somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয় প্রেমিকারা আমার

০৭ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আমার প্রেমিকারা আমাকে ছেড়ে গেছে। এই শীরোনামে আমি একটি সিরিজ লিখছি।



প্রিয় প্রেমিকারা আমার



আজ আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না। কেবলি ইচ্ছে করে পাখির মত উড়ে উড়ে চলে যাই পার্সপোর্ট আর ইমিগ্রেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে তেপান্তরের দেশে দেশে। তবে দিন শেষে আর পাখি হওয়া হয়ে উঠেনা। শীতাতাপ অফিস ঘর থেকে বেরোলে দোজকের ওম আমাকে ঠেসে ধরে। আমি তড়পাই। শহরের জণ্ডিস বাতিরা আমাকে স্বাগত জানায়। তারপর ক্রমশ রাত দীর্ঘ হয়, তখন আমার মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায় রাত জেগে পাশের বাসার মৌসুমীর কাছে ভুল বানানে লেখা চিঠির কথা। আহ! মৌসুমী এখন কোথায় আছে? শুনেছি স্বামীর সাথে গ্রামে থাকে। স্বামী প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। লাল রঙের একটি মোটর সাইকেল আছে। মৌসুমীকে সেই বাইকে নিয়ে তার দাত উচু পেটমোটা স্বামী প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তুতো একদিন চিত্রা মধুমতির পাড়ে নিয়ে যায় ঘুরতে। তখন তারা কী কথা বলে, আমার জানতে খুব ইচ্ছে করে। তখন কী মৌসুমী তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে, ‘তোমার হাসিটা খুব সুন্দর। হাসলে পুরুষ মানুষের গালে যে টোল পড়ে তাতো তোমাকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না।’ আমি তখন আরও খিল খিল করে হেসে উঠি। সে তখন বলে ‘এই হাসি তুমি কারোর সামনে গিয়ে কখনো হাসবে না।’ আমি তখন তাকে বুকের মধ্যে নিয়ে নেই। মনে হয় শিমুল তোলার মত নরম। আমার তখন ঘুম পেয়ে যায়।

জানি মৌসুমীর স্বামী হাসলে গালে টোল পড়ে না। তবু মৌসুমী তার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কী কথা বলে? আমার ভিশন জানতে ইচ্ছে করে তাহাদের কথোপকথোন। এর মধ্যেই মৌসুমীর মসৃন পেট উচু হতে থাকে, তাঁর হাটা চলাও কমে যায়। বুঝতে পারি বছর ঘোরার আগেই তার বুক আরেকজন দখল করবে।

মৌসুমীকে আমার কখনো বলা হয়নি, ‘এইরকম স্বচ্ছ মুখ আমি আর কোথাও দেখবো না।’ তাঁকে আমার অনেক কিছুই বলা হয়নি। আমার কোনো প্রেমিকাকেই আমার কিছু বলা হয়নি। আমি বেঁচে থাকতে চেয়েছিলাম ভিশনভাবে আমার মধ্যে। কিন্তু শেষতক আমি বেঁচে আছি অন্যদের সময়। সেই সময়ের কোনো কিছুই আমার হাতের মধ্যে নেই। আমি শুধু ঘটে যাওয়া সময় নিয়ে হাপিত্যেশ করি।

মৌসুমীর সাথে আমার আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। বছরান্তে একবার বাড়ি যাই। আমার আসার খবর শুনে সে ও তাঁর বাবার বাড়ি আসে। আমাদের মধ্যে কোনো কথা হয়না। আমার ভাঙা দো’তলা বাড়ির দক্ষিণার জানালা দিয়ে দেখি মৌসুমী তাদের উঠানে দাঁড়িয়ে তাঁর মেয়েকে খুব আদর করছে। আর ঠিক তখন কোথা থেকে উড়ে আসে এক দঙ্গল বাতাস। বাতাসতো নয় যেনো আগুনের হল্কা। যেনো দোজকের জানালা দরজা খুলে গেছে। আমি তাকাতে পারি না। তবু আমার চোখ চলে যায়। দেখি একজন মা সন্তানকে গভির মমতা নিয়ে জড়িয়ে ধরেছে বুকে।

বিকাল বেলা তারা দাত উচু পেটমোটা স্বামী শব্দ বরে লাল মোটর সাইকেল নিয়ে আসে। মৌসুমীর মেয়েটি মোটর সাইকেলের সামনে গুটিশুটি মেরে বসে। মৌসুমী তার স্বামীর কোমর জড়িয়ে ধরে। মৌসুমীর স্বামী তখন অহংকারী ভঙ্গিতে শব্দ করে মোটর সাইকেল চালিয়ে চলে যায়। আমার দিকে তারা কেউ ফিরেও তাকায় না।

আমার মা তার বয়সের চেয়ে বড় দীর্ঘশ্বাস গোপন করে। আমি আমার মাকে বুঝতে দেই না আমার মধ্যেও দীর্ঘশ্বাস হাপিত্যেশ করছে।

আমার প্রেমিকারাই এমন। আমি যাদের এক সময় অবহেলা করেছি, ভেবেছি আমি ছাড়া আর কে পাবে তাহাদের অধিকার। তারা যখন ছিলো তাদের থাকাটাই স্বাভাবিক স্বতসিদ্ধ ধরে আমি চলে গেছি আমার আপন ভুবনে। আমি আমার মত বাঁচতে চেয়েছি। কিন্তু এই দূরান্ত সময় যখন একজন নারী শুধু যৌনতার সঙ্গি নয়, আমার দাবী তাদের কাছে আরও বেশি ঢের। আমার মন্দ লাগা ভালো লাগা আর তার সব বিষয় আমি যেনো অতলান্তে ডুব দিয়ে স্পর্শ করবো। তখন দেখি আমার সব প্রেমিকা আমাকে একে একে ছেড়ে গেছে। হায় প্রেম, এখন আমাকে শুধু বিদ্ধ করে। ভালোবাসে না। স্মৃতি বড় অভিশপ্ত পুরানকথা।

(চলবে)


৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×