চারদিকে ভুল, অন্যায়, অত্যাচার আর আস্পর্ধার ছড়াছড়ি। প্রিয় মাতৃভূমি আজ ভুলে আর অন্যায়ে জর্জরিত। যদি দেশটা মা'ই হয় তবে মায়ের আজ বুকে রক্তক্ষরণ হয় প্রতিনিয়ত, সারা শরীরে ব্যাথা। হ্যাঁ সত্যিই তাই, মা আজ ভালো নেই। ধরে নেই এদেশের এক একটা সেক্টর মায়ের এক একটা সন্তান। তাহলে কি দাড়ালো? মায়ের সবগুলো সন্তান একই সাথে ভালো অবস্থানে নাই। এক ছেলে ডাক্তার, তো একটা সন্ত্রাসী, এক মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার তো এক মেয়ে জঙ্গী, কেউ ভীষন ভালোতো কেউ বেশ মন্দ। তাই মায়ের আজ এতো কষ্ট যে একই সাথে তার সবগুলো সন্তান কেন মানুষের মত মানুষ নয়?
এবার আসুন বুঝিয়ে বলি। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তিখাত বেশ এগিয়ে গেছে। এগিয়ে গেছে আরো অনেকগুলো খাত একই সাথে। পলক ভাইয়ের লাইভ অনুষ্ঠান যদিও নিজের অনেকটা আত্মপ্রচার তবুও তার মাঝেও অনেক কিছুই পাচ্ছে আমাদের দেশের তরুণরা। যথেষ্ঠ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যে হারে হাইটেক পার্ক, আইসিটি পার্ক, লার্নিং আরনিং'র মতো প্রজেক্ট গুলো আসছে তাতে করে আগামী ৪ - ৫ বছর পর এদেশের তরুণরা যে অনেকখানি এগিয়ে যাবে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি বাজারে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমি নিজেও যেহেতু এই পেশায় তাই অনেকটাই অনুধাবন করতে পারছি তথ্যপ্রযুক্তির যে অবোকাঠামো তৈরি হয়েছে তা দিন দিনই গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে যাচ্ছে। খালি এখন দরকার সুষ্ঠ দিক নির্দেশনা যাতে করে এই বিশাল তরুণদল তাঁদের মেধাকে সঠিক কাজে লাগাতে পারে।
অন্য সবার মত সরকারের গুণ আগে গেয়ে পরে সমালোচনা আমি করবো না, সমালোচনা আমি একই সাথেই করবো কারন বর্তমান সরকার দুধে ধোঁয়া তুলসীপাতা নয়। আমাদের দেশে একটা প্রবাদ আছে "যে কামায়, সে কামড়ায়" আমাদের সরকারের এখন অনেকটাই সে রকম। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনেক অনেক প্রশংসনীয় উদ্যোগ যেমন দারিদ্রবিমোচন, বিদ্যুতখাত, কৃষি, রপ্তানীখাত, পোশাকখাত, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, খেলাধুলা ইত্যাদি, এবং আরো ফলপ্রসূ প্রজেক্ট সফল ভাবে নেয়া হয়েছে এবং তাতে করে দেশ মাথা উঁচু করে জেগে উঠেছে। আর তাতেই সমস্যাটার শুরু। ভাবনায় চলে এসেছে আমিতো অনেক করছি অতএব আমার কিছু খামখেয়ালি করারও অধিকার আছে। কিন্তু না আপনার সে অধিকার নাই। কারন আপনি আমাদের সেবক আপনার একটুখানি খামখেয়ালী পুরো জাতিকে সমস্যায় ফেলতে পারে।
এই যেমন ধরেন "যত মরাই মরে সব রাজ বাড়ির ঘাটেই কেন মরতে হবে?" যত মিছিল, মিটিং, আন্দোলন, মানব্বন্ধন, আর একাধারে শাহবাগে বামাতিদের খাই না খাই আন্দোলনতো আছেই, এই সবই কেন এই ঢাকা শহরে করতে হবে? এই শহরতো এ দেশের প্রাণের শহর, যার একমুহূর্ত থেমে যাওয়ার মত ফুসরত নেই, যার এক একটা মুহূর্ত অনেক দামি, যাকে থেমে গেলে হয় না। তবে কেন এঁকে বিদ্ধ করতে হবে আযাচিত অন্দোলন আর উদযাপনের তীরে? কেন এই তথাকথিত বর্ষপূর্তি, সম্মেলন, ইত্যাদি মানুষের ভীরে পর্যদুস্থ এই শহরেই করতে হবে? লাখ লাখ মানুষের কষ্ট, দুর্দশা, ঘন্টারপর ঘন্টা একটা শহরকে থামিয়ে দেয়া এমন উদযাপন আপনাদের মত মধ্যম আয়ের দেশে মানায় না। দয়া করে উত্তরবঙ্গের বা দক্ষিনবঙ্গের কোন ক্ষেতে বা চরে গিয়ে এ সকল অনুষ্ঠান, গণজমায়েত করুন যাতে করে অফিসগামী আর ফেরত মানুষগুলোর কোন কষ্ট না হয়। আদতে আপনাদের মত রাজনৈতিক দল্গুলোর এইসকল কর্মকাণ্ড, লোকজমায়েত, মিছিল মিটিংয়ে আজ অবধি কোন সাধারন মানুষের কল্যণ হয়েছে বলে আমার দৃষ্টিতে গোচর হয়নি। এই জায়গায়টায় উচ্চ আদলত স্বপ্রণোদিত হয়ে একটা সিদ্ধন্ত নিতে পারেন যে সরকারি ছুটি ব্যতিরেকে গণজমায়েত ঢাকায় নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাইমারী শিক্ষার স্থান একেবারে শুরুতেই এবং একই সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণও। তাই ধরে নেয়া যায় এই একটি জায়গা হবে হসপিটালের আইসিউ'র মত। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ থাকবে যাতে করে কোন ভুল বা বিচ্যুতি কোন ভাবেই কোমলমতি শিশুগুলোর ভেতরে ভুল বা মিথ্যের জন্ম না দিতে পারে। কারন সেই পুরানো প্রবাদতো সবাই জানিই "শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।" কিন্তু আদৌকি এই মেরুদন্ড অক্ষত থাকার যোগাড় আছে? এই শিশুগুলোর পাঠ্যবই যা পড়ে জাতির মেরুদন্ড শক্ত হবে তা ভুলে ভরা আর রাজনীতির মত হাস্যকর একটা বিষয়ের প্রচারে ভরা। এই বাচ্চাগুলোর কি এখনই জানা দরকার কে আওয়ামীলীগ আর কে বিএনপি? এক একটি বইয়ের পেছনে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেয়াটা আমি কোন মতেই মেনে নিতে পারিনা। লেখার ভুলগুলো না হয় ধরেই নিলাম ছাপার ভুল। কিন্তু এই লেজুড়বৃত্তি করে প্রধানমন্ত্রীর ছবিটি জুড়ে না দিলে কি হতো না? আমি শিক্ষাবিদ নই কিন্তু যাদের হাতে শিক্ষার ভার তারাতো শিক্ষাবিদ বা পণ্ডিত তাঁদের দ্বারা কি করে এই ভুল হয়? শুনেছি সরকার যথেষ্ট চেষ্টাও করছেন এইসকল যেন এড়ানো যায়। কিন্তু কেন জানি কোন একটা জায়গায় বেশ গলদ পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রতিবছর পাঠ্য বইয়ে ভুল থাকার পরও এই বিষয়টিকে অত্যাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়নি, বা যারা অতীতে এই সকল ভুল করেছে তাদের কোন শাস্তিও হয়নি। তাই মনে হচ্ছে না আদতে এর পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। আমি বঙ্গবন্ধুকে জানতে চাই, মুক্তিযুদ্ধকে জানতে চাই এবং জানানোর পক্ষে। আরো বেশি করে এই বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হউক তাই চাই। কিন্তু চাই না কোন ভুল, কোন নোংরা লেজুড়বৃত্তি, রাজনীতি লক্ষ লক্ষ কোমল শিশুগুলোর অন্তরে ভুলের জন্ম দিক।
যুগ যুগ ধরে এদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে যা এখন কেবল মাত্র পরিসংখ্যানে সীমাবদ্ধ। ব্যপারটা এমন গত বছরের তুলনায় নির্যাতন কম হলো মানে হিন্দুরা এ দেশে ভালো আছে বা সরকারের দাঁয় এড়ানোর একটা উপায় হয়ে গেলো। তবুও সেই পরিসংখ্যানই (সুত্রঃ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট) আবার তুলে দিলাম যাতে করে একটা চিত্র বোঝায় কেমন আছে বাংলা মায়ের আরেক সন্তান? ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯৮ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে এক হাজার ৯ জনকে। হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১৮ জনকে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। নিখোঁজ রয়েছেন ২২জন। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে ২০৯টি। ৩৬৬টি মন্দিরে পূজা বন্ধ করা ও ৩৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১৫ হাজার ৫৪টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এবারের বিজয় দিবসে ঘটে গেলো বাঙ্গালীর জন্য এক লজ্জার ঘটনা। যুদ্ধাপরাধের মতো জঘন্য অপরাধে শাস্তি পাওয়া সাঈদীর ছেলে বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিচ্ছে। বিশেষ করে তার বাবার মামলায় অন্যতম প্রথম স্বাক্ষীকে তার হাত থেকে সম্মাননা নিতে দেখে সত্যিই অজানা আশঙ্কা দেখা দেয়। বড় কালিমা লেপন হয় আমাদের অন্তরে, মুখে। আর ব্যানার, পেষ্টুনে, পোষ্টারেতো যথারীতি বিজয় দিবসকে স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি বলে চালিয়ে দেয়ার মত মূর্খতা আমরা রোজ দেখি চারপাশে।
তাই শুরুতেই যেমন বলছিলাম মায়ের অন্তরে প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে, হতেই থাকবে যতক্ষন না একই সাথে মায়ের সবগুলো সন্তান সংসারে মনোযোগী হবে। তাদের অন্তরেও মায়ের জন্য মমতা জন্ম না নিবে ততক্ষন এ দেশ, এ মা ভালো থাকবে না। মাগো তুমি স্বাধীন হয়েছো ঠিকই কিন্ত পরাধীনতার ছোট্ট একটা শিকলের অংশ এখনো ঝুলে আছে তোমার পায়ে। তোমার সব সন্তানরা যতদিন একতা বদ্ধ হয়ে এগিয়ে না আসবে, সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা না করবে ততদিন এ শিকল ছিড়ে ফেলা যাবেনা। চারদিকে ভুল, অন্যায়, অত্যাচার আর আস্পর্ধার ছড়াছড়ি। প্রিয় মাতৃভূমি আজ ভুলে আর অন্যায়ে জর্জরিত। যদি দেশটা মা'ই হয় তবে মায়ের আজ বুকে রক্তক্ষরণ হয় প্রতিনিয়ত, সারা শরীরে ব্যাথা। হ্যাঁ সত্যিই তাই, মা আজ ভালো নেই। ধরে নেই এদেশের এক একটা সেক্টর মায়ের এক একটা সন্তান। তাহলে কি দাড়ালো? মায়ের সবগুলো সন্তান একই সাথে ভালো অবস্থানে নাই। এক ছেলে ডাক্তার, তো একটা সন্ত্রাসী, এক মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার তো এক মেয়ে জঙ্গী, কেউ ভীষন ভালোতো কেউ বেশ মন্দ। তাই মায়ের আজ এতো কষ্ট যে একই সাথে তার সবগুলো সন্তান কেন মানুষের মত মানুষ নয়?
এবার আসুন বুঝিয়ে বলি। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তিখাত বেশ এগিয়ে গেছে। এগিয়ে গেছে আরো অনেকগুলো খাত একই সাথে। পলক ভাইয়ের লাইভ অনুষ্ঠান যদিও নিজের অনেকটা আত্মপ্রচার তবুও তার মাঝেও অনেক কিছুই পাচ্ছে আমাদের দেশের তরুণরা। যথেষ্ঠ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যে হারে হাইটেক পার্ক, আইসিটি পার্ক, লার্নিং আরনিং'র মতো প্রজেক্ট গুলো আসছে তাতে করে আগামী ৪ - ৫ বছর পর এদেশের তরুণরা যে অনেকখানি এগিয়ে যাবে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি বাজারে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমি নিজেও যেহেতু এই পেশায় তাই অনেকটাই অনুধাবন করতে পারছি তথ্যপ্রযুক্তির যে অবোকাঠামো তৈরি হয়েছে তা দিন দিনই গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে যাচ্ছে। খালি এখন দরকার সুষ্ঠ দিক নির্দেশনা যাতে করে এই বিশাল তরুণদল তাঁদের মেধাকে সঠিক কাজে লাগাতে পারে।
অন্য সবার মত সরকারের গুণ আগে গেয়ে পরে সমালোচনা আমি করবো না, সমালোচনা আমি একই সাথেই করবো কারন বর্তমান সরকার দুধে ধোঁয়া তুলসীপাতা নয়। আমাদের দেশে একটা প্রবাদ আছে "যে কামায়, সে কামড়ায়" আমাদের সরকারের এখন অনেকটাই সে রকম। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনেক অনেক প্রশংসনীয় উদ্যোগ যেমন দারিদ্রবিমোচন, বিদ্যুতখাত, কৃষি, রপ্তানীখাত, পোশাকখাত, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, খেলাধুলা ইত্যাদি, এবং আরো ফলপ্রসূ প্রজেক্ট সফল ভাবে নেয়া হয়েছে এবং তাতে করে দেশ মাথা উঁচু করে জেগে উঠেছে। আর তাতেই সমস্যাটার শুরু। ভাবনায় চলে এসেছে আমিতো অনেক করছি অতএব আমার কিছু খামখেয়ালি করারও অধিকার আছে। কিন্তু না আপনার সে অধিকার নাই। কারন আপনি আমাদের সেবক আপনার একটুখানি খামখেয়ালী পুরো জাতিকে সমস্যায় ফেলতে পারে।
এই যেমন ধরেন "যত মরাই মরে সব রাজ বাড়ির ঘাটেই কেন মরতে হবে?" যত মিছিল, মিটিং, আন্দোলন, মানব্বন্ধন, আর একাধারে শাহবাগে বামাতিদের খাই না খাই আন্দোলনতো আছেই, এই সবই কেন এই ঢাকা শহরে করতে হবে? এই শহরতো এ দেশের প্রাণের শহর, যার একমুহূর্ত থেমে যাওয়ার মত ফুসরত নেই, যার এক একটা মুহূর্ত অনেক দামি, যাকে থেমে গেলে হয় না। তবে কেন এঁকে বিদ্ধ করতে হবে আযাচিত অন্দোলন আর উদযাপনের তীরে? কেন এই তথাকথিত বর্ষপূর্তি, সম্মেলন, ইত্যাদি মানুষের ভীরে পর্যদুস্থ এই শহরেই করতে হবে? লাখ লাখ মানুষের কষ্ট, দুর্দশা, ঘন্টারপর ঘন্টা একটা শহরকে থামিয়ে দেয়া এমন উদযাপন আপনাদের মত মধ্যম আয়ের দেশে মানায় না। দয়া করে উত্তরবঙ্গের বা দক্ষিনবঙ্গের কোন ক্ষেতে বা চরে গিয়ে এ সকল অনুষ্ঠান, গণজমায়েত করুন যাতে করে অফিসগামী আর ফেরত মানুষগুলোর কোন কষ্ট না হয়। আদতে আপনাদের মত রাজনৈতিক দল্গুলোর এইসকল কর্মকাণ্ড, লোকজমায়েত, মিছিল মিটিংয়ে আজ অবধি কোন সাধারন মানুষের কল্যণ হয়েছে বলে আমার দৃষ্টিতে গোচর হয়নি। এই জায়গায়টায় উচ্চ আদলত স্বপ্রণোদিত হয়ে একটা সিদ্ধন্ত নিতে পারেন যে সরকারি ছুটি ব্যতিরেকে গণজমায়েত ঢাকায় নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাইমারী শিক্ষার স্থান একেবারে শুরুতেই এবং একই সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণও। তাই ধরে নেয়া যায় এই একটি জায়গা হবে হসপিটালের আইসিউ'র মত। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ থাকবে যাতে করে কোন ভুল বা বিচ্যুতি কোন ভাবেই কোমলমতি শিশুগুলোর ভেতরে ভুল বা মিথ্যের জন্ম না দিতে পারে। কারন সেই পুরানো প্রবাদতো সবাই জানিই "শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।" কিন্তু আদৌকি এই মেরুদন্ড অক্ষত থাকার যোগাড় আছে? এই শিশুগুলোর পাঠ্যবই যা পড়ে জাতির মেরুদন্ড শক্ত হবে তা ভুলে ভরা আর রাজনীতির মত হাস্যকর একটা বিষয়ের প্রচারে ভরা। এই বাচ্চাগুলোর কি এখনই জানা দরকার কে আওয়ামীলীগ আর কে বিএনপি? এক একটি বইয়ের পেছনে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেয়াটা আমি কোন মতেই মেনে নিতে পারিনা। লেখার ভুলগুলো না হয় ধরেই নিলাম ছাপার ভুল। কিন্তু এই লেজুড়বৃত্তি করে প্রধানমন্ত্রীর ছবিটি জুড়ে না দিলে কি হতো না? আমি শিক্ষাবিদ নই কিন্তু যাদের হাতে শিক্ষার ভার তারাতো শিক্ষাবিদ বা পণ্ডিত তাঁদের দ্বারা কি করে এই ভুল হয়? শুনেছি সরকার যথেষ্ট চেষ্টাও করছেন এইসকল যেন এড়ানো যায়। কিন্তু কেন জানি কোন একটা জায়গায় বেশ গলদ পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রতিবছর পাঠ্য বইয়ে ভুল থাকার পরও এই বিষয়টিকে অত্যাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়নি, বা যারা অতীতে এই সকল ভুল করেছে তাদের কোন শাস্তিও হয়নি। তাই মনে হচ্ছে না আদতে এর পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। আমি বঙ্গবন্ধুকে জানতে চাই, মুক্তিযুদ্ধকে জানতে চাই এবং জানানোর পক্ষে। আরো বেশি করে এই বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হউক তাই চাই। কিন্তু চাই না কোন ভুল, কোন নোংরা লেজুড়বৃত্তি, রাজনীতি লক্ষ লক্ষ কোমল শিশুগুলোর অন্তরে ভুলের জন্ম দিক।
যুগ যুগ ধরে এদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে যা এখন কেবল মাত্র পরিসংখ্যানে সীমাবদ্ধ। ব্যপারটা এমন গত বছরের তুলনায় নির্যাতন কম হলো মানে হিন্দুরা এ দেশে ভালো আছে বা সরকারের দাঁয় এড়ানোর একটা উপায় হয়ে গেলো। তবুও সেই পরিসংখ্যানই (সুত্রঃ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট) আবার তুলে দিলাম যাতে করে একটা চিত্র বোঝায় কেমন আছে বাংলা মায়ের আরেক সন্তান? ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯৮ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে এক হাজার ৯ জনকে। হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১৮ জনকে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। নিখোঁজ রয়েছেন ২২জন। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে ২০৯টি। ৩৬৬টি মন্দিরে পূজা বন্ধ করা ও ৩৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১৫ হাজার ৫৪টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এবারের বিজয় দিবসে ঘটে গেলো বাঙ্গালীর জন্য এক লজ্জার ঘটনা। যুদ্ধাপরাধের মতো জঘন্য অপরাধে শাস্তি পাওয়া সাঈদীর ছেলে বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিচ্ছে। বিশেষ করে তার বাবার মামলায় অন্যতম প্রথম স্বাক্ষীকে তার হাত থেকে সম্মাননা নিতে দেখে সত্যিই অজানা আশঙ্কা দেখা দেয়। বড় কালিমা লেপন হয় আমাদের অন্তরে, মুখে। আর ব্যানার, পেষ্টুনে, পোষ্টারেতো যথারীতি বিজয় দিবসকে স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি বলে চালিয়ে দেয়ার মত মূর্খতা আমরা রোজ দেখি চারপাশে।
তাই শুরুতেই যেমন বলছিলাম মায়ের অন্তরে প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে, হতেই থাকবে যতক্ষন না একই সাথে মায়ের সবগুলো সন্তান সংসারে মনোযোগী হবে। তাদের অন্তরেও মায়ের জন্য মমতা জন্ম না নিবে ততক্ষন এ দেশ, এ মা ভালো থাকবে না। মাগো তুমি স্বাধীন হয়েছো ঠিকই কিন্ত পরাধীনতার ছোট্ট একটা শিকলের অংশ এখনো ঝুলে আছে তোমার পায়ে। তোমার সব সন্তানরা যতদিন একতা বদ্ধ হয়ে এগিয়ে না আসবে, সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা না করবে ততদিন এ শিকল ছিড়ে ফেলা যাবেনা।