশে দাঁড়ানো প্রতিটা মানুষ কেঁপে উঠল। আর আমার বোন এক পাশে ঢলে পড়ে গেল…

খানিক বাদেঃ
*দুঃসাহসী জয়নাল ডাক্তার থতমত খেয়ে গেছেন! বিদায় নেবার সময় আমার বাবাকে একপাশে ডেকে বললেন; আমার সাথে কি দু’চারজন লোক দেয়া যায়, না হলে আমি বাড়ি যেতে পারব না!! সিভিল সার্জন কেও কয়েকজন মিলে তার বাসায় পৌছে দিতে হয়েছিল। শুধু ডক্তার মহেন্দ্র একাই বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন।

বর্তমানঃ
ছোট আপা তারপর থেকেই সুস্থ এখন তিনি তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে দিব্যি সংসার করছেন। সেদিনের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি শুধু হাসেন; বলেন,- তার নাকি কিস্যু মনে নেই।

কৃতজ্ঞতাঃ কিছু কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে আমাকে সহযোগীতা করেছে- অসম্ভব স্বরন শক্তির অধিকারী আমার মেঝভাই আর আমার বড় আপা।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০
৩৪টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×