somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে শিবিরের যত তথ্য

১৮ ই জুলাই, ২০১০ রাত ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'সমর্থক-কর্মী-সাথী পদ পেরিয়ে শিবিরের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে সদস্য। সদস্যরা সবাই পরীক্ষিত বা ত্যাগী মনোভাবের। ইসলামী ছাত্রশিবিরের দেশব্যাপী এ রকম সদস্য সংখ্যা হচ্ছে চার হাজার ৮০০। এ ছাড়া কর্মী-সাথীসহ সব মিলিয়ে নেতা-কর্মীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ। তাদের বড় একটি অংশকে সংগঠন থেকে আর্থিক সহযোগিতাও দেওয়া হয়। তাদের অনেকেই সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আত্দত্যাগের জন্যও প্রস্তুত। শিবিরের রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়া থেমে নেই। তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যাপক স্টাডি বা পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। এ-সংক্রান্ত সরকারের গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ সেল গঠন করা যেতে পারে।'
একটি গোয়েন্দা সংস্থা সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির নিয়ে এক প্রতিবেদনে এ রকমই মন্তব্য করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিবিরকে সাংগঠনিকভাবে মোকাবিলা করতে হলে অবশ্যই ছাত্রলীগ বা সমমনা ছাত্র সংগঠনে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় আদর্শে উজ্জীবিত হলেও শিবির মূলত মওদুদী দর্শনে বিশ্বাসী। জামায়াতে ইসলামীর কথা ছাড়া এক চুলও নড়ে না তারা। চিন্তা-চেতনায় ধর্মীয় অনূভূতিতে অটল এ সংগঠনটি গণতন্ত্রের ভাবধারা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিপন্থী। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের মতবাদে বিশ্বাসীর সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে তবে অচিরেই সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা আছে। প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়, সব মিলিয়ে সংগঠনটি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য বিপজ্জনকই বলা যায়।
সংশ্লিষ্ট এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, প্রতিবেদনটিতে শিবির সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দিতে না পারলেও মোটামুটি একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। ক্যাডারভিত্তিক এ সংগঠনটি তাদের সব কার্যক্রমে অতিগোপনীয়তা রক্ষা করে। ফলে তাদের কাছ থেকে তথ্য উদ্ধার করা অনেক কঠিন। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসা এবং রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সহিংস ঘটনা আর যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর পর একটু বেকায়দায় আছে শিবির। এর পরও রিক্রুটমেন্ট বন্ধ নেই। এটা বন্ধ না করা গেলে শিবিরকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। এ জন্য দরকার সচেতনতা।
প্রতিবেদনটিতে সংগঠনের জন্মের ইতিহাস, অর্থের উৎস, রিক্রুটমেন্ট-প্রক্রিয়া ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। বলা হয়, ছাত্রশিবির মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টার্গেট করে রাজনীতি করে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান গাড়তে চাইলে প্রথমে ওই ক্যাম্পাসের আশপাশে আস্তানা গড়ে তোলে। প্রয়োজনে শিবির কর্মী-সমর্থকরা ওইসব এলাকায় বিয়ে করে সংসারও করে। শিবিরের অন্যতম টার্গেট দরিদ্র শ্রেণীর ছাত্র। তাদের আর্থিক সহযোগিতা, টিউশনি জোগাড় করে দেওয়াসহ অন্য আরো ছোটখাটো সুবিধা দিয়ে রিক্রুটমেন্ট-প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করে। বাদ যায় না স্কুলের কোমলমতি ছাত্ররাও। সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরির জন্য শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এমনকি জামায়াত পর্যন্ত এগিয়ে আসে। এসব ক্ষেত্রে গত চারদলীয় জোট সরকারের আমল ছিল শিবিরের জন্য স্বর্ণযুগ।
শিবিরের মৌলিক কার্যক্রম হচ্ছে ইসলাম ধর্মকে ভিত্তি করে কর্মসূচি গ্রহণ করা। একটি শক্ত আদর্শের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালায় তারা। 'মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী'_এ স্লোগান ব্যবহার করে থাকে। এ জন্য শিবিরকর্মীরা যেকোনো বিষয়ে 'এক্সট্রিম' সিদ্ধান্ত নিতে অটল থাকে। রিক্রুটমেন্টের প্রথম ধাপেই পাঠচক্রের মাধ্যমে 'জিহাদি' মনোভাব জাগিয়ে তোলা হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে। পরে শিবিরের কর্মী থেকে আরেক ধাপে যেতে কোরআন, হাদিস, ইসলামী নীতিমালা, সংগঠনের গঠনতন্ত্র, মাওবাদ, মার্কসবাদ, সাম্যবাদ এমনকি অন্য ধর্ম সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে শিবিরের সব সিদ্ধান্ত আসে সদস্য সভায়। আর কেন্দ্রীয় সদস্য পরিষদ নিয়ন্ত্রণ হয় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে।
প্রতিবেদনটিতে শিবিরের অর্থের উৎস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলা হয়, তাদের নিজস্ব তহবিল আছে। শিবির সমর্থিত অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব থেকে সহায়তা ছাড়াও চাঁদা বা 'বায়তুল মাল' নিলেও সেটা যে দেয়, সে ব্যক্তি ছাড়া কেউ জানে না। অনেকটা গোপনেই চাঁদা আদায় করা হয়।
প্রতিবেদনে শিবিরের অতীত ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়, ১৯৬৬ সালে ইসলামী চিন্তা-চেতনা নিয়ে তৎকালীন ইসলামী ছাত্রসংঘ প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময় মতিউর রহমান নিজামী ছাত্রসংঘের পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে নিজামী পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি হন আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। এ দুজনসহ ওই সংগঠনের সব নেতা-কর্মীই মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা প্রত্যক্ষভাবে এ সংগঠনের ব্যানারেই হত্যাযজ্ঞ, লুণ্ঠন, ধর্ষণসহ নানা অপকর্ম করেছে। পরে ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিদ্দিকবাজারে (মতান্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে) ইসলামী ছাত্রসংঘের একটি অংশের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আত্দপ্রকাশ ঘটে। মো. কামারুজ্জামান নবগঠিত ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। তিনিও ১৯৭১ সালে শেরপুরে স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

তথ্যসূত্র: Click This Link
১৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×