ইস্তাম্বুল ভ্রমন – শেষ ভাগ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
কাদিকয় ফেরী ঘাট থেকে একটু এগিয়ে গেলেই পার্ক, সেখানে নানা ধরনের খাবারের দোকান। সাগরের তীর ঘেঁসে বলে খাবার খেতে খেতে সাগরের দৃশ্য দেখা যায়। দুপুর হয়ে গেছে, নামাজের সময়, দূরে একটা মসজিদ দেখলাম। যেতে যেতে পথে বাস স্টেশন পেলাম। এখান থেকে তুরস্কের অন্য শহরে কিংবা এই শহরে যাতায়াত করা যায়। সকাল বেলা নাস্তা খাবার সময় একজন স্থানীয় কাস্টম অফিসারের সাথে কথা হয়েছে। দেশের অন্য অংশ থেকে ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশে আসতে প্রায় সবাই এই ফেরী ব্যবহার করে।হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে এলাম। মসজিদের নীচে অজু করার জায়গা আছে, টয়লেট ব্যবহার করতে হলে একটু দূরে গিয়ে পয়সা দিয়ে ঢুকতে হয়। পানি বেশ ঠাণ্ডা, অজু করে নামাজ পরে নিলাম। হায়দার পাশা প্রোটোকল মসজিদ বেশ জমকালো , নামাজ পড়ার ব্যবস্থা বেশ সুন্দর, ভেতরে ব্যাগ রাখার ব্যবস্থা আছে। নামাজ পড়ে আশেপাশের এলাকাতে একটু ঘুরে আবার ফেরী ঘাটে এলাম।
কাদিকয় ফেরী ঘাট ও আশেপাশের এলাকা
ফেরী ছাড়ার সময় হয়ে গেছে, আমার ও ইস্তাম্বুলে থাকার সময় শেষের দিকে, তাড়াতাড়ি তিন লিরা দিয়ে টোকেন নিলাম মেসিন থেকে। ফেরী তখন ছাড়ি ছাড়ি করছে। এবার ফেরীর অন্য দিক দিয়ে মারমারা সাগর দেখতে দেখতে ইনামুনুতে চলে এলাম। ফেরিঘাটে তুর্কী খাবারের বেশ চালু দোকান আছে কয়েকটা। সেখান থেকে দুপুরের খাবার নিয়ে নিলাম। আবার ট্রামে, এবার আমাকে জাইতিনবুরনু স্টেশনে ট্রাম ছেড়ে মেট্রোতে করে বিমান বন্দরে যেতে হবে। সুন্দর ভাবে ইংরাজি লিখা সাইন পোস্ট দেখে কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে পৌঁছে গেলাম। লাগেজ সংগ্রহ করে সব ফর্মালিটি শেষে বিমানের জন্য অপেক্ষা, আমি দেশে ফিরছি, আমার দেশ আমার প্রিয় দেশে।
আকসারী এলাকা
ফেরার পথে কিছু সময় পেলাম ইস্তাম্বুল ঘুরে দেখার, বিমান বন্দরে বসে না থেকে ইমিগ্রেশানে গিয়ে সিল লাগিয়ে বাহিরে চলে এলাম। এবার আর হাভাতাস বাসে না গিয়ে মেট্রোতে করে বেড়াতে বের হলাম। এয়ারপোর্ট থেকে একটা মেট্রো লাইন প্রায় ১৬ টা স্টেশনে থেমে আকসারীতে আসে। এখান থেকে ট্রামে করে সুলতান আহমেত এলাকায় যাওয়া যায়। নিচে সাবওয়ে এলাকাতে অনেক ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান। স্টেশন থেকে উপরে উঠলেই বিশাল চত্তর। রাস্তা পার হলে একটা সুন্দর পার্ক এবং এর পাশেই বড় একটা মসজিদ। দুপুর হয়ে গেছে ততক্ষণে,শুক্রবার বলে জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে গেলাম। অজুর জন্য বেশ বড় লাইন। অনেক মানুষ স্যুট প্যান্ট পড়ে নামাজ পড়তে এসেছে। আমাকে একজন মুসল্লি তার জায়নামাজে বসতে দিল। নামাজ শেষে কিছুক্ষণ পার্কে বসে নাস্তা করে নিলাম।
মুরাত পাশা মসজিদ আকসারী
আকসারী এলাকাতে বেশ বড় একটা পাতাল মার্কেট আছে। এখানে অনেক জিনিসপত্র পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ সেখানে ঘুরলাম তারপর উপরে এসে একটা দোকান থেকে কিছু টার্কিশ চকলেট কিনলাম। এই চকলেটগুলো কুরদিস্থানেও পাওয়া যেত, অনেক বছর পর এবার তুরস্ক থেকেই তা কেনার সুযোগ পেলাম। ঘণ্টা তিনেক আশেপাশের এলাকা বেরিয়ে আবার মেট্রোতে চড়ে বসলাম। সময় মত বিমান বন্দরে পৌঁছে গেলাম।এবার আর দেশের পথে না, আমাকে যেতে হবে আফ্রিকাতে। ইস্তাম্বুল থেকে বিমান ঘণ্টা খানেক সময় রুয়ান্ডার কিগালিতে থেমে আমাদেরকে উগান্ডার এন্টেবিতে নামিয়ে দিল। ইস্তাম্বুলে আনন্দময় কিছু সময় কাটাতে পেরে বেশ ভাল লাগল। মনে মনে বলছিলামঃ
আবার আসিব ফিরে এই দেশে, এই শহরে
ভাল লাগা মন নিয়ে
কোন এক সোনালি ভোরে...
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...
অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা
আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************
যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=
০১।
চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন
কুড়ি শব্দের গল্প
জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!
সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন