পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে নিত্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক কমিয়ে দেয় এবং ব্যবসায়িরা লাভ কম করে, অথচ আমাদের দেশের চিত্র উল্টো, সব কিছুর দামই যেন আকাশ ছোঁয়া, কে কার চেয়ে বেশী দামে বিক্রি করবে তার একটা প্রতিযোগীতা, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। এবং এ দ্রব্যমূল্যের এ দামের কারনে আয়-রোজগারহীন , স্বল্পআয়ের মানুষের পক্ষে ঠিক মতো ইফতার ও সেহরীর খাবার যোগার করা কঠিন হয়ে যায় ।
সামনে পবিত্র রমজান, এ মাস ত্যাগের মাস। এই ত্যাগের মাসে আসুন আমরা একটু ত্যাগ স্বীকার করি , আমাদের সামান্য ত্যাগ, এনে দিতে পারে গরীব আত্মিয়-স্বজণ এর মুখে একটু হাঁসি ও একটু স্বাছন্দ। এখন বলতে পারেন রমজান ত্যাগ শিক্ষা দেয় ঠিক কথা, কিন্তু আমরা আবার কি ত্যাগ স্বীকার করতে পারি। এবং মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা একটু বেশী অবদান রাখতে পারি।
হাঁ শুধু মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরাই শুধু এই ত্যাগ স্বীকার করতে পারি। কারন এ সুবিধা শুধু মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের ই আছে। যাক কথা না বাড়িয়ে আসল কথায় আসি।
মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা সবাই কম বেশী জানি যে মধ্যপ্রাচ্যের সকল দেশে রমজানের সময় ইফতার সরকারী ভাবে মসজিদে করানো হয়, এবং প্রবাসীদের মধ্যে বড় একটা অংশ মসজিদে ইফতার করে, যার অনেক গুলো কারন আছে।
যেমন:১) সময়ের অভাবে অনেকে কাজ থেকে ফিরে ইফতার তৈরী করার মতো মানসিকতা ও শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলে, তাই কাজ থেকে ফিরার পরথেকে ইফতার এর আগের সময়টুকু একটু বিশ্রাম নেয়, এবং ই্ফতার এর সময় মসজিদে চলে যায়।
২) আর যারা অল্প বেতনে কাজ করে তাদের তো টাকার অভাবটাই বড়।
৩)অনেকে বেশী সাওয়াব এর আশায় মসজিদে ইফতার করে।
৪) অনেকে জামায়াতে নামাজ পড়ার জন্য।
যাক সে সকল কথা, কে , কি কারনে ইফতার করে তা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।
মধ্যপ্রাচ্যের ভাইদের প্রতি আমার আহ্ববান আমরা রোজার এক মাস ঘরে ইফতার করতে বাংলাদেশের টাকার জন প্রতি কম করে হলেও প্রায় ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয় । আমরা যদি ঘরে ইফতার না করে মসজিদে ইফতার করি, ইফতারের খরচের টাকা গুলো আমাদের গরীব আত্মীয় বা প্রতিবেশীকে দান করি , তা হলে এই লাগামহীন দ্রব্যমুলের সময়ে গরীব আত্মীয় বা প্রতি বেশীর অনেক উপকার হবে । আমাদের অনেক প্রতিবেশী ও আত্মীয় আছে যারা লজ্জার কারনে কারো কাছে চাইতে পারে না।
আমরা প্রাবাসী দের সবচেয়ে বড় ত্যাগ, আমরা প্রাবাসে থাকি । মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব থেকে অনেক দূরে। আর এটাতো সামান্য।
শুধু প্রবাসীরাই নয়, দেশে যারা আছে তারা একটু চেষ্টা করলেই গরীব- দূ:খীর মুখে হাঁসি ফুটাতে পারেন। প্রশ্ন হলো কি ভাবে? দেশেতো মধ্যপ্রাচ্যের মতো সরকারী ভাবে মসজিদে ইফতার করানো হয় না।
তা হলে বলি:
দেশে যারা আছে তারা ইফতারের ও সেহরীর তালিকা থেকে বিলাসী, অপ্রয়োজনীয়, এবং স্বাস্থ্য কর নয় (মানে সারাদিন সিয়াম সাধনা করার পর তৈলাক্ত খাবার শরীর এর জন্যে উপযুক্ত নয়) এমন এক বা একাধিক খাবার ইফতার ও সেহেরীর থেকে বাদ দিয়ে তার মুল্য গরীব আত্মীয় বা প্রতিবেশীকে দান করার মাধ্যমে করা যায়।
এত করে আপনার স্বাস্থ্য ও ভাল থাকবে এবং আপনার গরীব আত্মীয় বা প্রতিবেশীর মুখে ইফতার ও সেহেরী জুটবে, এবং আখেরাতের জন্য কিছু নেকী ও কামাই হবে।
আমাদের সামান্য কিছু ত্যাগে যদি অন্যের মুখে সামান্য হাঁসি আনতে পারি তাতেই বা কম কিসের।