somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কিভাবে পৃথিবীতে বেঁচে/টিকে আছি??? Humans are Not from Earth-২

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
নিন্মোক্ত যে সতেরোটি কারণ নিয়ে আলোচনা করেছি যার মাধ্যমে আমরা ভাবতে বাধ্য হই যে, আমরা এই পৃথিবীতে বহিরাগত (আজকে দুটো কারন উল্লেখ করা হোল সাথে দুটো বিশেষ নিবন্ধ!)
১. সূর্য আমাদের চোখকে আঘাত করে বা দৃষ্টি ঝলসে দেয়।
আমার এই বইটি লেখার জন্য এই বিষয়টা একটা অন্যতম কারণ।
সূর্যালোকিত গ্রীষ্মের একটা দিন। আমি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম- কোণাকুণি একটা মোড় ঘুরতেই সূর্যের আলো সরাসরি এসে আমার মুখের উপর পড়ল। তাৎক্ষনিক-ভাবে আমার দৃষ্টি ঝলসে গেল- ঠিক অন্ধের মত আমি কোনকিছুই দেখতে পারছিলাম না। আমি কোনকিছুতে ঠোক্কর খেয়ে গুরুতর আঘাত না পাই সেজন্য বাধ্য হয়ে আমি চোখের উপর আমার হাতটা রাখলাম সূর্যের আলোকে আড়াল করার জন্য। যখন আমি ছায়ায় পৌঁছলাম - আমার দৃষ্টি ফিরে এল।
আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম পাখিরা সব সুখে আকাশ-জুড়ে বিভিন্ন দিকে সাবলীলভাবে উড়ে বেড়াচ্ছে। সূর্যের আলো তাদের চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে না- উড়ে যাবার পথে তারা কোন উঁচু দালান বা গাছের সাথে ঠোক্কর খাচ্ছে না! সূর্যের আলো নিয়ে তাদের কোন অনুযোগ নেই- অভিযোগ নেই।
তখন আমার মনে পড়ল, এক রাতে যখন আমি বনের গ্রামের রাস্তা ধরে গাড়ি চালাচ্ছিলাম আচমকা একটি বড় খরগোশ বা ছোট হরিণজাতীয় কিছু একটা আমার চলার পথের মধ্যখানে এসে দাঁড়াল। আমি ব্রেক কষতেই সে অবাক দৃষ্টিতে বড় বড় চোখ মেলে আমার গাড়ির ফুল বিম হেডলাইটের দিকে তাকিয়ে রইল। কোন বিরক্তি বা কষ্ট ছিলনা তার অভিব্যক্তিতে। এরকম কোন হেডলাইটের আলো সরাসরি আমাদের চোখে পড়লে আমরা বিরক্ত হতাম- সে আলো কিছুক্ষণের জন্য হলেও আমাদের দৃষ্টিশক্তি ঝলসে দিত।
কিন্তু আমাদের ছোট খরগোশ/হরিণ বন্ধু সামান্যতম বিরক্ত করা হয়নি। কয়েক সেকেন্ড মূর্তির মত দাঁড়িয়ে থেকে বেশ আকস্মিকভাবে পুরোপুরি আনন্দের সাথে তিড়িং-বিড়িং করে লাফাতে লাফাতে একটি মাঠের দিকে ছুটে গেল। সে কি তীব্র আলোয় ক্ষণিকের জন্য অন্ধ হয়ে গেল? মোটেই তা নয়।
এই প্রাণীগুলি পৃথিবীর আদিবাসী এবং পৃথিবীর পরিবেশ ও প্রকৃতির সাথে মানিয়ে নিতে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে তারা এখানে বাস করছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তারা পৃথিবীর সাথে মানিয়ে নেবার জন্য বিবর্তিত হয়েছে- তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, তারা এত ভালভাবে মানিয়ে নিতে পারছে।
তবে কি আশ্চর্য -আমরা মানুষ!! অনুমিতভাবে এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত প্রজাতি – এখনো পৃথিবীর প্রকৃতি পরিবেশ জলবায়ু আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে পারিনি।
কেন –তাহলে মুল সমস্যাটা কোথায়?
বিবর্তন তত্ত্ব অনুসারে আমরা এই জাতীয় প্রাণী থেকেই লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বিবর্তিত হয়েছি(আজকের পাখি এবং ম্যামলস আমাদের পূর্বপুরুষ)। যেহেতু আমরা সবচেয়ে উন্নত ও বুদ্ধিমান প্রাণী সেহেতু লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর প্রকৃতির সাথে আমাদের আরো চমৎকারভাবে মানিয়ে নেয়া উচিত ছিল। আমাদের ‘মাদার নেচার’ তার সৃষ্ট সবচেয়ে বুদ্ধিমান এই প্রাণীটিকে তার সাথে মানিয়ে নেবার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করত। কিন্তু সেটা হয়নি। তাহলে নিশ্চিতভাবে বিবর্তনের এই পর্যায়ে চরম কিছু ভুল আছে( যেটা প্রায় অসম্ভব)। অথবা সম্ভবত বা নিশ্চিতভাবে আমরা এই গ্রহের বাসিন্দা নই। আমরা বাইরে থেকে এসে এখানে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করছি।
যদিও সূর্যের আলো দ্বারা চোখ ঝলসে যাবার পরে এই বিষয়টা নিয়ে আমি ভাবতে শুরু করলাম; কিন্তু প্রকৃতই সেটা শুরু ছিল মাত্র। আমার ভাবনার সাথে যোগ হোল এমন কিছু তথ্য ও প্রশ্ন যার কোন উত্তর সম্ভবত বিজ্ঞানের হাতে নেই।
এই প্রশ্নগুলো যারা সৃষ্টি বা সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে ভাবে শুধু তাদেরই নয়- অতি সাধারন চিন্তাশীল মানুষের মাথায়ও এলোমেলোভাবে ঘুরপাক খায়। আমি আপনি সবাই কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজি। বিজ্ঞান ও ধর্ম আমাদের সেই প্রশ্নের উত্তর গোঁজামিলে দেয় অথবা অতি সংক্ষেপে কিংবা সেই চিন্তাধারাকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করে।
সূর্যের আলো নিয়ে কিছু উদাহরণ - যার মধ্যে কয়েকটি আমি নীচে পরীক্ষা করেছি;
খরগোশের বৈদ্যুতিক আলো (বা যেকোনো কিছুর সাথে) মোকাবিলা করার আশ্চর্য ক্ষমতার কারণ কি? যদিও এটা আমাদের আবিষ্কার- কিন্তু বৈদ্যুতিক উজ্জ্বল আলো আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয় কিন্তু খরগোশের মত প্রাণীরা খুব সহজেই মানিয়ে নিয়ে পেরেছে- কেন?
সম্ভবত;এর মুল কারণ হচ্ছে এদের দ্রুত যৌবনপ্রাপ্তি নিয়মিত ও স্বল্প সময়ে বাচ্চা উৎপাদন! আমাদের যৌবন প্রাপ্তিতে অনেক সময় লাগে এবং এমন নিয়মিত ও দ্রুত আমরা সন্তান জন্মদানে সক্ষম নই। ধরে নিই বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কারের পরে আমরা মাত্র পাঁচটা প্রজন্ম পার করেছি কিন্তু এই সময়ের মধ্যে খরগোশজাতীয় প্রাণী পাঁচ শতাধিক প্রজন্ম পার করেছে। অতএব এখানে আশ্চর্যের কিছু নেই যে, যে কোন জিনিস তারা আমাদের থেকে অনেক দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে( যেহেতু সূর্যের আলো সম্ভবত তাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয় না সে কারণেই উজ্জ্বল আলোয় তারা আগে থেকেই অভ্যস্ত)।

২. সূর্য কার্যত আমাদের হত্যা করে।
সূর্য শুধু আমাদের দৃষ্টিশক্তি ঝলসেই দেয় না বরং আমরা যদি এই আলোর উৎসের দিকে তাকাই তবে দৃষ্টি শক্তি হারানোর পাশাপাশি অতি অল্প সময়ের আমরা দিক-হারা হয়ে গাছ, পাথর, অন্য কোন মানুষের সাথে ধাক্কা খেতে পারি- যার ফলশ্রুতিতে বড় ধরনের অঘটন ঘটা অসম্ভব নয়।
আমাদের শরীরে অন্য প্রাইমেটদের মত চুল বা প্রাকৃতিক পোশাক নেই -সে কারণেই সূর্যের আলোতে আমাদের তাৎক্ষনিক সান-বার্ণ হওয়া ও সুদূর ভবিষ্যতে ত্বকের ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। যে কারনে খালি গায়ে সান-বাথ করার সময়ে আমাদের শরীরে সানস্ক্রিন মাখতে হয়।( *যদিও ত্বকে বেশী মেলালিনযুক্ত মানুষদের সেই সম্ভাবনা বেশ কম থাকে- আফ্রিকান লোকেরা অনেক বেশী সময়ে সূর্যালোকের নীচে থাকে। সংখ্যায় কম হলেও তাদেরও রোদে ত্বক পুড়ে যায় বা ত্বকের ক্যান্সার হয়)
কিন্তু কেন আমাদের এমনটা প্রয়োজন? নিশ্চয়ই আমরা বিকশিত হতে পারিনি এটার উপর নির্ভর করতে?
কুমির জাতীয় প্রাণী (যা আমরা মনে করি পাখি ও ম্যামেলস এর চেয়েও অনেক আগে থেকে বিবর্তিত হয়েছে) তারা যতক্ষণ চায় ততক্ষণ রোদে স্নান করতে পারে - এবং তাদের অনেকেই করে। কিন্তু আমরা যদি তাদের মত এত দীর্ঘ সময় ও দীর্ঘদিন কোন সুরক্ষা ছাড়া রোদ পোহাই তবে অবশ্যই অবশ্যই মারা যাব।
সৈকতে এক বা দুই সপ্তাহের জন্য সানস্ক্রিন গায়ে মেখে রৌদ্রস্নান করার সাথে এর পার্থক্য অনেক।
কিন্তু দিনের পর দিন রোদে – মরুভূমিতে প্রখর সূর্যালোকের নীচে আপাদমস্তক ঢিলে কাপড়ে নিজেকে না মুড়ে আপনি দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণ করতে পারবেন না। চেষ্টা করে দেখতে পারেন, সূর্যালোক আপনার ত্বক ঝলসে যাবে-শরিরের জলীয়বাষ্প অতিদ্রুত বেরিয়ে গিয়ে আপনি অল্পক্ষণেই মারা পড়বেন?
ত্বকের ক্যান্সার যাদের হয়েছে তারা জানে এটা কত সাংঘাতিক কষ্টদায়ক একটা রোগ। এর থেকে হাইওয়েতে চলন্ত বাসের নীচে ঝাঁপ দিন; আপনার মৃত্যু অনেক আনন্দদায়ক হবে!


সূর্যালোক থেকে সৃষ্ট ‘মেলানোমা’ ত্বকের ক্যান্সারের সবচেয়ে মারাত্মক রূপ।এটি মেলানোসাইট নামক ত্বকের কোষে উৎপন্ন হয় (কোষ যা রঙ্গক তৈরি করে ও ত্বক কালো বর্ণ ধারনকরে)।এটি চর্মরোগ থেকে মৃত্যুর প্রধান কারণ।
যদিও এটি কেবল ত্বকের ক্যান্সার নয়। সূর্যালোক আমাদের ত্বক শুকিয়ে ও কুঁচকে যায় এবং আমাদের সময়ের আগে বৃদ্ধ দেখায়। সূর্যালোকের অতিবেগুনী ক্যান্সার বাদেও আমাদের হাড়কে ভঙ্গুর ও পাতলা করে ফেলে -আমাদের ছানি দিয়ে আমাদের চোখ নষ্ট করে। অন্যান্য প্রাণী (যা পৃথিবীর স্থানীয় এবং তাই এখানে বসবাসের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে) সারাদিন বাইরের সূর্যালোকে থাকার কারণে চোখে ছানি পড়বে না গবাদি পশু, ভেড়া, শূকর, ঘোড়া বা ক্যাঙ্গারুর কথা ভাবুন। তাদের ত্বক কুঁচকে যায় না। তাদের ত্বকের ক্যান্সার হয় না (যদিও কিছু প্রাণী কানের গোড়াতে ক্যান্সার আক্রান্ত হয় যেখানটা সুরক্ষিত নয় পশম দ্বারা)।
যদি পশম বা আঁশ (কুমিরের ক্ষেত্রে) ত্বকের ক্যান্সার এড়ানোর জন্য অপরিহার্য তাহলে কেন আমাদের কোনটি নেই?
কেন আমরা চওড়া হুডের টুপি এবং সানগ্লাস পরতে হবে? সানস্ক্রিন গায়ে মাখতে হবে, অথবা সূর্য থেকে যতদূর সম্ভব গা বাঁচিয়ে চলতে হবে? এমন যদি হয় তবে, এটাই আমাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশ?
সহজ উত্তর হল; পৃথিবী আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ নয়।
ভূগর্ভে বা জলের নীচে বাস করা সূর্যের আলো এড়ানোর উপায় হিসেবে বিবেচনা করা যায় কিন্তু আমরা এই জিনিসগুলির একটিও করি না। কেন? কিছু স্পষ্ট ভুল এখানে আছে।
এই অধ্যায়ে আরো অনেক বিষয় ব্যাখ্যা করার ছিল, যেমন সূর্যালোক অ-সহিষ্ণুতা!!
-------------------------------- *বিশেষ নিবন্ধ-১*-----------------------------------

কিভাবে আপনার দৃষ্টিশক্তি UV রশ্মি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে?



আইরিস উজ্জ্বল আলোর বিরুদ্ধে আপনার চোখের প্রধান প্রতিরক্ষা হিসাবে কাজ করে। এটি আপনার চোখের রঙিন অংশ যা চক্ষুতারা ছোট থেকে ছোট করার জন্য দায়ী। যখন তীব্র আলোক রশ্মি আপনার চোখে পৌঁছায়, তখন আইরিস পিউপিল বা চক্ষুতারা’কে সংকুচিত করে রেটিনাকে রক্ষা করে এবং আগত ছবিকে আরও ভালোভাবে প্রক্রিয়া করতে সাহায্য করে। বিপরীতটি কম আলোতে ঘটে, যখন আইরিস যতটা সম্ভব আলো দেওয়ার জন্য চক্ষুতারাকে প্রসারিত করে।
উজ্জ্বল আলো আপনার দৃষ্টিশক্তি ক্ষতি করতে পারে?
সংক্ষেপে, হ্যাঁ, উজ্জ্বল আলোর দিকে তাকানো আপনার চোখের ক্ষতি করতে পারে। যখন রেটিনার আলোক সংবেদনশীল কোষগুলি উজ্জ্বল আলোর দ্বারা অতিরিক্ত উদ্দীপিত হয়, তখন তারা প্রচুর পরিমাণে সংকেতকারী রাসায়নিক নির্গত করে, যার ফলে চোখের পিছনে ক্ষতি হয়।
সূর্য এত তীব্রতার সাথে আলো ছড়ায় যে কয়েক সেকেন্ডের জন্য সরাসরি তার দিকে তাকালে রেটিনার স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর ধরে ইউভি রশ্মির দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার ম্যাকুলা, কর্নিয়া এবং লেন্সের ক্ষতি করতে পারে। ম্যাকুলার ক্ষতি ম্যাকুলার অবক্ষয়ের দিকে পরিচালিত করে। একটি UV রশ্মি আক্রান্ত কর্নিয়া ঝাপসা দৃষ্টি এবং দৃষ্টিশক্তি হ্রাস করতে পারে। একটি ক্ষতিগ্রস্ত লেন্স ছানি পড়া বা ঝাপসা হতে পারে, যা পরবর্তীতে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়।
আলো, এমনকি মাঝারি তীব্রতার স্তরেও, সময়ের সাথে ধীরে ধীরে রেটিনার ক্ষতি করতে পারে। উষ্ণ আলোর চেয়ে UV রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম, তাই এর শক্তি বেশি।
সূর্যের আলো হল UV রশ্মি র সবচেয়ে দৃশ্যমান উৎস, তবে অন্যান্য উদাহরণের মধ্যে রয়েছে ফ্লুরোসেন্ট লাইট, এলইডি, টেলিভিশন, কম্পিউটার মনিটর এবং স্মার্টফোনের স্ক্রিন।
উজ্জ্বল আলো দ্বারা সৃষ্ট চোখের সমস্যাগুলি কীভাবে চিকিত্সা এবং প্রতিরোধ করা যায়
নিম্নলিখিত টিপস দিয়ে আপনার দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করুন:
উজ্জ্বল আলো থেকে ঝলক কমাতে অ্যান্টি-রিফ্লেক্টিভ লেন্স সহ চশমা বেছে নিন।
আপনি যখন বাইরে যান গাঢ় সানগ্লাস এবং চোখে ছায়া দেয় এমন টুপি পরুন। অ্যান্টি-ইউভি পোলারাইজড সানগ্লাস আপনার চোখকে UV রশ্মি এবং ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
আপনার প্রতিদিনের স্ক্রীন টাইম কমান এবং আপনার চোখকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য ঘন ঘন বিরতি নিন।
স্ক্রীন থেকে নির্গত UV রশ্মি র পরিমাণ কমাতে আপনার কম্পিউটারে নাইটলাইট বৈশিষ্ট্যটি সক্ষম করুন।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করার সময় চোখের চাপ কমাতে হলুদ লেন্স সহ UV রশ্মি ব্লকিং কম্পিউটার চশমা পরুন।
সিএফএল বাল্ব এবং এলইডি বেছে নিন যা ‘উষ্ণ’ আলো নির্গত করে।
আপনার যদি ছানি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়, তাহলে সানগ্লাসের মতোই আপনার রেটিনাকে সুরক্ষিত রাখতে UV রশ্মি কে ব্লক করে এমন ইন্ট্রাওকুলার লেন্স (IOL) ইমপ্লান্টের সন্ধান করুন।
আপনি যদি উজ্জ্বল আলোর সংস্পর্শে আসার পরে দৃষ্টি সমস্যা বা অস্বস্তি অনুভব করেন, তাহলে বিশেষজ্ঞের সাথে অতিসত্তর যোগাযোগ করেন।
-------------------------------- *বিশেষ নিবন্ধ-২*-----------------------------------

অন্যান্য প্রাণীদের কি সানবার্ণ হয়?
দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের সর্বোত্তম প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও, রোদে পোড়া মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ গ্রীষ্মকালীন অসুস্থতা। কিন্তু প্রাণীদের কি ‘রোদে পোড়া’ বা সানবার্ণ হয়? যদি হয় তবে তারা নিজেদের রক্ষা করার জন্য কি করছে?
আমি স্মিথসোনিয়ানের জাতীয় চিড়িয়াখানার এলিফ্যান্ট হাউস এবং চিতা সংরক্ষণ স্টেশনের কিউরেটর টনি বার্থেলের কাছে এই প্রশ্নগুলি উত্থাপন করেছিলাম।
তিনি এখানে স্থলচর বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীদের দৈনন্দিন যত্নের তত্ত্বাবধান করেন।
জীববিজ্ঞানী ব্যাখ্যা করেন, ‘অধিকাংশ প্রাণী যাদের ত্বক উন্মুক্ত হয় সুর্য রশ্মি তাদের জন্য সংবেদনশীল’।" যদিও পাখিরা পালক ও সরীসৃপ আঁশ দ্বারা দ্বারা সুরক্ষিত থাকে (যদি সরীসৃপ অতিরিক্ত গরম হয় তবে তারা ত্বক পুড়ে যাওয়ার আগেই মারা যাবে)।
হাতি এবং গন্ডারের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী, এমনকি সদ্য পশম কাটা ভেড়া, যেমনটা আপনি কল্পনা করতে পারেন,উন্মুক্ত ত্বকের প্রাণী কোন আবরণে ঢাকা প্রাণীদের থেকে বিশেষভাবে দুর্বল। কোন কোন সময় একটি লোমশ স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রখর সূর্য রশ্মিতে ত্বক পুড়ে বা জ্বলে যেতে পারে। -এটি তাদের পশমের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে।
উদাহরণ হিসেবে পিঠে মোটা চুল আছে এমন শূকর এর কথা উল্লেখ করা যায়। যদি তারা দীর্ঘ সময় বাইরে রোদে থাকে তবে তাদের ত্বক পুড়ে যাবে বা সানবার্ণ হবে।

মানুষ এবং ল্যাবরেটরি ইঁদুর ব্যতীত অন্যান্য প্রাণীদের সানবার্ণ-এর অধ্যয়নের জন্য অতি সামান্য গবেষণা হয়েছে।
কিন্তু কিছু গবেষকরা যখন তিমির গায়ে ফোসকার মত কিছু একটা দেখতে পান তখন ইংল্যান্ড ও মেক্সিকো থেকে একদল বিজ্ঞানী বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেন। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত, তারা ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরে নীল তিমি, ফিন তিমি এবং স্পার্ম হোয়েল থেকে উচ্চ-রেজোলিউশনের ফটোগ্রাফ ও ত্বকের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন।
(গত নভেম্বরে, তারা প্রসিডিংস অফ দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছে।)



বায়োপসিগুলির পঁচানব্বই শতাংশে ‘সানবার্ন সেল’ বা অতিবেগুনি রশ্মি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের কোষ রয়েছে।
সানবার্ণ হওয়ার জন্য একটি (অবদানকারী) ফ্যাক্টর অবশ্যই তিমিরা সমুদ্রের উপরিভাগে পিঠ উচিয়ে সময় কাটানোর জন্য হয়। স্পার্ম হোয়েল ডাইভের মাধ্যমে সাত থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত শ্বাস নেয়, যখন নীল তিমি ও ফিন বা পাখনা তিমি মাত্র দু-মিনিট সময় নেয়। স্পার্ম তিমিগুলো ঘন্টার পর ঘন্টা সুমুদ্রের উপরিভাগে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সামাজিক ক্রিয়াকর্ম করে বা তাদের অবসর সময় কাটায় –যে কারনেই এদের পৃষ্ঠদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে সানবার্ন হয় এবং ফোসকা পড়ে । বিজ্ঞানীদের দল আবিষ্কার করেছে যে এই সানবার্ণ হবার জন্য তাদের পিগমেন্টেশন আরও বড় ভূমিকা পালন করে।

খুব রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গায় বসবাসকারী প্রাণীদের অনন্য প্রাকৃতিক বা জৈবিক প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা রয়েছে।
যদি একটি জিরাফ তার জিহ্বা বের করে, প্রথম আট বা নয় ইঞ্চি কালো, এরপর একটি রেখা থাকে েকেবারে গোড়ার অংশোটি গোলাপি রঙের। কিছু্ গবেষক মনে করেন জিরাফদের কালো জিহ্বা আছে কারণ তারা দীর্ঘ সময় তাদের জীহ্বা মুখের বাইরে সুর্যালোকিত উন্মুক্ত স্থানে রাখে- জীহ্বাকে সানবার্ণ থেকে রক্ষা করার জন্য তার সামনের অংশটুকু কালো হয়।



জলহস্তীদের একটি আকর্ষণীয় বিস্ময়কর ব্যাপার রয়েছে। তাদের মুখমন্ডল বা তাদের কান বা ঘাড়ের পিছনে ফোঁটায় ফোঁটায় একধরনের রক্তলাল তরল নির্গত হয়।
একসময় সার্কাসে দর্শকদের এই বলে আকর্ষন করা হোত যে, আসো দেখো কি আজব কারবার। জলহস্তীদের রক্ত ঘাম হচ্ছে!! কিন্তু যখন জাপানি গবেষকরা টোকিওর উয়েনো জুলজিক্যাল গার্ডেনে বসবাসকারী দুটি জলহস্তীর সেই নিঃসরণ বিশ্লেষণ করেন, তখন তারা দেখতে পান যে এটি লাল ও কমলা রঙের রঞ্জক তরল যা আল্ট্রা ভায়োলেট আলো শোষণ করে। লাল রঙের সেই ঘাম ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকেও বাধা দেয়। প্রকৃতির মে ২০০৪ বিজ্ঞানীরা সবাই একমত হয়েছেন যে, ‘রক্ত লাল তরল’ বা ‘ঘাম’ আসলে একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক সানস্ক্রিন।



তবে বুদ্ধিমান প্রাণীদের বড় একটি অংশ তাদের পুর্বসূরীদের কাছ থেকে রপ্ত করা বিশেষ কৌশোলের মাধ্যমে নিজেদের রক্ষা করে। “হাতিরা রোদে পোড়া থেকে বাঁচতে ও পোকামাকড়ের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে তাদের পিঠে এবং মাথায় বালি বা কাদাযুক্ত পানি নিক্ষেপ করে। তারা তাদের বাচ্চাদের গায়েও বালি দিয়ে জল ছূড়ে দেয়। এবং এটি সম্ভবত শিক্ষণ প্রক্রিয়ার অংশ। -তারা শুধুমাত্র তাদের তরুণদের যত্ন নেয় না, কিন্তু তারা তাদের দেখায় যে ভবিষ্যতে কিভাবে নিজেদের রক্ষা করতে হবে।‘ প্রাপ্তবয়স্ক হাতিরাও বাচ্চাদের ঘুমানোর সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য ছায়া তৈরি করে যাতে বাচ্চাদের সানবার্ণ না হয়। গণ্ডার এবং শূকর নিজেদেরকে কাদা দিয়ে ঢেকে রাখে, যা তাদের রোদ থেকে রক্ষা করে এবং তাদের ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।



সেই চিড়িয়াখানার কিউরেটর বলেন, সানবার্ন হলে যাদের অনেক পশম তাদের পশম হালকা হতে থাকবে। ত্বক লাল বর্ণ ধারন করে। সবচেয়ে খারাপটা হল ত্বকে ফোস্কা পড়ে যাওয়া যদিও তিনি স্বীকার করেছেন যে, এমনটা ঘটতে পারে, তবে তিনি কখনও রোদে পোড়া চামড়ার প্রাণী দেখেননি!!!
চিড়িয়াখানার হাতির দেখভাল করার জন্য নিয়োজিত মারি গ্যালোওয়ের শুধুমাত্র এমন একটি ঘটনার কথা মনে করতে পারেন। প্রায় ২০ বছর আগে, চিড়িয়াখানায় বসবাসকারী শ্রীলঙ্কার একটি এশিয়ান হাতি শান্তি, তার পিঠে সানবার্ণের ফলে ফোসকা পড়েছিল। কারণ সে অন্যান্য হাতির মতো নিজেকে ধুলা বা কাদা দিয়ে দিয়ে ঢেকে রাখেনি কখনো এবন প্রখর রোদেও সে ছায়া খোঁজেনি।
। তবে বেশিরভাগ প্রাণীদের এই সাধারণ জ্ঞান আছে বলে মনে হয় এবং সেটা আমাদের চেয়ে বেশি বলে আমি মনে করি।

এই অংশের মুল সুত্রঃ মেগান গাম্বিনো
Smithsonian-Magazine

পরের পর্বেঃ ৩. SAD (মৌসুমী অনুভূতিমূলক ব্যাধি) ও ৪. মেরুদন্ডের ব্যাথা- নিয়ে ডক্টর এলিস সিলভার ভাবনা ও যুক্তি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:০৯
৩৮টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×