somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

WEDDING PHOTOGRAPHY সম্পর্কে আমার কিছু কথা

২১ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার গত কয়েক মাসের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে আমরা এখন একটি " WEDDING PHOTOGRAPHY ERA" এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। বন্ধু-বান্ধব তথা আত্মীয় স্বজন অনেকের বিয়ের ছবি দেখার পর আমার এই উপলব্ধিটুকু হয়েছে। বিয়ের কিংবা হলুদের ছবির এ্যালবামগুলো দেখলেই সহজে বুঝা যায় যে, বর কনে তথা তাদের পরিবারগুলো সাধ্যমত চেষ্টা করেছে নিজেদের অনুষ্ঠানটাকে প্রাণবন্ত করে তোলার জন্যে ... কিন্তু এই প্রানবন্ত ছবিগুলোর মধ্যে কিছু অসঙ্গতিও চোখে পড়ার মতো......

বর কনের ছবিগুলো একটু ভালো করে দেখলেই বুঝা যায় যে,নিজেদের ছবিগুলো যেন সুন্দর আসে সে ব্যাপারে তাদের চেষ্টা মোটামুটি প্রাণান্তকর। ছবিভেদে দেখা যায়, কখনো হাসি মুখে, কখনো একে অপরের হাতে হাত রেখে,চোখে চোখ রেখে কিংবা নিতান্তই খেয়ালিপনার বশে কাঁধে মাথা রেখে,পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে,একে অপরকে চাঁদ দেখিয়ে ( ...... অনেক লম্বা তালিকা) বিভিন্ন পোজে (!!!) ছবি তুলছেন। কনের সিঙ্গেল ছবিগুলো আবার বরের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে, কনে নাকে হাত দিয়ে, এক চোখ ঢেকে রেখে, বাঁকা চোখে, অন্য দিকে তাকিয়ে,কোমরে কিংবা নিজের চিবুকে হাত রেখে (এই তালিকাটা এতো লম্বা যে লিখে শেষ করা যাবে না) ছবি তুলছেন। কিছু কিছু ছবিতে দেখা যায়,কনে হিন্দি ছবির নায়িকাদের আদলে নিজের হাতকে বিশেষ কায়দায় বাঁকিয়ে রেখেছেন যেটা কিনা এক কথায় কিম্ভূতকিমাকার, আমি এমনও ছবি দেখেছি যেখানে কনে বরের গাল টিপে দিচ্ছে আর বর এর অবস্থা অনেকটা ছেড়ে দে মা কাঁদি বাচি অবস্থা, অন্য আরেক কাপল কে দেখেছিলাম এক সাথে লাফ মারতে। আমাদের বর সাহেবেরাও কোন অংশে কম যান না, এক বরকে দেখেছি সিন্দাবাদের সোলেমানি তরবারি নিয়ে বিয়ের মঞ্চে আবিষ্ট হয়েছেন,কেবল সেখানেই যদি উনি থামতেন তাহলেও বাঁচা যেত উনি ছবির পোজ দিয়েছেন এক হাতে কনের হাত এবং অন্য হাতে তরবারি ধরে (ভাবটা এমন যে মাত্র যুদ্ধে জয়ী হয়ে রাজকন্যাকে নিয়ে ঘরে ফিরছেন), আবার এমনও দেখেছি যে, বর কনে দুজনেই V চিহ্ন দেখাচ্ছেন। মোটামুটি কম বেশি সব ছবিতেই বর কনে দুজনেই একটা মেকি হাসি দেওয়ার চেষ্টা করেন সেই হাসিতে কোন প্রানের স্পন্দন নেই,নেই কোন স্বতঃস্ফূর্ত ভাব, এক্ষেত্রে কনে আবার একটু রয়ে সয়ে হাসেন খুব সম্ভবত মেক-আপ যাতে নষ্ট না হয় কিংবা বেশি হাসলে যদি বেহায়া ভাবে...... বর্তমানে আরও একটি নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে নিজের বিয়েতে বর কনে বিশেষত কনে নিজেই নাচেন। আগে ভাবতাম এসব ব্যাপার বোধহয় কেবল রুপালী পর্দায় সম্ভব, এখন দেখি যে নাহ বাঙ্গালির জন্য অসম্ভব বলে কিছু নেই......... ( খুব সম্ভবত ব্যাপারটা এখন CINEMATOGRAPHY হয়ে গিয়েছে)

আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় আমি যতটুকু জানি যে, ছবি মানুষের অনুভূতির কথা বলে, ছবি তোলা মানে যদি "CATCH THE MOMENT" হয় তাহলে এই ছবিগুলো কি আসলেই বিয়ের দিনের মুহূর্তগুলোকে রিপ্রেজেন্ট করে ? বিয়ের দিনে কনের মন খারাপ থাকাটা খুব স্বাভাবিক কারণ সে তার বাবা মা তথা পরিবারের কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছে,তাহলে সেই ছবিগুলো গেল কোথায় নাকি এই যুগের মেয়েদের মন পাথর দিয়ে গড়া ??? আর বর কনে দুজনের মধ্যে যদি খুশির বন্যাই বয়ে যায় তাহলে প্রাণ খুলে হাসতে বাধা কোথায় ??? বিয়ের দিনে একসাথে লাফ দেওয়া,একে অপরকে চাঁদ দেখানো কিংবা "ভি" চিহ্ন দেখানো কি রুপক অর্থ বহন করে ??? এই সংস্কৃতির উৎপত্তিও বা কোথা থেকে হল ???

আমরা ক্রমশই নিজেদের শিল্পসাহিত্য তথা ঐতিহ্য কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যুগের দাবি মেটানোর জন্য তথাকথিত আধুনিক হওয়ার জন্য এক অজানার উদ্দেশে পা বাড়িয়েছি, আমাদের এই কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা আমাদের নিজেদের কাছেও নেই...... তাই তো আমরা হুজুগে বাঙ্গালি..................

[ বি দ্র ; উপরের কথাগুলো একান্তই আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ফসল, কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করার জন্য নয় ]
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×