somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছেলে ঘুমাল, পাড়া জুড়াল, হিন্দি এল দেশে (রিপোস্ট)

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রাণ দেওয়া বিশ্বের প্রথম জাতি বাঙালি। এই গৌরব বয়ে নিয়ে যায় গোটা বাংলাদেশ। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুর একক আধিপত্যকে রুখে দিতে রাজপথে প্রাণ দিয়েছেন আমাদের ভাইয়েরা। রক্তের বিনিময়ে উর্দুকে রুখে দিতে পারলেও সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের রক্তের উত্তরসূরিরা আজ হিন্দির আগ্রাসন নিয়ে অসচেতন। মুক্তবাজার অর্থনীতি আর মুক্ত গণমাধ্যমের দোহাই দিয়ে ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ছে হিন্দি ভাষা আর উদ্ভট সংস্কৃতি। একুশের চেতনা ধারণ করা এই দেশে হিন্দি বলতে পারা মধ্যবিত্তদের সামাজিক সম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু এই সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের দীর্ঘমেয়াদি কুফল নিয়ে আমরা কি সচেতন?
মহান একুশকে সামনে রেখে সেই প্রশ্ন তুলেছেন মাহবুব আজাদ

ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হলেও তার নিজস্ব বাহিনী ছিল। সেই বাহিনী কূটনীতি আর লড়াই করে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাবকে গদি থেকে নামিয়ে কম্পানিকে ব্রিটেনের চেয়ে বড় একটি ভূখণ্ড শাসনের সুযোগ করে দিয়েছিল। পলাশির যুদ্ধে নিজেদের গোলন্দাজির বাহাদুরির বর্ণনা দিতে গিয়ে জনৈক ইংরেজ সামরিক অফিসার 'ইলোকুয়েন্ট ক্যাননস' শব্দযুগলটি ব্যবহার করেছিলেন। এর বাংলা করলে দাঁড়ায়_বাকপটু কামান। ২৫০ বছর আগে আমাদের ভূখণ্ড ইংরেজের কামানের ভাষার সামনে হারিয়েছিল ফার্সিভাষী নবাবকে। তারপর ১৯০ বছর ধরে এই ভূখণ্ডটি ছিল ভাষার কামানের মুখে। ভারতবর্ষ থেকে ইংরেজ বিদায় নেওয়ার সময় আরো অনেক কিছুর সঙ্গে ইংরেজি ভাষাটাকেও আমাদের ওপর চাপিয়ে রেখে যায়। দুই শতক ধরে একটু একটু করে আমাদের শিক্ষা ও আইনের যাবতীয় উচ্চবর্গীয় বলয়ে ইংরেজি এত সুদৃঢ় স্থান করে নেয় যে আজও আমাদের উচ্চশিক্ষা ও উচ্চ আদালতের দুয়ারে ইংরেজিতে অদক্ষ মাতৃভাষীরা সুবিধা করতে পারে না।
তবে আমরা ইংরেজিমুখীনতাকে একটি স্বাভাবিক প্রবণতা হিসেবে মেনে নিয়েছি। ইংরেজি শুধু এককালের ঔপনিবেশিক শাসকের ভাষাই নয়, এটি বিশ্বের অন্যতম লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কায় পরিণত হয়েছে। পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হতে না চাইলে ইংরেজি কিংবা ইংরেজির মতো আরেকটি প্রভু-ভাষা আত্মস্থ করা গরিব দেশগুলোর জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। বড়লোকের বাজারে টুকরি হাতে তাই দীনহীন আমরা ইংরেজি বোল ফুটিয়ে দুটো করে কর্মে খাবার স্বপ্ন দেখি।
ভাষা যেমন যোগাযোগের মাধ্যম, তেমনি ভাষা একটি প্রাচীরও। ইংরেজ আমলে এই প্রাচীর টপকে গুটিকয়েক সুবিধাভিলাষী ইংরেজের সঙ্গে সিমবায়োসিসে যোগ দিতে পেরেছিলেন। যারা পারেনি, তারা পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষা আর আইন ক্ষেত্রে। ইংরেজি ভাষার এই প্রাকারোপযোগিতার শক্তিটি বুঝতে পেরেছিল আমাদের নতুন প্রভু পশ্চিম পাকিস্তানিরা, তারা এই পাঁচিলের দেয়ালে নতুন চুনকাম করতে চেয়েছিল উর্দু দিয়ে। সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানে উর্দু ছিল নতুন ইংরেজি, যাতে কেবল গুটিকয়েকের দক্ষতা রয়েছে এবং ইংরেজির সঙ্গে গলাগলি করে যা রচনা করবে আরেকটি দুই-মহলা ভাষাপ্রাচীর। আমাদের দূরদর্শী ও প্রখর আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন পূর্বপুরুষরা এই মতলবটি বুঝতে পেরেই প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলে আমাদের মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি এনে দিতে পেরেছিলেন।

চিরকাল 'ভাষা শিক্ষার' আক্ষেপ!
অনলাইন লেখক সমাবেশ সচলায়তনের লেখক বিপ্রতীপ গত শতকের চলি্লশের দশকে জনৈক ভাষাসৈনিক বি আর মোল্লা লিখিত একটি পোস্টকার্ডের বিবরণ তুলে ধরেছিলেন। তাতে লেখা ছিল, 'কিন্তু যা করি তাহা কিছুই ভালো লাগে না, কারণ আমরা বাঙালি আল্লাহতায়ালার কাছ হইতে যে কী আনিয়াছি তাহা বলিতে পারি না, কারণ মুসলমানের হাত হইতে গেল ইংরেজদের হাতে রাজত্ব, শিখিতে হইল ইংরেজি, আবার জোরে যে বাহুবলে আনিয়া স্বদেশ পাকিস্তান তাহাও আবার রাষ্ট্রভাষা উর্দু হইবে। এখন দেখা যায়, আমরা বাঙালি চিরকাল শুধু রাষ্ট্রভাষাই শিখিয়া যাইতে হইবে। কিসের সংসার, উন্নতি কিসের চাকরি, শুধু আনিয়াছি আমার আল্লাহতায়ালার নিকট হইতে রাষ্ট্রভাষার কপাল। এই আমাদের কাজ কিন্তু আল্লাহতায়ালাই বিচার করিবে। তবে আমরা বীরের মতো পাঞ্জাবির ওপর আক্রমণ করিতে প্রস্তুত হইতেছি। আপনারাও তৈয়ার হন, একবার তাহাদের সঙ্গে লড়িব, জয়_না হয় পরাজয়।'
এই পোস্টকার্ডটি পড়ে সেই সময়ে ভাগ্যান্বেষী যুবকের মনঃপীড়ার চিত্রটি পরিষ্কার হয় এবং আমরা ভাষাপ্রাচীরের কার্যদক্ষতা সম্পর্কেও আঁচ করতে পারি। নিজের দেশে বসে অন্যের ভাষা শিখে জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কাজটির সঙ্গে যে অপমান জড়িত, তা মোল্লা সাহেব স্পষ্ট করেন আমাদের সামনে।

দেশে ও প্রবাসে
দুটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
নিজের দুটি অভিজ্ঞতার কথা বলি। ইউরোপে লেখাপড়া করতে এসে চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে মুখোমুখি হয়েছিলাম আরেকটি ভাষাপ্রাচীরের। প্রাগ পর্যটক-অধ্যুষিত শহর, কিন্তু প্রাগ শহরের দোকানি মহিলারা নিজেদের চেকভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা বলতে উৎসাহী নন। ইংরেজি, জার্মান, ভাঙা ভাঙা ফরাসি আর স্প্যানিশ, চার-চারটা ধনী লোকের ভাষার কামান চালিয়েও চেক দোকানদার খালাম্মার দুর্গে ফাটল ধরাতে পারলাম না। চেক রিপাবলিকের অর্থনীতি জার্মানির তুলনায় অনেক ছোট, তাদের মাথাপিছু গড় আয় জার্মানদের অর্ধেক, কিন্তু আত্মসম্মানজ্ঞান কোনো অংশে কম নয়। দোকানদার খালাম্মা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আমাকে, তুমি কিনতে এসেছ, ঠ্যাকা তোমার, পারলে আমার ভাষায় কথা বলো, নয়তো ফুটো।
এর ঠিক উল্টো চিত্র দেখেছি নিজের দেশে। জার্মান সাংস্কৃতিককেন্দ্রের পক্ষ থেকে একবার শেরাটনে এক শিক্ষামেলায় জার্মান শিক্ষা বিনিময় পরিষেবার [ডয়েচার আকাডেমিশার আউসটাউশডিন্সট] স্টলে কামলা খাটতে গিয়েছিলাম। সেখানে দিলি্ল থেকে আগত জনৈক জার্মান যুবতী এবং ভারতীয় যুবককে সাহায্য করতে হবে। এ দুজনের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে জার্মানই ব্যবহার করছিলাম। শিক্ষামেলা কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে সাদা চামড়ার লোক দেখে গলে গিয়ে সাহায্য করার জন্য এক তরুণ এবং তরুণীকে পাঠালেন। আমার খাটুনি তাতে একটু লাঘব হওয়ায় ভালোই লাগছিল। একটু পর সেই ভারতীয় যুবক আমাকে এসে হাসিমুখে হিন্দিতে বললেন, 'বাহ, তোমাদের এখানে তো সবাই চমৎকার হিন্দি বলে! আমি তার হাসির আড়ালে দাঁত বের করা তাচ্ছিল্যটুকু দেখে অপমানিত হয়েছিলাম এবং সত্যিই তাই, সেই তরুণ আর তরুণী ইংরেজিতে কাঁচা হলেও গড়গড়িয়ে হিন্দি বলে যাচ্ছিল সেই ভারতীয় ভদ্রলোকের সঙ্গে। আমি দুজনকে একটু তফাতে ডেকে নিয়ে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করলাম, আপনারা একটু কষ্ট করে হলেও ইংরেজিতে কথা বলুন। তাঁরা আমার অনুরোধ রাখলেন তো না-ই, ঝাঁঝিয়ে উঠলেন। আমি মানুষের সঙ্গে সহজে দুর্ব্যবহার না করলেও প্রয়োজনের সময় পিছপা হই না, আমি তাদের প্রায় ঘাড়ধাক্কা দিয়ে স্টল থেকে বের করে দিয়েছিলাম। কাজটার জন্য আমি গর্বিত নই, কিছুটা লজ্জিতই। তবে সেই ভারতীয় ভদ্রলোক পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আমার বা আমার সহপাঠীদের সঙ্গে একটিও হিন্দি শব্দ ব্যবহারের আগ্রহ পাননি।
প্রাগের চেক দোকানি সেই মহিলাদের সঙ্গে ঢাকার সেই তরুণ-তরুণীর মানসপটের পার্থক্য থাকবেই। আমরা বিদেশিবৎসল জাতি, ভিনজাতির কাউকে হাতের কাছে পেলে তাঁকে নারায়ণজ্ঞানে আপন করে নিতে খেপে উঠি, চেকরা কমবেশি বিদেশিবিদ্বেষী। ভাষা নিয়ে আত্মসম্মানজ্ঞানের যে নমুনা বি আর মোল্লা কিংবা প্রাগের দোকানদার খালাম্মার মধ্যে দেখি, তার কণামাত্র দেখতে পাই না নিজেদের দেশে নিজেদের মধ্যে বসে!

মধ্যবিত্তের দ্বিতীয় ভাষা!
কিভাবে, কখন?
সচেতনতা তৈরির কোনো চেষ্টা না হওয়ায় বাংলাদেশে হিন্দি ভাষা ক্রমশই মধ্যবিত্তের বাচনিক চর্চার অংশ হয়ে উঠছে।
জ্ঞানচর্চা ও অর্থনৈতিক প্রয়োজনে ইংরেজি শেখার যে প্রয়োজনীয়তা, হিন্দির ক্ষেত্রে তেমন নয়। কিন্তু হিন্দি 'বুঝতে পারা'-র পর্যায় শেষ করে এখন নাগরিক মধ্যবিত্তের মধ্যে 'বলতে পারা'-র দল ক্রমেই ভারী হচ্ছে।
বাংলাদেশে হিন্দির এই জনপ্রিয়তা বিনোদনের সপ্তদশ অশ্বারোহীর মতোই আমাদের আত্মসম্মানের লক্ষণাবতী প্রাসাদটি দখল করে বসেছে। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে হিন্দি সিনেমাগুলো ভিডিও ক্যাসেটের ব্যবসার কল্যাণে আমাদের গৃহিণীদের মনোরঞ্জনের একটি প্রবল উপকরণে পরিণত হয়। ভারতীয় রাজনীতিক ও কলামিস্ট শশী থারুর তাঁর এক বক্তৃতায় বলিউডকে সফট পাওয়ার বলেছিলেন। কামান বা বন্দুক ধরে নয়, কতকগুলো টিভি চ্যানেল আর সিনেমা স্টুডিও দিয়ে ভারত বিশ্বজয়ে নেমেছে। পলাশির আম্রকাননের ইলোকুয়েন্ট ক্যাননগুলো এখন আমাদের ঘরে ঘরে প্রবেশ করেছে, আমাদের টেলিভিশনের অর্ধেকেরও বেশি জায়গা দখল করে নিয়েছে হিন্দিভাষী চ্যানেলগুলো। আর ভাষা কোনো বিচ্ছিন্ন প্রপঞ্চ নয়, ভাষার ওপর ভর করেই আমাদের অন্দরমহলে ঢুকে পড়েছে এক অলিক হিন্দিভাষী জগতের চিন্তা আর মনোবিকলন। হিন্দি সিনেমা ও সিরিয়ালে যা প্রদর্শিত হয়, তা বাস্তবতা থেকে বহু দূরে, কিন্তু এই ফ্যান্টাসির জগৎ আমাদের মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের জীবনাচরণকে গ্রাস করে নিয়েছে বহুলাংশে। এমন এক সময় ছিল, যখন ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আমাদের বিটিভির অনুষ্ঠানের টেরেস্ট্রিয়াল সম্প্রচার দেখার জন্য সেখানকার মানুষ উৎসুক হয়ে থাকতেন। আজ এর ঠিক উল্টো চিত্র আমরা দেখি। আমাদের নিজেদের দেশেই বিটিভি ক্রমশ মান হারিয়ে দর্শকের টিভির পাতে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়ছে, আমাদের দেশের কোনো টিভি চ্যানেল সীমান্তের ওপারে প্রদর্শিত হয় না, কিন্তু আমরা নিজেদের টেলিভিশন চ্যানেলকে একপাশে ঠেলে সরিয়ে গলাধঃকরণ করে যাচ্ছি হিন্দি চ্যানেলবাহিত বিনোদন-লাড্ডু। আমাদের কর্মক্লান্ত জীবনের পর অবসরটুকু এখন বিপুলাংশে গচ্ছিত হিন্দির চরণকমলে। আমরা তা-ই শুনি, যা হিন্দি চ্যানেলগুলো শোনায়, তা-ই দেখি যা হিন্দি চ্যানেলগুলো দেখায়, আর তা-ই ভাবতে শিখি, যা হিন্দি চ্যানেলগুলো আমাদের ভাবতে উসকায়।

'সফট পাওয়ার' আগ্রাসন
মধ্যবিত্তের বিনোদনের উপকরণ হয়ে ওঠা হিন্দি যে শুধু আমাদের বিনোদনের সময়টুকু দখল করে নিচ্ছে, এমন নয়। ভাষাকে বাহন করে এখানে ঢুকে পড়ছে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক অনেক ধরনের আগ্রাসন।
আমাদের জনভারাগ্রস্ত শহরগুলোয় শিশুদের বিনোদনের সুযোগ খুব অপ্রশস্ত, তাদের মাঠগুলো আমরা দখল করে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায় ফুঁকে দিয়েছি। স্কুল, কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট টিউটরের ফাঁকে আমাদের বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য একমাত্র জানালা হয়ে দাঁড়িয়েছে টেলিভিশন। সেখানে শিশুতোষ কার্টুন চ্যানেলগুলো এখন ভারত থেকে হিন্দিতে ডাবড হয়ে আসে। আমি চার বছর বয়সী শিশুদেরও শুনেছি নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলতে। এ নিয়ে তাদের অভিভাবকরাও বিন্দুমাত্র বিচলিত নন, বরং তাদের কন্যাটি হিন্দি গানের তালে এই বাচ্চা বয়সেই কেমন চমৎকার নাচতে শিখে গেছে, এই ভেবে তাঁরা প্রায়শই গর্বোচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোয় কিছু নিজস্বতা ছিল, সেগুলো সবই বিসর্জিত হয়েছে হিন্দির আকাশগঙ্গায়, গায়ে হলুদকে আমরা এখন মেহেন্দি ডাকা শুরু করেছি এবং সেই অনুষ্ঠানে হুবহু অনুকরণ করছি কোনো হিন্দি সিরিয়ালে দেখা বিয়ের অনুষ্ঠানের দৃশ্য। সেসব অনুষ্ঠানে আমাদের কিশোরীরা যৌনাবেদনময়ীর সাজে নেচে যাচ্ছে এবং তা উপভোগও করছে সমাগতরা। হিন্দি সিনেমা আর সিরিয়ালে দেখা সজ্জা আর পোশাক আমাদের ফ্যাশন জগৎকে কব্জা করেছে, আর আমাদের নিজেদের নির্মিত সিরিয়াল আর সিনেমাগুলোও অনুকরণের দুর্বল প্রচেষ্টার ফলে পরিণত হচ্ছে একেকটি ব্যর্থ অনুকৃতিতে।
হিন্দি টিভি অনুষ্ঠানের ফাঁকে প্রদর্শিত ভারতের পণ্যগুলোর বিজ্ঞাপনে ভোক্তা তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা কোনো আলাদা বিনিয়োগ ছাড়াই তাঁদের পণ্যের জন্য পেয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অবারিত বাজার। বিনোদনকেও পণ্য করে বাংলাদেশে নতুন বাজার খোঁজার চেষ্টা শুরু হয়েছে ইদানীং।
কিছুদিন আগে বলিউডি চলচ্চিত্র আমদানি করে আমাদের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের জন্য দেশের কেষ্টুবিষ্টুদের অনেকে খেপে উঠেছিলেন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, আমাদের দর্শক না কি সিনেমা হলবিমুখ হয়ে পড়েছেন, 'প্রতিযোগিতা' বাড়িয়ে আমাদের চলচ্চিত্রকে আরো বুলন্দ-বলিষ্ঠ করার জন্যই না কি এখন হিন্দি চলচ্চিত্র দেখানো অনিবার্য হয়ে পড়েছে! দেশের বড় বড় করপোরেট হাউসগুলো তাঁদের ষান্মাসিক-বার্ষিক অনুষ্ঠানগুলোতে এখন হিন্দি বিনোদনের আসর বসাচ্ছেন। হাজার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী এ দেশে এখন আমদানিকৃত হিন্দি নাচগান ছাড়া করপোরেট অনুষ্ঠান জমছে না। বিজিএমইএর মতো বড় বাণিজ্য সংগঠনের বার্ষিক প্রদর্শনী 'বাটেঙ্পো'তে শুধু নাচগানের শিল্পী নয়, হিন্দিভাষী উপস্থাপিকা পর্যন্ত উড়িয়ে আনা হচ্ছে ভারত থেকে। এসব শিল্পী বৈধ এবং অবৈধ পথে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছেন এই দেশ থেকে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজক দেশ হওয়ার সুযোগে এ-সংক্রান্ত অনুষ্ঠানেও আমাদের আয়োজকরা ভারত থেকে ৬০ জন নট-নটী ধরে নিয়ে আসছেন। নিজেদের বিনোদিত করার ক্ষমতা, সুযোগ আর অধিকারও কি তাহলে আমরা হারিয়ে ফেললাম?

বিনোদনের নেশায় মগ্ন জাতি
ভুলে যাচ্ছে আত্মসম্মান
বিনোদন শুধু সময় পার করার উপায় নয়, বিনোদন মনোজগৎকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। আমরা প্রবাদের উটের মতো হিন্দি ভাষার উটকে আমাদের তাঁবুতে ঢুকতে দিয়েছি, সে এখন একটু একটু করে ভেতরে ঢুকে খোদ আমাদেরই ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছে দ্বিতীয় সারিতে। আজ আর্মি স্টেডিয়ামে তাই আমরা কোটি কোটি টাকা নজরানা দিয়ে শাহরুখ খানের অর্থহীন হাত-পা ছোড়াছুড়ি দেখতে যাচ্ছি, তাঁর সঙ্গে একবার কথা বলার জন্য উন্মাদিনীর মতো হাত-পা ছুড়ছে আমাদের তরুণীরা, এ দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে। সাময়িক বিনোদনের কাছে নিজেদের সমর্পণ করে আমরা আত্মসম্মান-জ্ঞানে এই সার্বিক ধস নামিয়েছি কিসের বিনিময়ে? উত্তর পাই খবরের কাগজে_যখন দেখি, ভারতের এঙ্মি ব্যাংকের নাদিম পাঞ্জেতান এসে আমাদের ওপর একগাদা হুকুম চাপিয়ে দিয়ে যান, ঋণের টাকা কিভাবে ব্যয় করব, না করব, তার জবাবদিহি ব্যাংকের কাছে জমা দেওয়ার 'আদেশ' করেন। আমাদের ঋণ করা টাকায় নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে কারা কাজ করবে, বিদ্যুৎকেন্দ্র কিভাবে চলবে, তা নিয়ে হুকুম ঝেড়ে দিয়ে যায় ভারতের রাষ্ট্রীয় কম্পানি এনটিপিসি। আমাদের মনে কি এই প্রশ্নটা জাগে না, আমরা কেন এ ধরনের অমার্জিত আচরণ মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি?
উত্তরটা কিন্তু সুস্পষ্ট, আমরা জাতিগতভাবে পলকা আত্মসম্মান-জ্ঞানের পরিচয় দিয়ে আসছি বছরের পর বছর ধরে। গত ১৫ বছরে আমরা অবাধে হিন্দিভাষী বিনোদনকে আমাদের নিজেদের জীবনযাত্রায় এত গভীরভাবে প্রবিষ্ট করিয়েছি যে হিন্দিমুখীনতাও এখন একটি স্বাভাবিক ও স্বীকৃত প্রপঞ্চ। আমাদের চাকরির সিভিতে এখন ভাষিক দক্ষতার কলামে 'হিন্দি' লেখাটা বর্ধিষ্ণু প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। উত্তর ভারতের কোনো শহরে গিয়ে বাংলা বললে আমরা কার্যোদ্ধার করতে পারব না, কিন্তু একজন ভারতীয়ের কোনো সমস্যাই হয় না বাংলাদেশে এসে কাজ করতে, তার সঙ্গে হিন্দি বলতে কমবেশি সবাই মুখিয়ে থাকে। আত্মসম্মানের দৌড়ে তাই আমরা আলোচনার টেবিলের ম্যারাথনে শুরুতেই পিছিয়ে থাকি। আর তার ষোলো আনা সুযোগ গ্রহণ করেন ভারতীয় ব্যবসায়ী ও আমলারা।
একটি জাতির দরকষাকষির শক্তি তার সংস্কৃতিতেও নিহিত। আমরা এই শক্তির শিকড়ে বিষ ঢালার সুযোগ করে দিচ্ছি ক্রমাগত। '৪৮ সালে জিন্নাহ টপ-ডাউন প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের সব প্রদেশের ওপর রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। বাঙালি বটম-আপ প্রক্রিয়ায় উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ছেড়েছিল। উর্দুর আগ্রাসন আমাদের কাছে পরিষ্কার, কারণ উর্দুর স্বার্থে এ দেশে রক্তপাত হয়েছে, রাষ্ট্র মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে। হিন্দির আগ্রাসন নীরব ও কোমল। ঘরে ঘরে কামানের বদলে টেলিভিশনগুলো গুলি ছুড়ছে, আমরা সোৎসাহে সেই গুলি সেবন করে যাচ্ছি আফিমের গুলির মতো। যে প্রতিরোধ আমরা আজ থেকে ৫৯ বছর আগে গড়ে তুলতে পেরেছিলাম উর্দুর বিপরীতে, তার কণামাত্রও আমরা হিন্দির বিপরীতে গড়ে তুলতে পারিনি। কাজেই যদি এমন অনুমিতি করি যে হিন্দি ক্রমশ নতুন ইংরেজিতে পরিণত হতে যাচ্ছে আমাদের দেশে, তাহলে কি খুব ভুল করা হবে? হিন্দি তখন হবে ভাষার নতুন প্রাচীর। সুবিধাভিলাষীদের তখন সুযোগ ও সম্ভাবনার বাগানে ঢুকতে হবে হিন্দির পাঁচিল টপকে। এটা যে আমাদের জন্য অপমানজনক, তা আমাদের হিন্দি সংস্কৃতির ভোক্তা আর নীতিনির্ধারকদের আচরণ দেখে বোঝা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর নাতনিকে তাই আমরা দেখতে পাই জনৈক বলিউডি নায়কের অনুষ্ঠানে এসে ঢলে পড়ে গদগদ হয়ে হিন্দি বলতে। আমাদের বেসরকারি টেলিভিশনে এ মুহূর্তে একটি বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে, যেখানে একজন বলিউডি অভিনেতা বিকৃত বাংলায় আমাদের নসিহত করে যাচ্ছেন। অর্থাৎ আমরা নিজেরাই নিজেদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি দ্বিতীয় সারিতে, প্রথম সারিটি ছেড়ে দিচ্ছি হিন্দির জন্য। ধীরগতিতে, কিন্তু নিশ্চিতভাবে। এ কাজে আমাদের অর্ধেক নির্লজ্জ, বাকি অর্ধেক নিশ্চুপ।
গায়ের চামড়া ব্রন্টোসরাসের মতো হলে, পরিণতিও ব্রন্টোসরাসের মতোই হবে, আকার যতই বড় হোক না কেন। যতদূর জানি, জীবটি হারিয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে।
ভারতের এই ইলোকুয়েন্ট মিডিয়া ক্যাননের সামনে আমরা কোনো প্রতিরোধ বা প্রতিযোগিতার চেষ্টা করিনি বলে ১৫ বছরের মাথায় দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে উদ্যোক্তারা ক্রমশ মুৎসুদ্দিতে পরিণত হচ্ছেন, আর আমাদের সামগ্রিক অবিমৃষ্যকারিতার দায় বহন করে পায়ে পায়ে পিছু হটছে আমাদের ভাষা, আমাদের গান, আমাদের জীবনাচরণ, আমাদের পাওয়ার প্লান্টে বাংলাদেশি যুবকের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা, আমাদের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে বাংলাদেশি ঠিকাদারের টেন্ডার পাওয়ার আশা, আমাদের অর্থনীতি। কী বাকি থাকে আর?
এই বল প্রয়োগ আমাদের কলার ধরে করা হচ্ছে না, করা হচ্ছে থুতনি নেড়ে দিয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে। একে তুলনা করা যেতে পারে ইয়ারকোভস্কি এফেক্টের সঙ্গে। সূর্যের আলোর প্রভাবে সৌরজগতে প্রদক্ষিণরত গ্রহাণুগুলো যেমন ত্বরণ অনুভব করে একটু একটু করে কক্ষপথ থেকে সরে গিয়ে কোনো গ্রহের বুকে আছড়ে পড়ে, আমরাও তেমনি বলিউডি সূর্যের রোদ পোহাতে পোহাতে নিজেদের কক্ষপথ থেকে সরছি একটু একটু করে, কিন্তু পতনটা অনুভব করতে ব্যর্থ হচ্ছি। যখন চূড়ান্ত পতন হবে, তখন আর করার কিছু থাকবে না।
অথচ খোদ ভারতেই একজন আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন তামিল বা তেলুগুভাষী হিন্দিতে কথা বলেন না, মাতৃভাষার বাইরে সারা ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইংরেজিতে, বলিউডি জীবনাচরণকে আত্মস্থ করা তো দূরের কথা। আর আমরা মাতৃভাষার স্বীকৃতির জন্য রক্তপাত করেও আত্মসম্মানবোধের নিদর্শন রাখতে ব্যর্থ হচ্ছি ক্রমশ।
হিন্দি ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার পর মারাঠি রাজনীতিক শঙ্কররাও দেও ভারতের লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, 'নেহেরু শুধু সংস্কৃতির কথা বলেন, কিন্তু ব্যাখ্যা করেন না, সংস্কৃতি বলতে তিনি কী বোঝাচ্ছেন। আজ বুঝলাম, সংস্কৃতি মানে হলো বহুর ওপর স্বল্পের আধিপত্য। ছয় দশকেরও বেশি সময় পর এই জাত্যভিমানী রাজনীতিকের কথাটির মূল্য হ্রাস পায়নি এতটুকু।

জাগ্রত হোক আত্মসম্মান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি বাক্য ব্যয় করে বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতীয় সেনাদের বিদায় জানিয়েছিলেন। তাঁকে জাতির পিতা হিসেবে সম্মান যদি করি আমরা, তাঁর দৃষ্টান্তটুকু অনুসরণের সাহস যেন আমাদের হয়। বাংলাদেশের বহুর ওপর এই বলিউডি স্বল্পের আধিপত্য দূর হোক। আমরা নিজেদের দেশে নিজেদের বিনোদনের জগৎটুকু যেন অন্যের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে না দিই। সব দুয়ার তারই খোলা রাখা মানায়, যে নিঃস্ব। আমরা নিঃস্ব নই, তাই দুয়ার উদাম করে খুলে সব কিছু লোপাট হতে দেব না। নীতিনির্ধারকদের প্রতি তাই আহ্বান, আমাদের দেশে হিন্দিভাষী চ্যানেলের সংখ্যাটি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করে নামিয়ে আনতে। দেশে এখন নিজস্ব টেলিভিশন চ্যানেল কম নেই, আরো অনেক নতুন টিভি চ্যানেলেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দর্শকের বিনোদনের ক্ষুধা মেটানোর কর্তব্যটি তাই আমাদের অনুষ্ঠান নির্মাতাদের পালন করার সুযোগ দিতে হবে। আর সেই বিনোদনের ভাষা হতে হবে বাংলা, সেই বিনোদনে বিধৃত ফ্যাক্ট ও ফ্যান্টাসি হতে হবে বাংলাদেশের বাস্তবতাঘনিষ্ঠ। যদি তা করতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের সম্ভাবনাময় তরুণদের সৃজনশীলতা বিকাশের পথ সরাসরি রুদ্ধ হবে। পলাশির মাঠের কামানগুলো আজও আমাদের দুই কানে ইংরেজি ভাষায় গর্জে চলেছে, সরাতে পারিনি জীবন থেকে, তাই একবার আমাদের তরুণদের সৃষ্টি ও বিকাশের পথটি রুখে দিলে বলিউডি কামানগুলো যে আমাদের জাতিকে হিন্দির অশনি-বাণে ঝাঁঝরা করার কাজটি সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে করবে না, সে ব্যাপারে আশাবাদী হওয়া যায় না। সুত্র: Click This Link
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×