পরিচিতিঃ বান্দরবানের থানচি ইউনিয়নের মধ্যে পরে তিন্দু রেমাক্রি। পাথুরে নদীর পাশ ঘেষে গেছে এই যায়গা গুলি। নাফাখুম এ একটি ঝরনা আছে, এটা রেমাক্রি তে। থানচি থেকে নৌকা নিয়ে তিন্দু, রেমাক্রি যেতে হয়
তিন্দু
রাজা পাথর, তিন্দুর সব চেয়ে বড় পাথর। পাহারিরা এটাকে তাদের সৌভাগ্যের প্রতিক মনে করে
তিন্দু বাজার
পাহারিরা বাজারের জন্যে থানচি বাজারে যাচ্ছে
ছোটোওয়ারি বাজার, এটা তিন্দুর আগেই পরবে
যাওয়ার পথে নৌকার ইঞ্জিনের প্রপেলার গেল ভেঙ্গে, পাক্কা ১ ঘন্টা বসে থাকতে হল
১ টাকা পিস কলা, খেয়ে খোসাটা ফেললাম, ওমনি ছাগু বাবাজি সেটাকে মুখে পুরে নিল
পাহারি গাইড আমাদের নিয়ে চললো নাফাখুম
নাফাখুম ফলস
যেভাবে যাবেন
এর আগে অনেকেই বর্ননা করেছেন কিভাবে যাওয়া যায়। আমি সম্প্রতি ঘুরে এলাম তাই এখনকার পথ এবং রেট সম্পর্কে জানিয়ে দিচ্ছি
ঢাকা থেকে শ্যামলী,এস আলম, ইউনিক,সৌদিয়া যায় বান্দরবান। ভারা ৩৮০ টাকা, সৌদিয়া ৩৫০ টাকা (গাড়ি ভালনা) । বাস গুলো কলাবাগান, ফকিরাপল, সায়েদাবাদ থেকে ছেরে যাবে রাত ১১.৫০
ভাগ্য ভাল থাকলে বান্দরবান পৌছে যাবেন ৮ টার মধ্যে। আমরা ১০ টায় পৌছেছিলাম, কারন ঢাকায় অনেক জ্যাম ছিল
বাস স্ট্যান্ড থেকে রিকশা নিয়ে যাবেন থানচির বাস স্ট্যান্ড এ, ১৫ টাকা ভারা নেবে রিকশায়। থানচির টিকিট নেবে ১৬৫ টাকা করে। ১১ টায় রউনা দিলে বিকেল ৪টায় পৌছাবেন থানচি। যেতে হবে পিক ৬৯ রোড হয়ে। এটা বাংলাদেশের সব চেয়ে উচু রোড। যারা হার্টের রোগী তারা না যাওয়াই ভাল কারন রাস্তা দেখলে হার্ট এটাক হতে পারে
থানচি তে পৌছে সেখানে থাকার ব্যাবস্থা করতে হবে প্রথমে। এখানে সরকারী রেস্ট হাউস আছে। রুম খালি না থাকলে হয় পাহাড়ি দের বাসায় থাকতে হবে, নতুবা বাজারের বেঞ্চ এ রাত কাটাতে হবে। আমি যেয়ে দেখলাম এখন পাহাড়িদের বাসায় থাকা তেমন একটা যায়না। রেস্ট হাউসে রুম ভারা নেবে ৬০ টাকা আর পানির বিল আপনে যা দেন। দারোয়ানের নাম জহির, খুব ভাল মানুষ
এখন মাঝি ঠিক করতে হবে। আমরা দারোয়ান জহির ভাই কে বলেছিলাম মাঝির ব্যাপারে, সে আমাদের মামুন মাঝির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। মামুন মাঝি ওই এলাকার সব চেয়ে পরিচিত মাঝি এবং পাহারি দের সাথে তার ই সব চেয়ে ভাল সখ্য। আপনারা অন্য যেকোনো মাঝি ঠিক করতে পারবেন। মামুন মাঝি আমাদের তার রেট বলল, দিনে যেয়ে দিনে আসলে (তিন্দু,রেমাক্রি,নাফাখুম) ৩২০০ টাকা আর রাতে থাকতে হলে ১৫০০ টাকা এক্সট্রা। মোট ৪৭০০ টাকা দিতে হবে। দিনে যেয়ে দিনে আসা খুবই কষ্টকর। তাই রাতে রেমাক্রিতে থাকলে ভাল। আপ্নারা অন্য মাঝির সাথে দরদাম করে ঠিক করে নিতে পারবেন। আমাদেরতা শ্যালো নৌকা ছিল, তাই বেশি দিতে হয়েছে। এতে সময় অনেক কম লাগে
খাউয়া দাউয়া সঙ্গে নিতে পারেন। অথবা রেমাক্রি তে খাউয়ার অর্ডার দিলে রাতে ওরা রান্না করে দিবে। (আমরা অর্ডার দিয়েছিলাম, মুরগির মাংশ আর চিংরি ঝোল করেছিল, কিন্তু ভাত টা খুব গন্ধ ছিল, কারন জুম চাউল আর তামাকের গন্ধ) অথবা আপনি নিজেউ রান্না করে খেতে পারেন। থানচি ছারার আগে আপনার নাম, ঠিকানা, বাসার ফোন নাম্বার পুলিশ, এবং বিজিবি কে দিয়ে যেতে হবে। মাঝি ই এই ব্যাবস্থা করে দিবে। তবে মামুন মাঝির সাথে সবার ই ভাল পরিচয়, তাই আমাদের কিছু করতে হয়নি, সব ওই করে দিয়েছে।
রেমাক্রি পৌছে আপনাকে গাইড ঠিক করতে হবে নাফাখুম যাউয়ার জন্যে। পাহারিদের মধ্যে বললেই গাইড পেয়ে যাবেন। রেট হয়ত ভ্যারি করবে, আমাদের ৫০০ টাকা দিতে হয়েছিল গাইড কে। এটা অবশ্য মাঝি ই ঠিক করে দিয়েছিল। যতটা রিমোট ভেবেছিলাম, ততটাই আধুনিক রেমাক্রি। এখানে সৌর বিদ্যুৎ আছে, মিনারেল ওয়াটার, সফট ড্রিঙ্কস, চিপস, বিস্কুট সব ই পাবেন তবে দামটা একটু বেশি। মোবাইল ও চার্জ করতে পারবেন ১০-১৫ টাকায় বিনিময়ে
গাইডের সাথে নাফাখুম রঊনা দিবেন। এখানে পাক্কা দেড় থেকে ২ ঘন্টা হাটতে হবে। মোট ৫ ঘন্টা হাটতে হবে।
রেমাক্রি তে রেস্ট হাউস আছে, মাঝি ই সব ঠিক করে দিবে। রুম ভারা ৫০-৬০ টাকা । এর পাশেই বিজিবি ক্যাম্প আছে, তাই নিরাপত্তা নিয়ে কোনো চিন্তাই নেই।
পরের দিন সকালে থানচি র উদ্যেশ্যে রওনা দিন, ১০ টার মধ্যে পৌছে যাবেন। সাড়ে ১০ টার গাড়িতে বান্দরবানের উদ্যেশ্যে রউনা দিন। ৩ টার দিকে পৌছাবেন। এখন রাতের বাসের টিকিট কেটে ঢাকা রওনা দিন
আমরা ২ জন গিয়েছিলাম তাই খরচ বেশি লেগেছিল। টিম করে গেলে খরচ অনেক কমে যাবে। নিরাপত্তা নিয়ে আমি অনেক চিন্তিত ছিলাম, কিন্তু যেয়ে দেখি, গহিন পাহারের মধ্যে প্রতিটা বাজারেই বিজিবি ক্যাম্প। তাই কোনো টেনশন ই নেই।
মোবাইল নেটওয়ার্ক থানচি তে পাবেন শুধু রবি আর টেলিটক, এটা ছোটওয়ারী বাজার পর্যন্ত পাওয়া যাবে এর পরে আর পাবেন না। জিপির নেটওয়ার্ক আউট হয়ে যাবে থানচি পৌছানোর অনেক আগে মানে নীলগিরি পার হলেই।
তিন্দু, নাফাখুমের আসল সৌন্দর্য দেখার সময় হল বর্ষা কালে। কিন্তু বর্ষাকালে ওই নদী দিয়ে যাওইয়া একটু ঝুকি হয়ে যায় কিন্তু তার পরেউ যাউয়া যায়। তবে আমাদের মাঝি বলল বর্ষার ঠিক শেষে মানে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এর দিকে যাওয়া সবচেয়ে ভাল। তখন বর্ষার পানিও থাকে কিন্তু অত স্রোত থাকেনা। তাই তখন ই যাওয়ার উত্তম সময়।
সময় পেলে ঘুরে আসবেন। ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:৪১